০৩ মে ২০১২, শুক্রবার, ০১:৫৩:০৩ পূর্বাহ্ন


বিয়ানীবাজার সমিতি : বিগত কমিটির অসহযোগ ও অগঠনতান্ত্রিক কাজের নিন্দা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩১-০৩-২০২২
বিয়ানীবাজার সমিতি : বিগত কমিটির অসহযোগ ও অগঠনতান্ত্রিক কাজের নিন্দা


 বিগত কমিটির কাছ থেকে সমিতির অসম্পূর্ণ কাগজপত্র গ্রহণ, অডিট কমিটির ৩ সদস্যের মধ্যে একজন অনুপস্থিত থেকে দুই জনের অডিট রিপোর্টে ভিন্ন রিপোর্ট প্রদান, বিয়ানীবাজার সমিতির গঠনতন্ত্রে ও ব্যাংক স্টেটমেন্টে সমিতির ভিন্ন নাম, সমিতির নামে টেক্স প্রদান করা, সমিতির নির্বাচনের সময় সমিতির ভুয়া ভোটার তালিকাভুক্ত ও আজীবন সদস্যদের তালিকা হালনাগাদ করা, গত জুলাই মাসে বিগত কমিটি ও উপদেষ্টাদের যৌথ বৈঠকে বিয়ানীবাজার সমিতির সাধারণ সভায় অনাকাঙ্খিত ঘটনায় একটি পকে সন্ত্রাসী আখ্যায়িত করা ও একজন কার্যকরি কমিটির সদস্যকে আত্মপ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে বহিষ্কার করা- এ সব বিষয় নিয়ে সাধারণ সভায় নিন্দা জ্ঞাপন করা হয়। গত ২৭ মার্চ ওজনপার্কের দেশী সিনিয়র সেন্টারে বিয়ানীবাজার সমিতি আয়োজিত নব নির্বাচিত কমিটির প্রথম সাধারণ সভায় এ সব বিষয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল মান্নান। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সেক্রেটারী নাজমুল হক মাহবুব। মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন উপদেষ্টা বুরহান উদ্দীন কপিল, আহমদ এ হাকিম, হাজী শফিকুর রহমান, সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সভাপতি আজিমুর রহমান বুরহান, মোস্তফা কামাল।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলওয়াত করেন সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তৈয়ব মোহাম্মদ তালহা। মোহাম্মদ তালহা। সভার প্রারম্ভে সম্পাদকীয় রিপোর্ট, কোষাধ্য রিপোর্ট ও বাজেট উত্থাপন করেন যথাক্রমে সম্পাদক নাজমুল হক মাহবুব ও কোষাধ্য আব্দুল হান্নান।

সম্পাদকীয় রিপোর্ট 

২৯ জানুয়ারি ২০২২ সালে বিয়ানীবাজার সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে সমিতির বর্তমান উপদেষ্টা আহমদ এ হাকিমের পিতা হাজী হোসেন আহমদ ফাউন্ডেশন ইউ এস ইন্ক এর অর্থায়নে ২০২১ সালে এসএসসি দাখিল পরীায় জিপিএ প্রাপ্ত ১১৮ জনকে সম্মাননা সার্টিফিকেট 

১০০০ টাকা সমমূল্যের প্রাইজ বন্ড বিতরণ। ১৩ ফেব্রæয়ারি ওজনপার্কের স্কাইলাইনে পিঠা উৎসবের আয়োজন, স্বাধীনতা দিবস উপলে ২৭ মার্চ দেশী সিনিয়র সেন্টারে আলোচনা সভার কথা উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও সমিতির নামের জন্য সংশোধনী, সমিতির ভবন মালিকানা থেকে সমিতির নামে নিয়ে আসার জন্য টেক্স রিটার্ন ও ৫০১ সি স্ট্যাটাস অর্জন, সমিতির ভবনের জন্য আলাদা ব্যাংক একাউন্টের প্রয়োজনীয়তা, অন লাইন ব্যাংকিং চালু রাখা, বিদায়ী কমিটির কাছ থেকে (১) কর্পোরেশন রেকর্ড ১টি (২) কর্পোরেশন সিল ১টি, সমিতির ব্যানার ১টি, (৩) গঠনতন্ত্র ১টি, (৪) আজীবন সদস্যের তালিকা একটি, (৫) ব্যাংকে গচ্ছিত ১ লাখ ২৬ হাজার ৬৬৯ ডলার ৬২ সেন্ট।

