০৫ মে ২০১২, রবিবার, ০১:০৭:৩৫ পূর্বাহ্ন


দেশকে বজলুর রশীদ ফিরোজ
সরকারের কথিত উন্নয়নের প্রতি জনগণের বিন্দুমাত্র মোহ নাই
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৪-০৪-২০২৪
সরকারের কথিত উন্নয়নের প্রতি জনগণের বিন্দুমাত্র মোহ নাই বজলুর রশীদ ফিরোজ


বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ বলেছেন, সরকার যে উন্নয়নের ঢাক পিটাচ্ছে তা প্রকৃত উন্নয়নের চেয়ে টাকা বানানোর দুর্নীতি, এটা জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এগুলো থেকে কাঠামোগত উন্নয়ন বা কর্মসংস্থানের সুফল কি গরীব মধ্যবিত্ত মানুষ পাচ্ছে? মোটেই না। ফলে সরকারের কথিত উন্নয়নের প্রতি জনগণের বিন্দুমাত্র মোহ নেই। বরং ঋণ করে যে উন্নয়ন দেখানো হচ্ছে যার সুদের বোঝা জনগণকেই বইতে হচ্ছে এবং হবে এজন্য জনগণ সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ। বিরোধী দল কিংবা দলের আন্দোলন নয় বরং জনগণ সরকারকেই প্রত্যাখ্যান করেছে। আমেরিকা থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকাকে বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ এসব কথা। বাসদ সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজের এই সাক্ষাৎকারটি নেন দেশ পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ

দেশ: কি করছেন আপনারা?

বজলুর রশীদ ফিরোজ : দেশের জনগণ রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক নানামুখী সংকটে জর্জরিত। নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি, বিদ্যুৎ-জ্বালানির মূল্য দফায় দফায় বেড়ে চলছে। সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম্যে মানুষের জীবন ধারণের অবস্থা নাকাল। জনজীবনের এই সংকট নিরসনের দাবিতে আমরা সাধ্যমতো কেন্দ্রীয় কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি লোকাল-পার্শিয়াল আন্দোলন-সংগ্রাম গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। এই সকল দাবিতে প্রতিনিয়তই সমাবেশ-বিক্ষোভ-গণসংযোগ কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে, ভারতের পানি আগ্রাসন ও বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির প্রতিবাদে আমাদের দল বাসদের পক্ষ থেকে আগামী ২১-২৩ এপ্রিল ২০২৪ ঢাকা থেকে তিস্তা ব্যারেজ পর্যন্ত তিস্তা রোড মার্চ অনুষ্ঠিত হবে। ঐ কর্মসূচির প্রস্তুতি উপলক্ষে জেলায় গণসংযোগ, পথসভা হচ্ছে।

দেশ: আন্দোলন সংগ্রামে অর্থাৎ আপনাদের ভাষায় দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনে জন্য আন্দোলন সংগ্রামে সফলতা আসছে না কেনো?

