১৪ ডিসেম্বর ২০১২, শনিবার, ০৪:৫২:৩৪ পূর্বাহ্ন


ট্রাম্পসহ সকল ইস্যুতে ব্যর্থ আওয়ামী লীগ
মাসউদুর রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-১১-২০২৪
ট্রাম্পসহ সকল ইস্যুতে ব্যর্থ আওয়ামী লীগ ডোনাল্ড ট্রাম্পের সাথে শেখ হাসিনা


আওয়ামী লীগকে মোটামুটিভাবে নিস্ক্রিয় করতে সমার্থ হয়েছে অন্তর্বর্তীকালীর সরকার। পাঁচ আগস্ট ছাত্র জনতায় গণ অভ্যুত্থানের পর আওয়ামী লীগ প্রথমবার নিস্তব্ধ হয়। ৪ আগস্ট দলের অন্তত পৌনে দুইশ শীর্ষ নেতা ও নীতিনির্ধারক দেশ ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ৫ আগস্ট শেখ হাসিনাও ক্ষমতা ছেড়ে পালিয়েছেন। দীর্ঘ ১৬ বছর স্বৈরাচারী শাসনমুক্ত হওয়ার বিজয়োল্লাস করে বাংলাদেশের সর্বস্তরের জনতা। 

কিন্তু আওয়ামী লীগ দমে যায়নি তখনও। শুরু হয়, পেছনে থেকে বিভিন্ন কার্ড খেলার মহড়া। যার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকারকে অশান্ত করে ব্যর্থ হিসেবে প্রমাণ করা যায়। এ ক্ষেত্রে কোনোরকম হোমওয়ার্ক ছাড়াই শুরু তাদের মিশন। দেশে শেখ হাসিনার ফিরে আসা, চট করে ঢুকে পড়া এবং নেতাকর্মী বিভিন্নভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট- বিবৃতিতে আবারও সরব হতে থাকে দলটি। সাথে সাথে দেশে অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থির করতে বিভিন্ন কার্ড খেলা শুরু করে। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিটা আওয়ামী কার্ড অত্যন্ত কৌশলের সাথে প্রতিহত করে।

অন্তর্বর্তী সরকারকে অস্থিতিশীলকরণ কার্ড 

ডাকাতি ডাকাতি কার্ডটা বেশ ভালই প্রভাব ফেলে সাধারণ মানুষের মধ্যে। পুলিশের অনুপস্থিতিতে এটা জমে ওঠে। মানুষ পর্যালোচনা না করেই বিশ্বাস করতে থাকেন। দেশের প্রায় সর্বত্র পাহারা বসানো হয়। শেষাব্দি ওই কার্ড ভেস্তে যায়। এরপরে কার্ড খেলেছিল তারা বিচারপতিদের নিয়ে। ১০ আগস্ট তৎকালীন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান সদ্য গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে আলোচনা না করেই গোপনে ফুলকোর্ট সভা ডেকেছিলেন। ভার্চুয়ালি এ সভা হওয়ার কথা ছিল। সভা ডাকার খবরে ওইদিনই সকালে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক এবং সদ্যগঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, “ফ্যাসিবাদের মদদপুষ্ট ও নানা অপকর্মে জড়িত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সরকারের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা না করে ফুল কোর্ট মিটিং ডেকেছেন। পরাজিত শক্তির কোনো প্রকার ষড়যন্ত্র বরদাশত করা হবে না।” সেখানে তাদের প্লান ছিল অন্তর্বর্তী সরকার কোনো রকম আইনের তোয়াক্কা না করে সংবিধানবহির্ভূতভাবে সরকার গঠন করেছে। এটা সম্পূর্ণ অবৈধ ঘোষণা করা। ফুল কোর্ট এ ঘোষণা দিলে কার্যত অচলাবস্থা তৈরি হয়ে যেত অন্তর্বর্তী সরকারের। পরের পরিস্থিতি কী হতো সেটা ছিল ভয়ানক। হয়তো সুযোগটা কাজে লাগিয়ে আওয়ামী লীগ মাঠে নামলে শেখ হাসিনার সাজানো প্রশাসন তাদের সহায়তা দিলে আরো একটি রক্তক্ষয়ী ঘটনা ঘটেও যেতে পারতো। যার ফল যেতে পারতো অনেক দূরে। 

কিন্তু আসিফ মাহমুদের পোস্টের পর ৯টা ১৪ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আবদুল হান্নান মাসুদ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে একই কথা লিখে হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের ঘোষণা দেন। এর পর ফেসবুকে লাইভে এসে সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ‘জুডিশিয়ারি ক্যু’ রুখে দিতে হাইকোর্ট ঘেরাওয়ের আহ্বান জানান।

