২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০১:৩৩:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :


শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি বিগত পাঁচ বছরেও
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০১-১১-২০২৩
শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি বিগত পাঁচ বছরেও শ্রমিক আন্দোলনের মিছিল


শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন-এর সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিলে নেতৃবৃন্দ বলেছেন, গত পাঁচ বছরে শ্রমিকদের মজুরি বাড়েনি। অন্যদিকে দেশে মুদ্রাস্ফীতি ও বাজারের অবস্থা ভয়াবহ। সাধারণ যৌক্তিক নিয়মেই শ্রমিকের মজুরি বৃদ্ধি করার কথা ছিল। ৫ বছর পর মজুরি বোর্ড গঠন হয়েছে এবং তার মেয়াদ ৬ মাস পার হলেও মজুরি বোর্ড এখনো মজুরি ঘোষণা করেনি। মালিকদের চক্রান্তে এই সময়ে এসে নির্বাচনী ডামাডোলে শ্রমিকদের মজুরি আরও অনিশ্চতার মধ্যে পড়েছে। দেশের বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে মজুরি বৃদ্ধির যৌক্তিক দাবিতে আন্দোলনরত গার্মেন্ট শ্রমিকদের ওপরে গুলিবর্ষণ, হামলা, নির্যাতন ও শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গত ৩১ অক্টোবর মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে ‘মজুর বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন’। 

সমাবেশে থেকে বক্তারা হুঁশিয়ারি উচ্ছারণ করে বলেন, মালিকপক্ষ ইচ্ছাকৃত বিলম্ব করে মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি এ সময়ে টেনে এনেছে, যার সম্পূর্ণ দায়-দায়িত্ব মালিকদের নিতে হবে। আইন মেনে ৬ মাসের মধ্যে শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির বিষয়টি ফয়সালা না করে নভেম্বর মাস পর্যন্ত বিলম্ব করা হয়েছে। এখন এসে মালিকরা ১০ হাজার ৪০০ টাকা প্রস্তাব দেয়ার মধ্য দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জর্জরিত শ্রমিকদের ক্ষোভকে উস্কে দিয়েছে। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের অবিলম্বে বিচারের আওতায় আনা এবং গার্মেন্ট শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করার মধ্য দিয়ে সংকটের সমাধান করতে হবে। 

মজুরি বৃদ্ধিতে গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলন-এর আহ্বায়ক তাসলিমা আখতারের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব সাদেকুর রহমান শামীমের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সভাপতি মন্টু ঘোষ, বাংলাদেশ টাঙ্গাইল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি মাহবুবুর রহমান ইসমাইল, ওএসকে গার্মেন্টস এন্ড টেক্সটাইল শ্রমিক ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ দত্ত, গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক রাজু আহমেদ, গার্মেন্ট শ্রমিক ঐক্য ফোরামের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম সবুজ, বিপ্লবী গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির কেন্দ্রীয় নেতা সাইফুল ইসলাম, গার্মেন্টস শ্রমিক মুক্তি আন্দোলনের সভাপতি শামীম ইমাম, জাতীয় সোয়েটার গার্মেন্টস ফেডারেশনের সভাপতি এ এম ফয়েজ হোসেন ও গার্মেন্ট শ্রমিক আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা বিপ্লব ভট্টাচার্য প্রমুখ। এছাড়াও সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী সংগ্রাম পরিষদের অন্যতম নেতা আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, চিকিৎসক ডা. হারুনুর অর রশীদ, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগীব নাঈম, বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাধারণ সম্পাদক দিলীপ রায়।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, গাজীপুরের শ্রমিকরা মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গত ৭ দিন ধরে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। ৩০ অক্টোবর রবিবার থেকে আশুলিয়ায় শ্রমিকরা ২৫ হাজার টাকা মজুরির দাবিতে রাস্তায় নেমেছে। আজ মিরপুরে শ্রমিকরা একই দাবিতে রাস্তায় আছে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে না নিয়ে তাদের ওপরে পুলিশ সন্ত্রাসী কায়দায় নির্বিচারে গুলি করে শ্রমিকের জীবন কেড়ে নিয়েছে। এই পরিস্থিতির দায় মালিক ও সরকারকে নিতে হবে। নেতৃবৃন্দ বলেন, আন্দোলনের শহীদ শ্রমিক রাসেল, ইমরান, নাজমার মৃত্যু বৃথা যেতে পারে না। অবিলম্বে নির্দেশদাতাসহ শ্রমিক হত্যায় জড়িত দায়ী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। এক মুহূর্ত বিলম্ব না করে ২৫ হাজার টাকা নিম্নতম মজুরি ঘোষণা করতে হবে। 

সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল কদমফুল ফোয়ারা হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। মিছিল শেষে জোটের নেতৃবৃন্দ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত শ্রমিকদের দেখতে যান। সেখানে নেতৃবৃন্দ আহত শ্রমিকদের শয্যাপাশে অবস্থান করেন এবং চিকিৎসার সার্বিক খোঁজ-খবর নেন।

শেয়ার করুন