বজলুর রশীদ ফিরোজ : সবাই জানে দেশে একটি চরম ফ্যাসিবাদী দুঃশাসন চলছে। সমাজ বিকাশের নিয়ম অনুযায়ী আদিম গোষ্ঠীবদ্ধ সমাজ থেকে দাস সমাজ-সামন্ত সমাজ হয়ে যখন পুঁজিবাদী সমাজ প্রতিষ্ঠিত হলো তখন নব উত্থিত বুর্জোয়া শ্রেণির সামনে আদর্শ ছিল বুর্জোয়া মানবতাবাদ। যার মর্মার্থ হলো ব্যক্তির মুক্তি, ব্যক্তি স্বাধীনতা। সামন্ত সমাজে মানুষ ভূমির সাথে বাঁধা ছিল। তাদের স্বাধীনভাবে চলাফেরা করা, কথা বলার স্বাধীনতা ছিল না। রাজা-বাদশাদের ইচ্ছাই ছিল আইন, কারণ তারা হলো ঈশ্বরের প্রতিনিধি। ফলে তাদের ইচ্ছা মানে ঈশ্বরের ইচ্ছা। ঈশ্বরের ইচ্ছাতো অমান্য করা যায় না। এটাই ছিল বিধান। বুর্জোয়ারা এসে স্লোগান দিল সাম্য-মৈত্রী-স্বাধীনতা। বুর্জোয়া বিকাশ ঘটাতে হলে মানুষকে জমি থেকে মুক্ত করতে হবে। সে সময় উত্থানেরকালে অর্থনীতিতে ছিল লেজেফেয়ার অবস্থা। অর্থাৎ অবাধ প্রতিযোগিতার স্তর। তখন বুর্জোয়ারা বলেছিল অতিপ্রাকৃত শক্তি বা রাজা বাদশা নয়, ক্ষমতার মালিক জনগণ। তাহলে জনগণ তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করবে কিভাবে? তখন এলো নির্বাচন অর্থাৎ জনগণ তাদের প্রতিনিধি নির্বাচন করবে, সেই প্রতিনিধিরা জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন হিসেবে আইন প্রণয়ন, প্রথা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থা পরিচালনা করবে। ফলে অর্থনীতিতে যেহেতু অবাধ প্রতিযোগিতা ছিল সে কারণে প্রতিনিধি নির্বাচনেও অবাধ প্রতিযোগিতা ছিল। নির্বাচন বা ভোট হতো অবাধ ও সুষ্ঠু। অর্থাৎ ভোটের মাধ্যমে জনগণ গণতান্ত্রিক অধিকার ভোগ করতো। কিন্তু পুঁজিবাদী সমাজের নিয়ম অনুযায়ী অর্থনীতি যখন অবাধ প্রতিযোগিতার স্তর পেরিয়ে একচেটিয়া রূপ নিল তখনই প্রতিনিধি নির্বাচনেও অবাধ প্রতিযোগিতা অর্থাৎ ধীরে ধীরে নির্বাচন ও রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থাতেও গণতান্ত্রিক পদ্ধতির বদলে স্বৈরতান্ত্রিক প্রকাশ দেখা দিতে থাকে। আবার অর্থনীতির একচেটিয়া রূপ থেকে যখন পুঁজিবাদ তার বিকাশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছালো অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদে অবতীর্ণ হলো তখন থেকে বুর্জোয়া রাষ্ট্র শাসন ব্যবস্থার রূপ হলো ফ্যাসিবাদী শাসন। আর তখন থেকেই নির্বাচন বা ভোট তথা জনগণের ভোটাধিকার হরণ করতে শুরু হলো। আজকের দিনে সারা দুনিয়াতেই বুর্জোয়া শাসনের রূপ হলো ফ্যাসিবাদী শাসন। আর সে কারণেই দুনিয়ার সর্বত্র বুর্জোয়া ব্যবস্থায় সুষ্ঠু ভোট হতে পারছে না। আমেরিকা থেকে শুরু করে বাংলাদেশ সর্বত্রই আজ একই চিত্র লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আমেরিকার গত নির্বাচনে কি হয়েছিল তা সকলেরই জানা। নির্বাচনের পর ক্যাপিটাল হিল (আমেরিকার সংসদ ভবন) দখল করতে গিয়েছিল ট্রাম্প সমর্থকেরা। এ বছর ২০২৪ সালে পৃথিবীর ৬৪ দেশে নির্বাচন হচ্ছে। ইতিমধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তানসহ কয়েকটাতে নির্বাচন(?) হয়েছে সেখানকার অবস্থা তো সবাই প্রত্যক্ষ করেছে। বাংলাদেশে ৯০-৯৫ ভাগ মানুষ ভোট দিতে যায়নি, বর্জন করেছে। পাকিস্তানে প্রধান বিরোধী দলের নেতাকে জেলে পুরে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করতে দেয়া হয়নি। ভারতে আগামী ১৯ এপ্রিল থেকে নির্বাচন শুরু হবে। ঝাড়খণ্ড ও দিল্লীর মুখ্যমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ইডি, সিবিএসহ নানা সরকারি সংস্থাকে ব্যবহার করে বিরোধীমত দমন করে নির্বাচনে ভারতের হিন্দুত্ববাদী বিজেপি পুনরায় ক্ষমতা দখলে মরিয়া। আমেরিকার আগামী নির্বাচনেও ২০টির অধিক রাজ্যে গোলমালের আশংকা করছেন নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা। ফলে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে বুর্জোয়া শাসনের এই অবক্ষয়ের যুগে আদর্শ সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠান খুবই দুসাধ্য ব্যাপার। বাংলাদেশের মতো একটি অনুন্নত দেশে (শিক্ষা-সংস্কৃতি-গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ সবদিক থেকে) প্রকৃতপক্ষে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন বুর্জোয়া ব্যবস্থায় হওয়া অসম্ভব।

দেশ : আপনি কি মনে করেন এসরকারের পদত্যাগ বা উৎখাত বলুন কোনোটাই সাধারণ জনগণ চায় না বা তাদের সায়-ও নেই। কারণ তারা অতীতে অনেকের শাসন দেখেছে। তাদের লুটপাট ও স্বাধীনতা-মুক্তিযুদ্ধের চেতনাও দেখেছে - আর এমন ধরনের অনীহার কারণেই কি মাঠের আন্দোলন নিয়ে সাধারণ জনগণের মাথা ব্যাথা নেই..তা সেজন্য দূরে ছিল। এবং তা-ই আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে?

