২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৩:০৫:৪৮ অপরাহ্ন


পুলিশের ঊধর্বতন কর্মকর্তাদের দলীয় বক্তব্য প্রদানের ঘটনা
একতরফা নির্বাচনের আলামত দেখছেন রিজভী
নিজস্ব প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২০-০৮-২০২৩
একতরফা নির্বাচনের আলামত  দেখছেন রিজভী


পুলিশের ঊধর্বতন কর্মকর্তাদের দলীয় বক্তব্য প্রদানের ঘটনা ‘একতরফা নির্বাচনের আলামত’ বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। রোববার দুপুরে এক মানববন্ধন কর্মসূচিতে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব এই মন্তব্য করেন।

তিনি বলেন, ‘‘ গতকাল (শনিবার) নাকি উচ্চ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের একটি বৈঠক হয়েছে। সেখানে একজন কর্মকর্তার বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের ওই কর্মকর্তার বক্তব্য শুনার পর মনে হয়েছে ইনি কি পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা না… শাহবাগ আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক আমি এটার কোনো পার্থক্য করতে পারিনি। যখন উধর্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা হাছান মাহমুদের(তথ্য মন্ত্রী)ভাষায় কথা বলেন, যখন ঊধর্বতন কর্মকর্তারা যুব লীগ-ছাত্র লীগের নেতাদের ভাষায় কথা বলেন তাহলে আগামী নির্বাচন কি ভয়ংকর নির্বাচন হবে। ওই নির্বাচনে জনগন যেতে পারবে না, ভোটাররা যেতে পারবে না, ওই নির্বাচনে বিরোধী দল অংশগ্রহন দূরে থাক, প্রতিযোগিতা দূরে থাক ওই নির্বাচন হবে একতরফা আরেকটা অভিনব নির্বাচন। এই নির্বাচনের প্রক্রিয়ার আলামত হচ্ছে গতকালে ঊধর্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের দলীয় বক্তব্য প্রদান…।”

রিজভী বলেন, ‘‘ এই পুলিশ প্রশাসন দিয়ে গ্রামে গ্রামে বলানো হবে যারা ভোট দিতে যাবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে, যারা কোনো প্রচারণা করবে তাদেরকে গ্রেফতার করবে… এই হচ্ছে দলীয় প্রশাসন। এভাবেই শেখ হাসিনা আবার এক তরফা নির্বাচন, আবার একটা ম্যান্ডেট বিহীন নির্বাচন করার একটা বড় ধরনের নীল নকশা তৈরি করছেন।”

নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী তাঁতী দলের উদ্যোগে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তিসহ সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক কাজী রেজাউল করীম রানাসহ নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি এই মানববন্ধন হয়।


‘সরকার এক হয়ে গেছে’

রিজভী বলেন, ‘‘ গোটা বিশ্ব থেকে আওয়ামী সরকার বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তার সাথে কেউ নাই। হয়ত দুই-একটা দেশ থাকতে পারে। সেখানে তারা(সরকার) খুব হাত-পা ধরছেন, কাকুতি-মিনতি করছেন, তারা যেমনভাবে চান সেইভাবে তাদেরকে ক্ষমতায় যেনো রাখা হয়।”

তিনি বলেন, ‘‘ এরকম শোনা যায় যে, আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কোনো মন্ত্রী পার্শ্ববর্তী দেশের কলকাতারা সাংবাদিকদের নাকী দুই টন ইলিশ মাছ পাঠিয়েছেন। আমরা জানি না এই ঘটনা কতটুকু সত্য। তবে এইরকম জনশ্রুতি আছে যে, যাতে এই অবৈধ সরকারের পক্ষে লেখালেখি করা যায়।”

‘‘ কিন্তু ভারত তো একটি গণতান্ত্রিক দেশ ওখানে বিবেক সম্পন্ন অনেক সাংবাদিক আছেন। দুই-একটাকে হয়ত কেনা যায় কিন্তু সবাইকে তো কেনা যায় না। তারা বাংলাদেশে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য, নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের জন্য অনেকেই সেখানেও কলম ধরেছেন, তারাও লিখছেন। সবাইকে ইলিশ মাছ দিয়ে কেনা যাবে না।”

মহানগর দক্ষিনের ভারপ্রাপ্ত সদস্য তানভীর আহমেদ রবিনকে গোয়েন্দা পুলিশ তুলে নেওয়ার ঘটনার নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘‘ প্রকাশ্যে অস্ত্র উঁচিয়ে বিএনপির কর্সসূচিতে যুব লীগ-ছাত্রলীগ আক্রমন করে তাদেরকে তো তুলে নিয়ে যাওয়া হয় না, তাদেরকে তো রিমান্ডের নামে নির্যাতন করা হয় না। তারা প্রটেকশন পায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রটেকশনে তাদেরকে এগিয়ে দেয়া হয়, তোমরা বিএনপি কর্মসূচি-মিছিলে আক্রমন করো.. এই হচ্ছে শেখ হাসিনার শাসন, তার সরকারের নীতি। এই পরিস্থিতি চলতে দেয়া যায় না, এই পরিস্থিতি প্রতিহত করতে হবে।গণতন্ত্রের সুবাতাস বইয়ে দিতে হবে, গণতন্ত্রের মুক্তির দিশারী, গণতন্ত্রের মুক্তির বাতিঘর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। তা নাহলে কারো জীবনের নিরাপত্তা থাকবেনা।”

মানববন্ধনে মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা মীর সরাফত আলী সপু, হুমায়ুন ইসলাম খান, সেলিমুজ্জামান সেলিম, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসেইন, তাঁতী দলের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।



শেয়ার করুন