২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৫:৩১:৪৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সভা : ৮ বছর ছিল না ভাবনের ট্যাক্স
২৮টি ভায়োলেশনে ৮০ হাজার ডলার জরিমানা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-১২-২০২৩
২৮টি ভায়োলেশনে ৮০ হাজার ডলার জরিমানা সাধারণ সভায় উপস্থিত কর্মকর্তাবৃন্দ


বাংলাদেশ সোসাইটির ভবনে ২৮টি ভায়োলেশন ছিল। এসব ভায়োলেশন ১৯৯৩ সাল থেকে। বর্তমান কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর আমরা এই সব ভায়োলেশন রিম্যুভ করার চেষ্টা করছি। এই সব ভয়োলেশনে বাংলাদেশ সোসাইটিকে প্রায় ৮০ হাজার ডলারের বেশি জরিমানা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই আমরা প্রায় সব ভয়োলেশন রিম্যুভ করেছি। বর্তমানে একটি ভায়োলেশন রয়েছে। এটার জন্য আইনজীবী নিয়োগ করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বর্তমান কমিটি নতুন করে আরো ৫০০ কবর ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভায়োলেশনগুলো রিমুভ করতে ইতিমধ্যেই প্রায় ১৮ হাজার ২৫০ ডলার ব্যয় করা হয়েছে। গত ২৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সভায় এ সব তথ্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়া, সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী এবং সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী। সভাপতি আব্দুর রব মিয়া আরো বলেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর বাংলাদেশ সোসাইটির ভায়োলেশন রিম্যুভেলের পাশাপাশি ভাড়াটিয়ার সাথে দীর্ঘ দিন চলা অচলাবস্থার অবসান ঘটিয়েছি। আমরা এখন নিয়মিত ভাড়া পাচ্ছি। এ ছাড়া সোসাইটি অফিসে কাজ করেছি। আপনারা গিয়ে দেখতে পারেন এখন ভবনে হিট রয়েছে এবং গ্রীষ্মের জন্য এসির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রবাসের মাদার সংগঠন হিসাবে পরিচিত বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি আব্দুর রব মিয়ার সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী পরিচালনায় অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন সহ-সভাপতি ফারুক চৌধুরী এবং কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেন। সাধারণ সভার শুরুতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সভাপতি আব্দুর রব মিয়া। এর পরপরই সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্ট উপস্থাপন করেন। এর পরপরই কোষাধ্যক্ষ নওশাদ হোসেন তার রিপোর্ট পেশ করেন। বাংলাদেশ সোসাইটির এ পর্যন্ত যতগুলো সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তার মধ্যে এই সাধারণ সভাটি ছিল অত্যন্ত সুন্দর এবং গুছানো। বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সভা হবে সেখানে উত্তেজনা বা বাব বিতন্ডা হবে না এটা যেন কল্পনাই করা যায় না। কারণ বিগত সাধারণ সভাগুলোই তার জ্বলন্ত উধাহরণ। কিন্তু এবারের সাধারণ সভা নতুন ইতিহাস তৈরি করেছিলে। ছিল না কোনো উত্তেজনা। উত্তেজনা থাকবেই বা কেন, কারণ সব কিছু ছিল যেন ছবির মত পরিষ্কার। সাধারণ সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষের পরিচ্ছন্ন রিপোর্ট। যেখানে প্রশ্ন করারই যেন কোন অপসন ছিল না। যারা প্রশ্ন করার চেষ্টা করেছেন, তার মধ্যে বেশির ভাগই ছিল বর্তমান কমিটির প্রশংসা। 