বজলুর রশীদ ফিরোজ : প্রথমত একটি আন্দোলন সফল কি ব্যর্থ তার মাপকাঠি কি? বাংলাদেশের গত ৫৩ বছরের বুর্জোয়া শাসনে কখনোই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক আইনের শাসন ছিল না। ফলে দেশে অনুষ্ঠিত ১২টি নির্বাচনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে ৪টি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে আপেক্ষিক গ্রহণযোগ্যতা অর্থে সেগুলি ছাড়া সবকটি অর্থাৎ ১৯৭৩ সালের প্রথম নির্বাচন থেকে শুরু করে গত জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দ্বাদশ নির্বাচন কোনটিই অবাধ ও সুষ্ঠু হয়নি, গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। দেশে যে সীমাহীন লুটপাট-দুর্নীতি-দুঃশাসন চলছে এব্যাপারে জনমনে কোন সন্দেহ নেই। আর পৃথিবীতে এমনও নজির আছে কোন কোন স্বৈরশাসক ৩০ বছর, ৬০ বছর পর্যন্ত জোর করে ক্ষমতা দখল করে ছিল। অবশ্য ক্ষমতা যে চিরস্থায়ী নয় তা তাদের পতনের মধ্য দিয়েও প্রমাণিত হয়েছে। বর্তমানে বাংলাদেশের রাষ্ট্র ক্ষমতায় জোর করে দখল করে থাকা আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের বিরুদ্ধে ৮০-৯০% মানুষ ভোটকেন্দ্রে না গিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে আন্দোলন ব্যর্থ হয়েছে এটা বলতে পারেন না। আমরা মনে করি এটাও একটা সফলতা। তারপরও গায়ের জোরে নির্লজ্জের মতো শাসক দল ক্ষমতায় বসে আছে। গণতন্ত্রের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকলে সরকার নিজেই ক্ষমতা ছেড়ে দিয়ে একটি দল নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে আপেক্ষিক অর্থে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন দিয়ে তার জনপ্রিয়তা যাচাই করতে পারতো কিন্তু এদের পক্ষে তা সম্ভব না। এরা বাঘের পিঠে চড়ে বসেছে এখন নামতেও পারছে না বসে থাকাটাও দায় হয়েছে। তাছাড়া অতীতের শাসকশ্রেণির দলগুলোর প্রতিও জনগণের আস্থা নেই। তাদের শাসনামলেও জনগণ একই অবস্থা প্রত্যক্ষ করেছে। ফলে এই সরকার আর এক মুহূর্তও ক্ষমতায় থাকুক এটা যেমন জনগণ চাইছে না আবার দৃশ্যমান কোন বিকল্পও সামনে দেখছে না। জনগণ ভিতরে ভিতরে ফুসছে, উপযুক্ত আস্থাভাজন নেতৃত্ব পেলেই বিস্ফোরণ যে কোন সময় ঘটবে। সরকারেরও পতন ঘটবে।

দেশ : জনগণ কি সরকারের উন্নয়নকর্মে সন্তুষ্ট হয়ে আপনাদের বা বিরোধী দলের আন্দোলনকে প্রত্যাখ্যান করেছে?

বজলুর রশীদ ফিরোজ : সরকার যে উন্নয়নের ঢাক পিটাচ্ছে তা প্রকৃত উন্নয়নের চেয়ে টাকা বানানোর দুর্নীতি, এটা জনগণ হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছে। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে এগুলো থেকে কাঠামোগত উন্নয়ন বা কর্মসংস্থানের সুফল কি গরীব মধ্যবিত্ত মানুষ পাচ্ছে? মোটেই না। ফলে সরকারের কথিত উন্নয়নের প্রতি জনগণের বিন্দুমাত্র মোহ নেই। বরং ঋণ করে যে উন্নয়ন দেখানো হচ্ছে যার সুদের বোঝা জনগণকেই বইতে হচ্ছে এবং হবে এজন্য জনগণ সরকারের প্রতি বিক্ষুব্ধ। বিরোধী দল কিংবা দলের আন্দোলন নয় বরং জনগণ সরকারকেই প্রত্যাখ্যান করেছে।

দেশ : আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে হলে আসলে কি করতে হবে?