এসব পোস্ট থেকেই সামনে আসতে থাকে সদ্যপদত্যাগী প্রধান বিচারপতির ‘জুডিশিয়ারি ক্যু’-এর পরিকল্পনার কথা। অবশেষে বিস্তারিত পরিকল্পনাই ফাঁস হয়ে যায়।

পরে জানা গেছে, পরিকল্পনা অনুযায়ী সাবেক প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে জুডিশিয়াল ক্যু করার কথা ছিল। ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় এবং ওই সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত ছিলেন এ ষড়যন্ত্রের পেছনে। 

এরপর সচিবালয়ে ব্যাপক সরগরমের চেষ্টা চলে শেখ হাসিনার সাজানো দীর্ঘ ১৬ বছরের প্রশাসন ক্ষেত্র আওয়ামী লীগপন্থী সচিবদের দিয়ে। তারা সরগরমের চেষ্টা করলেও সেটাও দমন করে অন্তর্বর্তী সরকার। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আনসারগণ। এটাও বেশ সরগরম ফেলেছিল। কিন্তু কাজ হয়নি। 

এরপর চেষ্টা চলে গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল দিয়ে। শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরাতে গোপালগঞ্জের স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে। পুলিশের পর সেনাবাহিনী তাদেরকে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ মিছিল করতে বললে চড়াও হন তারা সেনাবাহিনীর উপর। আক্রমণ করেন। এতে সেনা সদস্যগণ আহত হন। রক্ত ঝড়ে। সেনাবাহিনীর গাড়ি পুড়িয়ে দিয়ে দেশব্যাপী একটা অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা করেন, ম্যাসেজ দেন। পরক্ষণে শুরু সেনা অ্যাকশন। রাতভর ও দিনেও ওই অ্যাকশনে বিপুল সেনা সদস্য অংশ নিলে পরিস্থিতি কন্ট্রোলে সমার্থ হন তারা। কিছু কিছু অ্যাকশন চিত্র ম্যাসেজ দেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও ছড়িয়ে দেয়া হয়। এতে দেখা যায় ব্যাপক মারধর, তথা পেটানোর দৃশ্য যারা সেনা সদস্যের গায়ে হাত ও গাড়ি পুড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। এরপর থেকে বহু স্থানে আওয়ামী নেতাকর্মীদের জাগ্রত হওয়ার বাসনা চুপসে যায়। 

এরপর পাহাড়ে অশান্তি। চট্টগ্রামে ওই অশান্ত পরিস্থিতিও ব্যাপক হয়। পাহাড় ছেড়ে দিতে হবে আদিবাসীদের জন্য- এমন দাবি। এমনকি সেনাবাহিনীও সরিয়ে নিতে হবে পাহাড় থেকে, এ দাবি ওঠে সেখানে। ওই ঘটনাও আওয়ামী লীগের আরেকটি কার্ড। সেখানে পুলিশের সঙ্গে সেনাসদস্যের বিরোধ তৈরির চেষ্টা চললেও সেনা সদস্যরা নিয়ন্ত্রণ করে। এরপর সংখ্যালঘু কার্ড। এটাও চলে ব্যাপক আকারে। এখনও বিদ্যমান। এর মধ্যে সাভার গাজীপুর অঞ্চলে গার্মেন্টস কর্মীদের উত্তপ্ত করে দেয়া হয়। ব্যাপক আন্দোলন এ সেক্টরে। অনেক চেষ্টা করে দীর্ঘদিন ধরে চলা সে আন্দোলনও অন্তর্বর্তী সরকার মুন্সিয়ানার ছাপ রেখে চুকিয়ে ফেলে। এখন গার্মেন্টস সেক্টরে শান্তি বিরাজ করছে। 

সনাতনিরা সংখ্যালঘুর উপর আক্রমণ হয়েছে, তাদের বাড়ি-ঘরে আক্রান্ত হয়েছে এমন ব্যাপক প্রচার পার্শ্ববর্তী একটি দেশ থেকে ব্যাপক হারে প্রচার করা হয় দীর্ঘদিন ধরে। এরই মধ্যে পূজায় মন্দিরে মন্দিরে আক্রমণ হতে পারে এবং সে সুবাদে বড় ধরনের একটা প্রেসার চলে আসতে পারে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে বিশেষ করে সনাতনী বা হিন্দুদের রক্ষায়- এমন গুজবও ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দেশে থাকা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করার পাঁয়তারা চলে। সেটাও শেষ পর্যন্ত ভেস্তে যায়। মিডিয়া এ ব্যাপারে সঠিক চিত্র প্রদর্শন করে। এমনকি মন্দির পাহারায় মাদ্রাসা ছাত্ররা পর্যন্ত এগিয়ে আসে এবং পাহারা দেয়ার চিত্র প্রকাশ পেলে এখানেও সচেতন জনগণ কোনো অপ্রীতিকর পরিস্থিতি হতে দেয়নি। আইনশৃংখলাবাহিনীও বারবার রিমাইন্ডার দিয়ে পরিস্থিতি কন্ট্রোল করে। 

