১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৫:৪৫:১১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গোপালগঞ্জ এখন মুজিববাদী সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে- নাহিদ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ চারজন নিহত নিউইয়র্কে ২০ লাখ মানুষ মেডিকেইড ও ৩ লাখ পরিবার স্ন্যাপ সুবিধা হারাবে নতুন ভিসা ফিতে বাংলাদেশিদের খরচ বাড়বে আড়াই গুণ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি মাহমুদ খলিলের টেক্সাসের অভিবাসন আইন এসবি ৪ অসাংবিধানিক ঘোষণা ফ্লোরিডার ‘সিনেট বিল ৪-সির কার্যকারিতা বন্ধ করলো যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট নতুন নীতি ঘোষণা : ৯ কারণে নাগরিকত্ব হারাতে পারেন জঙ্গিবাদে সতর্ক থাকার মার্কিনী পরামর্শে নানা প্রশ্ন এনসিপিসহ ১৪৪ নিবন্ধন প্রত্যাশী দলের তথ্যে ঘাটতি


জাতীয় নির্বাচনে তরুণ ভোটারের গুরুত্ব কতখানি
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৭-২০২৫
জাতীয় নির্বাচনে তরুণ ভোটারের গুরুত্ব কতখানি ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা (ফাইল ছবি)


সব বাধাবিপত্তি পেরিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সদিচ্ছায় যদি ২০২৬ শুরুতে বাংলাদেশে অবাধ, নিরপেক্ষ পরিবেশে সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে তরুণ প্রজন্মের নতুন ভোটাররা কিন্তু প্রধান ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে হচ্ছে। রাজনৈতিক বিতর্কে না গিয়েও কিন্তু বলা যায় বিগত তিন তিনটি জাতীয় নির্বাচনে অধিকাংশ যোগ্য ভোটার নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ থেকে বঞ্চিত হয়েছে। ২০২৫ অনেক তরুণ ভোটাধিকার অর্জন করেছে। এই প্রজন্মের অধিকাংশ তরুণ তরুণী মিডিয়ার কল্যাণে এবং নিজেদের সৃজন শক্তি দিয়ে অনেক সচেতন হয়ে উঠেছে। সস্তা বুলি, অর্থ, পেশি দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার সুযোগ থাকবে সীমিত। 

উপরন্তু তরুণ সমাজের নেতৃত্বে ২০২৪ জুলাই আগস্ট বিপ্লব জাতির একটি বৃহৎ অংশের চেতনার জানালা খুলে দিয়েছে। কিছু অংশ স্বাধীনতাযুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ নিয়ে ভুল ধারণায় থাকলেও প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, জামায়াত, বাম ঘরানার দল, ইসলামী দল এবং গোষ্ঠীর বিষয়ে অধিকাংশ মানুষ অবহিত। পাশাপাশি আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টির শাসন অপশাসন বিষয় সবার জানা। একই সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের থেকে সৃষ্ট এনসিপি এখন পর্যন্ত নিজেদের তৃণমূলে সুসংগঠিত করতে পারে নি। রাজনৈতিক দল হিসেবে বিকশিত নানা বিতর্কের জন্ম দিয়ে চলেছে। এমতাবস্থায় নির্বাচনে কোনো দল বা গোষ্ঠী নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠন করবে সুনিশ্চিত করে বলার সময় আসেনি। 

সংস্কার নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য শেষে জুলাই সনদ ঘোষণা এখন চ্যালেঞ্জের মুখে। অসংখ্য মামলার জটে প্রশ্নবিদ্ধ বিচার প্রক্রিয়া দীর্ঘসূত্রতার আবর্তে পড়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার কতটুকু সংস্কার করতে পারবে সন্দেহ আছে। তবে সংস্কার আর বিচার বিলম্বের অজুহাতে নির্বাচন পিছিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা হলে দেশে অরাজকতা দেখা দিতে পারে। তখন কিন্তু ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করার সুযোগ নিতে পারে অশুভ গোষ্ঠী। 

দেশে এখন রাজনীতি মূলত ভারত বিরোধিতা। তবে তলে তলে অনেক দল ভারতের আশীর্বাদ লাভের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরছে। বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কোনো দিনই কোনো সরকার ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ছাড়া স্বস্তিতে থাকবে না। ভারত নানা বিড়ম্বনার সৃষ্টি করবে। পরবর্তী নির্বাচনে আরো একটি ফ্যাক্টর হবে রোহিঙ্গা সমস্যা এবং বাংলাদেশ নিয়ে আগ্রাসী যুক্তরাষ্ট্রের পরিকল্পনা সামাল দেয়া। মনে রাখতে হবে বাংলাদেশ নিয়ে চীন, রাশিয়া এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর বাণিজ্য স্বার্থ আছে। 

দেশে কিন্তু গত প্রায় এক বছরে কোনো সেক্টরেই মৌলিক পরিবর্তন হয়নি, দুর্নীতি, লুটপাটের লাগাম ধরা হলেও মব সংস্কৃতি, ঘেরাও আন্দোলন ক্যানসারের মতো ছড়িয়ে পড়েছে। নানা কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য মারাত্মক চ্যালেঞ্জের মুখে। ঠুনকো বিষয় নিয়েও ঘেরাও, অবরোধ চলছে। এইতো একদিন আগে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সংস্কার নিয়ে সৃষ্ট আন্দোলনে অচল অবস্থা সৃষ্টি হয়েছিল। নানা কারণে শিক্ষাঙ্গন অস্থির হয়ে পড়ছে, সাস্থ খাতে অচল অবস্থা, ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এমনকি করোনা চোখ রাঙাচ্ছে। নানা কারণে জ্বালানি নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে আছে. বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি বিদ্যুৎ সরবরাহ সংকটের মুখে। বিচক্ষণ ডক্টর এম ইউনুস হয়তো উপলব্ধি করছেন তার অপেশাদার উপদেষ্টাদের দিয়ে বাংলাদেশ দীর্ঘসময়ে সামাল দেওয়া সম্ভব নয়। তিনিও হয়তো শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের কথা ভাবছেন। 

তরুণ প্রজন্ম কিন্তু অত্যন্ত মেধাবী, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে কিন্তু অধিকাংশ বাংলাদেশি স্বশিক্ষিত। এবার কিন্তু ফাঁকা বুলি, অর্থ, পেশি দিয়ে নির্বাচনে করা সহজ হবে না। সরকার সহায়তা করে নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে অবাধ, নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারে তাহলে তৃণমূলে সৎ ও জনবান্ধব ব্যক্তিদের নির্বাচিত হওয়ার সম্ভাবনা সমুজ্জ্বল। দেখতে হবে তৃণমূলে এখনো সুসংগঠিত আওয়ামী লীগ নির্বাচনে আসে কি না। যদি না আসতে দেওয়া হয়, তাহলে কিন্তু নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে। আওয়ামী লীগ ঘরানার ভোট যে দল বা গোষ্ঠীর পক্ষে যাবে, তারা বাড়তি সুবিধা পাবে। তবে এটি নিশ্চিত তরুণ প্রজন্ম নির্বাচনের ফলাফলের মূল নির্ধারক হবে।

শেয়ার করুন