সাউথ ক্যারোলিনার রিচল্যান্ড কাউন্টির কলাম্বিয়ায় মুহাম্মদ মসজিদের দেওয়ালে গত ২২ নভেম্বর বিদ্বেষমূলক নাৎসি স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা এবং মসজিদ ভাঙচুরের একটি ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় স্থানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ে গভীর উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে। মসজিদের দেওয়ালে লাল রঙের ক্রস এবং ‘গেট আউট’ বার্তা স্প্রে পেইন্ট করা হয়েছে। এছাড়া বাইরের ফুটপাতে একটি অশুদ্ধ নাৎসি স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা হয়েছে। রিচল্যান্ড কাউন্টি ডেপুটিরা জানিয়েছেন যে, ২২ নভেম্বর শুক্রবার সকালে মসজিদে ভাঙচুরের রিপোর্ট পেয়ে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। সকাল ১০টার দিকে ফারো রোডে অবস্থিত মসজিদে গিয়ে তারা দেওয়ালে একাধিক বিদ্বেষমূলক প্রতীক ও বার্তা দেখতে পান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তদন্ত শুরু হয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী দোষীদের শনাক্ত করতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় কমিউনিটিকেও যে কোনো তথ্য দিয়ে সাহায্যের জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই ঘটনার পর রিচল্যান্ড কাউন্টি শেরিফ ডিপার্টমেন্ট স্থানীয় মসজিদ ও সিনাগগুলোকে সতর্ক করেছে এবং ধর্মীয় উপাসনালয়গুলোর নিরাপত্তা বাড়ানোর অংশ হিসেবে টহল জোরদারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। কর্তৃপক্ষ বলেছে, সব উপাসক এবং কমিউনিটির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মুসলিম নাগরিক অধিকার ও অ্যাডভোকেসি সংগঠন কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনস এই ঘটনাটিকে তীব্রভাবে নিন্দা জানিয়েছে এবং এটি একটি সম্ভাব্য ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে তদন্তের জন্য অঙ্গরাজ্য ও ফেডারেল আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
কেয়ারের ন্যাশনাল কমিউনিকেশন ডিরেক্টর ইব্রাহিম হুপার দেশকে বলেন, আমরা যে কোনো উপাসনালয়ে হামলার ঘটনাকে তীব্রভাবে নিন্দা জানাই এবং দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানাই। এই উদ্বেগজনক ঘটনাটি অবশ্যই একটি সম্ভাব্য ঘৃণ্য অপরাধ হিসেবে তদন্ত করতে হবে। তিনি আরো বলেন, আমরা বর্তমানে জাতীয়ভাবে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়গুলোর বিরুদ্ধে বিদ্বেষের উত্থান প্রত্যক্ষ করছি। রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতাদের উচিত এই ঘৃণ্যমূলক ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে কণ্ঠস্বর তোলা।
এই ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যে কোনো তথ্য সরবরাহ করার জন্য কর্তৃপক্ষ জনগণের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে। রিচল্যান্ড কাউন্টি শেরিফ ডিপার্টমেন্টে (৮০৩) ৫৭৬-৩০০০ নম্বরে যোগাযোগ করা যেতে পারে অথবা ক্রাইমস্টপার্সে ১-৮৮৮-ক্রাইম-এসসি নম্বরে গোপনীয়ভাবে তথ্য প্রদান করা যেতে পারে।
এ বিদ্বেষমূলক ভাঙচুরের ঘটনা শুধু মুহাম্মদ মসজিদ বা স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য নয়, বরং সব ধর্মীয় ও নৃ-তাত্ত্বিক সংখ্যালঘুদের জন্য একটি গুরুতর সতর্কবার্তা। এ ধরনের কার্যকলাপ সমাজে বিভাজন তৈরি করে এবং শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ভিত্তি দুর্বল করে। এ ঘটনার দোষীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা এবং ভবিষ্যতে এমন বিদ্বেষমূলক ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধ করা অত্যন্ত জরুরি। একই সঙ্গে, কমিউনিটির সব সদস্যকে একসঙ্গে কাজ করে ঘৃণার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং সব ধর্ম ও সম্প্রদায়ের প্রতি পারস্পরিক সম্মান ও সমর্থনের বার্তা দিতে হবে।