সর্বশেষ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প বিজয়ী হন, তাহলে বাংলাদেশে ইউনূস সরকারের নাভিশ্বাস উঠানো হবে বলে ব্যাপক প্রচার প্রচারণা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও কতিপয় চিহ্নিত বুদ্ধিজীবীর। এর কারণ ড. ইউনূস ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সাপোর্টার এবং সেটা তিনি প্রকাশ্যেই করেছেন বিগত সময়ে। আর ডোনাল্ড ট্রাম্প স্বাভাবিকভাবেই প্রফেসর ইউনূসের বিপক্ষে। তাছাড়া রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটিকের মধ্যে একটা বড় প্রতিযোগিতাও যেখানে বিদ্যমান। শেখ হাসিনা ও তার পূত্র সজীব ওয়াজেদ জয় মূলত রিপাবলিকানদের সাপোর্টার। সেটাও তারা বিভিন্নভাবে প্রকাশ করে গেছেন। 

ফলে আমেরিকায় রিপাবলিক্যানদের জয় মানেই শেখ হাসিনার আশা বেড়ে যাওয়া। তাছাড়া শেখ হাসিনার নির্বাসিত হওয়া দেশ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের ব্যাক্তিগত একটা বন্ধুত্ব আগ থেকেই। সব মিলিয়ে ট্রাম্প বিজয়ী হলে শেখ হাসিনার নানা কারণেই আশায় বুক বাধার কারণ হয়ে ওঠার স্বপ্নে বিভোর ছিল দেশ বিদেশে অবস্থানরত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। 

ট্রাম্পের বিজয় উপলক্ষে একটা গণজমায়েত করারও পরিকল্পনা ছড়িয়ে দেয়া হয়েছিল গুলিস্তানের জিরো পয়েন্ট কেন্দ্র করে। প্লান ছিল ট্রাম্পের ছবি নিয়ে মিছিল করে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সেখানে জড়ো হয়ে মিছিল করবেন। যার দৃশ্যমান উদ্দেশ্য ট্রাম্পকে আকর্ষণ করা, যে বাংলাদেশের জনগণ তাকে ভালবাসে। আওয়ামী লীগ তাকে ভালবাসে তার বিজয়ে তারা আনন্দ মিছিল করেছে। অন্যদিকে এর মাধ্যমে প্রকাশ্যে আওয়ামী লীগ মাঠে নামার একটা উপলক্ষ্যও খুঁজে পাওয়া। আর যদি ট্রাম্প ছবি সম্বলিত পোস্টার ও মানুষের উপর আইনশৃখলাবাহিনী বা ছাত্র জনতা হামলা করে তাহলে সেটা দিয়ে ট্রাম্পকে বুঝানো যাবে তাকে অপমানিত করা হয়েছে। তার সাপোর্টারদের উপর বাইডেনের বা ডেমোক্র্যাট দলের সাপোর্টার ইউনূস ও তার সাঙ্গপাঙরা আক্রমণ করেছে। 

কিন্তু ছাত্রজনতা আগের দিন রাত থেকে পাহাড়া বসানোর পাশাপাশি প্রতিটি স্থানে আইনশৃংখলাবাহিনী ও সাধারণ মানুষও সজাগ থাকার কারণে ওই প্রোগ্রাম সম্পূর্ণরূপে ভেস্তে যায়। দু’চারজন ট্রাম্পের ছবি প্রিন্ট করে যাত্রা শুরুর চেষ্টা করলেও তাদের আটক করে সাধারণ মানুষ। এবং পুলিশের কাছে হস্তান্তর করলে ওই যাত্রা ভেস্তে যায়।

