০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:১৪:৫০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


জালালাবাদের সংবর্ধনা সভায় এম আজিজ
মামলা করেছেন অসুবিধা নেই, তারপরও ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হোন
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৫-১১-২০২৩
মামলা করেছেন অসুবিধা নেই, তারপরও ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হোন এম আজিজকে ক্রেস্ট প্রদান করছেন মইনুল ইসলামসহ অন্যরা


জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনকে সহযোগিতা করতে গিয়ে আমিও মামলায় পড়ে যাই। মামলা করেছেন কোনো অসুবিধা নেই, তারপরও বলবো এখনো সময় আছে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জালালাবাদবাসীর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হোন। বদরুল হোসেন খান আমার বন্ধু। অত্যন্ত ভালো মানুষ। তার প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, সবকিছু ভুলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন। গত ১২ নভেম্বর সন্ধ্যায় এস্টোরিয়ার জালালাবাদ ভবনে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত এক সংবর্ধনা সভায় বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি ও টানা তিনবারের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান এম আজিজ এসব কথা বলেন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্টি বোর্ডে তৃতীয়বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ায় তাকে এই সংবর্ধনা দেওয়া হয়।

জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কার্যনির্বাহী কমিটির অন্যতম সদস্য হেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং সাবেক কোষাধ্যক্ষ আসাদুল গনি আসাদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মইনুল ইসলাম, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, বাংলাদেশ লিগ অব আমেরিকার সাবেক সভাপতি এমাদ চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক নির্বাচন কমিশনার সৈয়দ ফজলুর রহমান, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সহ-সভাপতি মাওলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী, যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টির সভাপতি হাজি আব্দুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা জে মোল্লা সানি, মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ফজলু মিয়া।

অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিলেট সদর থানা সমিতির সাধারণ সম্পাদক দরুদ মিয়া রনেল, বিশিষ্ট কমিউনিটি অ্যাকটিভিস্ট ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব এ এফ মিসবাউজ্জামান, মদিনা মসজিদের সাধারণ সম্পাদক এনায়েত হোসেন জালাল, মনসুর চৌধুরী, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রচার সম্পাদক এম এ করিম, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক কর্মকর্তা মখন মিয়া, কানেকটিকাট আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন চৌধুরী, হ্যালো বাংলাদেশের অন্যতম স্বত্বাধিকারী মাসুম ব্যাপারি প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে এম আজিজ মইনুল ইসলামসহ জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনকে ধন্যবাদ জানান সুন্দর আয়োজনের জন্য। তিনি বলেন, আমার জন্য মুন্সীগঞ্জ-বিক্রমপুর। কিন্তু সিলেটের মানুষের প্রতি আমার দুর্বলতা আছে। তাছাড়া গত নির্বাচনে আমি বদরুল-মইনুল প্যানেলের নির্বাচনী সভায় প্রতিশ্রুতি করেছিলাম জালালাবাদবাসী ভবন ক্রয় করলে আমি তাদের সহযোগিতা করবো। কারণ আমরা সবাই একদিন চলে যাবো। কিন্তু দুনিয়াতে এমন কিছু ভালো কাজ করে যেতে চাই, যাতে নতুন প্রজন্ম আমাদের মনে রাখে। তিনি বলেন, আমি এই দেশে একা এসেছিলাম। আমার কেউ ছিল না। আমার বয়স ছিল মাত্র ২১ বছর। অনেক কষ্ট করে আজকের এই অবস্থায় এসেছি। আল্লাহ আমাকে তওফিক দিয়েছেন, সেজন্য মানুষের পাশে দাঁড়াই। আমাদের সবার মনে রাখতে হবে আমরা মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করেছি। তাই মানুষের পাশে দাঁড়ানো উচিত। মানবতার সেবায় কাজ করা উচিত। যেটা আমি ব্যবসা শুরু করার পর থেকেই শুরু করেছি। তিনি বলেন, জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনকে সহযোগিতা করতে গিয়ে আমিও মামলায় পড়ে যাই। মামলায় আমাকেও জড়ানো হয়েছে। মামলা করেছেন কোনো অসুবিধা নেই। তারপরও বলবো এখনো সময় আছে সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জালালাবাদবাসীর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হোন। বদরুল হোসেন খান আমার বন্ধু। অত্যন্ত ভালো মানুষ। তার প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, সব কিছু ভুলে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন। তিনি বলেন, যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম ভবন ক্রয়ের সময় জালালাবাদবাসীকে সহযোগিতা করবো। সেই কাজটি করতে গিয়েই মামলায় জড়ালাম। আপনারা জানেন, জ্যাকসন হাইটসের ৭৩ স্ট্রিটে আমার জায়গা আছে। সেই জায়গায় আমি বিল্ডিং করবো। ওই অবস্থায় সাধারণ সম্পাদক মইনুল ইসলাম আমাকে অনুরোধ করে আমার বিল্ডিংয়ের ফার্স্ট যেন জালালাবাদবাসীর জন্য দিয়ে দিই। আমি বলেছি ঠিক আছে আমি দিলাম, দামও ঠিক হয়। এই সময় মইনুল ইসলাম আবেগাপ্লুত হয়ে সংগঠনের সভাপতি, সাধারণ সম্পদকসহ অন্যদের কথা বলে আমার অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৫০ হাজার ট্রান্সফার করে। বিষয়টি আমিও জানতাম না। আমি অফিসে যাওয়ার পর আমার কর্মচারী বিষয়টি আমাকে জানায়। দিনটি ছিল ৩০ ডিসেম্বর। আমি দেখলাম, আমি একটি বিতর্কে জড়িয়ে যাচ্ছি। তাই আমি মইনুল ইসলামকে কল দিয়ে বললাম, আমি এই মুহূর্তে এই অর্থ চাই না। ভবন হলে আমি আমাকে অর্থ দিয়েন। আমি কালবিলম্ব না করে ওই তারিখেই ২ লাখ ৫০ হাজার ডলারের একটি চেক লিখে অফিসে রেখে আমি অন্য স্টেটে চলে যাই। সেই সঙ্গে মইনুল ইসলামকে চেকটি নিয়ে জমা দিতে বলি। সে চেকটি নিয়ে যায়। এখন আমার নামে বদনাম, আমি নাকি ওই অর্থ ব্যবহার করেছি। এটা কীভাবে সম্ভব? আমি ওইদিনই চেকটি দিয়ে গেলাম। তিনি বলেন, আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন আমার সাধ্যমতো মানুষের পাশে থাকবো।

