২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৪:১৭:২২ পূর্বাহ্ন


ইমিগ্রেশন নিয়ে বাইডেন শুধু রিপাবলিকান নয়, নিজ দলের কাছ থেকেও চাপের মুখে
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০১-২০২৪
ইমিগ্রেশন নিয়ে বাইডেন শুধু রিপাবলিকান নয়, নিজ দলের কাছ থেকেও চাপের মুখে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন


ইমিগ্রেশন নীতি নিয়ে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুধু রিপাবলিকানদের কাছ থেকে নয় নিজ দল ডেমোক্র্যাটদের কাছ থেকেও প্রচণ্ড চাপের সম্মুখীন। ইউএস-মেক্সিকো সীমান্ত থেকে হাজার হাজার মাইল দূরের শহরগুলোর ডেমোক্রেটিক মেয়র এবং গভর্নররা প্রেসিডেন্ট বাইডেনকে এই চাপ দিচ্ছেন। সেই সাতে অবৈধ অভিবাসী যারা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে এবং তাদের শহরগুলোতে রয়েছেন তাদের জন্য অর্থের আহ্বান জানিয়েছেন। 

প্রেসিডেন্ট বাইডেন বিভিন্ন সিটিতে নবাগত ইমিগ্র্যান্টদের সাহায্য করতে বা ফেডারেল ফান্ড দিতে নীরব ভূমিকা পালন করছেন। বর্তমানে তিনি ইসরায়েলকে সামরিক ও অর্থনৈতিক সাহায্য দেয়া ছাড়া তার অন্য কোন এজেন্ডা হাতে নেই। সিনেটের মেজরিটি লিডার চাক শুমার ও ইউএস হাউজ অব রিপ্রেজেনটেটিভ মাইনরিটি লিডার হেকিম জাফারি দু’জনই নিউইয়র্ক থেকে নির্বাচিত হওয়া সত্ত্বেও নিউইয়র্ক সিটিকে ফেডারেল সাহায্য দিতে তারাও নীরব ভূমিকা পালন করছেন।

প্রকাশ্যে, ডেমোক্রেটিক রাজনীতিবিদরা তাদের শহরে ক্রমবর্ধমান সংকট বর্ণনা করেছেন। ব্যক্তিগতভাবে, তারা হোয়াইট হাউস অফিস অব ইন্টারগভর্নমেন্টাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক টম পেরেজ এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই যোগাযোগ করছেন। তবে রিপাবলিকানরা সীমান্তে যে ধরনের কঠোর বিধিনিষেধের দাবি করছেন তা তারা করছে না, শুধু তারা অবৈধ অভিবাসীদের সামলাতে সাহায্য চাচ্ছেন। ডেমোক্র্যাট এবং রিপাবলিকানদের মধ্যে ইমিগ্রেশন নীতি নিয়ে দলীয়ভাবে বিভক্তি রয়েছে, আদর্শিক লড়াই ছিল কিন্তু বর্তমান প্রেক্ষাপটে এটি এখন দ্বিদলীয় দাবিতে পরিণত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট বাইডেনের ওপর তীব্র চাপ প্রয়োগে এগিয়ে রয়েছে বোস্টন, ডেনভার, শিকাগো এবং নিউইয়র্ক। যেখানে প্রেসিডেন্টের দলীয় নিজ নেতারা সাহায্যের জন্য কান্নাকাটি করছে।

২০২৪ সালের ইউএস প্রেসিডেন্টের নির্বাচনী প্রচারণার বছরের শুরুতে অভিবাসনের আন্তঃদলীয় চাপ আমেরিকার রাজনীতিকে উল্টে দিচ্ছে। কয়েক বছর আগেও মনে হয়েছিল ইমিগ্রেশন ইস্যু নিয়ে দুই দলের অবস্থান ভিন্ন ছিল। জানা গেছে, বাইডেন প্রশাসন সম্ভাব্য সরকারি শাটডাউনের আগে রিপাবলিকানদের সঙ্গে আলোচনায় বিষয়টিকে সমাধান করতে আগ্রহী। কংগ্রেসে অর্থ তহবিল পাস, ইউক্রেন ও ইসরায়েল সাহায্য বিল পাসের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু এখন সীমান্ত সুরক্ষা নীতি। এ নিয়ে প্রেসিডেন্ট বাইডেন আগামী নির্বাচন নিয়ে চ্যালেঞ্জে পড়বেন এবং সুবিধাজনক অবস্থানে থাকবে ট্রাম্প অথবা রিপালিকান পার্টি।

ডেনভারে সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ৩৬ হাজারের বেশি অভিবাসী এসেছেন। ৪ হাজার ১০০ জন এখনো শহরের আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন। বোস্টনে অভিবাসীদের জন্য সিটির বিমানবন্দরে ক্যাম্প করেছে। নিউইয়র্কে ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে ১ লাখ ৬৪ হাজারেরও বেশি অভিবাসী আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছে। যাদের অনেকেই এখনো ২১৫টি হোটেলে অবস্থান করছেন। এছাড়াও তাদের থাকার জন্য সিটির অফিস ভবন ক্যাম্পে রূপান্তরিত হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটি আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করেছে। আগামী তিন বছরে এই আরো ১২ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি ব্যয় করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ফেডারেল গভর্নমেন্ট আজ পর্যন্ত কোন সাহায্য দেয়নি। অভিবাসীদের ঢেউ সামলানোর জন্য আরো ফেডারেল সাহায্যের প্রয়োজন। আমরা বাইডেন অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের কাছে আবেদন করেছি। রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের প্রশাসনের কাছ থেকে খুব কম ফান্ড, সমন্বয়, সমর্থন পেয়েছি বলেছেন সিটি মেয়র। নিউ ইয়র্ক সিটির তথ্য মতে, এই বছর পাঁচ বরোতে ১ লাখ ৫ হাজারেরও বেশি অভিবাসী এসেছে এবং গত বসন্ত থেকে মোট ১ লাখ ৫০ হাজার অভিবাসী এসেছে।

ডেনভারের ডেমোক্রেটিক মেয়র মাইক জনস্টন বলেছেন, আমরা মানবিক এবং আর্থিক সংকটের মধ্যে আছি। আমরা ১০-ডিগ্রি তাপমাত্রায় রাস্তার তাঁবুতে মা এবং ৬ মাসের বাচ্চাদের দেখতে চাই না। যে কারণে আমরা আগামী বছর অতিরিক্ত ১৮০ মিলিয়ন খরচ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তিনি আরো বলেন, মেয়র হিসেবে আমি খুব হতাশ। কারণ ডেনভার শহরে আগত অনেক অভিবাসীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বৈধভাবে কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট পেতে আরো কয়েক মাস অপেক্ষা করতে হবে। যদি অভিবাসীদের কাজের অনুমোদন থাকে তাহলে এটি আসলে একটি সমাধানযোগ্য সমস্যা। আমাদের সিটিতে ফেডারেল সাহায্য দরকার। তার সঙ্গে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা। গত ৩ জানুয়ারি বুধবার মেয়র জনস্টন শহরের একটি অভিবাসী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন। এ সময় তিনি প্রায় ৩০০ শিশুকে ঠান্ডা তাঁবু থেকে বের করে বিল্ডিংয়ে স্থাপিত আশ্রয়কেন্দ্রে স্থানান্তির করেন।

শেয়ার করুন