সাংবাদিক বলতে সাধারণত আমরা বুঝি, যিনি সংবাদ সংগ্রহ করেন, লিখেন এবং সব তথ্য একসঙ্গে মিলিয়ে তা প্রকাশ করেন। এবং যথার্থ প্রতিদান হিসেব না করেই তা তিনি করে যান। খবরের পেছনের খবর সংগ্রহে, ঘটনার নেপথ্য ঘটনার অনুসন্ধানে প্রতিনিয়ত একজন সাংবাদিককে রকমারি বিরূপ বাস্তবতা ও সীমাহীন ঝুঁকি নিয়ে সংবাদ উৎসের পিছনে ছুটতে হয়।
সাম্প্রতিককালে ইলেকট্রনিক মিডিয়ার নতুন নতুন শাখায় রিপোর্টিং করার অবারিত সুযোগ-সুবিধা তৈরি হয়েছে। কিন্তু বিগত শতকের সংবাদপত্রের কার্যক্রম ছিল কাগজ, কলম, নোটবুক আর ম্যানুয়াল ক্যামেরানির্ভর। একুশ শতকে এসে তথ্যপ্রযুক্তির সুবাদে কাগজ, কলম, প্যাড, নোটবুক আর সনাতনী ক্যামেরার স্থান বদলে দিয়েছে ল্যাপটপ কম্পিউটার, ডিজিটাল ক্যামেরা, মোবাইল ফোন ও মাল্টিমিডিয়া নির্ভর যন্ত্রকৌশল। ফলে সাংবাদিকতার সনাতনী ধ্যানধারণায় এসেছে নানা পরিবর্তন।
একজন সাংবাদিককে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে যথেষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ আয়ত্ত করে ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করে ধাপে ধাপে তাকে সামনে এগিয়ে যেতে হয়। একটা সময় ছিল সাংবাদিকতা ছিল মূলত ‘বর্ন জার্নালিস্টদের’ নিয়ন্ত্রণে। জন্মগত প্রতিভা নিয়েই বিগত শতকের এক একজন সাংবাদিক মহীরুহ হিসেবে আপন ভুবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। সাংবাদিকতার ইতিহাসে আজ তারা পথিকৃৎ সাংবাদিক হিসেবে আপন মহিমায় ভাস্বর। কিন্তু এখন সে ধারণা বদলেছে। এখন একজন সাংবাদিককে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে যথেষ্ট শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ আয়ত্ত করে ব্যবহারিক দক্ষতা অর্জন করতে হয়।
সাংবাদিকতা একটি মহান পেশা। পেশা হিসেবে সংবেদনশীলতা সাংবাদিকতাকে অন্য সব পেশা থেকে আলাদা করেছে। যে কারো হাতে ছুরি কাঁচি তুলে দিয়ে যেমন সার্জন বানিয়ে দেওয়া যায় না তেমনি যে কারো হাতে পরিচয়পত্র, কলম, ক্যামেরা বুম তুলে দিয়েও সাংবাদিক বানানো যায় না।
সাংবাদিকতা শাস্ত্রের পন্ডিতগণ মনে করেন, একজন পেশাদার সাংবাদিককে অবশ্যই সংবাদ সংগ্রহ, লিখন ও সরবরাহের ক্ষেত্রে যেমন দক্ষতা প্রদর্শন করতে হয়, তেমনি মূল্যবোধ, দৃষ্টিভঙ্গি ও আচরণের সুষ্ঠু প্রয়োগও অপরিহার্য। আর এগুলোর ঘাটতি থাকলে সাংবাদিকতার মূল উদ্দেশ্য নষ্ট হয়ে যায়।
আমি আমার বক্তব্যটাকে নিউইয়র্ক কেন্দ্রিক নিয়ে আসি। বলা যায় নিউইয়র্কে এখন সাংবাদিকের ছড়াছড়ি। তাদের বেশির ভাগই ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় কাজ করেন। এক হাতে লম্বা স্টিক আর অন্য হাতে সেলফোন। তাদের অধিকাংশের কোন প্রিন্ট মিডিয়া নেই। দু’একজনের যাও আছে তা অন লাইন পত্রিকা। যে অনুষ্ঠানে যাবেন, আর্থিক অনুদান পাবেন সেই নির্দিষ্ট নিউজটি আপলোড করার জন্য। কেউ চালান দু’পৃষ্ঠার অনলাইন, কেউ বা তারো চেয়ে কম বা বেশি।
