২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৬:১৪:৫৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


দেশকে শাকিব খান
যারা ভাল ছবি আটকাতে চায় তারা সিনেমার শত্রু
আলমগীর কবির
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৬-০৪-২০২৩
যারা ভাল ছবি আটকাতে চায় তারা সিনেমার শত্রু শাকিব খান


শাকিব খান। বাংলাদেশী সিনেমার সবচেয়ে জনপ্রিয় অভিনেতা। দেড়ে দশকের বেশি সময় ধরে তিনি এই জনপ্রিয়তা ধরে রেখেছেন। এই ঈদে মুক্তি পেয়েছে তার নতুন ছবি ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’। এই সিনেমা এবং বর্তমান ব্যস্ততা নিয়ে তিনি কথা বলেছেন নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকার সঙ্গে। সাক্ষাতকার নিয়েছেন আলমগীর কবির।  

প্রশ্ন: এক বছর বিরতি দিয়ে আবার প্রেক্ষাগৃহে আপনার ছবি। বিষয়টি কেমন লাগছে?

শাকিব খান: আমি সিনেমার মানুষ। বড় উৎসব বিশেষ করে ঈদে নিজের ছবি মুক্তি না পেলে মন খারাপ হয়। পরিবেশগত কারণে মাঝখানে আমার সিনেমা মুক্তি পায়নি। আমার অভিনীত একাধিক সিনেমা মুক্তির জন্য প্রস্তুত থাকা সত্ত্বেও সিনেমা মুক্তি না পাওয়ায় মন খারাপ হয়েছিল। তবে এবার ভালো একটি সিনেমা দর্শক পেয়েছেন এ জন্য ভালো লাগছে।

প্রশ্ন: এবার নাকি প্রথমবার সিনেমা দেখেতে বাবা-মাকে নিয়ে প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলেন?

শাকিব খান: ‘লিডার: আমিই বাংলাদেশ’ পরিবারের সবাইকে নিয়ে দেখার মতো দারুণ একটি চলচ্চিত্র। এরই মধ্যে গান ও টিজার সব শ্রেণির সিনেমাপ্রেমীর মধ্যে সাড়া ফেলেছে। প্রেক্ষাগৃহেও ছবিটি সবাই দারুণভাবে উপভোগ করেছেন। তাই তো আমি মা-বাবা, বোন, আত্মীয়, পরিজন ও বন্ধুবান্ধবকে নিয়ে সিনেমাটি দেখতে প্রেক্ষাগৃহে গিয়েছিলাম। বর্তমান প্রেক্ষাপটে পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধ সৃষ্টি করবে আমাদের লিডার।’

প্রশ্ন: এই সিনেমা কি পরিবারিক বন্ধন অটুট রাখার বার্তা দেয়?

শাকিব খান: অবশ্যই। বর্তমান যুগে পারিবারিক বন্ধনের জায়গাটা একটু কমে গেছে। সবাই যাঁর যাঁর জায়গা থেকে নিজের ব্যক্তিগত জীবন নিয়েই ব্যস্ত সময় পার করছেন। সোশ্যাল মিডিয়া নিয়ে বেশি ব্যস্ত। গল্পে আমরা চেষ্টা করেছি পারিবারিক ব্যাপারগুলো ইনভলভ করতে। ভাইয়ের সঙ্গে বোনের সম্পর্ক, বাবা-মায়ের সঙ্গে সন্তানের সম্পর্ক, তারপর ভাবির সঙ্গে দেবর-ননদের সম্পর্ক, এই সম্পর্কগুলো আমরা যৌক্তিকভাবে মধ্যবিত্ত পরিবারে যেভাবে থাকে, সেভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

প্রশ্ন: এটাই কি এই সিনেমার দর্শক টানার কারণ বলে মনে করছেন?

শাকিব খান: উৎসবের ছবি উৎসবের মতো হওয়া লাগে। সিনেমায় সব একশতে একশ হতে হয়। তাহলেই তার প্রতি সবার আগ্রহ জাগে। এই ছবির গল্প ভালো। প্রতিবাদ, সাধারণ মানুষের মধ্যে জাগরণ, অনিয়ম আর সামাজিক সচেতনতার গল্প বলা হয়েছে এতে। ছবির দুটি গান বেশ সাড়া ফেলেছে। ভালো গান কিন্তু দর্শকের কাছে সিনেমার বিজ্ঞাপন। আর আমাকে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরা গত এক বছরে আমার নতুন ছবি দেখতে পাননি। তাঁদের মধ্যে একটা আগ্রহ ছিল। সব মিলিয়েই হয়তো দর্শক ছবিটির প্রতি আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

প্রশ্ন: আপনার ছবি মৃক্তি পেলে একটা পক্ষ দাঁড়িয়ে যায় ফ্লপ প্রমাণ করতে। বিষয়টা কিভাবে দেখেন আপনি?

