৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:১৫:১২ অপরাহ্ন


বিপদগ্রস্তদের পাশে শাহানা হানিফ ও বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৫-০২-২০২৫
বিপদগ্রস্তদের পাশে শাহানা হানিফ ও বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির কর্মকর্তারা ও সাহানা হানিফ


প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি ক্ষমতা গ্রহণ করেছেন। ক্ষমতা গ্রহণ করেই তিনি একের পর এক অভিবাসীবিরোধী আইনে স্বাক্ষর করে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যেই প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশ অনুযায়ী, পুরো আমেরিকায় অবৈধ অভিবাসীদের গ্রেফতার এবং ডিপোর্ট করা হচ্ছে। বিশেষ করে নিউইয়র্কসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত এলাকা এবং স্টেটগুলোতেও অভিযান চলছে। ইতিমধ্যে দুই বাংলাদেশিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে গত ২৩ জানুয়ারি থেকে ১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মোট ৯ হাজার ২৬০ জন নথিবিহীন অভিবাসীকে গ্রেফতার করেছে দেশটির অভিবাসন ও কাস্টমস বিষয়ক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই)। মূলত এই কয়েকদিনে গ্রেফতারদের মধ্যে ৫ হাজার ৭৬৩ জনকে জেলে রাখা হয়েছে। দ্রুতই তাদের নিজ নিজ দেশ কিংবা কিউবার গুয়ান্তানামো কারাগারে পাঠানো হবে। গত শনিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে পোস্ট করা বার্তায় তথ্যটি জানিয়েছে আইসিই।

নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের নিউইয়র্ক সিটি, ইলিনয়েস অঙ্গরাজ্যের শিকাগো এবং ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের বোস্টন শহরে অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয়েছে নথিবিহীন এ অভিবাসীদের। গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অনেকের বিরুদ্ধেই ধর্ষণ, অপ্রাপ্ত বয়স্কদের প্রতি যৌন সহিংসতা, বন্দুক ও মাদকসংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগ রয়েছে বলে শনিবারের এক্স বার্তায় জানিয়েছে আইসিই। ২০২৪ সালের নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় রিপাবলিকান দলের প্রার্থী ও সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছিলেন, ক্ষমতায় গেলে যুক্তরাষ্ট্রকে অবৈধ অভিবাসীমুক্ত করবেন।

নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর পরই সাংবিধানিক বিধি মেনে গত ২০ জানুয়ারি শপথ গ্রহণ করেন ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং সেদিন বেশ কয়েকটি নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন তিনি। সেসবের মধ্যে ‘আগ্রাসনের বিরুদ্ধে মার্কিন জনগণকে সুরক্ষা প্রদান’ নামে একটি আদেশও ছিল।

ট্রাম্প সেই আদেশে স্বাক্ষর করার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে অভিযান। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে বসবাস করছেন ১ লাখ ৭০ হাজারেরও বেশি নথিবিহীন অভিবাসী। তাদের মধ্যে অন্তত ১ লাখকে ফেরত পাঠানোর লক্ষ্য নিয়েছে ওয়াশিংটন।

এ গ্রেফতার অভিযানে অবৈধ প্রবাসী বাংলাদেশিরা চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। কী করবেন এবং কীভাবে এ পরিস্থিতির মোকাবিলা করবেন, তা নিয়েও অনেকে চিন্তিত। কিন্তু প্রবাসে বাংলাদেশ সোসাসাইটিসহ অনেক সংগঠন রয়েছে। তারা প্রবাসী বাংলাদেশিদের এ বিপদের সময় কোনো ভূমিকাই রাখছেন না। বাংলাদেশ সোসাইটি ফেসবুকে একটি সতর্কবাণী দিয়েই যেন তাদের দায়িত্ব শেষ। অন্যদিকে প্রবাসী বাংলাদেশিদের সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন বাংলাদেশি কাউন্সিলম্যান শাহানা হানিফ এবং প্রবাসের আদর্শিক সংগঠন বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটি। কাউন্সিলওম্যান শাহানা হানিফের উদ্যোগে সপ্তাহের প্রতি শুক্রবার নোয়াখালী সোসাইটির অফিসে সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিনামূল্যে এ সেবা প্রদান করা হয়।

ইমিগ্রেশন পুলিশের বা আইস অভিযানের সময় আপনাদের অধিকারের মধ্যে রয়েছে, নীরব থাকা। আপনারা জন্মস্থান বা ইমিগ্রেশন স্ট্যাটাস সম্পর্কে কোনো প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া। ওই পরিস্থিতিতে বললেন, আমি অ্যাটর্নির সঙ্গে কথা বলতে চাই। ওয়ারেন্ট ছাড়া দরজা খুলবেন না। সব সময় গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সঙ্গে রাখবেন। উকিল ছাড়া কোনো কাগজপত্রে সই করবেন না। বৈধ ওয়ার্ক পারমিট, গ্রিনকার্ড, সিটি-স্টেট আইডি সঙ্গে রাখুন।

অন্যদিকে বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু জানান, তাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি ব্রুকলিনের ১৭৯ স্কুলে অডিটোরিয়ামে এক সেমিনারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেমিনার শুরু হবে সন্ধ্যা ৬টায়। যেখানে অ্যাটর্নিদের একটি প্যানেল থাকবে এবং তারা বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করণীয় তার ব্যাখ্যা করবেন। এছাড়াও যে কোনো প্রয়োজনের বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির যে কোনো আইনি সহায়তা দিতে প্রস্তত। যাদের সহায়তার প্রয়োজন তাদের যোগায্গে করতে বলা হয়েছে। আরেক প্রশ্নের জবাবে জাহিদ মিন্টু বলেন, আমরা যদি মানুষের বিপদের সময় পাশে দাঁড়াতে না পারি বা তাদের সহযোগিতা করতে না পারি, তাহলে সংগঠন করে লাভ কী? তিনি বলেন, আমি লোক দেখানোর জন্য নেতা হতে চাই না, মানুষের উপকার করতে চাই।

শেয়ার করুন