(৬) বিগত ২০১০-২০১১, ২০১২-২০১৩, ২০১৪-২০১৫, ২০১৬-২০১৭, ২০১৮-২০১৯ এর অডিট রিপোর্ট ( প্রয়োজনীয় ডকুমেন্ট পাওয়া যায়নি), (৭) ২০২০-২০২১ সালের অডিট কমিটির দুই অডিটরের দুই ধরনের পৃথক রিপোর্ট প্রয়োজনীয় সাপোর্ট ডকুমেন্ট ছাড়া, (৮) কার্যকরি কমিটির মাসিক সভার রেজুলেশন বুক ( ২০২০-২০২১, ২০১৮-২০১৯, ২০১৬-২০১৭, ২০০০-২০০১) মোট ৪ টি বই, (৯) সাধারণ সভার রেজুলেশন বই (১৯৯৪- ৯৫, ১৯৯৬- ৯৭, ১৯৯৮- ৯৯, ২০১৬-২০১৭, ২২০১৮-১৯, ২০২০-২০১) মোট ৩টি বই প্রাপ্তির কথা উল্লেখ করা হয়। এসব আংশিক কাগজপত্র পাওয়ার পর বাকি কাগজপত্রের জন্য বিদায়ী সভাপতির নিকট নতুন কমিটি একটি পত্র প্রেরণ করে। পত্রের উত্তরে বিদায়ী সভাপতি বিদায়ী সম্পাদক মারফত পত্রের উত্তরে বলেন, বর্তমানে বিদায়ী সভাপতি বাংলাদেশ অবস্থান করায় ফিরে এসে আনুষ্ঠানিক ভাবে বাকি কাগজপত্র পত্র প্রদান করবেন। সম্পাদকীয় রিপোর্টে বলা হয়, গণতন্ত্রের ১২ ধারা অনুযায়ী ২০২২ সালের ৭ জানুয়ারি সমিতির সকল কাগজপত্র, ব্যাংক হিসাব নীরিণের মাধ্যমে হস্তান্তরের কথা থাকলেও একমাত্র ব্যাংক একাউন্ট হস্তান্তর ছাড়া অবশিষ্ট কাগজপত্র বিলম্বে হস্তগত হওয়ায় দু:খ প্রকাশ করা হয়।


কোষাধ্য ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২২ সালের মার্চ ১৪ তারিখ পর্যন্ত আয় ব্যয়ের হিসাব উপস্থাপন করেন। রিপোর্টে ৩ মাসে খরচ দেখানো হয় ২ হাজার ৮৮১ডলার ৭৮সেন্ট। আয় দেখানো হয় ৯ হাজার ১ শত ডলার। বর্তমানে ব্যাংকে রয়েছে ১লাখ ৪৭ হাজার ৮৩৬ ডলার ৫৮ সেন্ট। কোষাধ্যক্ষ তার প্রতিবেদনে ২০২২ সালের বাজেট উপস্থাপন করেন। সেখানে বিভিন্ন খাতে ২৩ হাজার ৯শত ডলার খরচের কথা উল্লেখ করা হয়। কোষাধ্য তার বাজেটে উল্লেখ করেন, পিঠা উৎসব, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ইফতার পার্টি, বনভোজন, দুইটি সাধারণ সভা, খেলাধুলা, মিলাদ মাহফিল, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, অফিস খরচ, মৃত ব্যক্তির খবচ, কৃতি ছাত্র/ছাত্রীদের সম্মাননা ও পুরষ্কার বিতরণ এসবের খাতে খরচ করা হবে।

যে সব কাগজপত্র বিদায়ী কমিটি বর্তমান কমিটির কাছে হস্তান্তর করার জন্য বর্তমান কমিটি বিদায়ী সভাপতি বরাবর পত্র প্রেরণ করে। সেগুলো হলো (১) রশীদ বই, সাধারণ সদস্য, আজীবন সদস্য ও সিনিয়র মেম্বারদের তালিকা (২) বিগত ২ বছরের ব্যাংক একাউন্ট (ক্যাশ চেক ইমেজ সহ) (৩) ভোটার তালিকা নতুন ও পুরাতন (৪) অডিট রিপোর্ট ও সাপোর্ট কাগজপত্র পত্র সহ (৫) সেক্রেটারী ও ও কোষাধ্যক্ষের সাধারণ সভার সকল রিপোর্ট (৬) বিগত ২ বছরের আয় -ব্যয়ের হিসাব- নিকাশের খাতা ও রশীদ, (৭) টেক্স রিটার্নের সকল কাগজপত্র (৮) পুরাতন গঠনতন্ত্রের কপি ও সকল পুরাতন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। 