তিনি তার লিখিত রিপোর্টে উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সোসাইটির আজকের সাধারণ সভার সভাপতি, উপস্থিত ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্যবৃন্দ, আজীবন ও সাধারণ সদস্যবৃন্দ এবং কার্যকরি পরিষদের কর্মকর্তাসহ সকল সদস্যদের জানাই সালাম ও আসন্ন ইরেজী নতুন বছরের শুভেচ্ছা। সেই সাথে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি মহান ভাষা আন্দোলন ও মহান স্বাধীনতা আন্দোলনে সকল শহীদসহ দেশের সকল গণতান্ত্রিক আন্দোলনে আত্মদান করা বীর শহীদদের। আমার বক্তব্যের শুরুতে আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি তাদেরকে যারা ১৯৭৫ সালে বাংলাদেশ সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করে যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী সকল বাংলাদেশীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি আরো স্মরণ করছি তাদেরকে, যারা নিজেদের অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে সোসাইটিকে আজকের এই পর্যায়ে নিয়ে এসেছেন, তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমি গভীর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করছি তাদেরকে যারা সোসাইটির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যারা মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ডাকে সাড়া দিয়ে আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। আমরা তাদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি। সেই সাথে কমিউনিটির যারা প্রাণঘাতী করোনা মহামারি এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন তাদের সবার বিদেহী আত্মার প্রতিও শ্রদ্ধা জানিয়ে শান্তি কামনা করছি। বিশেষ করে বাংলাদেশ কমিউনিটির ঐক্য প্রতিষ্ঠায় যার অবদান ছিল- সদ্য প্রয়াত সংগঠনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত ছাত্রনেতা আতিকুর রহমান সালুসহ করোনা মহামারীকালে সভাপতির দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী মরহুম কামাল আহমেদ, সহ-সভাপতি আবদুল খালেক খায়ের, কার্যকরি সদস্য আজাদ বাকিরের কথা এই মুহূর্তে না বললেই নয়। এছাড়াও সোসাইটির অনেক কর্মকর্তা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন, কিন্তু তাদের প্রত্যেকের অবদান আজকের এই সভায় স্মরণ করছি এবং তাদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করছি। 

তিনি বলেন, আপনারা জানেন, নানা প্রতিকূলতা ও বাধা বিপত্তি পেরিয়ে মামলা এবং আদালতের হস্তক্ষেপের কারণে নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সোসাইটির বর্তমান কমিটি ৩১ অক্টোবর ২০২২ অভিষেক ও অনাড়ম্বর শপথ গ্রহণের মধ্য দিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করে।

মহান বিজয় দিবস উদযাপন

প্রতি বছরের মতো গত বছরও বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদ্যাপন করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি। এ উপলক্ষ্যে ১৮ ডিসেম্বর সিটির ওজন পার্কের দেশি সিনিয়র সেন্টারে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে প্রবাসীদের ব্যাপক সাড়া ছিল লক্ষ্যনীয়। শত শত প্রবাসীর উপস্থিতিতে অনুষ্ঠান হয় আনন্দমুখর। এতে বিশেষ করে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের উপস্থিতি আমাদের আপ্লুত করেছে। তারা বিভিন্ন ধরনের প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। 

অমর একুশে ও সম্মিলিত আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ সোসাইটি ইনক সম্মিলিতভাবে অমর একুশে পালন উপলক্ষ্যে বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করে। সোসাইটির একুশের কর্মসূচির মধ্যে ছিলো: প্রবাসে বেড়ে উঠা নতুন প্রজন্মের অংশগ্রহণে ‘অমর একুশে’ চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, কবিতা আবৃত্তি, আলোচনা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং একুশের প্রথম প্রহরে অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ। সোসাইটির ইতিহাসে সর্ববৃহৎ আকারে একুশে উদ্যাপনে ২০ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টা থেকে মধ্য রাত ১২টা পর্যন্ত সিটির উডসাইডস্থ তিব্বতী কমিউনিটি সেন্টারে মূল কর্মসূচী চলে। এখানে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ভাষা শহীদদের স্মরণে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। বাংলাদেশ সোসাইটির একুশের অনুষ্ঠানে প্রবাসের বিভিন্ন আঞ্চলিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, রাজনীতিক, ব্যবসায়ী ও পেশাজীবী সংগঠনসহ ৮০টিরও বেশী সংগঠন ও বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী অংশ নেন।

স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ও দোয়া মাহফিল

আমাদের প্রাণের সংগঠনের পক্ষ থেকে যথাযথ মর্যাদায় প্রাণ প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস পালন করা হয়। ২৬ মার্চ রবিবার বিকেল ৫টায় সোসাইটির ভবনে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে সদস্যদের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ আমাদের কৃতজ্ঞ করেছে।

ক্বিরাত প্রতিযোগিতা, ইমামদের সম্মান প্রদান, ইফতার ও দোয়া মাহফিল

পবিত্র রমজান উপলক্ষে বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে ২ এপ্রিল রবিবার ২০২৩ উডসাইডে তিব্বতিয়ান কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করা হয় প্রবাসে বেড়ে ওঠা শিশু-কিশোরদের ক্বিরাত প্রতিযোগিতা, ইফতার ও দোয়া মাহফিলের। বাংলাদেশী কমিউনিটির ৮ শতাধিক মুসল্লি ইফতার মাহফিলে অংশ নেন। অনুষ্ঠানে সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক কর্মকর্তাদের সরব উপস্থিতি ছিলো লক্ষনীয়। মাহফিলে ক্বিরাত প্রতিযোগিতায় সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন আইটিভি ইউএস এর চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ। অনুষ্ঠানে বিভিন্ন মসজিদের ইমামদের সম্মানিত করা হয়। এ আয়োজনটি কমিউনিটিতে ব্যাপক প্রশংসিত হয়। এদিকে ২ এপ্রিল আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানের আগে বাংলাদেশি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকার মসজিদগুলোতে প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। যেখানে প্রবাসে বেড়ে ওঠা শত শত শিশু কিশোর-কিশোরী অংশ নেয়। সেখান থেকে বাছাই করা শতাধিক শিশু কিশোর অংশ নেয় মূল অনুষ্ঠানে। 

‘জাতীয় শোক দিবস’ স্মরণে বাংলাদেশ সোসাইটির দোয়া ও আলোচনা সভা

‘জাতীয় শোক দিবস’ স্মরণে বাংলাদেশ সোসাইটি ১৫ আগস্ট ২০২৩ বিকেলে সোসাইটি অফিসে দোয়া ও আলোচনা সভার আয়োজন করে। সভায় ‘জাতির জনক’ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার নিন্দা জানানো হয় এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নিহত সকলের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করা হয়। 

মহান বিজয় দিবস উদযাপন

প্রতি বছরের মতো এবারও বাংলাদেশের মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি। যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি উদযাপন উপলক্ষ্যে ১৭ ডিসেম্বর সোসাইটি কার্যালয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী অংশ নেন। অনুষ্ঠানে নতুন প্রজন্মের ছেলে-মেয়েদের জন্য ছিলো বিভিন্ন প্রতিযোগিতা। এতে সোসাইটি স্কুলের শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ উপস্থিত সকলকে মুগ্ধ করে। পরে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। 

স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিল

বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও প্রখ্যাত ছাত্রনেতা আতিকুর রহমান সালুর ইন্তেকালে সোসাইটির উদ্যোগে গত ১৮ ডিসেম্বর সোসাইটি কার্যালয়ে স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। 

বিশেষ সাধারণ সভা

গত ৫ জুন উডসাইডের কুইন্স প্যালেসে জরুরি বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সোসাইটির গঠনতন্ত্রকে আরও যুগউপযোগী করতে এর বিভিন্ন ধারা ও উপধারার সংশোধনীর বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সাধারণ সদস্যদের মতামতের জন্য সংশোধনী প্রস্তাব উত্থাপন করা হয় এবং উপস্থিত সাধারণ সদস্যদের ভোটের মাধ্যমে সংশোধনীগুলো পাস করা হয়। এর পূর্বে সংবিধান অনুযায়ী গঠনতন্ত্র সংশোধনী কমিটি গঠন করা হয়। 

ট্রাস্টি বোর্ড গঠন

বাংলাদেশ সোসাইটির মাসিক সভায় নতুন ট্রাস্টি বোর্ড গঠন করা হয়।

আরো ৫০০ কবর ক্রয়ের সিদ্ধান্ত

বাংলাদেশ সোসাইটির নিজস্ব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত কার্যকরী কমিটির নিয়মিত মাসিক সভায় সোসাইটির জন্য আরো ৫০০ কবর ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয়। দিন দিন কমিউনিটি বড় হওয়ার কারণে কবরের প্রয়োজনীয়তা থাকায় এই কবর ক্রয়ের সিদ্ধান্ত হয় এবং বর্তমানে তা প্রক্রিয়াধীন আছে। নতুন কবর ক্রয়ের জন্য আনুমানিক ৫০০ হাজার ডলার প্রয়োজন। সোসাইটির ফান্ডে এতো অর্থ না থাকায়  কমিউনিটির বিত্তবানসহ সকলকে সাধ্যমত কবর ক্রয়ে এগিয়ে আসার জন্য বিনীত আহ্বান জানাই। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ইতিপূর্বে সোসাইটির ক্রয়কৃত ৬০০ কবরের মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি কবর অব্যবহৃত রয়েছে। উল্লেখ্য, শুধুমাত্র মহামারি করোনার সময় ২৭০টি কবর বিভিন্ন জনকে দেয়া হয়। সোসাইটির এই উদ্যোগ কমিউনিটি সহ সকল মহলে প্রশংসিত হয়। 

সোসাইটি কর্তৃক অনুদান

উপস্থিত সদস্যবৃন্দ, প্রবাসীদের মরদেহ কবর দেওয়া বা সৎকার করা ও দেশে প্রেরণের জন্য মানবিক স্বার্থে সোসাইটির পক্ষ থেকে আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। 

সদস্য সংগ্রহ অভিযান

বর্তমান কার্যকরী কমিটি দায়িত্ব নেয়ার পর সোসাইটির মর্যাদা বৃদ্ধির পাশাপাশি আর্থিক সঙ্গতি বৃদ্ধির লক্ষ্যে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে বিশেষ মনোযোগী হয়। এতে এ পর্যন্ত সোসাইটির ইতিহাসে সর্বাধিক ৩ শতাধিক প্রবাসী আজীবন সদস্যপদ গ্রহণ করেন এবং প্রায় ৩০০ জন নতুন সাধারণ সদস্য পদ নবায়ন করেন। যারা নতুন আজীবন সদস্য গ্রহণ ও সাধারণ সদস্যপদ নবায়ন করেছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে নতুন আজীবন সদস্যপদ গ্রহণ ও সাধারণ সদস্যপদ নবায়নের জন্য সকল প্রবাসীর প্রতি আহ্বান জানাই। 

সোসাইটির অর্থ ব্যাংক থেকে আত্মসাতের চেষ্টা

উপস্থিত সদস্যবৃন্দ, আপনাদের সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, গত সেপ্টেম্বর মাসে সোসাইটির ব্যাংক একাউন্ট থেকে একাধিক ভুয়া চেকের মাধ্যমে এক লাখ ৬৫ হাজার ডলার উত্তোলন করার ঘটনা ঘটে। তাৎক্ষণিক খবরটি জেনে আমরা তরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণের ফলে ২৪ ঘন্টার মধ্যেই পুরো অর্থ উদ্ধার করতে সক্ষম হই। এজন্য সভাপতি মো: রব মিয়া ও কোষাধ্যক্ষ মো: নওশেদ হোসেনের বিশেষ ভূমিকা স্মরণযোগ্য। এব্যাপারে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ সহযোগিতা করার জন্য তাদেরকেও ধন্যবাদ জানাই। একই সাথে দৃষ্কৃতকারীদের চিহ্নিত করতে সর্বোচ্চ আইনী প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।

সোসাইটির ভবন প্রসঙ্গ

আপনারা জানেন যে, সোসাইটির বর্তমান ভবন সম্পূর্ণ পেইড আপ। কিন্তু ভবনটি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়সহ সিটি কর্তৃক বিভিন্ন ভায়োলেশনের জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। ভবন ক্রয়ের পর থেকেই অর্থাৎ ১৯৯৩ সাল থেকে এসব ভায়োলেশন বর্তমান কার্যকরি পরিষদকে রিমোভ এবং সেটেল্ড করতে হচ্ছে। এব্যাপারে এ পর্যন্ত আনুমানিক ১৮ হাজার ২৫০ ডলার ইতিমধ্যেই ব্যয় করা হয়েছে। যার মধ্যে ১৫ হাজার ৭৫০ ডলার ব্যয় করে বয়লারের ভায়োলেশন রিমুভ করা হয়। এছাড়াও এটর্নী নিয়োগ করে আন্যান্য ভায়োলেশনের সিভিল পেলান্টি মওকুফের চেষ্টা চলছে। যার পরিমান ৮০ হাজার ডলারের বেশি। এবাবদ ২ হাজার ৫০০ ডলার এটর্নী ফি পরিশোধ করা হয়েছে। 

সোসাইটি ভবন রেন্যুভেশন

আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন যে, দীর্ঘদিন পর ভবন রেন্যুভেশন করে ভবনটি সুন্দর করা হয়েছে। ফলে যে কেউ সোসাইটি ভবনে আসলে ভালো লাগবে এবং খুশি হবেন। যার ফলে এখন অনেক অনুষ্ঠান সোসাইটি ভবনেই আয়োজন করা সম্ভব হচ্ছে। 

সাধারণ সম্পাদকের রিপোর্টের পর পর উপস্থিত সাধারণ সদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন সিদ্দিকী। এর মধ্যে বাংলাদেশ সোসাইটির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মহিউদ্দিন দেওয়ান ও কোষাধ্যক্ষ নওশেদ হোসেনের বিষয়টি উপস্থাপন করলে সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, আমরা চেষ্টা করছি বিষয়টি নিষ্পত্তির। তবে আপনি ভূমিকা নেন, আমি আপনাকে সহযোগিতা করবো বিষয়টি ফয়সালা করতে।কোষাধ্যক্ষ তার রিপোর্টে উল্লেখ করেন, তার ২০২২ সালের ১ নভেম্বর দায়িত্ব নেওয়ার সময় ব্যালেন্স পেয়েছিলেন ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮২৬ ডলার। বর্তমানে ব্যাংক ব্যালেন্স রয়েছে ২ লাখ ৫১ হাজার ৩১০ ডলার।

তিনি আরো উল্লেখ করেন, ২০২২ সালের ৩১শে অক্টোবর আমরা অভিষিক্ত হওয়ার পর ১লা নভেম্বর থেকে দায়িত্বপালন শুরু করি। আমাদের দায়িত্ব গ্রহণকালীন সময়ে সোসাইটির ব্যাংক একাউন্টে ছিলো ১ লাখ ৯৯ হাজার ৮২৬ ডলার ৬০ সেন্ট। বর্তমানে সোসাইটির তিনটি ব্যাংক একাউন্টে ৩০শে নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত ২ লাখ ৫১ হাজার ৩১০ ডলার রয়েছে। আপনাদের সদয় অবগতির জন্য উল্লেখযোগ্য আয়-ব্যয়ের হিসাব সংক্ষেপে নিম্নে তুলে ধরছি। বিস্তারিত সিপিএ’র অডিট রিপোর্টে জানা যাবে। 

বাংলাদেশ সোসাইটির ইতিহাসে এই অল্প সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বেশী সংখ্যক ৩০৪জন প্রবাসী বাংলাদেশী আজীবন সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন। আজীবন সদস্য ফি ৭৭ হাজার ডলার আয় হয়েছে। এবং সাধারণ সদস্য ২৮২ জন থেকে আয় হয়েছে ৫ হাজার ৬৪০ ডলার (নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত)। আজীবন সদস্য ও সদস্য থেকে মোট আয় হয়েছে ৮২ হাজার ৬৪০ ডলার। এছাড়াও গ্রেভিয়ার্ড থেকে আয় ও অনুদান সহ পাওয়া গেছে ৪৯ হাজার ৯০০ ডলার। 

