১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শনিবার, ৬:২৯:৩৪ পূর্বাহ্ন


সিডিপ্যাপ ট্রানজিশন : ৩০ দিনের গ্রেস পিরিয়ড ঘোষণা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৩-২০২৫
সিডিপ্যাপ ট্রানজিশন : ৩০ দিনের গ্রেস পিরিয়ড ঘোষণা নিউইয়র্ক স্টেট ক্যাপিটলে হোম হেলথ কেয়ার র‌্যালিতে বক্তব্য রাখছেন স্টেট সিনেটর লেরয় কমরি


কনজিউমার ডাইরেক্টেড পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) ট্রানজিশন প্রক্রিয়ায় চলমান সমস্যাগুলির জন্য ২৪ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে স্টেট হেলথ কমিশনার জেমস ম্যাকডোনাল্ড এবং পিপিএল প্রেসিডেন্ট মারিয়া পেরিন দাবি করেন, সিডিপ্যাপ ট্রানজিশন সমস্যা সমাধানে স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্ট বা পিপিএল দায়ী নয়। তাদের মতে, ভুল তথ্য এবং অপরিকল্পনার কারণে এই সমস্যাগুলি সৃষ্টি হয়েছে। এ সময় ম্যাকডোনাল্ড জানান, এপ্রিল ১ তারিখের মধ্যে সব কর্মী পিপিএলের সঙ্গে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারবেন না। তবে, এই পরিস্থিতি থেকে বের হওয়ার জন্য একটি ৩০ দিনের গ্রেস পিরিয়ড ঘোষণা করা হয়েছে, যার মাধ্যমে কর্মীরা এপ্রিল মাসের বেতন রেট্রোঅ্যাকটিভভাবে পাবেন। ম্যাকডোনাল্ড বলছেন, এটি কোনো ‘ডিলে’ বা ‘এক্সটেনশ’” নয়, বরং একটি অতিরিক্ত সময় যাতে সবাই সঠিকভাবে রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করতে পারে।

পিপিএল প্রেসিডেন্ট পেরিন দাবি করেন, নিউইয়র্কের পরিস্থিতি অন্য রাজ্যের চেয়ে আলাদা, কারণ এখানে বিরাট বিপক্ষে প্রচারণা চলেছে। তিনি পিপিএল সিস্টেমের ক্র্যাশ হওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন, যদিও বিভিন্ন রিপোর্টে সাইট অচল হওয়ার খবর এসেছে। এদিকে স্টেট সিনেটের স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ারম্যান গুস্তাভো রিভেরা এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে বলেন, ৩০ দিনের গ্রেস পিরিয়ড সমস্যার সমাধান করবে না। তিনি স্বাস্থ্যকর্মীদের পেমেন্ট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। স্বাস্থ্যকর্মী ইউনিয়ন ১১৯৯ এবং আইনপ্রণেতারা আরো সময় চেয়েছেন। তবে গভর্নর ক্যাথি হোচুল স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তিনি ডেডলাইন পর্যালোচনা করবেন না এবং মধ্যস্থ প্রতিষ্ঠানগুলোকে দায়ী করেছেন। সিডিপ্যাপ ট্রানজিশন নিয়ে নানা সমস্যা এবং দোষারোপ চললেও স্টেট গভর্নমেন্ট এখনো স্থায়ী সমাধান দেখাতে পারেনি।

হোকুলকে ১ এপ্রিলের সিডিপ্যাপ ডেডলাইন স্থগিত করার আবেদন

নিউইয়র্ক স্টেটের কনজিউমার ডিরেক্টেড পারসোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আসন্ন ১ এপ্রিল থেকে কার্যকর হতে চলেছে। সিডিপ্যাপএর সমস্ত গ্রাহক এবং সহায়কদের একক পেমেন্ট প্রসেসর, পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল)-এর সঙ্গে নিবন্ধন করতে হবে। তবে, এই সময়সীমার মধ্যে প্রক্রিয়া শেষ না হলে হাজার হাজার মানুষ তাদের হোম কেয়ার হারানোর আশঙ্কা প্রকাশ করছেন বিভিন্ন গ্রাহক, সহায়ক এবং সেবাদানকারী সংস্থাগুলো।

গত বছর প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপনার খরচ কমানোর উদ্দেশ্যে এবং প্রতারণা রোধে স্টেট বাজেটে গভর্নর ক্যাথি হোকুল এই পরিবর্তনের ঘোষণা দেন। বর্তমানে স্টেটব্যাপী ২ লাখ ৮০ হাজার গ্রাহক এবং ৪ লাখ হোম কেয়ার সহায়ক সিডিপ্যাপ-এর মাধ্যমে সেবা পাচ্ছেন এবং তাদের পেমেন্ট প্রক্রিয়া ব্যবস্থাপনায় বহু প্রতিষ্ঠান জড়িত। তবে ১ এপ্রিল থেকে শুধু পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল) এই কাজটি পরিচালনা করবে।

