২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০১:২৯:৩৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৮-১২-২০২৩
নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে দ্বারে দ্বারে গিয়ে নৌকায় ভোট চাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান


আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের তাদের নির্বাচনী ইশতেহার নিয়ে দ্বারে দ্বারে গিয়ে জনগণকে নৌকায় ভোট চাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। কারণ, একমাত্র আওয়ামী লীগই দেশের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে এবং দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, বলেন তিনি। “আমরা গতকাল (বুধবার) আমাদের নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছি। ইশতেহারটি পড়ুন এবং ইশতেহার নিয়ে জনগণের কাছে যান এবং নৌকায় ভোট চান।”


আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ অপরাহ্নে দলের তেজগাঁও কার্যালয় থেকে জামালপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নরসিংদী, চাঁদপুর ও বান্দরবানে আওয়ামী লীগের ছয়টি নির্বাচনী জনসভায় ভার্চুয়ালি দেওয়া ভাষণে একথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা গত ১৫ বছরে দেশের যে উন্নয়ন করেছি সেই উন্নয়নের অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে এবং একমাত্র আওয়ামী লীগই পারবে ক্ষমতায় আসলে সেই অগ্রযাত্রাটা ধরে রাখতে।  সেকারণে নৌকা মার্কায় ভোট দেওয়ার জন্য আপনারা জনগণের দ্বারে দ্বারে যাবেন। আপনারা ভোট চাইবেন। জনগণ ভোট দিয়ে যেন আমাদের সেবা করার সুযোগ দেন। আর একটি কথা এবার যেহেতু নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে নানারকম চক্রান্ত হচ্ছে তাই নির্বাচনের পরিবেশটা যাতে সুন্দর হয়, উৎসবমুখর হয়, প্রতিদ্বন্দিতাপূর্ণ হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেন। তিনি এ সময় বিএনপিকে রাজনৈতিক দল নয়, বরং সন্ত্রাসি সংগঠন বলে আখ্যায়িত করেন।


তিনি বলেন,  আমরা নির্বাচন উন্মুক্ত করে দিয়েছি। হ্যাঁ, নৌকা মার্কা দিয়েছি পাশাপাশি আরও যারা দাঁড়াতে চায় তারাও দাঁড়াবে। এখানে একটি অনুরোধ থাকবে, শান্তিপূর্ণ পরিবেশ আপনারা বজায় রাখবেন। যার যার ভোট সে সে চাইবেন। জনগণ যাকে খুশি তাকে ভোট দেবে। এটাতো আমাদেরই শ্লোগান। ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব’-এই শ্লোগান দিয়েই তো আমরা গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছি। এই শ্লোগান দিয়েই তো আমরা সংগ্রাম করেছি। সে কথাটা মনে রেখে যার যার ভোট সে সে চাইবেন। জনগণ যাকে ভোট দেবে সেটাই মেনে নেবেন। সেভাবেই এই নির্বাচন পরিচালিত হবে। ভোট চাওয়ার অধিকার যেমন প্রার্থীর আছে তেমনি ভোট দেওয়ার অধিকার জনগণের। এখানে কেউ কারো ওপর কোন বল প্রয়োগ করার চেষ্টা করবেন না। কোন সংঘাত সৃষ্টি করবেন না।


তিনি বলেন, এখন ডিজিটাল যুগ। সকলের হাতেই মোবাইল ফোন রয়েছে, সিসি ক্যামেরা রয়েছে, কাজেই যারাই গোলমাল করবেন, ছবি কিন্তু উঠে আসবে। আর নিজেদের মধ্যে দ্বন্দ্ব হলে কেউ কিন্তু রেহাই পাবে না। এটা মাথায় রাখতে হবে। আর জনগণ ভোট দেবে তাদের সেই ভোট দেওয়ার সুন্দর পরিবেশ তেরি করে দিতে হবে। ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে আসতে দিতে হবে এবং যাতে নির্বাচন সুষ্ঠু হয় সেই ব্যবস্থাটা সবাইকে নিতে হবে।
 শেখ হাসিনা বলেন, “ইনশাআল্লাহ আওয়ামী লীগ জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে আবার জনগণের সেবা করার সুযোগ পাবে, জনগণের কাছে সেটাই আমাদের দাবি। সেটাই আমাদের আকাঙ্খা। ২০৪১  সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ তথা জাতির পিতার স্বপ্নের উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ ইনশাআল্লাহ আমরা গড়ে তুলবো।”

আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের প্রতিটি সেক্টরে উন্নয়ন অগ্রগতি হয়েছে। বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়ে মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।


তিনি বলেন, ২০০৮ সালে বিএনপির-জামায়াতের ২০ দলীয় জোট মিলে মাত্র ৩০টি সিট পেয়েছিল। এরপর থেকেই বিএনপি নির্বাচন বিরোধী কার্যকলাপ শুরু করে। ২০১৪ সালে নির্বাচন বানচাল করার জন্য ২০১৩ সাল থেকে আগুন সন্ত্রাস শুরু করে। তাদের দেওয়া আগুনে কত মানুষ অগ্নিদগন্ধ হয়েছে তার হিসেব নেই।
‘জিয়াউর রহমান যেমন ক্ষমতায় এসে হত্যা, গুম, খুন শুরু করে খালেদা জিয়াও একইভাবে ক্ষমতায় এসে একই কর্মকা- করেছে’ বলেন তিনি।
 শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে বিএনপির ক্ষমতায় আসার পর আরও এক ধাপ অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। দুর্নীতি, হত্যা, গুম, খুন ধর্ষণ, হামলা, নির্যাতন-এমন কোনো বিষয় নেই যে বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালীন করেনি। এই কারণেই বিএনপিকে ২০০৮ সালে দেশের মানুষ প্রত্যাখ্যান করে। আবারো ২০১৩-১৪ সালের মতো বিএনপি অগ্নি সন্ত্রাস শুরু করেছে নির্বাচন বানচালের নামে।


তিনি বলেন, একটি দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন হয় নির্বাচনের মাধ্যমে। এদেশের অতীত ইতিহাস বলে আওয়ামী লীগের হাতে এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন হয়, এছাড়া অন্য কোনো দলের হাতে হয় না। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ যে ইশতেহার দিয়েছিল তা বাস্তবায়ন করেছে। সাক্ষরতার হার বৃদ্ধি করার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা দিন বদলের সনদ ঘোষণা করেছিলাম। সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার কাজ করেছে। আজ বাংলাদেশের দৃশ্যপট উন্নয়ন অগ্রগতিতে পরিবর্তন হয়েছে, ২০২১ সালেই উন্নয়নশীল বাংলাদেশে পরিণত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা আমরা পেয়েছি। সেটাকে ধরে রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, উন্নত সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলতে। আমরা পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা,  প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। প্রতিটা মানুষ যেন উন্নত জীবন পায় সেটিই আমাদের লক্ষ্য, সেই লক্ষ্যেই আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।


আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, দলের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্লাহ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া তেজগাঁও দলীয় কার্যালয় প্রান্তে এবং শেরপুর প্রান্তে আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

শেয়ার করুন