ষড়যন্ত্রকারীদের নৈরাজ্যের কাছে আমরা হার মানতে পারি না। গির্জা, মন্দির, প্যাগোডার নিরাপত্তা দিন। ধর্ম-বর্ণ-বিশ্বাস দিয়ে মানুষকে মাপা যাবে না। একজন ব্যক্তির পরিচয় তিনি মানুষ। আপনার পাড়া-প্রতিবেশী যেখানেই কেউ এমন কিছু করার চেষ্টা করবে বন্ধু হিসেবে তার নিরাপত্তায় আপনি ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুন। আমাদের মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের ভূখন্ডে বসবাসকারী সবার একটিই পরিচয় আমরা বাংলাদেশি। এমন বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছাত্র বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন শেখ হাসিনা। তার পতনের পরপরই বিএনপি’র নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ বক্তব্য দেন তারেক রহমান।
অপরদিকে ওই একিই দিনে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একটি সংক্ষিপ্ত ভিডিও বক্তব্য প্রচার করা হয়। দীর্ঘদিন পর দলের সমাবেশে বক্তব্য দেয়া সেই বক্তব্যে ধ্বংস, প্রতিশোধ, প্রতিহিংসা নয়; ভালোবাসা ও শান্তির সমাজ গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। বলেছেন, শোষণহীন সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে হবে। সব ধর্ম-গোত্রের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শান্তি, প্রগতি, সাম্যের ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ নির্মাণে আসুন, আমরা তরুণদের হাত শক্তিশালী করি। ধ্বংস নয়, প্রতিশোধ নয়, প্রতিহিংসা নয়, ভালোবাসা, শান্তি ও জ্ঞানভিত্তিক সমাজ গড়ে তুলি।’
প্রশংসা করলো জয়
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এমন বক্তব্যের পর সব দ্রুত প্রশংসা করেছেন শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়। প্রশংসা করতে গিয়ে রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সজীব ওয়াজেদ জয় জানান তিনি সম্প্রতি জাতির উদ্দেশে দেওয়া খালেদা জিয়ার বক্তব্যে আশা খুঁজে পাচ্ছেন। জয় বলেন, ‘খালেদা জিয়া তার বক্তব্যে বলেছেন, যা হওয়ার হয়ে গেছে, সেগুলো মনে রাখার প্রয়োজন নেই। তার এমন বক্তব্যে আমি খুশি। আমরা অতীত ভুলে যাই। আমরা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ না করি। আমাদের সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে, সেটি ঐকমত্যের সরকার হোক বা না হোক।
বিএনপি কি বদলে গেলো বা যাচ্ছে?
ছাত্র বিক্ষোভ ও গণঅভ্যুত্থানের মুখে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবার পর উন্মুক্ত সমাবেশে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পাশাপাশি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এমন ভার্চুয়াল বক্তব্যের পর দেশের মানুষের পাশাপাশি দলের শুভানুধায়ীরা বলাবলি শুরু করেছেন। তাদের বক্তব্য হচ্ছে আসলে কি বিএনপি বদলে যাবে বা যাচ্ছে? বিএনপি কি অন্যের মত সহ্য করতে পারবে? কিছু বললেই কি তারা আবার আরেক আয়না ঘরের মতো গুপ্ত গুহা তৈরি করে সেখানে রেখে দেবে না-তো? হবে না কথা কথায় গুম?
বিএনপি’র বদলানোর আপাতত কিছু আলামত
এদিকে মাঠ পর্যায়ে কি হচ্ছে সেটির চেয়ে বড়ো কথা হচ্ছে দলের শীর্ষ থেকে কিছু নমুনা মিলছে যে বিএনপি বদলের যাওয়ার চেষ্টা করছে। সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে একটি কাটুন নিয়ে প্রশংসা সবার দৃষ্টি কেড়েছে। সম্প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নেতিবাচক চরিত্র হিসেবে তুলে ধরা কার্টুন তিনি নিজেই শেয়ার করেছেন। গত ৭ আগস্ট কার্টুনিস্ট মেহেদি ফারুকের আঁকা কার্টুন নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে শেয়ার করেন। মেহেদি ফারুকের আঁকা কার্টুনে বোঝানো হয়েছিল, ক্ষমতা লিপ্সায় তারেক রহমান ভার্চুয়াল দুনিয়া ছেড়ে বাংলাদেশের দিকে আসছেন। তারেক রহমান এ কার্টুন শেয়ার করে লিখেছেন, আমি গভীরভাবে আনন্দিত যে বাংলাদেশে রাজনৈতিক কার্টুন আঁকার স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার হয়েছে। ২০০৬ সালের আগে, বাংলাদেশি কার্টুনিস্ট, বিশেষ করে শিশির ভট্টাচার্য, প্রায়ই আমার মা এবং আমাকে নিয়ে কার্টুন আঁকতেন। যাই হোক, গত ১৫ বছরে, কার্টুনিস্ট আহমেদ কবির কিশোরকে জোরপূর্বক গুমের শিকার হতে দেখেছি, তার কাজের জন্য অকল্পনীয় নির্যাতন এবং কারাবরণ সহ্য করতে হয়েছে। আরও অনেকে একই ধরনের নিপীড়নের মুখোমুখি হয়েছেন। শিশির ভট্টাচার্য কার্টুন আঁকা বন্ধ করে দেন। আমি কার্টুনিস্ট মেহেদীর ভক্ত, শিশির ভট্টাচার্যের কাজও উপভোগ করতাম। আন্তরিকভাবে আশা করি, তিনি দ্রুত ও নিয়মিত রাজনৈতিক কার্টুন আঁকবেন। তারেক রহমানের এমন বক্তব্যের পর অনেকে অনেক রকমভাবে প্রশংসা করেছেন। ধরে নিচ্ছে যে বিএনপি বদলে যাচ্ছে বা বদলানো চেষ্টা করছে।