যেভাবে সম্পূর্ণরূুপে দমন আওয়ামী লীগ 

অন্তর্বর্তী সরকারের আড়াইমাসের মধ্যে এসব কার্যকলাপ করে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তায় রাখে অন্তর্বর্তী সরকারকে। বারবার এ ব্যাপারে ভারতকেও উদ্বেগের কথা জানায় তারা। কারণ শেখ হাসিনা ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। সেখানে বসে শেখ হাসিনা বিভিন্নভাবে ফোনকল রেকর্ড করে বিভিন্ন নির্দেশনা ছড়িয়ে দিতে থাকেন। বক্তব্য দেন। এটা যাতে না হয় এজন্য ভারতের প্রতি আহ্বান জানায় অন্তর্বর্তী। কিন্তু সেটা খুব একটা কাজ করেনি। শেষ পর্যন্ত ভারতই আওয়ামী লীগের সব পরিকল্পনায় পানি ঢেলে দিয়েছে।

গত ৭ নভেম্বর নয়াদিল্লিতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মুখপাত্র রণধীর জয়সোয়াল ক্লিয়ার করেন সবকিছু। রণধীর বলেন, “আমরা বারবার বলেছি যে তিনি (শেখ হাসিনা) বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। এ বিষয়ে আমাদের অবস্থান এটাই।” ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক উল্লেখ করেন যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় তাকে শুভেচ্ছায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ যে বার্তা দিয়েছে, সেখানে শেখ হাসিনাকে ‘বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী’ বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তিনি ভারতের মন্তব্য জানতে চাইলে জয়সোয়াল ওই উত্তর (শেখ হাসিনা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী) দেন। 

ভারতের এমন প্রকাশ্যে মন্তব্যে আওয়ামী লীগ কার্যত শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানো বা পাল্টা বিপ্লব করার যে শক্তি সাহস তা হারিয়ে ফেলে। এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ প্রতিটা স্থানেই নিশ্চুপ হয়ে পরে। ভারতের ওই বক্তব্যে দু’চারজন যে শীর্ষ নেতা মাঝে মধ্যে বক্তব্যও প্রচার করতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও সেটা থেমে যায়। কারণ আওয়ামী লীগ আশা করেছিল শেখ হাসিনা সংবিধানের দোহাই দিয়ে এখনও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিদ্যমান এটা প্রচার করে ইউনূস সরকার সম্পুর্ন অবৈধ এটা প্রচার করা। 

পরিশেষে 

প্রকাশ্যে ভারতই যখন বলে দিয়েছে যে, শেখ হাসিনা সাবেক প্রধানমন্ত্রী, তখন শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশ সরকারে পুনর্বহালের সকল চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ট্রাম্প বিজয়ী হয়েছেন ঠিক আছে, তার সামনে এখন গোটা বিশ্বে বিদ্যমান বহু ইস্যু। সেগুলো সামাল দেয়াও তার চ্যালেঞ্জ। এরসঙ্গে বহু প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি বিভিন্ন দেশ থেকে আমেরিকায় আসা বিভিন্ন জাতি গোষ্ঠীর মানুষকে, যারা ছিলেন তার ভোটার। সেগুলো নিয়েও তার কাজ করতে হবে, প্রশাসনিক চ্যালেঞ্জের বাইরেও। ফলে শেখ হাসিনাকে পুনর্বহাল বা যেখানে প্রফেসর ইউনুসের মত বিশ্ব নন্দিত মানুষকে ঠেলে সে চিন্তাভবনা ও তার দেশের নীতির বাইরে যেয়ে- এটা তার জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা চিন্তার বিষয়। ভারতের আগ্রহ থাকলে তিনি কিছু চিন্তা হয়তো করতেন। কিন্তু প্রফেসর ইউনূস তো আর সাধারণ মানের কোনো মানুষ নন। তারও সার্কেল বিশ্বের পরাশক্তিধর দেশের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে। চাইলেই ঠেলে দেয়া সম্ভব না একেবারে। এখানে বহু চিন্তাভাবনা ও আমেরিকার নীতিরীতির ব্যাপার রয়েছে। 

শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় বহু নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ছাত্র জনতা হত্যার মামলা। আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে সে মামলার বিচারকার্য দ্রুত সম্পন্ন করনের চেষ্টা বিদ্যমান। ফলে এমতাবস্থায় ওই বিচারকার্য কী হবে সেটা নিয়ে উদ্বিগ্ন আওয়ামী লীগ। এ খবরটা ট্রাম্পের কাছেও আছে। ফলে আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে আবার সক্রিয় রাজনীতিতে ফেরা, রাজনীতি করে নির্বাচনে অংশ নিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া- সেটা বহুদূরের স্বপ্ন। ততক্ষণ কতটুকু ধৈর্য্য তারা রাখবেন সেটাই এখন প্রশ্ন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। 

শেয়ার করুন