এদের বেশিরভাগ চুক্তিবদ্ধ হয়ে অনুষ্ঠানে যান। অর্থের বিনিময়ে অনুষ্ঠান কভার করেন। চুক্তি না থাকলেও কিছুমিছু পাবার জন্য অনুষ্ঠানের পরেও ধরনা দিয়ে বসে থাকেন। যে কারণে সত্যিকার সাংবাদিকদের উঁচু মাথাটা নিচু হয়ে যায়।
একটা ছোট্ট ঘটনার উল্লেখ করি। গত ১৮ মার্চ রাতে দুই সাংবাদিকের (!) লাইভ বাকযুদ্ধ দেখার সৌভাগ্য (!) হলো। তাদের একজন স্টিল ফটোগ্রাফার। তিনি বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ছবি তুলে তার নিজস্ব পেজে পোস্ট করেন। এর সঙ্গে অনুষ্ঠানের কোনো নিউজ থাকে না। অন্যজন লাইভ সাংবাদিক অর্থাৎ সেলফোন দিয়ে তিনি শুধু অনুষ্ঠানের লাইভ করেন। এটাই তার সাংবাদিকতা।
সেদিন ইফতার পার্টি ছিল ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেস পার্টি হলে। জানা যায় যিনি স্টিল ফটোগ্রাফি করেন তিনি অনুষ্ঠান কভারের জন্য কোন অর্থ গ্রহণ করেননি। আর অন্যজন ফোনে অনুষ্ঠান লাইভ করেও আয়োজকদের কাছ থেকে চেয়েও কোনো অর্থ পাননি। তখন তিনি স্টিল ফটোগ্রাফারকে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগলেন, আপনি টাকা না নিয়ে অভ্যাসটা খারাপ করেছেন। এজন্য আমাদের কেউ সহজে টাকা দিতে চায় না।
উল্লেখ্য, লাইভ টা যে অন ছিল সম্ভবত তিনি তা খেয়াল করেননি।
মন খারাপ!
মন খারাপ? এতোটাই খারাপ যে কিচ্ছু ভালো লাগছে না? কিছুই করতে ইচ্ছে হয় না, কিছুই না? আমরা জানি মন খারাপ হলে ভীষণ কষ্ট হয়, নীল কষ্ট, লাল কষ্ট, আরো অনেক রকম কষ্ট। সুখ-দুঃখ নিয়েই তো মানুষের জীবন। যে কোনো সময় আপনার মন খারাপ হতেই পারে। মন খারাপ থাকলে শরীরও খারাপ হয়। বলা হয় শরীর আর মন একে অন্যের পরিপূরক।
মন ভালো করার জন্য দু’একটা টিপস দিই!
মন খুলে হাসুন- আপনি যখন মন খুলে হাসবেন তখন দেখবেন নিজেকে হালকা মনে হবে। আর গবেষণায় দেখা গেছে মানুষের হাসিতে ৬০ শতাংশ শরীর ভালো থাকে।
যখন মন খারাপ থাকবে সঙ্গে সঙ্গে আপনার পছন্দের মিউজিক শুনতে পারেন। এছাড়াও মুভি কিংবা কার্টুনও দেখতে পারেন। এগুলো আপনার মন ভালো করতে সহায়তা করবে। মন খারাপের সময় পছন্দের লেখকের বই পড়তে পারেন। দেখবেন আস্তে আস্তে মন ভালো হয়ে যাবে। মন খারাপ হলে ভ্রমণ করতে পারেন।
জীবন দৌড়ে একটু বিরতি দিন, হতে পারে আপনি খুবই ক্লান্ত, তাহলে কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বিশ্রামে যান, কোথাও ঘুরতে যেতে পারেন, পাহাড়ে বা বনে, চলে যান সাগরে...ফুরফুরে সতেজ হয়ে ফিরে আসুন নিত্যদিনের জীবনে। নিজের জীবন নিয়ে অতৃপ্ত ও অসুখী হলে পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখুন কী কী করেছেন জীবনে। জীবনের কিছু বিষয় বদলানোর প্রয়োজন হতে পারে, তাই করুন।
নিজের সুখের জন্য স্বার্থপর হওয়া যাবে না। রবং অন্যকে সুখী করলে শুধু তাকেই সুখী করবেন না, নিজেও সুখী হয়ে উঠবেন। কমেডি মুভি দেখে নিজের মুড বদলাতে পারেন। যখন পরাজিত ও বিপর্যস্ত বোধ করছেন, হতাশার গ্লানিতে ডুবে আছেন, এমন সময়ে সেইসব ব্যক্তির সঙ্গে থাকুন যাদের সঙ্গ আপনাকে সুখী করে তোলে।
