০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৭:৪৯:৫৪ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


দ্বাদশেও নিরঙ্কুশ জয় আওয়ামী লীগের
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১০-০১-২০২৪
দ্বাদশেও নিরঙ্কুশ জয় আওয়ামী লীগের নির্বাচনে জয়ী হয়ে প্রধানমন্ত্রীর সেলফি


বহুল আলোচিত বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে অনেক বিতর্কিত ঘটনার জন্ম দিয়ে। বিরোধীদলের ভোট বর্জনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত এ নির্বাচনে টানা চতুর্থবারের মতো নিরঙ্কুশ জয় পেয়ে সরকার গঠনের পথে আওয়ামী লীগ। দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে অনুষ্ঠিত হওয়া ২৯৮ আসনের মধ্যে ২২২ আসনে বিজয়ী হয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। তাদের নিকটতম দল জাতীয় পার্টি। তাদের আসন সংখ্যা ১১। এছাড়া স্বতন্ত্র ৬২ ও অন্যান্য দল পেয়েছে ৩টি আসন। বাকি দুটির ভোট স্থগিত রয়েছে। 

এর মাধ্যমে পঞ্চমবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন শেখ হাসিনা। পাশাপাশি আটবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন বঙ্গবন্ধুকন্যা। এবারের নির্বাচনটিতে বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা অংশ নেয়নি। আওয়ামী লীগসহ অংশ নেওয়া দলগুলোর মধ্যে তেমন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস ছিল না আগে থেকেই। ভোটে নামার পরই আসন ভাগাভাগি হয় শরিক ও মিত্র দলগুলোর মধ্যে। এতে শুরুতেই প্রতিদ্বন্দ্বিতার চরিত্র হারায় নির্বাচন। তবে যারা স্বতন্ত্র নির্বাচিত হয়েছেন তারাও আওয়ামী লীগেরই সদস্য। ভোটের মাঠে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াতে দলের পক্ষ থেকে বিদ্রোাহী প্রার্থী হওয়ার বিধিনিষেধ ছিল না। যে যার ইচ্ছা করতে পারবেন নির্বাচন। এতেই ক্ষমতাসীন দল হয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়া। আর এতেই বিধ্বস্ত হয়েছেন হেভিওয়েট কিছু নেতা। 

এর মধ্যে আওয়ামী লীগের নিজস্ব নেতা যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে বিভিন্ন প্রলোভন দিয়ে মাঠে নামানো কয়টি দলও। এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপি অন্যতম। দলটির শীর্ষ দুই ব্যক্তিত্ব চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমূর আলম খন্দকার অন্যতম। দুইজনই শুধু বড় হার নয়, রীতিমতো ভরাডুবি এদের। শমসের মবিন হয়েছেন তৃতীয়। আর তৈমূর জামানত হারানোর উপক্রম। অন্যান্য আলোচিতদের মধ্যে শাহজাহান ওমর যেমনটা পাস করে গেছেন বরিশাল থেকে। তেমনি জেনারেল (অব.) ইবরাহিমও পাস করে গেছেন কক্সবাজার থেকে। হেভিওয়েটদের মধ্যে হাসানুল হক ইনু, বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, মেহের আফরোজ চুমকি, আনোয়ার হোসেন মঞ্জু হেরে গেছেন। হেরেছে মমতাজ বেগমও। তবে নতুন চমক ব্যারিস্টার সুমন ও সাকিব আল হাসান, খসরু চৌধুরী (ঢাকা-১৮), এ কে আজাদ (শিল্পপতি) প্রমুখ। এদের জয় বিপুল ব্যবধানে। জিতেছেন মাশরাফিও। 

এর আগে রোববার (৭ জানুয়ারি) বিক্ষিপ্ত ঘটনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর বর্জনের মুখে হওয়া নির্বাচনে দিনভর ভোটার উপস্থিতি ছিল খুবই কম। সকালে অনেকে কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি ছিল একেবারেই নগণ্য। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারের সংখ্যাও কিছুটা বাড়ে। প্রথম চার ঘণ্টার ভোটের পর নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে ১৮.৫ শতাংশ ভোট পড়ার তথ্য জানানো হয়। ভোট শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার সংবাদ সম্মেলনে ভোটের হারের দুটি সংখ্যা উল্লেখ করেন। প্রথমে তিনি জানিয়েছিলেন ২৮ শতাংশ ভোট পড়েছে। পরে অবশ্য পাশে থাকা ইসি কর্মকর্তারা শুধরে দেওয়ার পর তিনি জানান ৪১.৮ শতাংশের মতো ভোট পড়েছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বা না-ও পারে বলেও জানান দেওয়া হয়। ভোটের পরিবেশ নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তিনি বলেন, প্রত্যাশার চেয়েও ভালো নির্বাচন হয়েছে এবার। 

তবে শীতের কনকনে ঠান্ডার মধ্যে ভোটের দিন সকালে কিছুটা উপস্থিতি কম থাকলেও ধীরে ধীরে বাড়ে। তবু বিরোধীদল শূন্য এ নির্বাচন আকৃষ্ট করতে পারেনি সাধারণ মানুষকে। বলতে গেলে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থিত লোকজনই অংশ নেয় এ নির্বাচনে। তবে নির্বাচনের আগে বিরোধীদলের ভোট বর্জনের ফলে নির্বাচনের মাঠে মানুষের সম্পৃক্ততা বাড়াতে নিজ দলের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের স্বতন্ত্র হিসেবে দাঁড়ানোর অনুমতি দেওয়ার পর কিছুটা নির্বাচনী আমেজ পরিলক্ষিত হয়। যেটুকু সহিংসতা হয়েছে তা নিজ গোত্রীয়দের মধ্যেই। 

বিএনপিসহ তাদের মিত্ররা এ ভোটে অংশ না নিয়ে ভোটে সাধারণ মানুষ যাতে অংশ না নেয় তার আহ্বান জানায়। বিএনপির দাবি তাদের সে আহ্বানে সাড়া দিয়েছে মানুষ। এতে দেশের মানুষকে অভিনন্দনও জানিয়েছে দলটি। 

এদিকে নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর বিজয় মিছিল না করতে এবং প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের কোনো ধরনের সংঘাতে না জড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। কর্মীরাও বেশির ভাগ স্থানে সে নির্দেশনা মেনে চলতেই দেখা গেছে।

শেয়ার করুন