২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ১১:২৭:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


অনেক ভুলত্রুটি তবু শেখ হাসিনার বিকল্প নেই
খন্দকার সালেক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৯-২০২৩
অনেক ভুলত্রুটি তবু শেখ হাসিনার বিকল্প নেই ছাত্রলীগের সমাবেশে বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


দল নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ করেই এ কথা-দেশীয় ও বিশ্ব পরিস্থিতির নানা চ্যালেঞ্জ কৌশলে মোকাবিলা করে বাংলাদেশের আজকের বর্তমান উন্নয়ন এবং অবস্থান কোনোভাবেই বঙ্গবন্ধুকন্যার সাহসী ও দূরদর্শী নেতৃত্ব ছাড়া সম্ভব হতো না। পরিস্থিতির কারণেই হয়তো নানা অশুভ মহলের সঙ্গে কিছুটা নমনীয় থাকতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভাবশালী প্রতিবেশী ভারতকে অনেক ক্ষেত্রে ছাড় দিতে হয়েছে। শীর্ষ দুর্নীতিবাজ এবং লুটেরাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু ভেবে দেখুন, কি ছিল পরিবেশ ২০০২-২০০৬ পর্যন্ত বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুঃশাসনের পরিস্থিতি। দেশ দুর্নীতি, সন্ত্রাসের ছিল অভয় অরণ্য। জ্বালানি, বিদ্যুৎ সংকটে অর্থনীতি ছিল বিপর্যস্ত। পাঁচ বার ক্রমাগত দেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। জ্বালানি সংকটের পাশাপাশি খাদ্যসংকট ছিল। প্রতিবেশী ভারতের সন্ত্রাসীদের বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশকে হুমকিতে ফেলা হয়েছিল।

ওই পরিস্থিতিতে ওয়ান-ইলেভেনের পর নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় এসে হাসিনা সরকার শুধু জ্বালানি, বিদ্যুৎ পরিস্থিতি, খাদ্যসংকট, সন্ত্রাস নির্মূল করেনি একই সঙ্গে দেশব্যাপী যাতায়াতব্যবস্থা উন্নত করেছে, প্রতিবেশী ভারতকে সামাল দিয়ে চীন, রাশিয়া, জাপান, কোরিয়া, পশ্চিমা দেশগুলোকে বাংলাদেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত রেখেছে। বাংলাদেশ কোভিড-১৯ মতো গ্লোবাল সংকট ভালোভাবে সামাল দিয়েছে। একই সঙ্গে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড, জেল হত্যাকাণ্ড, বিডিআর হত্যাকাণ্ডের বিচার প্রক্রিয়া অনেকটাই সম্পাদন করেছেন। 

আমি বলবো না সরকার সবকিছুই সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পেরেছে। সামরিক-বেসামরিক আমলা এবং দূরভিসন্ধিমূলক ব্যবসায়ীদের এক অংশকে প্রাধান্য দেওয়ার কারণে দুর্নীতির ব্যাপক প্রসার রোধে সরকার সফল হয়নি। নিজ দলের কিছু অসাধু মন্ত্রী-সাংসদদের কারসাজিতে দেশ থেকে বিপুল পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা পাচার হয়ে গেছে। নিজ দেশের জ্বালানি সম্পদ আহরণ এবং উন্নয়ন না করে ভুল পরামর্শে জ্বালানি আমদানির দিকে ধাবিত হয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এতদসত্ত্বেও শুধু প্রধানমন্ত্রীর একক দৃঢ়তার কারণে অনেক মেগা প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত হওয়ায় বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়া দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার উন্নয়ন মোহনায় পরিণত হয়েছে। কেউ স্বীকার করুক বা নাই করুক এগুলো সম্ভব হয়েছে ২০০৯-২০২৩ ক্রমাগত তিন টার্ম সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকায়। তবে এ কথাও অনিবার্য ২০১৪ এবং ২০১৮ নির্বাচন নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাসমূহ, দুর্নীতি দমন সংস্থার অনেক কাজ বিতর্কিত সন্দেহ নেই। সরকারি দল ও অঙ্গ সংগঠনের অনেক নেতাকর্মী দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছে। 

আসছে নির্বাচন। পশ্চিমা পরাশক্তিসহ অনেক বিদেশি সংগঠন বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে অতিউৎসাহী হয়ে পড়েছে। বিরোধীদলগুলো শুধু না, সরকারি দল নির্লজ্জের মতো নিজেদের সমস্যাগুলো নিজেদের মধ্যে সমাধান না করে বিদেশিদের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। নির্বাচনকে ঘিরে অচলাবস্থা সৃষ্টি হবে বলে মনে হচ্ছে না। দেশজুড়ে সরকারপ্রধানের বিপুল জনপ্রিয়তা রয়েছে। বাংলাদেশিদের স্মৃতিশক্তি অনেকটা জেলি মাছের মতো হলেও বিএনপি-জামায়াত সরকারের দুঃশাসনের কথা এখনো ভোলার কথা না। আমি মনে করি, স্বচ্ছ নির্বাচনে শাসক দলের অসুবিধা হওয়ার কথা না। এখনো সময় আছে কিছু কার্যকরি ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে নিত্যপণ্যের দ্রব্যমূল্য সাধারণ জনসাধারণের সাধ্যের সীমানায় যেতে পারে। 

২০০৯-২০২৩ পর্যন্ত সম্পাদিত ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজগুলোর কীভাবে কি ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হয়েছে সেগুলো জনগণকে জানাতে হবে। একই সঙ্গে দুর্নীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মন্ত্রী, সাংসদ, সরকারঘনিষ্ঠ আমলাদের অপসারণ করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। নিজেদের সংশোধন করে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে গেলে আওয়ামী লীগের শঙ্কার কিছু নেই। 

২০২৪-২০২৮ গোটা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের জন্য সংকট সময়। অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে, জ্বালানিসংকট সহসা কাটবে না। বাংলাদেশকে ডলার সংকট মোকাবিলা করে অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। রফতানি বহুমুখী করতে হবে, প্রবাসী শ্রমিকদের প্রশিক্ষিত করে রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। একই সঙ্গে পরস্পরবিরোধী পরাশক্তিদের বাংলাদেশের উন্নয়নে সম্পৃক্ত রাখতে হবে।

ভেবে দেখুন, এই কাজে বিকল্প কে আছে বাংলাদেশের। তবে অনেক সংশোধন হতে হবে সরকারি দলের। মেধাকে প্রাধান্য দিতে হবে, সঠিক পেশাদারদের সঠিক স্থানে নিয়োজিত করে কাজ করার স্বাধীনতা দিতে হবে-এ কথা আর বলার কী!

শেয়ার করুন