সুখী থাকার চেষ্টাই আমাদের সুখী করে তুলবে। তাই সুখী মানুষ হওয়ার চেষ্টা করতে হবে। আর একটি কথা, আপনার মন খারাপ হলে অন্যের কিছু যায় এসে না। তাই অন্যকে নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা না করে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করুন। ভালো একটা ঘুম দিন। রাতে ভালো ঘুম না হলেও মন খারাপ হতে পারে। অনেক সময় মনে হয়, কারণ ছাড়াই খারাপ লাগছে। আসলে সবকিছুর পেছনেই কারণ থাকে। ভালো ঘুম হলে, শরীর ও মন ফ্রেশ লাগতে পারে।
যদি প্রায়ই এবং দীর্ঘ সময় ধরে মন খারাপ থাকে তাহলে মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন। দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা হলে, কাউন্সেলিংও প্রয়োজন হতে পারে।
হেসো না, প্রেমে পড়ে যাবো
রেস্টুরেন্টের নাম-এনএইচ-৪৪। টুকলেই চোখে পড়বে দেওয়ালে আঁকা একটা বড় ট্রাকের ছবি। পেছনে লেখা- হর্ন প্লিজ! আরো লেখা- হেসো না, তাহলে কিন্তু প্রেমে পড়ে যাবো। ট্রাকটা ছুটে চলছে ইন্ডিয়ান ন্যাশন্যাল হাইওয়ে-৪৪ ধরে।
রেস্টুরেন্টটির নামকরণ করা হয়েছে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল হাইওয়ে-৪৪-এর নামে। ভারতীয় মালিকানার এই রেস্টুরেন্টির মালিকের জাতীয়তাবাদের প্রশংসা করতে হয়।
জাতীয় সড়ক ৪৪ (এনএইচ, ৪৪) ভারতের মধ্যে দীর্ঘতম এবং প্রধান উত্তর থেকে দক্ষিণ জাতীয় সড়ক। কালো পিচ ঢালা এই রাস্তাটি জম্মু কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে শুরু হয়ে শেষ হয়েছে দেশের দক্ষিণপ্রান্তের শেষ বিন্দু কন্যাকুমারীতে। মহাসড়কটি অতিক্রম করেছে জম্মু ও কাশ্মীর, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, দিল্লি, উত্তর প্রদেশ, রাজস্থান, মধ্য প্রদেশ, মহারাষ্ট্র, তেলেঙ্গানা, অন্ধ্র প্রদেশ, কর্নাটক এবং তামিলনাড়ু। এই সড়কের যাত্রাপথে পড়বে পাহাড়া-বরফ-সাগর-নদী-মরুভূমির রাজ্য সবকিছুই। আগে এই জাতীয় সড়কের নম্বর ছিল ন্যাশনাল হাইওয়ে ৭। যা এখন বদলে হয়েছে ন্যাশনাল হাইওয়ে ৪৪।
এই মহাসড়কের পাশে যতগুলি রাজ্য আছে সবকটি খাবার পাওয়া যাবে এই রেস্টুরেন্টে। আমরা অর্ডার দিলাম-লাচ্ছি পরোটা, গার্লিক নান শাক, শ্রিম্প টিক্কা মাসালা। ভাত এলো সঙ্গে।
খাবার শেষে পরিবেশন করলো ছোট কাচের গ্লাসে চা। যে চা জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাবার পথে ধাবাগুলোতে পাওয়া যায়। চমৎকার স্বাদ পেলাম দীর্ঘদিন পর।
রেস্টুরেন্টটি ওয়েস্টচেস্টার কাউন্টির ২০২৩ সালের বেস্ট ইন্ডিয়ান রেস্টুরেন্ট হিসাবে পুরস্কৃত হয়েছে। এতে বিচার্য ছিল ফুড, সার্ভিস, ডেকোরেশন এবং অন্যান্য। ঠিকানা: ২১৯ ইস্ট হার্সডেল অ্যাভিনিউ, হার্সডেল, এনওয়াই- ১০৫৩০। ফোন: ৯১৪ ৫৭৪ ৫২৬২।
নিউইয়র্ক, ১৯ মার্চ ২০২৫ সাল