তাহসান খান। দেশের জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী এবং অভিনেতা। সম্প্রতি তিনি বিয়ের বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। পাশাপাশি নতুন একটি গানও প্রকাশ করেছেন। ব্যক্তিগত জীবন এবং সঙ্গীতজীবন নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আলমগীর কবির
প্রশ্ন: বিয়ের পর প্রথমবার আপনার সঙ্গে কথা হচ্ছে। এ খবরটা চমকের মতো করে সামনে আনার কারণ কি?
তাহসান: আমি খুব সাধারণ একজন মানুষ। বিয়ে জীবনের একটা অংশ। যেহেতু আমি বিয়ে করেছি, সেহেতু এটি সবাইকে জানানোর প্রয়োজন ছিল। তবে আমি কিছু বেশি বলার জায়গায় নেই। এর বাইরে, একজন সাধারণ তাহসান যে বিয়ে করেছে, সেটি নিয়েই এখানে আছি। আর চমকের কথা যে বলছেন এটা বোধয় ঠিক না। কারণ আপনি যখনই শোনতেন বিষয়টি চমকই মনে হতো। কেউ কিন্তু কারো ব্যক্তিগত সব বিষয় অন্যকে বলে দেয় না। এ জন্যই বললাম এটাকে চমক হিসাবে না ভেবে সাধারণ ঘটনা ভাবলে খুশি হবে।
প্রশ্ন: স্ত্রীর বিষয়ে এমন কিছু আছে যা আপনার বিশেষ ভালো লাগে?
তাহসান: আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করি কারণ আমি রোজার মতো একজন মানুষকে পেয়েছি। আমরা কেন বিয়ে করেছি বা কেন একে অপরকে ভালোবাসি, এটা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। তবে আমি বলতে পারি, এই অনুভূতি অসাধারণ।
প্রশ্ন: আপনি একটি সংবাদ সম্মেলনে বিয়ের অনুভূতি নিয়ে কথা বলতে চেয়ে ছিলেন। এ বিষয়ে কে এখন কিছু বলা যায়?
তাহসান: দেখেন আমি কিন্তু অন্য আট-দশজনের মতো সাধারণ মানুষ। চলাফেরায় আমি সব সময় সেভাবেই সব কিছু উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। কিন্তু আপনারাই আবার আমাকে তারকা হিসাবে ট্রিট করেন। এখন একটি বিষয় যদি ফান করে বলি, সেটাকে সিরিয়াসভাবে আপনারা উপস্থাপন করবেন। কারণ হলো গায়ক তাহসান বলেছে! একারণেই বিয়ের অনুভূতির প্রশ্নে বলেছিলাম, আমি যেভাবে মজা করে এই প্রশ্নের উত্তর দিতে চাইছিলাম, সেটি এখানে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের দেশে রসবোধ সবাই একভাবে নেন না। আমরা জাতিগতভাবে একটু বেশি বিচার-বিশ্লেষণ করি, চুলচেরা বিশ্লেষণ করি। তবে এই অনুভূতি সত্যিই অসাধারণ। এখনও আমি সেটাই বলব বিয়ের অনুভূতি অসাধারণ।
প্রশ্ন: সামাজিক মাধ্যমে আপনার বিয়ে নিয়ে নানা প্রশ্ন এসেছে, কী বলবেন?
তাহসান: আমি জানি, সামাজিক মাধ্যমে অনেক আলোচনা হয়েছে, কিন্তু আমি আনন্দিত যে শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা পাচ্ছি। সব দেশেই নেতিবাচক মন্তব্য থাকে, তবে আমাদের দেশে একটু বেশি চর্চা হয়। আমার কাজ হলো গান করা, আমি গান ক’রে যাব।
প্রশ্ন: বিয়ের পর আপনি কীভাবে সময় কাটাচ্ছেন?
তাহসান: (হেসে) এখন তো আমরা মালদ্বীপে হানিমুনে যাচ্ছি, সেখানে কিছু সময় কাটাবো। তবে আমার মূল লক্ষ্য হলো নিজের কাজ চালিয়ে যাওয়া, গান গাওয়ার মধ্যেই থাকব।
প্রশ্ন: নতুন বছরের শুরুতে নতুন গান ‘একা ঘর আমার’ প্রকাশ করেছেন, এর পেছনে কী ভাবনা ছিল?
তাহসান: প্রতিবছরই আমি কাজের পরিকল্পনা করি। গতবছরে আমি দুটি গান করেছিলাম, তবে এ বছর অনেক বেশি গান করার পরিকল্পনা রয়েছে। বছরের প্রথম মাসেই চারটি গান করেছি, আর এর মধ্যে শুরুটা করেছি ‘একা ঘর আমার’ দিয়ে। গানটি প্রেমের এমন এক দিক নিয়ে, যেখানে কষ্টের বিষয়টি উঠে এসেছে। মানুষ যখন কারো প্রেমে পড়ে, অনেক প্রত্যাশা থাকে, কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ না হলে কষ্ট হয় এবং তখন অনেক বড় ভুল হয়ে যায়। এই অনুভূতি থেকেই গানটির সুর এবং কথা তৈরি হয়েছে।
প্রশ্ন: আপনি কি বার্তা দিতে চাচ্ছেন এই গানটির মাধ্যমে?
তাহসান: কখনো কখনো এমন হয়, আপনি যাকে ভালোবাসেন, সেই মানুষটি আপনাকে কষ্ট দেয়। সেই কষ্ট আপনি দীর্ঘদিন ধরে পুষে রাখেন। কিন্তু ভালোবাসা থেকে কখনও মুখ ফেরাতে পারছেন না। আপনি কষ্টে চুরমার হয়ে যাচ্ছেন, আবার ভালোবাসাও অটুট থাকে। এমন এক অনুভূতির জায়গা থেকেই ‘একা ঘর আমার’ গানটি লেখা এবং সুর করা হয়েছে।
প্রশ্ন: গানটির সুর এবং পরিবেশনা নিয়ে কিছু বলতে চান?
তাহসান: অবশ্যই এ বিষয়ে কিছু বলার আছে। গানটির সুরে একটি নির্জনতা, একাকিত্বের অনুভূতি ফুটে উঠেছে, যেখানে ভালোবাসার মাঝে কষ্টও রয়েছে। এটি একটি গভীর অনুভূতির গান, যা শ্রোতাদের হৃদয়ে অনেক কিছু ছুঁয়ে যাবে।