মইনুল ইসলাম বলেন, আমাদের এমন কাজ করেন যাতে মৃত্যুর পরও মানুষ আপনাকে স্মরণ করে, আপনি জাগ্রত থাকেন। তিনি বলেন, এম আজিজ বাংলাদেশ সোসাইটির ভবন ক্রয়েও সহযোগিতা করেছেন। তিনি জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ভবনের জন্য এম আজিজের অ্যাকাউন্টে ২ লাখ ৫০ হাজার ট্রান্সফার করার প্রেক্ষাপট বর্ণনা করে বলেন, আপনারা জানেন জ্যাকসন হাইটসে এম আজিজের জায়গা রয়েছে, সেখানে বিল্ডিং করা হবে। সে বিল্ডিংয়ের ফার্স্ট ফ্লোর জালালাবাদকে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলাম। তিনি সম্মতি দিয়েছেন। যে কারণে আমি অর্থ ট্রান্সফার করি। কিন্তু তিনি সেই অর্থ রাখেননি। আমাদের দিয়ে দিয়েছেন দুইদিনের মধ্যে। এখন এটা নিয়েও নোংরা রাজনীতি চলছে। তিনি বলেন, যারা কাজ করে না, তাদের কোনো দোষ নেই, তারা যারা কাজ করে তাদের বিরুদ্ধে আঙুল উঠান, পরনিন্দা, পরচর্চা করেন। তিনি আরো বলেন, আজকে আমরা যেখানে অনুষ্ঠান করছি এই বিল্ডিং ক্রয় করার সময়ও তার করপোরেশনের কাগজ এবং ব্যাংক রিপোর্ট আমাদের দেন। যাতে করে বিল্ডিংটি হাতছাড়া না হয়। তিনি বলেন, কোনো স্বার্থ ছাড়াই এম আজিজ জালালাবাদবাসীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।

মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ এম আজিজকে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশ সোসাইটির মতো সংগঠনে জালালাবাদবাসীর নেতৃত্ব নিয়ে এসেছিলেন। তাদের মধ্যে অন্যতম মরহুম কামাল আহমেদ, আজমল হোসেন কুনু, রানা ফেরদৌস চৌধুরী, আতাউর রহমান সেলিম প্রমুখ। তিনি এম আজিজের সহযোগিতার জন্য ধন্যবাদ জানান।

এমাদ চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে যেতে হলে এম আজিজের কাছে এবং ভবন ক্রয় করতে হলে মইনুল ইসলামের কাছে যেতে হবে। তিনি বলেন, মইনুল ইসলাম জালালাবাদবাসীর স্বপ্ন পূরণ করেছেন, আমরা এই ভবন ধরে রাখবো। ভবন আছে বলেই আজকে আমরা এখানে বসে সুন্দর পরিবেশে অনুষ্ঠান করছি। তা না হলে তো আমাদের রাস্তায় রাস্তায় দৌড়াতে হতো।

শেয়ার করুন