২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০১:৪৩:৩৬ পূর্বাহ্ন


বঙ্গবন্ধুকন্যা কি একা হয়ে যাচ্ছেন?
জাডিক
  • আপডেট করা হয়েছে : ১১-০৫-২০২২
বঙ্গবন্ধুকন্যা কি একা হয়ে যাচ্ছেন? প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা/ফাইল ছবি


ইদানীং বাংলাদেশে একের পর এক ঘটনা ঘটছে যেগুলো একটি গণতান্ত্রিক দাবিদার জনপ্রিয় সরকারের ভাবমূর্তি কলুষিত করছে। কিছুদিন আগে দুদক একজন সৎ,সাহসী কর্মকর্তাকে সুরক্ষা না দিয়ে দুর্নীতিবাজদের স্বার্থে চাকরিচ্যুত করলো। একজন সাহসী ম্যাজিস্ট্রেট (র‌্যাবে প্রেষণে থাকার সময় দুর্নীতির মূলে আঘাত করেছিল) পদোন্নতি বঞ্চিত করলো। সম্প্রতি নিউমার্কেট ব্যবসায়ী-ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থী সংঘর্ষ। তেঁতুলতলা খেলার মাঠের ঘটনা নিয়ে লঙ্কাকাণ্ড। মন্ত্রীর স্বজনদের বিনা টিকেটে রেলভ্রমণজনিত ঘটনা। ঈদের আগে মানুষের সারা বছরের একটি গুরুত্বপূর্ণ,খুশির ঈদে বাজারে ভোজ্যতেল উধাও,সংকট। 

এরপর আবার ঈদের পরেই দেশ ও বিশ্বের চরম সংকট সময়ে সয়াবিন তেলের মূল্য অস্বাভাবিক বৃদ্ধি। সদ্যপ্রয়াত প্রাক্তন অর্থমন্ত্রীর জানাজা পার্লামেন্ট প্লাজায় হতে না দেয়া। তার মরদেহ অবহেলায় সড়কপথে সিলেট পাঠানো। 

এগুলো কি সরকারের ভেতরে আরেক সরকারের কারসাজি? প্রধানমন্ত্রীর সাম্পান কি নিয়ন্ত্রণে আছে? নাকি একটি গোষ্ঠী সরকারের পক্ষপৃষ্ঠে থেকে একের পর এক চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি সৃষ্টি করে প্রধানমন্ত্রীর ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছে? প্রধানমন্ত্রীর কাছের উপদেষ্টারা কি করছেন? 

আমি জানি, কেবিনেট সেক্রেটারি একজন সজ্জন মানুষ। উপদেষ্টা গওহর রিজভী সজ্জন মানুষ। প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির সঙ্গে বেশকিছু কার্যক্রম প্রশ্নের উদ্রেক করেছে। বিশেষত তার সুপারিশে পদায়নকৃত কিছু আমলার কার্যক্রম কিছু ক্ষেত্রে স্বচ্ছ নয়। দুর্নীতি দমন কমিশন বড় দুর্নীতিবাজদের কিছুই করতে পারছে না। 

আমলাদের প্রতিরক্ষা দিচ্ছে। ঠিক যেমন ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধুকে জনবিচ্ছিন্ন করেছিল কিছু আমলা। কিছু দলীয় গুরুত্বপুর্ণ স্থানে থাকা মানুষে এখনো তেমনি আলামত পাওয়া যাচ্ছে। 

২০২৩-এর শেষের অথবা ২০২৪ শুরুতে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন। অবস্থা দৃষ্টি মনে হচ্ছে, সরকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা একটি বিশেষ গোষ্ঠী একের পর এক কাণ্ড ঘটিয়ে সরকারকে অজনপ্রিয় করার প্লট বাস্তবায়নের মিশনে কাজ করছে।

বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতির অনেক তথ্য কিন্তু বিভিন্ন ভাবে হাওয়ায় ভাসছে। দেশে অলিখিত প্রেস নিয়ন্ত্রণ থাকলেও বিদেশি মিডিয়া কিন্তু সময় মতো এগুলো প্রকাশ করতে পারে। সত্যই বলছি, আমি জনপ্রিয় নেত্রী,বঙ্গবন্ধুকন্যার একাকীত্ব অনুভব করতে পারছি।

এমনিতেই ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘায়িত হবার সম্ভাবনা ঘনীভূত হচ্ছে। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। ‘রাশিয়া ইউক্রেন’ ইউরোপের শস্য ভাণ্ডার। প্রাথমিক জ্বালানির বিরাট অংশ আসে রাশিয়া থেকে। যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে খাদ্য সংকট, জ্বালানি সংকট তীব্রতর হবে। এমনিতেই করোনার অভিঘাতে প্রান্তিক সীমার বিশাল গোষ্ঠী দরিদ্র সীমার নিচে নেমে গেছে। 

‘নুন আনতে পান্তা’ ফুরানো মানুষগুলো কিন্তু মারাত্মক কষ্টে আছেন। সীমিত আয়ের মধ্যবিত্ত কিন্তু হিমশিম খাচ্ছে। হয়তো ভাত, ডাল,সবজির সংকট হবে না। কিন্তু জ্বালানি সংকট অনিবার্যই মনে হচ্ছে। জ্বালানি তেল মূল্যবৃদ্ধি মানেই ট্রান্সপোর্টেশন খরচ বাড়বে, বিদ্যুৎ উৎপাদন খরচ বাড়বে। এগুলোর প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রায়।  সুযোগ বুঝে সুবিধাবাদী আমলা আর ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটে একের পর এক সংকট সৃষ্টি করে সরকারকে বিব্রত করবে। সবকিছু ঠেলে দিবে প্রধানমন্ত্রীর দিকে।

এখনো সময় আছে কিছু পরীক্ষিত দক্ষ রাজনীতিবিদদেও কেবিনেটে ফিরিয়ে আনার। জনগণ কিন্তুক্ষুব্ধ, দক্ষ, রাজনীতিবিদদের কোণঠাসা রেখে আগামী নির্বাচনে উতরে যাওয়া সহজ হবে না। জামায়াত-বিএনপি কিন্তু ইতিমধ্যে সরকারিদলের হেঁশেলে ডিউক পরেছে।  

আমি অচিরে সরকারিদলে এবং সরকারে শুদ্ধি অভিযানের সুপারিশ করছি। প্রয়োজনে কিচেন কেবিনেটেরও সংস্কার করা উচিত।


শেয়ার করুন