০৫ মে ২০১২, রবিবার, ০৮:৩৪:১২ অপরাহ্ন


২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশ
‘নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়বে’ বলে ক্ষমতাসীদের অপপ্রচার -মির্জা ফখরুল
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ২২-১০-২০২৩
‘নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়বে’ বলে ক্ষমতাসীদের অপপ্রচার -মির্জা ফখরুল মির্জা ফখরুল/ফাইল ছবি


২৮ অক্টোবর ঢাকার মহাসমাবেশে ‘নেতা-কর্মীরা রাস্তায় বসে পড়বে’ বলে ক্ষমতাসীনরা অপপ্রচার চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর রোববার দুপুরে নয়া পল্টনে দলের যৌথ সভা শেষে এক সংবাদ ব্রিফিঙে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ এটা (ঢাকায় নেতা-কর্মীরা বসে পড়বে বলে তাদেরকে ঢাকায় প্রস্তুতি নিয়ে আনা হচ্ছে) সম্পূর্ণ ভুল কথা, নো নো। এটা একেবারেই একটা অপপ্রচার।”

‘‘ আমরা আমাদের দলের কোনো নেতা-কর্মীকে ঢাকায় এসে বসে পড়তে তো বলিইনি, আমরা বলেছি, ২৮ তারিখের কর্মসূচির পরে যে যার জায়গায় চলে যাবে এবং আমরা পরবর্তি কর্মসূচির জন্য তারা অপেক্ষা করবে।ইটস এ ক্লিয়ার? আমরা ২৮ তারিখে এমন কোনো কর্মসূচি দেবো না যে, তারা ঢাকায় বসে থাকবে।”

সমাবেশের পরে বসে পড়ার জন্য সারা দেশ থেকে নেতা-কর্মীদের ঢাকায় আনা হচ্ছে.. ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের এরকম বক্তব্যের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ ভাই শুনেন, উনাদের কথায় কান দিয়েন না। কথা হচ্ছে যে, উনাদের তো আসলে কোনো উপায় নেই… চিতকার-চেঁচামেচি করে, ভয়-টয় দেখিয়ে যেকোনো উপায়ে ঠেকানো যায় সেই চেষ্টা করছে।”

‘‘ কোনো রাস্তা নাই তো। আমি বলেছি না, পালাবার কোনো পথ নাই তো। সময় শেষ। আপনারা বলেছেন যে, এই পার্লামেন্ট শেষ অধিবেশন… আসলে শেষ অধিবেশন।”

তিনি বলেন, ‘‘ এটাও আমরা নিশ্চয়তা দিতে চাই, ২৮ অক্টোবরে আমাদের সমাবেশ শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাপ্ত হবে। এর নিরাপত্তার জন্য আমাদের পক্ষ থেকে নিজস্ব সিকিউরিটি ব্যবস্থা যেটা প্রয়োজন সেগুলো আমরা নিয়েছি।”

সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বিলুপ্ত, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী নির্বাচন অনুষ্ঠানের এক দফা দাবিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর নয়া পল্টনের সমাবেশ খেকে আগামী ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা দেয়।

বিএনপি ছাড়াও সেদিন ঢাকায় গণতন্ত্র মঞ্চ, ১২ দলীয় জোট, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, গণতান্ত্রিক বাম ঐক্য, গণফোরাম-পিপলস পার্টি, এলডিপি, এনডিএম, লেবার পার্টিসহ বিভিন্ন সমমনা দল আলাদা আলাদাভাবে মহাসমাবেশ করার ঘোষণা দিয়েছে।

দুপুরে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ২৮ অক্টোবর মহাসমাবেশ সফল করতে দলের অঙ্গসংগঠন এবং ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোর নেতাদের নিয়ে এই যৌথ সভা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিএনপি মহাসচিব। যৌথ সভার পর সংবাদ সম্মেলন আসেন তিনি।

‘মহাসমাবেশ হবে নয়া পল্টনে’

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আমরা আমাদের সমাবেশ পার্টি অফিসের(নয়া পল্টনে) সামনেই চেয়েছি। যেটা নরম্যাল নিয়ম.. নিয়মের মধ্য দিয়ে আমরা চিঠি দিয়েছি, বিষয়টি ডিএমপিকে আমরা অবগত করেছি। আমি মনে করি অবগত করা হচ্ছে সবচেয়ে উতকৃষ্ট উপায়… আইনসঙ্গতভাবে সেটা আমরা করেছি।”