শাকিব খান: ওই পক্ষটা সব সময় ছিল, হয়তো আগামীতেও থাকবে। শুধু আমার ছবির বেলায় না, কোনো ছবি ভালো চললে, বা কেউ ভালো করলে তারা তাদের আটকাতে তারা মরিয়া হয়ে যায়। মূলত তারা দেশের সিনেমার শক্রু। তবে দর্শকের ভালোবাসা যার বা যাদের পক্ষে আছে, তাদের আটকে রাখার সাধ্য কারও নেই। কত চেষ্টাই তো করল, ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’কে কি আটকে রাখতে পারল? এদের দর্শকরা চিনে ফেলেছে। 

প্রশ্ন: প্রযোজক রহমত উল্লাহ আপনার নামে মামলা করলেন। ওটাও এখন কোন পর্যায়ে আছে?

শাকিব খান: একটু খেয়াল করলে সবাই বুঝতে পারব, তার পুরো প্রক্রিয়াটাই ছিল আমার ছবি আটকে দেওয়া চেষ্টা বা নীলনকশা। অস্ট্রেলিয়ায় আমার বিরুদ্ধে মামলা হবে আর আমি সেখান থেকে ফিরে আসব। সেখান থেকে এসে আরেকবার অস্ট্রেলিয়ায় গিয়েছি আমি। আমার নামে সেখানে অভিযোগ থাকলে তো সেখানকার পুলিশ আমাকে ছেড়ে দিত না। অথচ হুট করে কোথা থেকে এসে রহমত উল্লাহ আমার নামে অভিযোগ দায়ের করলেন। যে প্রযোজক সমিতিতে তিনি অভিযোগ দিলেন, তিনি তো সেখানকার সদস্যও নন। প্রযোজক নেতারা কিছু চেক না করেই বিষয়টি বড় করে ফেললেন। যখন কোনোভাবেই আটকাতে পারলেন না, ঠিক তখন ঈদের আগে ফের এসে মামলা করলেন যেন ঈদের ছবিতে প্রভাব পড়ে। এর পেছনে কারও হাত আছে, আমাকে আটকে রাখার অসৎ উদ্দেশ্য আছে। 

প্রশ্ন: এবারের ঈদ কেমন কাটল?

শাকিব খান: মায়ের হাতে বানানো নানা পদের সেমাই খাওয়ার মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল এবারের ঈদ। দুপুরের পর আমার সিনেমা নিয়ে সুখবর আসতে শুরু করে। এসবের মধ্যেই ভক্ত ও শুভাকাঙ্খীদের সঙ্গে চলে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়।

প্রশ্ন: সুখবরগুলো কী ছিল?

শাকিব খান: ‘লিডার আমিই বাংলাদেশ’ সিনেমার পরিচালক তপু খান ও তাঁর টিম প্রতিটি হলে খোঁজখবর নিচ্ছিলেন। ঢাকার হলগুলোতে দর্শকের আগ্রহের কথা ফোনে জানান। পরে পুরো দেশের হলের খবর আসে। ফলে ঈদের আনন্দ আরও বেশি অনুভব করি। এখানে আরও একটা কথা বলা প্রয়োজন, যেখানে বলিউড, দক্ষিণী সিনেমা, এমনকি নেপালের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি এগিয়ে যাচ্ছে, সেখানে আমাদের ইন্ডাস্ট্রি তো থমকে আছে। এ পরিস্থিতিতে লিডার নিয়ে দর্শক মাতামাতি করছে- এমন সাফল্যের খবরে সত্যিকার আনন্দটাই লাগে।

প্রশ্ন: আনন্দের দিনে কি দুই সন্তান পাশে ছিল?

শাকিব খান: আব্রাহাম আর বীর দু’জনই আমার কাছে ছিল। দু’জনের সঙ্গেই দারুণ সুন্দর সময় কেটেছে। আব্রাহাম তো বড় হয়ে যাচ্ছে। তাই নানা বিষয়ে ওর মধ্যে কৌতূহলও বাড়ছে। যতক্ষণ কাছে থাকে, নানা ধরনের প্রশ্ন করে। অনেক কিছু জানতে চায়। ওর এসব প্রশ্নের উত্তর দিতে আমারও বেশ ভালো লাগে। আর বীর এখনও অনেক ছোট। তবে ওর নিজস্ব একটা জগৎ আছে। সেই জগতেই থাকতে পছন্দ ওর। আমার সঙ্গে থাকলেও নিজের মতো করে খেলাধুলা করে, গেমস আর গাড়ি চালায়। বীর যখন এসব করে, তখন আমি সঙ্গ দিই। সব মিলিয়ে ওদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটে। ঈদের দিনও কেটেছে।

প্রশ্ন: বাবা হিসেবে দুই সন্তান নিয়ে আপনার স্বপ্ন কী?

শাকিব খান: ওদের নিয়ে আমার একটাই স্বপ্ন, ওরা যেন ওদের মতো করে সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে। বাবা হিসেবে বেড়ে ওঠার পরিবেশটা আমি নিশ্চিত করতে চাই।

প্রশ্ন: নতুন ছবির শুটিং শুরু হচ্ছে কবে?

শাকিব খান: নতুন ছবির কাজ তো শুরু করতেই হবে। তবে এখন আপাতত ‘লিডার, আমি বাংলাদেশ’ এর ভাইব নিয়েই আছি। সিনেমাটি নিয়ে দর্শকদের উচ্ছ্বাস উপভোগ করছি।

শেয়ার করুন