২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০২:১৪:০২ পূর্বাহ্ন


বাড়তি প্রণোদনায় প্রবাসী আয় বাড়লেও নতুন বিতর্কের সৃষ্টি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৫-১০-২০২৩
বাড়তি প্রণোদনায় প্রবাসী আয় বাড়লেও নতুন বিতর্কের সৃষ্টি


গত কয়েকদিন আগে সরকার প্রবাসীদের জন্য আরো আড়াই পার্সেন্ট প্রণোদনা ঘোষণা করেছে। তবে এই ঘোষণায় শুভংকরের ফাঁকি রয়েছে। বিভিন্ন মানি প্রেরণকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, আমরা বিষয়টি শুনেছি, তবে এখনো নিশ্চিত নই। কারণ আড়াই পার্সেন্ট প্রণোদনা সরকার পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছে, যা প্রবাসীরা পাচ্ছেন। নতুন করে যে আড়াই পার্সেন্টের প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে-তা সরকার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর ছেড়ে দিয়েছে। নতুন এই আড়াই পার্সেন্ট প্রণোদনা সবার জন্য নিশ্চিত করা হয়নি। এটি নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের ওপর। ব্যাংক ইচ্ছা করলে এই প্রণোদনা দিতেও পারে, না-ও দিতে পারে। সরকারি ব্যাংক এই প্রণোদনার অর্থ দিতে পারে, বেসরকারি ব্যাংক এই অর্থ না-ও দিতে পারে। তারা জানান, আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে। আরেকটি সূত্রে জানা গেছে, এই মুহূর্তে সরকারের অর্থ প্রয়োজন যে কারণে এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

এদিকে প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারের বিপরীতে এখন ১১৫ টাকা পর্যন্ত পাওয়া যাচ্ছে। ফলে গত মাসে রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয়ে বড় পতন দেখা গেলেও চলতি মাসে তা কিছুটা গতি পেয়েছে। ব্যাংকিং চ্যানেল, অর্থাৎ বৈধপথে চলতি অক্টোবরের প্রথম ২০ দিনে প্রবাসী আয় এসেছে ১২৫ কোটি মার্কিন ডলার। এই আয় গত মাসের পুরো সময়ের তুলনায় মাত্র ৯ কোটি ডলার কম। ফলে চলতি মাসের প্রবাসী আয় গত মাসের ১৩৪ কোটি ৩৬ লাখ ডলারের আয়কে ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এ মাসের প্রথম ২০ দিনে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১১০ কোটি ডলারের প্রবাসী আয়। বাকি ১৫ কোটি ডলার এসেছে রাষ্ট্রায়ত্ত, বিশেষায়িত ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে।

বৈধপথে প্রবাসী আয় নিয়ে এলে সরকার আগে থেকেই ব্যাংকের মাধ্যমে আড়াই শতাংশ হারে প্রণোদনা দিত। দেশে ডলার সংকটের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এখন এই আড়াই শতাংশের পাশাপাশি ব্যাংকগুলো চাইলে অতিরিক্ত আরো আড়াই শতাংশ পর্যন্ত প্রণোদনা দিয়ে প্রবাসী আয় আনতে পারবে। এর ফলে ব্যাংকের মাধ্যমে প্রবাসী আয় আনলে গ্রাহকরা প্রতি ডলারে কমবেশি ১১৫ টাকা পাচ্ছেন।

আগে প্রবাসী আয়ে প্রতি ডলারে আরো কম টাকা পাওয়া যেত। কারণ তখন প্রবাসী আয়ে ডলারের একটা দাম বেঁধে দেওয়া ছিল। তাতে প্রতি ডলারে মিলত ১১০ টাকা। তবে ডলার সংকটের কারণে কোনো কোনো ব্যাংক এর চেয়ে বেশি দামে প্রবাসী আয় কিনত। এখন নতুন নিয়মে সরকারি প্রণোদনার সঙ্গে ব্যাংকের প্রণোদনা যোগ হওয়ার ফলে গ্রাহকেরা ভালো দাম পাচ্ছেন। তাতে প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাংকিং চ্যানেলে বেশি করে প্রবাসী আয় পাঠানোর প্রবণতা বাড়ছে। তবে কোনো কোনো ব্যাংকার বলছেন, এখন কিছুটা আশা দেখা গেলেও প্রবাসী আয় যে খুব বেশি বেড়েছে, তা বলা যাবে না। কারণ, যে হারে প্রবাসী আয় আসছে, তাতে অক্টোবর মাসের শেষে প্রবাসী আয় ২০০ কোটি ডলার ছাড়ানোর সম্ভাবনা কম।

চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরের প্রথম তিন মাস প্রবাসী আয় ধারাবাহিকভাবে কমেছিল। তবে ডলার-সংকটের কারণে গত সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসী আয়ে বড় ধাক্কা লাগে। তখন গত সাড়ে ৩ বছর বা ৪১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন প্রবাসী আয় আসে, যা পরিমাণে ১৩৪ কোটি ডলার। এর আগে ২০২০ সালের এপ্রিলে এসেছিল ১০৯ কোটি ডলার।

বর্তমান অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ১৯৭ কোটি ডলার, যা আগস্টে কমে ১৬০ কোটি ডলারে নামে। সব মিলিয়ে চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রবাসী আয় কমেছে ১৩ দশমিক ৩৪ শতাংশ।

শেয়ার করুন