ব্যাংকিং চ্যানেলে দেশে রেমিট্যান্স পাঠাতে প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধকরণের লক্ষ্যে আইএফআইসি ব্যাংক নিউইয়র্কে আয়োজন করেছে চার দিনব্যাপী রেমিট্যান্স রোডশো। বাঙালি অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় এই রোডশো অনুষ্ঠিত হয়েছে। উদ্বোধন হয়েছে ২৪ সেপ্টেম্বর। ২৭ সেপ্টেম্বর বুধবার রেমিট্যান্স রোডশো অনুষ্ঠিত হয় ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেস চাইনিজ রেস্টুরেন্টে। প্রবাসীদের জন্য এই আয়োজনের আলোচনা পর্বে ব্যাংকিং ও রেমিট্যান্স বিষয়ক বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন আইএফআইসি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ এ সারওয়ার। এক পর্যায়ে ব্রঙ্কসের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী এম রাজ্জাক আইএফআইসি ব্যাংকের উদ্যেক্তা সালমান এফ রহমানের ১৯৮৮ সালে এবং ২০০৮ সালে কয়েক হাজার কোটি টাকার অনিয়মের বিষয়ে জানতে চান। এ সময় এমডি শাহ এ সারওয়ার প্রশ্নকারীকে হাজার এবং শত সংখ্যার পার্থক্যের সেন্স নেই বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, ২০০৮ সালে আইএফআইসি ব্যাংকের টোটাল লোনই ছিল ৪ হাজার কোটি টাকা। আপনি ২২ হাজার কোটি টাকা কোথায় পেলেন? এক পর্যায়ে প্রশ্নকারীকে তিনি ধমক দিয়ে সিটে বসার কথা বলেন। ‘ডোন্ট টক রাবিশ’, ‘টক সেন্স’ বলে মন্তব্য করেন। তার এই কথা শুনে উপস্থিত প্রবাসীরা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। আলোচনা সভায় হৈ চৈ শুরু হয়। অনেক প্রবাসী শাহ এ সারওয়ারের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের নিন্দা জানান। সভাস্থল থেকে বের হয়ে যান অনেকে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বেশ বেগ পেতে হয় আয়োজকদের। চুপ হয়ে সভার এক কোণে চেয়ারে বসে পড়েন শাহ এ সারওয়ার। এক পর্যায়ে আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালক, প্রাক্তন অতিরিক্ত সচিব নাজমুস সাকিব মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। তিনি একজন সিলেটি হিসেবে নিজের পরিচয় দেন এবং আয়োজকদের পক্ষ থেকে কোনো কষ্ট দিলে এই অনাকাক্সিক্ষত ঘটনায় সবার কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রবাসীদের মতামত আমরা গুরুত্ব দেই সবার আগে।
এদিকে প্রশ্নকারী ব্রঙ্কসের রিয়েল এস্টেস্ট ব্যবসায়ী এম রাজ্জাক জানান, প্রবাসীদের জন্য রেমিট্যান্স রোডশোতে প্রশ্ন করতে গিয়ে অপমানিত হওয়ায় সব প্রবাসীর মনে আঘাত লেগেছে। তিনি নিজেকে বিশ্বব্যাংকের প্রাক্তন চাকরিজীবী পরিচয় দিয়ে বলেন, আইএফআইসি ব্যাংকের সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ী ও প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তার বিরুদ্ধেই কিছুদিন আগে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। এই বিষয়গুলোই আমি জানতে চেয়েছিলাম। কিন্তু এমডি সারওয়ার যেভাবে ধমক দিয়ে কথা বললেন, তাতে কষ্ট লেগেছে। অনুষ্ঠানের শেষ দিকে তার কাছে আয়োজকরা ক্ষমা চেয়েছেন বলেও জানান।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আইএফআইসি ব্যাংকের পরিচালক নাজমুস সাকিব ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, পরবর্তীতে কথাবার্তা বলে আমরা বিষয়টি সমাধান করে দিয়েছি।