০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, শনিবার, ০৫:৫৯:১৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
বিশ্বকাপের ড্র অনুষ্টিত , সহজ গ্রুপে ব্রাজিল - যুক্তরাষ্ট্র ডি গ্রুপে স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া


বাংলাদেশ সোসাইটির সভায় হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কি ও চেয়ার নিয়ে আক্রমণ
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০৭-২০২৩
বাংলাদেশ সোসাইটির সভায় হাতাহাতি-ধাক্কাধাক্কি ও চেয়ার নিয়ে আক্রমণ বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সভায় উপস্থিতি


প্রবাসের মাদার সংগঠন হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সভায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। গত ২ জুলাই বিকালে বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া এবং সভা পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী। সভায় বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরি কমিটির ১৭ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র সহ-সভাপতি মহিউদ্দিন দেওয়ান, সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী, সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কালাম ভুইয়া, প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মোহাম্মদ টিপু খান, সাহিত্য সম্পাদক ফয়সল আহমদ, ক্রীড়া ও আপ্যায়ন সম্পাদক মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, স্কুল ও শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরি সদস্য ফারহানা চৌধুরী, মোহাম্মদ আখতার বাবুল, আবুল বাশার ভুইয়া, মোহাম্মদ সাদী মিন্টু ও শাহ মিজানুর রহমান।

অন্যান্য মাসিক সভার মতো এই সভা যথারীতি শুরু হয়েছিল। সভার শুরুতেই ট্রাস্টি বোর্ডের একজন সদস্য কম থাকায় তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আলোচনার এক পর্যায়ে সিনিয়র সহ-সভাপতি এবং কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেনের মধ্যে যুক্তিতর্ক এবং কথা কাটাকাটি শুরু হয়। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে এই নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। আক্তার বাবুল বলেন, বাংলাদেশ সোসাইটিতে আমরা একেক জন একেক এলাকা এবং বিভিন্ন সংগঠন থেকে এসেছি। সেই সব সংগঠনের দায়িত্বও আমরা পালন করছি। আপনাদের আমরা যারা মুরব্বি মানি, তাদের কাছ থেকে আমরা এই ধরনের আচরণ আশা করি না। আমরা আপনাদের কাছ থেকে শিখতে এসেছি। কিন্তু আপনারা যা করছেন, তাতে তো শিখার কিছু নেই। আপনাদের আচরণে আমরা বিব্রত হচ্ছি।

মাইনুল উদ্দিন মাহবুব বলেন, এখানে কেউ কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করবেন না। আপনাদের কারো যদি ব্যক্তিগত কোনো সমস্যা থাকে। সেটি মিটিং শেষে আপনারা বাইরে গিয়ে আলোচনা করে সমাধান করেন। আমরা এখানে একটি পরিবার। আমরা সবাই ভাই ভাই। এই সময় সিনিয়র সহ-সভাপতি মাহবুবকে উদ্দেশ্য করে বলেন, লেটস গো আউট সাইড। ওই সময় মাহবুব বলেন, উচ্চবাচ্য করবেন না, আমি এখানে কারো নাম বলিনি। মহিউদ্দিন দেওয়ান বিগত মাসের হিসাবের নেই কেন প্রশ্ন উত্থাপন করেন।

বক্তব্য দিতে ওঠেন কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন সিদ্দিকী। তিনি তার বক্তব্যে বলেন, আমাকে আমাদের একজন সদস্য হুমকি দিচ্ছেন, আমাকে নাকি বাসা থেকে উঠিয়ে নেওয়া হবে, বাংলাদেশে আমার সমস্যা হবে। এই অবস্থায় নাম জানতে চাইলে নওশেদ হোসেন মহিউদ্দিন দেওয়ানের নাম বলেন। নাম বলার সাথে সাথেই মহিউদ্দিন দেওয়ান তার দিকে পানির বোতল ছুড়ে মারেন। শুরু হয় তর্কবিতর্ক এবং উত্তেজনা। নওশাদ হোসেনের অভিযোগ আমি উঠতে গেলে মহিউদ্দিন আমাকে চেয়ার দিয়ে আক্রমণ করতে যান এবং চেয়ার ছুড়ে মারেন। তা প্রতিহত করেন সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরীসহ অন্য কর্মকর্র্তারা। চেয়ার নিয়ে মারতে যাওয়ার ঘটনা একবার হয়নি। তিনবার হয়েছে। শেষবারের সময় আমার সাথে মহিউদ্দিন দেওয়ানের হাতাহাতি এবং ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে এবং আমার দিকে চেয়ার নিয়ে এগিয়ে আসে। চেয়ার আমার গায়ে লাগেনি, তবে আমার ডান হাতের একটি আঙুলে ব্যথা পাই। আমার আঙুল ফুলে নীল হয়ে যায় এবং ব্যথা শুরু হয়ে যায়। এক সময় উপস্থিত সবাই মহিউদ্দিন দেওয়ানকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করে। আনিমুল ইসলাম চৌধুরীও তাকে গালাগালের অভিযোগ করেন। এক পর্যায়ে সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দকী, সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং দুই জনকে মিলিয়ে দেন। একজন আরেকজনের সাথে কোলাকুলিও করেন। এরপর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা চলে যান। কোষাধ্যক্ষসহ কয়েকজন উপস্থিত ছিলেন। কার্যকরি কমিটির সভা শেষে নবগঠিত ট্রাস্টি বোর্ডের সাথে কার্যকরি কমিটির যৌথসভা অনুষ্ঠিত হয়। সেই যৌথসভা শেষে সবাই চলে গেলে রাত ৮টা ৫৫ মিনিটে পুলিশ কল করেন নওশেদ হোসেন। তিনি মহিউদ্দিন দেওয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন এবং বলেন তিনি নিরাপত্তহীনতায় ভুগছেন। মহিউদ্দিন দেওয়ান যে তাকে বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়েছেন তা পুলিশকে অবহিত করেন।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া বলেন, আমাদের কার্যকরি কমিটির সভায় অপ্রীতিকর একটি ঘটনা ঘটে। আমরা সেটা মীমাংসাও করে দিই। পরে কী হয়েছে আমি বলতে পারবো না। কারণ যৌথসভা শেষে আমি সাধারণ সম্পাদক, সহ-সভাপতি চলে যাই।

সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী বলেন, সোসাইটির কার্যকরি কমিটির সভায় অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে। সেই ঘটনার পর আমরা পরিস্থিতি শান্ত করে দুইজন মিলিয়ে দিয়ে চলে আসি। পরে কী হয়েছে এখনো আমি জানি না। এ ব্যাপারে মহিউদ্দিন দেওয়ান বলেন, তেমন কোনো গ-গোল হয়নি। হালকা ঘটনা ঘটেছে। আমি এ ব্যাপারে কিছু বলতে চাই না। সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করুন।

এ নিয়ে কমিউনিটিতে ধিক্কার উঠেছে। চারিদিকে ছি! ছি! রব উঠেছে। কীভাবে শিক্ষিত মানুষগুলো এই ধরনের অসভ্য আচরণ করতে পারে।

শেয়ার করুন