বদলানো আরো কিছু আলামত
সাম্প্রতিক সহিংসতায় জড়িত থাকা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো তাদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। ‘শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনায় জড়িয়ে পড়ে বলে খবর রটে যায়। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বিএনপির হাইকমান্ড আমাদের নির্দেশ দিয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পরপরই এমন সহিংসতায় জড়িত থাকা ও সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ১৭ জেলা থেকে অন্তত ৪৪ জন নেতাকর্মীকে বহিষ্কার করছে দলটি। এর মধ্যে যুবদলের ২৭ জন, ছাত্রদলের ১০ জন, বিএনপির ছয়জন ও স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন রয়েছেন।
এদিকে জনগণের নামে লিখে দেওয়া ১০ কোটি টাকা মূল্যের পুকুর দখলের অভিযোগ ওঠে সংরক্ষিত নারী আসনের সাবেক এমপি বিএনপি নেত্রী বিলকিস জাহান শিরিন ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে। গণমাধ্যমে এমন নিউজ প্রকাশের পরপরই বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল বিভাগ) অ্যাডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিনের দলীয় পদ স্থগিত করা হয়। অন্যদিকে ‘টিভি-পত্রিকায় খুনি হাসিনার ছবি ও বক্তব্য প্রচার করলে জ্বালিয়ে দেওয়া হবে’ বক্তব্য দিয়েছিলেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু। তার এমন বক্তব্য দেয়ার পরপরই দুলুকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বিএনপির নয়াপল্টন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে লিখিত জবাব জমা দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে দুলুকে বলা হয়েছে দলের হাই কমান্ডের পক্ষ থেকে যে, তার এ ধরনের বক্তব্য বিএনপির নীতি ও আদর্শের চরম পরিপন্থি। বিএনপি দেশের একটি উদার ও বৃহত্তম গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল। এ দলটি কখনোই দখল ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে প্রশ্রয় দেয় না। সর্বশেষ খবর হলো বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলুকে পদাবনতি দিয়ে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য করা হয়েছে।
তবে না বদলানোরও অনেক আলামত
অন্যদিকে সাম্প্রতিক বেশ কয়েকটি ঘটনা নতুন করে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে আসলেই কি বদলাবে বা বদলাতে যাচ্ছে? কেননা বিভিন্ন গণমাধ্যমেই প্রকাশিত হয়েছে বেশ কয়েকটি খবর। ক্ষমতাচ্যুত হয়ে শেখ হাসিনার দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়ার পর রাজধানীর মোহাম্মদপুরের সাতমসজিদ হাউজিং এলাকায় গিয়ে দেখা গেলো ভিন্ন চিত্র। রামচন্দ্রপুর খালের ওপর বেদখলে থাকা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছিল ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখালো টিনের ছাউনি ও বেড়া দিয়ে খালের জায়গায় বানানো হয় দুটি ছাপরা ঘর। সেখানে ঝোলানো হয়েছে বিএনপির সাইনবোর্ড। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর সেই কার্যালয়ের দখল নিয়েছে মোহাম্মদপুর থানা যুবদল। ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি, সাতমসজিদ হাউজিং ইউনিট, ৩৩ নম্বর ওয়ার্ড, মোহাম্মদপুর থানা, ঢাকা মহানগর উত্তর।’ ঘটনা এখানেই শেষ না। সম্প্রতি বিবিসি’র পক্ষ থেকে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। এতে বলা হয় সাভারের হেমায়েতপুর মূল সড়ক থেকে একটু ভেতরে জয়না বাড়ি রোড। এখানকারই স্থানীয় এক বাজারে গিয়ে চাঁদাবাজির তথ্য পাওয়া গেছে। অভিযোগ উঠছে, এখানে বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি, প্রভাব খাটানো এমনকি দখলের মতো ঘটনা ঘটেই চলেছে। দখল, চাঁদাবাজির চিত্র আছে তেমনই একই অভিযোগ আছে ঢাকার ভেতরে ও বাহিরেও। এদিকে চাদাবাজির আর মাফিয়া জগতের সবচেয়ে লাভজনক জায়ড়া হচ্ছে পরিবহন সেক্টর। কিন্ত খবর বেরিয়েছে যে সে-ই পরিবহন সেক্টরে চলছে দখলের প্রতিযোগিতা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই পরিবহন মালিক সমিতি, শ্রমিক ইউনিয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তন