আসছে আগস্ট মাস। বাংলাদেশের ইতিহাসে কলংকিত মাস। বাংলাদেশের মাটি, মানুষের প্রিয় একজন মানুষ দীর্ঘদিনের সংগ্রাম, সাধনা, জেলজুলুম, মৃত্যু ভয় উপেক্ষা করে একটি জাতি, একটি দেশ, একটি পতাকা অর্জনে নেতৃত্ব দিলেন, ভাত-মাছ খাওয়া নিরীহ, নিরস্ত্র একটি জাতিকে দুনিয়ার অন্যতম সেরা, দুর্ধর্ষ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সশস্ত্র যুদ্ধে উজ্জীবিত করলেন। স্বাধীন বাংলাদেশে ভরা পালকের ধ্বংসস্তূপ থেকে সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্নের বীজ বুনে দিলেন। তাকেই দেশি-বিদেশি শক্তির ক্রীড়নক হয়ে একশ্রেণির বিশ্বাসঘাতক নির্মমভাবে হত্যা করলো।
‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, বাংলার মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো, ইনশাআল্লাহ।’ রক্ত অশ্রুর মূল্যে মুক্ত হলো বাংলাদেশ। অথচ মুক্ত বাংলায় বেইমান কিছু মানুষের হাতে জীবন দিলেন মহান মানুষটি।
২০২৩ আগস্ট মাস জুড়েই নানা অনুষ্ঠানে নানাভাবে স্মরণ করা হবে মানুষটিকে। ৯ আগস্ট জ্বালানি বিদ্যুৎ সেক্টর স্মরণ করবে দিনটিকে জ্বালানি নিরাপত্তা দিন হিসেবে। বঙ্গবন্ধুর জ্বালানি দর্শন ছিল নিজেদের প্রশিক্ষিত জনবল দিয়ে, নিজস্ব প্রাকৃতিক সম্পদ-গ্যাস, কয়লা ব্যবহার করে টেকসই জ্বালানি নিরাপত্তা অর্জন। আর জ্বালানি নিরাপত্তার মাধ্যমে কৃষিনির্ভরতাকে শিল্পনির্ভর করে অর্থনৈতিক উন্নয়ন। আজ যখন তার নেতৃত্ব দেওয়া বা নিজস্ব দল ক্ষমতায় তার একটি দর্শন সবাইকে বিদ্যুৎ সরবরাহের আওতায় আনা অর্জিত হয়েছে। কিন্তু জাতি কিন্তু তার মূল দর্শন নিজস্ব জ্বালানি আর খনিজসম্পদ আহরণ করে টেকসই জ্বালানিনির্ভরতা থেকে বহুদূর সরে গেছে। বিভ্রান্ত জ্বালানি কৌশল নিয়ে দেশ এখন আমদানিকৃত জ্বালানিনির্ভর। ডলার সংকটে জ্বালানি নিরাপত্তা গভীর অনিশ্চয়তায়। কথাগুলো কি একবারও স্মরণে আসবে ৭ আগস্ট জ্বালানি বিদ্যুৎখাতের মানুষগুলোর? কালো বাজ পড়ে মাতম করতে কি লজ্জা হবে না? নাকি এদিন কুমিরের মতো তারাও কান্নায় বুক ভাসিয়ে দেবে। কান্নার অভিনয় নাটক করবে।
দেশের মানুষ জ্বালানি বিদ্যুৎ সংকটে, অথচ মাটির নিচে পড়ে আছে অমূল্য কয়লাসম্পদ, গ্যাসসম্পদ। ভ্রান্ত জ্বালানি কৌশলের সুযোগ নিয়ে কিছু মানুষ দেশ-বিদেশে গড়েছে সম্পদের পাহাড়। বিধাতার সঠিক বিচার হবেই অচিরে। কারণ যে মানুষটি দেশের অগনিত নিপীড়িত, লাঞ্ছিত মানুষদের নিয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন। সেখানে আজ কী হচ্ছে। বিদেশ থেকে ধার নেওয়া অর্থের ফাঁদে জর্জরিত। মহান মানুষটির আত্মা হয়তো কষ্ট পাচ্ছে।