২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:০৬:৫৯ পূর্বাহ্ন


শুষ্ক মৌসুমের পুরো পানি সরিয়েনিচ্ছে ভারত
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৭-০৮-২০২২
শুষ্ক মৌসুমের পুরো পানি  সরিয়েনিচ্ছে ভারত যেখানে পনির ঢেউ থাকার কথা, সেখানে শুকিয়ে চৌচির,পানির অভাবে এটা যে নদী সেটাই মনে হয় না/ফাইল ছবি


আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি (আইএফসি)’র নেতৃবৃন্দ তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন দাবি জানিয়েছে। এর পাশাপাপশি তারা বলেছেন, দুই দশকের বেশি একতরফা ভাবে পশ্চিম বঙ্গের গজলডোবা ব্যারেজ থেকে শুষ্ক মৌসুমের পুরো পানি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে।জাতীয় প্রেস ক্লাবের আব্দুস সালাম মিলনায়তনে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময়ের সময় সংগঠনটির নেতারা এসব কথা বলেন। 

এতে আইএফসি চেয়ারম্যান আতিকুর রহমান সালু বলেন, তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনার উপর ২০১১ সালে চুক্তি হবার কথা থাকলেও এখনো হয়নি এবং দুই দশকের বেশি একতরফাভাবে পশ্চিম বঙ্গের গজলডোবা ব্যারেজ থেকে শুষ্ক মৌসুমের পুরো পানি অন্যত্র সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এই পরিণতির সহসা কোন পরিবর্তন দেখা যাচ্ছেনা। তাই আমরা মনে করি তিস্তা অববাহিকার মানুষকে বাঁচানো এবং তাদের জীবন জীবিকার উন্নয়নের জন্য প্রতি বছরের বন্যা-খরার প্রকোপ কমাতে বাংলাদেশের তরফ থেকে টেকসই পদক্ষেপ গ্রহণ করা জরুরি। 

আতিকুর রহমান সালু আরো বলেন, বর্ষাকালে বন্যা আর শুষ্ক মওসুমে পানির অভাবে মরা নদী এবং খরা বাংলাদেশে পরিবেশগত বিপর্যয় নিয়ে এসেছে। কিছুদিনের মধ্যে বাংলাদেশের প্রধান মন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে যাবার কথা। তাই পৃথিবীর বৃহত্তম বদ্বীপ বাংলাদেশের উৎস যৌথ নদীগুলো নিয়ে তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাফ সাফ কথা বলে আসবেন বলে আমরা আশা করি। কারণ উৎস নদীগুলো থেকে বাংলাদেশকে বিচ্ছিন্ন করার ফলে এদেশের সবুজ শ্যামল পরিবেশ দিনদিন ধংস হয়ে যাচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে কৃষি, দেশী মাছের অভয়ারন্য ও শিল্প। মানুষ হারাচ্ছে জীবিকা ও বাসস্থান।

তিনি বলেন, তিস্তার একটি পানি ব্যবস্থাপনা ও পুনরুদ্ধার মহাপরিকল্পনায় ৯৮৭.২৭ মিলিয়ন ডলার (দশ হাজার কোটি টাকা) ঋণ প্রস্তাব দিয়েছে চীন। চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশরেশন বা পাওয়ার চায়না এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে চায়। কাজ শুরু হবার কথা ছিল ২০২১ সাল থেকে। কিন্তু এখনো শুরু হয়নি। এদিকে এখন বর্ষাকালে ব্যারেজের সকল গেট খুলে দেয়ায় নিলফামারি, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধাতে চলছে বন্যা এবং ভাংগন। 

এই মহাপরিকল্পনা নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ নিশ্চিত করে নদীকে জীবিত রাখার প্রচেষ্টার বিকল্প নয়। তবুও বন্যা-ভাঙ্গনের ক্ষয়ক্ষতি লাঘব ও সমন্বিত উন্নয়নের মাধ্যমে উত্তরপশ্চিমাঞ্চলের মানুষের ভাগ্য উন্নয়নের এই প্রচেষ্টা সফল হতে পারে। প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে উজানে যখন নদীর প্রবাহ ফিরিয়ে দেবার তাগিদ আসবে তখন বাংলাদেশের তিস্তা অংশ নতুন জীবন ফিরে পাবে।

আইএফসির সুপারিশ, উল্লেখিত মহপরিকল্পনাকে আরেকটু বাড়িয়ে বাংলাদেশে তিস্তার পুরোনো মূল অববাহিকায় অবস্থিত আত্রাই, করতোয়া এবং পুনর্ভবা নদী এর আওতায় আনা গেলে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত হবে।

মতবিনিময় অনিষ্ঠানে আইএফসি বাংলাদেশের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডঃ এস আই খান, সমন্বয়ক, মোস্তফা কামাল মজুমদার, যুগ্ম-সম্পাদক আতাউর রহমান আতা ও ডিআরইউর সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন এবং সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন।

 

শেয়ার করুন