২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:১৩:১৫ অপরাহ্ন


অধিবেশন শুরুর ঠিক আগে বাংলাদেশের আরো ৫ কেস নথিভুক্ত
জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের ১২৮ তম অধিবেশন শুরু
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৯-২০২২
জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপের   ১২৮ তম অধিবেশন শুরু


জাতিসংঘে ওয়ার্কিং গ্রুপের ১২৮ তম অধিবেশন শুরু হয়েছে। (১৯ থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর) চলমান এ অধিবেশনে বিশ্বের ২১ টি দেশের ৬৯৬ টি কেসের ব্যাপারে আলোচনা হওয়ার তথ্য দেয়া হয়েছে। এই ২১ দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের নামও। 


এদিকে বাংলাদেশে গুম এর কেস নথিভুক্ত ছিল ৭৬ টি। সে সংখ্যা এ ওয়ার্কিং কমিটির সভার আগে আরো পাচটি যোগ করা হয়েছে। ফলে ওই ৬৯৬ মধ্যে বাংলাদেশের কেস তদন্তাধীন এখন ৮১ টি। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি ‘ওয়ার্কিং গ্রুপ অন এনফোর্সড অর ইনভলান্টারি ডিজঅ্যাপিয়ারেন্স’ বাংলাদেশে গুমের সর্বশেষ ৫টি নতুন মামলা নথিভুক্ত করেছে। এ নিয়ে এই কমিটির কাছে বাংলাদেশের গুম সংক্রান্ত তদন্তাধীন মামলার সংখ্যা হলো ৮১টি। 

জানা গেছে, সর্বশেষ যুক্ত হওয়া ওই পাচ মামলার ২টি ঘটনা ঘটেছে ২০২১-২২ সেশনের মধ্যে। অন্য ৩টি ঘটনা এর আগের। এই নতুন মামলাগুলো নিয়ে জাতিসংঘের গুমবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি বাংলাদেশ সরকারকে চিঠি দিলেও সরকারের তরফ থেকে সর্বষেশ কোনো সাড়া দেয়নি বলে খবর প্রকাশ। এতে করে মামলাগুলোর বিশদ বিবরণ জানা সম্ভব হয়নি। কারণ, গুম সংক্রান্ত এই বিশেষজ্ঞ কমিটি কেবল সংশ্লিষ্ট সরকারি সংস্থার কাছে নামগুলো প্রকাশ করেছে। 

হংকংভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশনের (এএইচআরসি) তথ্য অনুসারে, এই সময়কালে নতুন ১৯টি গুমের ঘটনা ঘটেছে এবং ভুক্তভোগীদের মধ্যে ৪ জন এখনো নিখোঁজ আছেন। এএইচআরসি বাংলাদেশের বিভিন্ন সোর্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে নথিভুক্ত করে। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কমিটি যে নতুন ৫টি মামলা নথিভুক্ত করেছে তার মধ্যে ২টিকে ‘টাইম-সেনসেটিভ’ কিংবা আর্জেন্ট প্রসিডিওর’ মামলা হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। আর এটা হলো এমন একটা বিষয় যে, 

যখন কাউকে জোরপূর্বক আটকে রাখা হয় তখন সেটাকে জাতিসংঘ আর্জেন্ট প্রসিডিওর মামলা হিসেবে বিবেচনা করে এবং সরকারকে তাদের মুক্তি দেয়ার সুপারিশও করে। এর অর্থ হলো, জাতিসংঘ যখন সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করে তখন তাদের কাছে এমন প্রমাণ ছিল যে ২ ব্যক্তিকে জোর করে ইচ্ছাকৃতভাবে আটকে রাখা হয়েছে।

মামলাগুলো এখন পর্যন্ত অমীমাংসিত এবং একই সঙ্গে এটাও স্পষ্ট নয় যে, ওই ২ ভুক্তভোগীকে কি আদৌ মুক্তি দেওয়া হয়েছে, নাকি তারা এখনো নিখোঁজ আছেন। 

ওয়ার্কিং গ্রুপের বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্য অনুসারে জানা গেছে বিভিন্ন বিষয়ে তারা বাংলাদেশকে ৪টি চিঠি পাঠিয়েছে। এগুলোর মধ্যে ১টি ছিল জরুরি আবেদন, যা অজ্ঞাত পরিচয়ে আটক ব্যক্তির অধিকার ও স্বাধীনতা বজায় রাখা এবং একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ ট্রাইব্যুনালের সামনে তাদের ন্যায্য কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দেয়া সংক্রান্ত। আরেকটি চিঠিতে বাংলাদেশে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজন ও মানবাধিকার কর্মীদের হয়রানি ও হুমকির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে। এছাড়া গুমের শিকার হওয়া থেকে প্রত্যেক ব্যক্তির সুরক্ষাসংক্রান্ত ঘোষণার লঙ্ঘন এবং এ ঘোষণা বাস্তবায়নে বাধা সংক্রান্ত একটি যৌথ ও সাধারণ অভিযোগপত্র পাঠিয়েছে জাতিসংঘের ওয়ার্কিং গ্রুপ।

প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে ওয়ার্কিং গ্রুপের পাঠানো চিঠিগুলোর একটিতে গুমের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারগুলোকে পুলিশি হয়রানির অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছে বলে জানা গেছে। আরেকটি চিঠিতে বেসরকারি সংস্থা ‘অধিকার’র বিরুদ্ধে বিচারবিভাগীয় হয়রানি সম্পর্কে তথ্য চাওয়া হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, মামলাগুলো স্পষ্ট করার জন্য ওয়ার্কিং গ্রুপ কর্তৃপক্ষকে ১২৫তম অধিবেশনের পর পাঠানো সাধারণ অভিযোগের জবাবসহ অতিরিক্ত তথ্য প্রদানের প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করার আহ্বান জানিয়েছে। এছাড়া র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত গুমের অভিযোগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে এর স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত শুরু করার আহ্বান জানিয়েছে। এতে আরো বলা হয়, ওয়ার্কিং গ্রুপ জোর দিয়ে বলেছে যে, সরকারকে নিখোঁজ ব্যক্তিদের স্বজনদের পাশাপাশি তাদের পক্ষে কাজ করা মানবাধিকার সংস্থা ও নাগরিক সংগঠনগুলোকে দেয়া হুমকি, প্রতিশোধমূলক আচরণ ও ভয়-ভীতি প্রদর্শন থেকে বিরত থাকা একই সঙ্গে অবশ্যই সংশিলিষ্টদের সুরক্ষা নিশ্চিত করন বাঞ্চনীয়। 


শেয়ার করুন