করা হচ্ছে। সব পরিবহন কমিটির নেতৃত্ব নিতে রীতিমতো মরিয়া বিএনপিপন্থি নেতারা। তাদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারে একাধিক গ্রুপ হয়েছে বিভিন্ন এলাকায়। কারো কারো আশঙ্কা এখন হয়ত তেমন কিছু হবে না কারণ মাঠে সেনাবাহিনী সক্রিয় আছে। কিন্তু পুরো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে এই সেক্টরে দেখা দিবে ভয়াবহ দখলের প্রতিযোগিতা। অন্যদিকে গণমাধ্যমে আরেকটি খবর সবাইকে আলোড়িত করে। সে-টি হলো আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পরপরই বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়ন। দখল, চাঁদাবাজির নানান অভিযোগের পর এবার ইসলামী ব্যাংক দখলেরও চেষ্টা করেছেন তিনি। এত্তোসব নেতিবাচক ঘটনার পর কারো কারো মতে, বিএনপি আসলে বদলে যেতে পারছে না বা বদলানোর মেকানিজমকে খাপ খাওয়াতে পারছে না দীর্ঘনের নেতিবাচক রাজনীতিতে অভ্যস্থ হয়ে যাওয়ার কারণে।
শেষ কথা ও মেজর হাফিজের সর্তকবাণী
ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই সতর্ক বিএনপি। সারাদেশে সংঘটিত নানা নৈরাজ্য, হামলা-ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, দখল, চাঁদাবাজির ঘটনা থেকে দলকে দূরে রাখতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছেন শীর্ষ নেতারা। ঘোষণা দিয়েছে নৈরাজ্যকারীদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স। এমন খবর বেরিয়েছে সারাদেশে থানা-উপজেলা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন পর্যায়ে রাতদিন বসিয়েছেন পাহারা। যারাই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত হবেন, তাদের বিরুদ্ধেই নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। বাস্তবে ভিন্ন চিত্রই বিরাজ করছে বলেই জানা গেছে। মাঠ চষে দেখা গেছে বাস্তবে ভিন্ন চিত্র আসছে প্রতিনিয়ত। রাজনৈকিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এক ভিন্ন আবহ তৈরি হয়েছে। পুরো দেশে একটা নতুন স্বাধীনতা পাওয়ার বিপ্লবী পরিস্থিতি বিরাজ সকরছে। আর এর পেছনে সাধারণ ছাত্র-জনতার ভূমিকা বেশি। অকাতরে বুকে পেতে দিতে প্রায় একহাজার জনের প্রাণহানি দেখেছে জাতি। আরোও হয়তো প্রাণহানি সংহিসতা দেখতো হতো যদি না এমন ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জনগণের কাতারে সাহস করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যোগ না দিতো। কেননা একেবারে মারাত্মক বিপর্যয়কর বলা হয় চরম হতাশাজনক পরিস্থিতিতে পাশে থেকে এক আসাধারণ ভূমিকা রেখেছে সেনাবাহিনী। এমন সিভিল-মিলিটারি সম্মিলনের কারণে তৈরি হওয়া বিজয় বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম একে এখন দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধ বলে অভিহিত করছে। এমন বিপ্লবী পরিস্থিতিতে বিএনপি তার অঙ্গসংগঠনগুলি নিজেদের পাশাপাশি সদ্য গদিচ্যুত আওয়ামী লীগের অতীতের মত আচরণ শুরু করে তাহলে ফলাফল কি হবে তা নিয়ে সন্দিহান অনেকে। কারো কারো মতে, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে তার করুণ পরিণতি পেতে দলটিকে (বিএনপি) ১৭ বছর অপেক্ষা করতে হবে না। তার কিছু নমুন মাঠে প্রকাশ পাচ্ছে। সম্প্রতি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যদের হাতে ছাত্রলীগের এক নেতা ও তার সঙ্গে থাকা ছাত্রদলের আরেক কর্মীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টির ভিন্ন প্রেক্ষাপট হলেও ধরে নেয়া যায় যে, ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বিজয়ের পরও কোনো দলের আচার আচরণ বা স্বভাবে না বদলানোর চিত্র ফুটে উঠলে সেই পরিস্থিতি কারো অনুকূলেই থাকবে না- এমনটাই মনে করেন পর্যবেক্ষকমহল। একারণেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুতি ও দেশত্যাগের পর ক্ষমতার পটপরিবর্তনে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে যে দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে তা নিয়ে বক্তব্য দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ (বীর বিক্রম)। এ বিষয়ের দিকে ইঙ্গিত করে বলা চলে ভবিষ্যতের মারাত্মক পরিণতির আশঙ্কা থেকেই তিনি বলেছেন, ‘দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বলেছি, যেদিন নির্বাচন হবে বিএনপি (সেদিন) ক্ষমতায় যাবে। কিন্তু আমরা যেন আওয়ামী লীগ না হই। আমাদের দলের কেউ কোনো চাঁদাবাজি, দখলবাজি বা কোনো দুর্নীতি করতে পারবে না। ক্ষমতায় গিয়েও নয়, এখনো নয়।’