‘‘ এখন সরকারের দায়িত্ব, ডিএমপির দায়িত্ব আমাদের এই সমাবেশের নিরাপত্তাসহ যা কিছু করার তা করবেন।”

২৮ অক্টোবরের সমাবেশের পরিণতি ১০ ডিসেম্বরের মতো হবে… আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এটাতেই বুঝা যায় যে, সরকারের উদ্দেশ্য খুব খারাপ। আপনাদের মনে আছে নিশ্চয় ১০ ডিসেম্বর(২০২২ সাল) আগে ৭ ডিসেম্বরে বিনা প্ররোচনায়, বিনা উস্কানিতে আমাদের অফিসে আক্রমন করেছে, আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে, আমাদের সমস্ত ৪৫০-৫০০ নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার করে নিয়ে গেছে। এগুলো তারা করেছে আমাদের সমাবেশকে পন্ড করে দেয়ার জন্য। কিন্তু সেটা তারা করতে পারেনি। আমরা ১০ ডিসেম্বর আমাদের সমাবেশ করেছি এখানে না হলেও অন্য জায়গায় করেছি, শান্তিপূর্ণভাবে করেছি।”

তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের ২৮ তারিখের সমাবেশ সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ হবে। আমরা আশা করব, সারা দেশ থেকে আমাদের শান্তিপ্রিয় মানুষ আসবেন, তারা এসে এখানে তাদের দাবি সোচ্চার কন্ঠে দিয়ে যাবেন… সেজন্য আমাদের অনুরোধ থাকবে সকলে সহযোগিতা করবেন।”

ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, ‘‘ আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি। এখন পর্য্ন্ত কোথাও অশান্তি আমাদের দ্বারা সৃষ্টি হয়নি। যা কিছু করছে এই সরকার, তার পেটুয়া বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্বারা। এখন পর্যন্ত গায়েবী মামলা দেয়া হচ্ছে।”

‘‘ প্রশাসন বিশেষ করে পুলিশ প্রশাসনকে বলতে চাই, যে আপনারা কোথাও অহেতু প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবেন না, আপনারা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ করবেন না। আমরা অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের দাবিতে আমাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছি তাতে বাধার সৃষ্টি করবেন না। এটা সম্পূর্নভাবে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া হবে।”

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আবদুস সালাম, লিটন মাহমুদ, ইউনুস মৃধা, উত্তরেরর আবদুল হালিম ডোনার, যুগ্ম মহাসচিব মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক আবদুস সালাম আজাদ, মাহবুবে রহমান শামীম, শ্যামা ওবায়েদ, মোস্তাক মিয়া, অনিদ্র্য ইসলাম অমিত, শরীফুল ইসলাম, মাশুকুর রহমান মাশুক, মাহবুব আলম নান্নু, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানী, যুব দলের শফিকুল ইসলাম মিল্টন, শ্রমিক দলের আনোয়ার হোসাইন, মুক্তিযোদ্ধা দলের ইশতিয়াক আজিজ উলফাত, সাদেক আহমেদ খান, মহিলা দলের সুলতানা আহমেদ, মতস্যজীবী দলের রফিকুল ইসলাম মাহতাব, আবদুর রহিম, উলামা দলের নজরুল ইসলাম তালুকদার, তাঁতী দলের মজিবুর রহমান, কাজী মনিরুজ্জামান, জাসাসের জাকির হোসেন রোকন, লিয়াকত আলী, ছাত্র দলের সাইফ মাহমুদ জুয়েল উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকার আশ-পাশের জেলাসমূহের মধ্যে মানিকগঞ্জের আফরোজা খানম রীতা, নরসিংদীর খায়রুল কবির খোকন, মুন্সিগঞ্জের কামুরুজ্জামান রতন, ঢাকার আবু আশফাক খন্দকার, গাজীপুরের ফজলুল হক মিলন, শাহ রিয়াজুল হান্নান, নারায়নগঞ্জের গিয়াস উদ্দিন, শাখাওয়াত হোসেন খান, আবু আল ই্‌উসুফ খান টিপু, টাঙ্গাইলে ফরহাদ ইকবাল প্রমূখ ছিলেন।


শেয়ার করুন