বজলুর রশীদ ফিরোজ : আন্দোলন এগিয়ে নিতে হলে জনগণের সামনে সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি অর্থাৎ তাদের মুক্তির দিশা তুলে ধরতে হবে। একই সাথে শ্রমিক-কৃষকসহ বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের ন্যায্য দাবিগুলো নিয়ে গণআন্দোলন গড়ে তুলে তাকে সমন্বয় করেই জাতীয় ভিত্তিক আন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্র-গণতান্ত্রিক মানবিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম এগিয়ে নিতে হবে। আর এজন্য শাসক বুর্জোয়া শ্রেণির রাজনৈতিক দল নয়; বাম-প্রগতিশীল উদার গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ করেই এই সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হবে। আমাদের দল বাসদ ও বাম গণতান্ত্রিক জোট সেই প্রচেষ্টা এবং উদ্যোগ অব্যাহত রেখেছে।

দেশ: কেনো সত্যিকার অর্থে অতীতের মতো একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন গড়ে উঠছে না? এর পেছনে কারণ কি? 

বজলুর রশীদ ফিরোজ : আমি আগেই বলেছি। প্রত্যেক নির্দিষ্ট সময়ে আন্দোলনের ধরন, গতি প্রকৃতি আলাদা হয়। একই রকমভাবে হয় না, হবে না। স্বাধীনতার পরে গত ৫৩ বছরে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন পর্যায়ে সামরিক-বেসামরিক স্বৈরশাসন বিরোধী আন্দোলন দাবি ও শক্তি সমাবেশের ধরন ভিন্ন হয়েছে। আজও তাই গণদাবিতে আন্দোলনে শক্তি সমাবেশের বিষয়য়টিও আগের মতো হবে না। বর্তমানে ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সত্যিকার গণআন্দোলন গড়ে তুলতে হলে বাম-প্রগতিশীল উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, সংগঠন, ব্যক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং বিভিন্ন শ্রেণিপেশার গণসংগঠনগুলোকে নিজ নিজ দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সংগ্রাম গড়ে তুলতে হবে। আর এই সকল ছোট-বড়-মাঝারী স্থানীয় ও জাতীয় আন্দোলনকে ফুলের মালার মতো গেঁথেই গণআন্দোলনের নতুন পথ রচনা করতে হবে।

দেশ : আপনি কি মনে করেন বামদল বা জোটের আন্দোলন বা তাদের বক্তব্যও জনগণ এখন আর আগের মতো গ্রহণ করে না বা পাশে দাঁড়ায় না বা শুনতেও চায় না। অথচ এই বাম দলগুলির ডাকে বা সম্পৃক্তার কারণেই সব আন্দোলন সফল হয়েছে বলে বলা হয়ে থাকে। 

বজলুর রশীদ ফিরোজ : বাম দল ও জোটের বক্তব্য মানুষ গ্রহণ করতে চায় না, এটা ঠিক না। বরং উল্টোটা বাম দলগুলো বিশেষ করে আমরা আমাদের দলের কথা বলতে পারি আমরা যেখানে যতটুকু বক্তব্য নিয়ে যেতে পেরেছি মানুষ তা গ্রহণ করেছে, সাড়া দিয়েছে। আমরা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে এক বৈরী পরিবেশের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। ফলে স্রোতের বিপরীতে চলতে গিয়ে আমাদের কঠিন পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হচ্ছে। প্রয়োজনের তুলনায় আমাদের শক্তি সামর্থ্য কম। তাই সব জায়গায় আমরা পৌঁছাতে পারছি না। যেখানে যেতে পারছি সেখানে সাড়া পাচ্ছি। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি, নিশ্চয় বিজয় আমাদের হবে। তা ছাড়া গত্যন্তর নেই। বাম শক্তির উত্থান ছাড়া এই দুঃসময় মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। জনগণকে আমরা আহ্বান জানাবো শাসক বুর্জোয়া শ্রেণির দলসমূহের মিথ্যা আশ্বাস ও প্রলোভনে বিভ্রান্ত না হয়ে সঠিক বাম পন্থার শক্তিকে চিনে নিন। তাদের শক্তিকে সমর্থন যোগান। ফ্যাসিবাদী দুঃশাসনের অবসান ঘটবে। জয় আমাদের হবেই।

শেয়ার করুন