৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:৩২:১৪ পূর্বাহ্ন


ভার্চ্যুয়াল সভায় শেখ হাসিনা
অবৈধ ক্ষমতা দখলের দায়ে বিচার হবে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-১২-২০২৪
অবৈধ ক্ষমতা দখলের দায়ে বিচার হবে শেখ হাসিনা (ফাইল ছবি)


নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ বিজয় দিবস পালন উপলক্ষে গত ১ ডিসেম্বর ওজনপার্কের লাবান্য রেস্টুরেন্টে অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এটাই ছিল দেশ ছাড়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ভার্চ্যুয়াল জনসভায় ভাষণ। এর আগে অবশ্য তিনি দলের নেতাকর্মীদের সাথে টেলিফোনে কথা বলেছেন। কোন সভা অথবা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেননি।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী তার বক্তব্যে বলেন, অবৈধ ক্ষমতা দখলদারদের বিচার একদিন বাংলাদেশের মাটিতে হবে। গত ৫ আগসট আমাকে এবং আমার বোন শেখ রেহানাকে হত্যা করার পরিকল্পনা ছিলো। ঐ সময় বাংলাদেশে গণ হত্যা হয়েছিলো। সেই গণহত্যার জন্য আমাকে দায়ী করা হচ্ছে। আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই- এই গণহত্যা চালিয়েছে ড. ইউনূস, তার মাস্টার মাইন্ড এবং সমন্বয়করা। দেশের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে আরাজকতা ও নৈরাজ্যে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ। দেশকে বাঁচাতে হবে। জিনিস পত্রের দাম ক্রয় ক্ষমতার বাইরে। তিনি বলেন, দেশে অগ্নিসংযোগ, লুটপাট হচ্ছে। দুর্বাত্তায়ণ হচ্ছে। ইউনুস সরকার ক্ষমতা দখল করে দেশকে ধ্বংস করেছে। তিনি বলেন, যারা অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে ইনশাল্লাহ দেশের মাটিতে একদিন তাদের বিচার হবে। শেখ হাসিনা বলেন, তারা আবু সাঈদ ও মুগ্ণকে হত্যা করেছে। আবু সাঈদের হত্যাকান্ডের ভিডিও দেখলেই তা প্রমাণ হবে। ঐ পরিস্থিতিতে আমি চাইনি দেশে লাশের পর লাশ পড়ুক। তাই চলে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। কোটা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা কোটা প্রথা বাতিল করেছিলাম। সে কোটার পক্ষে কোর্ট রায় দিল। আমরা আপিল করলাম। রায় স্থগিত হলো। সে কোটা ২০১১ সাল থেকে বন্ধ হয়ে যায়। আমরা তাদের সব দাবি মেনে নিলাম। তাপরপরেও এক দফা দাবি। আমাকে পদত্যাগ করতে হবে। তিনি বলেন, একজন সমন্বয়ক বলেছে পুলিশ হত্যা করা না হলে তাদের বিপ্লব স্বার্থক হতো না। তারা পুলিশকে হত্যা করলো, ইস্কনের নেতার উপর হামলা হলো, একজন আইনজীবীকে পিটিয়ে হত্যা করলো। কারণ সে ইস্কনের নেতার জন্য দাঁড়িয়েছিলো। এর কোন বিচার নেই। সব দোষ আওয়ামী লীগের। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, গুলিবিদ্ধ আবু সাঈদকে কেন হাসপাতালে নেয়া হয়নি? যে বন্দুক দিয়ে আবু সাঈদকে হত্যা করা হয় সে বন্দুকের গুলি ছিল বিশেষ ধরনের। একজন উপদেষ্টা তা বলেছেন। এর পর তাকে বদলী করা হয়। তিনি বলেন ,এ বুলেট কোথা থেকে এলো। তিনি এর জন্য জামায়াত-শিবিরকে দায়ী করেন। আয়না ঘর প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কোন আয়না ঘর ছিল না। এখন সারা বাংলাদেশ আয়না ঘর। দেশে ২ মাসে ২ হাজার নারী নির্যাতনের শিকার হয়েছে, ৩০ হাজারের মত মামলা হয়েছে। পুলিশ নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, সেতু ভবন মেট্রোরেল ধ্বংস করা হয়েছে। শেখ হাসিনা বলেন, আসিফ নজরুল বলেছিল ২৬ লক্ষ ভারতীয়কে চাকরি দেয়া হয়েছিল। তা হলে ২৬ লক্ষকে বের করে বেকার যুবকদের কেন চাকরি দেয়া হচ্ছে না। মানুষকে কেন বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। গত ২ মাসে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের বিরুদ্ধে গণহারে মামলা করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার মামলায় এখন সবাই খালাস। অথচ এটা ছিলো পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। 

বিজয় দিবস অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি রফিকুর রহমান রফিক। বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, সহ-সভাপতি ডাক্তার মাসুদুল হাছান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এমদাদ চৌধুরী। অনুষ্ঠানের শুরুতেই দেশাত্মবোধক গান পরিবেশন করেন রথীন্দ্রনাথ রায়, কৃষ্ণাতিথি ও রাজীব। আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠান আরম্ভ হওয়ার পুর্বে স্বাধীনতা যুদ্ধে সকল বীর শহীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ, যুবলীগসহ সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন