২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:৪২:৩০ অপরাহ্ন


বদিউল আলম মজুমদার বললেন মানুষ অদম্য হয়ে উঠতে পারে
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-১২-২০২২
বদিউল আলম মজুমদার বললেন মানুষ অদম্য হয়ে উঠতে পারে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন বদিউল আলম


দি হাঙ্গার প্রজেক্টের কান্ট্রি ডিরেক্টর ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, মানুষ অদম্য হয়ে উঠতে পারে। যদি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়, প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়, তাকে কেউ আটকে রাখতে পারবে না। গত ২০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, শের-ই বাংলানগর ঢাকায় ‘লীড বাংলাদেশ ইয়ুথ সামিট-২০২২’ এ একথা বলেন তিনি। 

ড. বদিউল আলম মজুমদার আরো বলেন, আমি চার আনা পয়সা নিয়ে ঢাকা শহরে আসি পড়াশোনার উদ্দেশ্যে। হলের বাবুর্চিদের পড়িয়ে বিনে পয়সায় ক্যান্টিনের খাবার খেতাম। পাশাপাশি ছাত্ররাজনীতিও করেছি। ৬ দফা, ১১ দফাসহ ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানে একজন ক্ষুদ্রকর্মী হিসেবে রাজপথে ছিলাম। সে জায়গা থেকে তোমাদের বলতে চাই, আমাদের জেনারেশন স্বাধীনতা এনেছে। তোমাদের মুক্তি আনতে হবে। আমাদের উন্নয়ন হয়েছে। কিন্ত উন্নতি হয়নি। স্বাধীনতার জন্য আমাদের বীর মুক্তিযোদ্ধারা জীবন দিয়েছে। তাদের এই উৎসর্গকে কাজে লাগাতে হবে। বাংলাদেশকে যদি এগিয়ে নিতে হয়, তাহলে তরুণদের সক্রিয় হতে হবে। তোমরা মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী প্রজন্ম। তোমাদের জন্য অবারিত সুযোগ। আমি বিশ্বাস করি তোমরাই পারবে।

তিন শতাধিক তরুণ-তরুণীর অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত এই সামিটে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সেন্টার ফর এডভান্সড স্টাডিজের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর ড. আতিক রহমান, ইউএনভি বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মো. আখতার উদ্দীন, এ টু আই কর্মকর্তা জনাব মো. আনোয়ারুল আরিফ খান, সিপিডির সিনিয়র রিসার্জ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান, দি হাঙ্গার প্রজেক্টের পরিচালক (প্রোগ্রাম) নাছিমা আক্তার জলি, ব্রিটিশ কাউন্সিলের প্রোগ্রাম ম্যানেজার আব্দুর রহমান খান প্রমুখ।   

নাছিমা আক্তার জলি বলেন, ডিসেম্বর মাস, বিজয়ের মাস। এ বিজয় ছিনিয়ে আনতে আমাদের অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল। ৩০ লাখ মানুষের আত্মাহুতির পাশাপাশি দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম-ইজ্জতের বিনিময়ে আমরা এ বিজয় ছিনিয়ে এনেছি। কবি হেলাল হাফিজের কবিতার একটি লাইন আছে, ‘এখন যৌবন যার, যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়।’ হেলাল হাফিজের সুরে আমিও উপস্থিত স্বেচ্ছাব্রতীদের বলতে চাই, এখন যৌবন যার, অর্থনৈতিক মুক্তির আন্দোলনে ঝাপিয়ে পড়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়।  

আব্দুর রহমান খান বলেন, বর্তমানে আমাদের মোট জনসংখ্যার চার ভাগের এক ভাগই বয়সে তরুণ। কিন্তু ৪০ লাখের মতো বিশাল এই তরুণগোষ্ঠীর অনেকেরই পড়ালেখা নেই। দক্ষতা নেই। অন্যদিকে ২০৩৬ সাল থেকে এই তরুণগোষ্ঠী বুড়ো হতে শুরু করবে। ফলে বিশাল এই তরুণগোষ্ঠীকে সঠিক পথে আলোর পথে নিয়ে আসত হবে। তাহলেই দেশ সমৃদ্ধির পথে হাঁটবে।

ড. আতিক রহমান বলেন, যোগাযোগ দক্ষতা বাড়াতে হবে। পড়াশোনা করতে হবে। উৎপাদিত নতুন নতুন জ্ঞান-বিজ্ঞানের বিষয়ে ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। সর্বোপরি জ্ঞানকে যে আটকে রাখা যায় না, এটি আমাদের উপলব্ধিতে করতে হবে। 

মো. আখতার উদ্দীন বলেন, তরুণদের মধ্যে যারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে চান, তারা জাতিসংঘের স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে কাজ করতে পারেন। ২৬ বছর বছর বয়সীদের জন্য এ সুযোগটি রয়েছে। 

শাহানাজ করিম বলেন, আমরা যখন সোশ্যাল হারমোনি বা সামাজিক সম্প্রীতির কথা বলি, তার পেছনে কিন্তু আছে বৈচিত্রতা। ধর্মীয় বৈচিত্রতা, জাতিগত বৈচিত্রতা, ভাষাগত বৈচিত্রতা। এগুলোর আবার উপ-ভাগও আছে। এ সবগুলোর সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমেই সামাজিক সম্প্রীতি অর্জিত হয়। 

ফারাহ কবীর বলেন, আমরা নিরাপদ নয়। আমাদের সমাজও নিরাপদ নয় । এক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। এ জন্য এসডিজিকে সামনে রেখে কাজ করাটা জরুরি। কেননা এসডিজিতে সব সমস্যার কথাই বলা হয়েছে। নারী-পুরুষের সমতা থেকে শুরু করে সুশাসনসহ যুবকদের নিয়ে কাজের কথা বলা আছে। ২০-২২ বছর আগে ব্রিটিশ কাউন্সিলে কাজ করার সময় আমি একটি ফোরাম করেছিলাম। এতদিন পরেও আমারা অবস্থান আগের মতোই। 

খুব একটা অগ্রগতি হচ্ছে না। অগ্রগতি করতে হলে আমাদের সকলের কথা চিন্তা করতে হবে। প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের সঙ্গে বৈষম্য ঘুচাতে হবে। ভারসাম্য আনতে হবে। যেহেতু এসডিজি বাস্তবায়নে সরকারের অঙ্গীকারের পাশাপাশি জাতিসংঘের অঙ্গীকারও আছে। তাই এটি নিয়ে আমাদের কাজ চালিয়ে যেতে হবে।

শেয়ার করুন