২৬ এপ্রিল ২০১২, শুক্রবার, ০৫:০১:০৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার রোডমার্চ ৬ ও ৭ জানুয়ারি
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০১-২০২৩
সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার রোডমার্চ ৬ ও ৭ জানুয়ারি মতবিনিময় সভায় ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ


ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীর অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবিতে আগামী ৬-৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বাধীন ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু-আদিবাসি ঐক্যমোর্চা রোড মার্চ করবে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ঢাকা অভিমুখে এই রোড মার্চ হবে। সংগঠনটি আহুত রোড মার্চের প্রতি পূর্ণ সমর্থন ও একাত্মতা প্রকাশ করে সর্বস্তরের জনগণকে এ রোড মার্চে সামিল হবার আহ্বান জানিয়েছে। তাদের আহবানে আরো বলা হয়, এর পরেও ধারাবাহিকভাবে যেসব কর্মসূচি আসবে তা বাস্তবায়নে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠী ঐক্যবদ্ধ থাকবে।

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে সরকারি দলের নির্বাচনী ইশতেহারে প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু-আদিবাসী স্বার্থবান্ধব অঙ্গীকারসমূহ বাস্তবায়নের জোর দাবিতে এই রোডমার্চ হতে যাচ্ছে। এব্যাপারে সংখ্যালঘু-আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ এবং বিশিষ্ট সংখ্যালঘু বিদগ্ধজন এ মর্মে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিভিন্ন সভা সমাবেশে এই বলে যে, প্রধানমন্ত্রী যেহেতু এ অঙ্গীকার করেছেন সেহেতু দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগেই তাঁকে এর বাস্তবায়নে ইতিবাচক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। যাতে সংখ্যালঘু আদিবাসী জনগোষ্ঠী কোনভাবেই ভাবতে না পারে যে তারা রাজনৈতিকভাবে প্রতারিত হয়েছে। এ ভাবনা যদি অব্যাহত থাকে তবে তা গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় সংকট তৈরি করতে পারে। তারা বলেন, সংখ্যালঘু নেতৃবৃন্দ অতীতের মত নির্বাচনী খেলায় তাদেরকে যাতে ব্যবহার করা না হয় সে ব্যাপারে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। 

এ ব্যাপারে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের দপ্তর সম্পাদক মিহির রঞ্জন হাওলাদার দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদকে জানান রাজধানী ঢাকার বাহির থেকে জেলা শহরের বিভিন্ন পয়েন্ট থেকে ৬ তারিখ মিছিল নিয়ে রওয়ানা দেয়া হবে। ঢাকায় শাহবাগে এসে পরের দিন ৭ তারিখ জমায়েত হবে সংগঠনের নেতাকর্মী। শাহবাগে সমাবেশ শেষে মিছিল নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে দাবি আদায়ে রোড মার্চ করা হবে। এরং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে স্বারকলিপি দেয়া হবে। 

সম্প্রতি সিরডাপ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়  হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে। এই সভায় এ মর্মে সরকারি দলকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলা হয়, বিগত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার দলের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিলেন। এ ইশতেহারে ‘ক্ষুদ্র জাতিস্বত্বা, নৃ-গোষ্ঠী, ধর্মীয় সংখ্যালঘু ও অনুন্নত সম্প্রদায়’ সম্বলিত ৩.২৯ নম্বর অনুচ্ছেদের লক্ষ্য ও পরিকল্পনায় অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন দ্বারা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে প্রকৃত স্বত্তাধিকারীদের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন গঠন, সংখ্যালঘু বিশেষ সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সমতলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জমি, জলাধার ও বন এলাকায় অধিকার সংরক্ষণের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণসহ ভূমি কমিশনের কার্যক্রম অব্যাহত রাখা, সংখ্যালঘু ও ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রতি বৈষম্যমূলক সকল প্রকার আইন ও অন্যান্য অন্যায় ব্যবস্থার অবসান, ক্ষুদ্র জাতিস্বত্বা ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের অধিকারের স্বীকৃতি এবং তাদের ভাষা, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও জীবনধারার স্বাতন্ত্র্য সংরক্ষণ ও তাদের সুষম উন্নয়নের জন্যে অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন ইত্যাদি উল্লেখ রয়েছে। 

সভায় এতে ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর নেতৃবৃন্দ বলেছেন, তাদের দাবি না মানা হলে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠী রাজনৈতিক প্রতারণার শিকার হয়েছে বলে মনে করার সংগত কারণ থাকবে যা আগামী দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচনে নেতিবাচক প্রতিফলন ঘটাতে পারে। এর দায় সংখ্যালঘুরা কোনভাবেই বহন করবে না।

সে সভায় নেতারা অধ্যাপক ড. নিমচন্দ্র ভৌমিকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এবং ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু ও আদিবাসী জনগোষ্ঠীর ঐক্যমোর্চার সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট রাণা দাশগুপ্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এ্যালামনাই এ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রঞ্জন কর্মকারের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত এ সভায় অন্যান্যের মধ্যে মতবিনিময় করেন বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ সাবেক মন্ত্রী দীলিপ বড়ুয়া, সাবেক সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদার ও সুনীল শুভ রায়, নির্মল রোজারিও,  বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ড. নিতীশ দেবনাথ, বিশিষ্ট সাংবাদিক মনোজ কান্তি রায়, লে. কর্ণেল (অব.) নিরঞ্জন ভট্টাচার্য, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক মনোরঞ্জন ঘোষাল, বিশিষ্ট চাটার্ড এ্যাকাউন্টটেন্ট সুনির্মল চৌধুরী, সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চাভুক্ত সংগঠনের পক্ষে অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, সাগর সাধু ঠাকুর, ড. প্রভাষ চন্দ্র রায়, শংকর সরকার, রাজকুমার দাস, ড. গজেন্দ্র নাথ মাহাতো, সুব্রত হাজরা, হিমাদ্রী শেখর, বিশিষ্ট ছাত্রনেতা অতুলন দাশ ও গৌতম শীল, বিশিষ্ট নারী নেত্রী সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য প্রমুখ।

সংহতি সমাবেশে উপস্থিত থাকতে না পারলেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান এক বার্তায় সরকারি দলের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের আন্দোলনের একজন অংশীদার হিসেবে নিজেকে উল্লেখ করে বলেন, সরকার প্রতিশ্রুতি রক্ষা না করায় আমরা পার্বত্য চট্টগ্রামের আদিবাসীরা নিজ ভূমিতে বাংলাদেশে পরবাসী হয়ে আছি। আমরা পার্বত্য চুক্তি পূর্ণ বাস্তবায়নে কথা বললে বিচ্ছিন্নতাবাদী বা রাষ্ট্রদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছি।

শিল্পী কুমার বিশ্বজিত সংহতি সমাবেশের সাথে সম্পূর্ণ একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, চলমান আন্দোলনের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছি। ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু-আদিবাসী জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অব্যাহত নির্যাতন-নিপীড়ন-বৈষম্য বঞ্চনা অবসানে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া বিকল্প কোন পথ খোলা নেই।

সভায় কলকাতা থেকে বিশিষ্ট নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার জানিয়েছেন, ঐক্য পরিষদের নেতৃত্বে চলমান সংখ্যালঘু-আদিবাসী ঐক্যমোর্চার আন্দোলনের সাথে আমিও একমত।

একিই সভায় বিশিষ্ট কবি নির্মলেন্দু গুণ ও রাজনীতিবিদ অধ্যাপক সুকান্ত দাশ ঐক্যমোর্চার চলমান আন্দোলনের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।

শেয়ার করুন