এখানে একটি কথা না বললেই নয় যে, গত ১৯শে সেপ্টেম্বর থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সময়ের মধ্যে কে বা কারা স্বাক্ষর জাল করে সোসাইটির ব্যাংক একাউন্ট থেকে তিনটি ট্র্যানজেকশনের মাধ্যমে ১ লাখ ৬৫ হাজার ডলার উত্তোলনের চেষ্টা করে তাৎক্ষণিক ৩৪ হাজার ডলার নিয়ে যায়। কিন্তু সাথে সাথে বিষয়টি জেনে আমরা ব্যাংকের সাথে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার পর ২৪ ঘন্টার মধ্যে সোসাইটির সম্পূর্ণ অর্থ রক্ষা করা সম্ভব হয়। পরবর্তীতে এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তাধীন রয়েছে। 

সোসাইটি আয়োজিত বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে, অভিষেক-২০২২, মহান বিজয় দিবস, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, ইফতার ও দোয়া মাহফিল থেকে মোট ডোনেশন এবং বিজ্ঞাপন থেকে আয় হয়েছে ৩৪ হাজার ৩৫০ ডলার। এছাড়াও সোসাইটি ভবনের দোকান ভাড়া, ১লা জানুয়ারী থেকে নভেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত আয় হয়েছে ৫৫ হাজার ডলার। যারা আজীবন সদস্যপদ গ্রহণ এবং সদস্য পদ গ্রহণ করেছেন এবং সোসাইটির অনুষ্ঠানে যারা আমাদেরকে ডোনেশন ও বিজ্ঞাপন দিয়ে সহযোগিতা করেছেন বাংলাদেশ সোসাইটির পক্ষ থেকে তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। 

এই সময়ে উল্লেখ্যযোগ্য ব্যয়ের মধ্যে উল্লেখিত ৪টি অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় হয়েছে ৬৮ হাজার ৪৫৫ ডলার ৪ সেন্ট। অন্যান্য ব্যয়ের হিসাব সিপিএ’র রিপোর্টে উল্লেখ রয়েছে। এখানে উল্লেখ্য, যে সোসাইটির সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব সিপিএ কর্তৃক সার্টিফাইড করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সোসাইটির সাধারণ সভায় কর্মকর্তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ-সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক রিজু মোহাম্মদ, ক্রীড়া সম্পাদক মাইনুল উদ্দিন মাহবুব, সাহিত্য সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ, স্কুল ও শিক্ষা বিষয়ক সম্পাদক প্রদীপ ভট্টাচার্য, কার্যকরি সদস্য ফারহানা চৌধুরী, আক্তার বাবুল, আবুল বাশার সন্দ্বপী, সাদী মিন্টু, শাহ মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ সোসাইটির ট্রাস্ট বোর্ডের সদস্য হাজী মফিজুর রহমান, আজিমুর রহমান বোরহান, জহিরুল ইসলাম মোল্লা, এমদাদুল হক কামাল, আতোয়ারুল আলম, নির্বাচন কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জামাল আহমেদ জনি, সাবেক ট্রাস্টি বোর্ড সদস্য কাজী আজহারুল হক মিলন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাব্বী মোহাম্মদ খোকন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী, সাবেক কর্মকর্তা জামান তপন, সৈয়দ এম কে জামান, নূরুল হক, আবুল কাশেম, নাদের এ আইয়ুব, এ কে এ, রফিকুল ইসলাম ডালিম, নির্বাচন কমিশনের সদস্য আনোয়ার হোসেন, আব্দুল বাসিত, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সভাপতি নাজমুল হাসান মানিক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদ মিন্টু, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ইউছুপ জসীম, সালেহ চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মশিউর রহমান, বদরুল হক আজাদ, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট এম উদ্দিন পিন্টু, নর্থ বেঙ্গল ফাউন্ডেশনের সভাপতি রাফেল তালুকদার, প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম, রুহুল আমিন, আলমগীর হোসেন প্রমুখ।

শেয়ার করুন