নিউইয়র্ক স্বাস্থ্য অধিদফতর জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার গ্রাহক এবং ১ লাখ ৬০ হাজার সহায়ক পিপিএলের সঙ্গে নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন এবং ৪৫ হাজার গ্রাহক পারসোনাল কেয়ার সার্ভিসেস (পিসিএস) নামক বিকল্প প্রোগ্রামে চলে গেছেন। স্বাস্থ্য অধিদফতর দাবি করছে যে, পরিবর্তন প্রক্রিয়া সফলভাবে সময়মতো সম্পন্ন হবে এবং ১ এপ্রিলের ডেডলাইন পূর্ণ হবে। তবে অনেকেই এই দাবি নিয়ে সন্দিহান এবং বিষয়টির সঠিক বাস্তবায়ন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

সিনেটর গাস্টোভো রিভেরা, যিনি স্বাস্থ্য কমিটির চেয়ারম্যান বলেছেন, এটি এক বড় চ্যালেঞ্জ, কারণ লাখ লাখ মানুষ তাদের হোম কেয়ার হারাতে পারে যদি সময়মতো এই প্রক্রিয়া শেষ না হয়। তিনি আরো বলেন, সরকার এবং স্বাস্থ্য অধিদফতর যে তথ্য প্রচার করছে, তা অনেকাংশেই বিভ্রান্তিকর এবং সাধারণ মানুষের মধ্যে আরো জটিলতা তৈরি করছে। এই পরিবর্তন প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সহায়তাকারী সংস্থার সদস্যরা জানিয়েছেন যে, এক মাসের মধ্যে পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা প্রায় অসম্ভব। সুসান ম্যাককরম্যাক, লং আইল্যান্ড সেন্টার ফর ইন্ডিপেনডেন্ট লিভিংয়ের নির্বাহী পরিচালক জানান, এই পরিবর্তন বাস্তবায়নের জন্য তিন মাসের সময় দেওয়া উচিত ছিল। যদি সময় বাড়ানো না হয়, তাহলে অনেকেই তাদের হোম কেয়ার হারাতে পারে।

অন্যদিকে পিপিএলের অনলাইন নিবন্ধন ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় অনেক গ্রাহক এবং সহায়ক অভিযোগ করেছেন যে, তাদের জন্য এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেকে জানিয়েছে, তারা দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষা করেও পিপিএলের প্রতিনিধির সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না, এবং তথ্য সুরক্ষা নিয়েও উদ্বেগ রয়েছে।

নিউইয়র্ক অ্যাসোসিয়েশন ফর ইনডিপেনডেন্ট লিভিং ১৩ মার্চ ২০২৫ তারিখে গভর্নরের ডেপুটি সেক্রেটারি ফর হেলথের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছে, যেখানে তারা ডেডলাইন স্থগিত করার অনুরোধ করেছে। চিঠিতে তারা উল্লেখ করেছে, পিপিএলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সঠিকভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং তাদের প্রতিদিন প্রায় ১২০০ ফোন কল আসছে, যা তারা সামলাতে পারছেন না।

এদিকে ১১৯৯ ইউনিয়নও গভর্নরের কাছে ডেডলাইন স্থগিত করার আবেদন জানিয়েছে। তাদের দাবি, এখনো ১ লাখ কর্মী তাদের নিবন্ধন সম্পন্ন করতে পারেনি এবং সময় বাড়ানো না হলে, সেবা প্রদানকারীদের ও গ্রাহকদের জন্য বড় ধরনের সমস্যা হতে পারে। তবে গভর্নর হোকুল তার সিদ্ধান্তে অটল রয়েছেন এবং বলেছেন, হাজার হাজার গ্রাহক এবং সহায়ক ইতোমধ্যে এই পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করেছেন এবং এটি ১ এপ্রিলের মধ্যে সম্পন্ন হবে। তিনি আরো বলেন, এই পরিবর্তন রাজ্যবাসীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি প্রশাসনিক ব্যয়ের হ্রাসে সহায়তা করবে। এখন পর্যন্ত রাজ্য আইনপ্রণেতারা এ ডেডলাইন স্থগিত করার পক্ষে কোনো পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নেননি। তবে আসন্ন রাজ্য বাজেটের আলোচনার মধ্যে অনেকেই সরকারের সিদ্ধান্তে পরিবর্তন আনার জন্য চাপ প্রয়োগ করছেন।

শেয়ার করুন