বাংলাদেশি
কমিউনিটির অত্যন্ত পরিচিত মুখ ও মানবদরদী
ডা. ফেরদৌস খন্দকারের পিতা মরহুম আবুল
কাশেম ফয়েজ খন্দকার মরণব্যাধি
ক্যানসারের সাথে লড়াই করে
অবশেষে গত ২০ জানুয়ারি
মৃত্যুবরণ করেন (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি
রাজিউন)। মৃত্যুকালে তার
বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর। মৃত্যুকালে
তিনি সন্তানসহ আত্মীয়-স্বজন রেখে গেছেন। মরহুম
আবুল কাশেম ফয়েজের নামাজে জানাজা ২১ জানুয়ারি জ্যামাইকা
মুসলিম সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা পরিচালনা
করেন মসজিদের খতিব মওলানা আবু
জাফর বেগ। জানাজার পূর্বে
ডা. ফেরদৌস খন্দকার বলেন, বাবার হাত ধরে ১৯৯১
সালে আমরা আমেরিকায় এসেছিলাম।
এই মসজিদেই আমার বাবার সাথে
নামাজ পড়তে আসতাম। বাবার
কাছে কারো কোনো পাওনা
থাকলে আমার সাথে যোগাযোগ
করুন। বাবার হয়ে তা আমি
পরিশোধ করবো। দীর্ঘদিন মরণব্যাধি ক্যানসারে ভোগার পর পিতা ফয়েজ
খন্দকার শুক্রবার ২০ ফেব্রæয়ারি
বিকেলে আল্লাহর ডাকে সাড়া দিয়ে
আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।
আল্লাহ নিশ্চয়ই তাকে বেহেশত নসিব
করবেন।
জ্যামাইকা মুসলিম সেন্টারে একইসাথে আরো ২ জনের
নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মরহুমেরা হলেন তাহমিনা বেগম
ও রুবিনা সাহিদ। জানা গেছে, ডা.
ফেরদৌস খন্দকারের পিতা ফয়েজ আহমেদ
খন্দকার নিউইয়র্কে একটি ফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানিতে
কাজ করতেন। নামাজে জানাজা শেষে তার মৃতদেহ
এমিরেটসের ফ্লাইটে শনিবারই বাংলাদেশে নিয়ে যাওয়া হয়।
সোমবার জানাজা শেষে বাংলাদেশের দেবিদ্বার
উপজেলার বাকশার গ্রামে মায়ের কবরের পাশে তাকে সমাহিত
করা হয়। মরহুমের মরদেহের
সাথে ডা. ফেরদৌস বাংলাদেশে
গিয়েছেন। উল্লেখ্য, ফয়েজ আহমেদ সাংবাদিক
কাজি মন্টুর ছেলে সাইয়িদ কাজির
শ্বশুর।
এদিকে ডা. ফেরদৌস খন্দকার
সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ফ্লাইট ইকে ৫৮২, আমার
বাবার শেষযাত্রা, শবযাত্রা, বাবা সুযোগটা দিলেনই
না। বেশ কিছুদিন ধরেই
বাবার শরীরটা খারাপ যাচ্ছিলো। প্লেনে উঠিয়ে যে বাংলাদেশে নিয়ে
যাবো সেজন্য তার শরীরটা প্রস্তুত
ছিলো না। সেরকম প্রস্তুতির
অপেক্ষায় ছিলাম। সুযোগ পেলেই প্লেনে করে নিয়ে যাবো
দেশে জীবিত। সারাজীবন অনেক কষ্ট করেছেন,
একটি পয়সাও অপচয় করেননি। প্রতিটি
পয়সা বাঁচিয়ে গরিবদের জন্য খরচ করেছেন।
নিজেকেও কিছু দেননি। তাই
খুব শখ ছিলো বাবা-মাকে বিজনেস ক্লাসে
বাংলাদেশ নিয়ে যাবো। প্লেনে
বসে বলবো বাবা কেমন
লাগছে? বাবার সুন্দর হাসিটুকু দেখবো। পরিতৃপ্তির হাসি। সে সুযোগটা তিনি
আর দিলেন না। তিনি চলে
গেলেন না ফেরার দেশে।
আজ প্লেনে নিয়ে যাচ্ছি বাবাকে।
ফ্লাইট ইকে-৫৮২তে। আমি
বিজনেস ক্লাসে একা যাচ্ছি। আর
বাবা একই প্লেনে কারগোতে
যাচ্ছেন। সারাটা পথ এই আক্ষেপটুকু
বয়ে বেড়াচ্ছি।
আজ (২৩ জানুয়ারি) সোমবার।
সকাল সাড়ে এগারোটায় বনানীতে
নিজবাড়িতে তার ২য় নামাজে
জানাজা। বাড়ি # নম্বর ১১, রোড নম্বর
১৮ বøক/এ,
বনানী। এরপর পরই যাত্রা
শুরু হবে দেবিদ্বারের বাকসার
গ্রামের দিকে। যেখানে তিনি সব সময়
তার মায়ের কবরের পাশে শুয়ে থাকতে
চেয়েছেন।
আজ তার সেই যাত্রার
শুরু। আশা করছি আসরের
পর পরই সেখানে তার
শেষ জানাজা হবে এবং মায়ের
কাছে ছেলে পৌঁছে যাবে।
যারা পারবেন অংশগ্রহণ করবেন। যারা পারবেন না
তারা দোয়াটুকু করবেন ঘর থেকে। আমার
বাবা ভীষণ ভালো মানুষ
ছিলেন। আল্লাহ তাকে সেই সম্মান
দিয়েই নিয়েছেন শেষ সময়টুকুতে। তার
চলে যাবার দিনটিও পবিত্র জুমাবার ছিলো। তাই আমার কোনো
কষ্ট নেই। তিনি ভালো
থাকবেন। আল্লাহ তাকে ভালো রাখবেন
ইনশাআল্লাহ। সবাই দোয়া করবেন।
রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি ছগিরা।