সম্পাদকীয় রিপোর্ট, কোষাধ্যরে রিপোর্ট ও বাজেট উত্থাপনের পর আলোচনার সূত্রপাত হয়। প্রথমে প্রায় ২৪ হাজার ডলারের বাজেট সাধারণ সভায় অনুমোদিত হয়। বলা হয়, বাজেটের অর্থ অর্ধেক সমিতির তহবিল থেকে। অর্ধেক কার্যকরি কমিটির সদস্য ও বিত্তশালীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করে বাজেট পূরণ করা হবে। এর পর আলোচনায় স্থান পায়, অডিট রিপোর্টে কমিটির দুই সদস্যের ভিন্ন মতামত, নির্বাচন কালীন সময়ে ভুয়া ভোটার যাতে নিবন্ধন না হয়, আজীবন সদস্য তালিকা হালনাগাদ করা, সমিতির গঠনতন্ত্রে ব্যাংকে অন্য নাম। এই নামকে সংশোধন করা, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিদায়ী কমিটি ৭ জানুয়ারির মধ্যেই অডিট কমিটির রিপোর্ট,সমিতির সব কাগজপত্র নতুন কমিটির কাছে হস্তান্তর করা। তা না করে শুধুমাত্র ব্যাংক একাউন্ট হস্তান্তর করা হয়। তাই নয়। গঠনতন্ত্র মোতাবেক সমিতির কাগজপত্র কোষাধ্যরে নিকট না রেখে সভাপতির গঠনতন্ত্র বিরোধী কাজ নিয়ে আলোচনা হয়। 


সাধারণ সভায় ৩ সদস্য বিশিষ্ট গঠনতন্ত্র সংশোধন কমিটি গঠিত হয়। সদস্যরা হলেন- বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান সাবু, বর্তমান উপদেষ্টা আহমদ এ হাকিম, ছালেহ আহমদ মনিয়া। ভোটার তালিকায় ভৌতিক ভোটারদের নাম বাদ দেয়া এবং আগামীতে এ ধরনের কর্ম বন্ধ এবং হাল নাগাদ তালিকা তৈরির জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ১১ ইউনিয়ন থেকে সাহায্যকারী লোকজন নিয়ে ভোটার তালিকার কাজ করবে। ৫ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির সদস্যরা হলেন- মহিউদ্দিন আহমদ, নূরুল ইসলাম, বর্তমান উপদেষ্টা বুরহান উদ্দীন কপিল, জামাল হোসেন, বর্তমান কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আবু তৈয়ব মোহাম্মদ তালহা। অডিট রিপোর্টের জন্য বর্তমান সভাপতি, সেক্রেটারী, কোষাধ্য ও সাবেক সভাপতি এবং সাবেক সেক্রেটারীকে অডিট রিপোর্ট কাজ করার সিদ্ধান্ত হয়।

আলোচনা অংশ নেন আজিজুর রহমান সাবু, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বদরুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন, জামাল হোসেন, জহির উদ্দীন জুয়েল, বর্তমান উপদেষ্টা বুরহান উদ্দীন কপিল, মহিউদ্দিন আহমদ, আব্দুল কাদির, নুরুল ইসলাম, আতিকুল হক আহাদ, গেøাবাল এয়ার ট্রাভেল্সের মোহাম্মদ আলীম, ছমীর উদ্দীন, সাধারণ সভায় শুভেচ্ছা বক্তব্যে রাখেন বিয়ানীবাজার সমিতির সাবেক উপদেষ্টা আজিমুর রহমান বুরহান ও সাবেক সভাপতি মোস্তফা কামাল। 

সাধারণ সভার পূর্বে মহান স্বাধীনতা দিবসের উপর বিশেষ আলোচনা হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সভাপতি আব্দুল মান্নান। সভা পরিচালনা করেন সেক্রেটারী নাজমুল হক মাহবুব। আলোচনা অংশগ্রহণ করেন বিশিষ্ট ফুটবল খেলোয়াড় আব্দুল জলিল, জালালাবাদ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি বদরুল হোসেন খান, সাবেক চেয়ারম্যান নাজিম উদ্দীন, হেলিম উদ্দীন, নুরুল ইসলাম, আবু তৈয়ব মোহাম্মদ তালহা।


শেয়ার করুন