৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৬:৫৭:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
যুক্তরাষ্ট্রে এবার বন্দুকধারীর গুলিতে তিন আইনশৃংলাবাহিনীর সদস্য নিহত ‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ


বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি এবং নাগরিক অধিকার
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-১২-২০২৩
বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রগতি এবং নাগরিক অধিকার


পাখির চোখে দেখলে একজন প্রবাসীর চোখে বিগত দেড় দশকে বাংলাদেশের উন্নয়ন, অগ্রগতি, আর্থসামাজিক এবং অর্থনৈতিক পরিবর্তন নিয়ে পুলকিত হওয়ার পর্যাপ্ত কারণ রয়েছে। আক্ষরিক এবং বাস্তবিক অর্থেই ২০০৮-এর বাংলাদেশের সঙ্গে ২০২৩ ডিসেম্বরের ঢাকার তুলনা হতে পারে না। একটি সরকার ক্রমাগত তিন টার্ম বাধাহীনভাবে ক্ষমতায় থেকে অনেক কিছুই পাল্টে দিয়েছে। আলো ঝলমলে রঙিন রাজধানী শহর ঢাকা দেখে অনেকের ঘোর লাগে। প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন অংশে নানা কাজ শেষে এলিভেটেড এক্সপ্রেস দিয়ে উত্তরায় ফেরার সময় রাতের ঢাকা দেখে ভালোই লাগে। মেট্রো রেল দিয়ে যাতায়াত, পদ্মা সেতু পেরিয়ে ফরিদপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা, পটুয়াখালী যাতায়াত বা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক দিয়ে বঙ্গবন্ধু যমুনা সেতু পেরিয়ে রাজশাহী, দিনাজপুর যাতায়াতে অস্ট্রেলিয়া মহাসড়কে যাতায়াতের তৃপ্তি পাই। কিন্তু যখন ঢাকা শহরে ট্রাফিক যান জটে পড়ি, গন্ধময় আবর্জনার ভাগাড় দেখি, সড়ক পাশে সবজি, মাছ ফেরিওয়ালাদের পুলিশ হয়রানির কথা শুনি তখন উন্নয়নের কালো দিকটিও চোখে পড়ে। খোদ ঢাকা শহরের উত্তরা অভিজাত এলাকায় দিনের অধিকাংশ সময় চুলায় রান্নার গ্যাসের চাপ থাকে না, শিল্প কারখানাগুলোর মালিক, পেট্রলপাম্পের মালিকদের কাছে সিএনজি সরবরাহ সংকটের কথা শুনি। অভিভাবকরা শিশু সন্তানদের অতিরিক্ত পড়াশোনার চাপ এবং বিনোদনের সুযোগের অভাবের কথা বলেন। আমি অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের অবস্থানের আকাশ-পাতাল ব্যাবধান দেখতে পাই।

প্রতিদিন সকালে উত্তরায় এবং মাঝেমধ্যে ধানমন্ডিতে প্রাতঃভ্রমণ সময়ে বন্ধু সুধীজনদের সঙ্গে আলোচনায় বিভিন্ন সরকারি কার্যালয়ে দাফতরিক কাজে নানা হয়রানি, কথিত দুর্নীতির খবর পাই, আমার প্রিয় খেলাধুলার অঙ্গনেও ব্যাপক অব্যবস্থাপনা এবং দুর্নীতির কথা শুনি। বিশ্বাস করুন এগুলোকে উন্নয়নের অনুঘটক হিসেবেও মেনে নিতে কষ্ট হয়।

এমতাবস্থায় আমার সীমিত দেশ সফর শেষ হয়ে আসায় অনাগত জাতীয় নির্বাচন নিয়ে মূল্যায়ন করছি। প্রধান বিরোধীদল এবং আলোচনায় থাকা কিছু দল নির্বাচন বয়কট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজপথে আন্দোলনে। অনেকটা একতরফাভাবেই নির্বাচনে যাচ্ছে সরকারি দল। জানি না আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সেই নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্যতা পাবে। যদিও বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলের সরাসরি কিছু করার সীমা পরিসীমা আছে। এমনিতেই কিছু দৃশ্যমান বিতর্কে বিতর্কিত বর্তমান সরকারের আরো উদার এবং সহনশীল হওয়া উচিত ছিল বলে মনে করি। জানিনা বিরোধী দলগুলোর সঙ্গে আন্তরিক পরিবেশে আলোচনা করে নির্বাচনকে আরো বিশ্বাসযোগ্য করলে সরকার লাভবান হতো। দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি, জ্বালানি নিরাপত্তা কিন্তু অনিশ্চয়তার সুতোয় ঝুলছে। ভাবুন নির্বাচন হয়ে গেলো। দেশে বিদেশে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য বিবেচিত হলো না। সংযুক্ত বিশ্বে তখন বাংলাদেশ কিন্তু অসুবিধায় পড়তে পারে।

আমি কিন্তু ব্যাপক আর্থসামাজিক উন্নয়ন এবং কর্মযজ্ঞের কারণে সরকারের জনপ্রিয়তায় ঘাটতি দেখি না। কিন্তু সরকার ঘনিষ্ঠ কিছু মহলের অশুভ কর্মকাণ্ডের বিষয়ে জনমনে খুব আছে। তাই বলে বিরোধী দলগুলোর বিষয়েও জনগণের নেতিবাচক মনোভাব আছে।

পরিশেষে ভালোমন্দ মিলিয়ে অবাংলাদেশ আমার মায়ের দেশ। সব বাধা-বিঘ্নের বিন্দাচল পেরিয়ে আলোর পথে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ। ফুলে ফলে পাখির কলরবে মুখরিত হোক প্রার্থনা করি সকল নাগরিকের সমান অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক।

শেয়ার করুন