২০ সেপ্টেম্বর ২০১২, শুক্রবার, ০৫:১১:৩২ অপরাহ্ন


দেশকে রফিকুল ইসলাম বাবু
বিসিবি’র পরিচালকদের পদত্যাগই সমাধান
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৪-০৮-২০২৪
বিসিবি’র পরিচালকদের পদত্যাগই সমাধান রফিকুল ইসলাম বাবু


বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের মুখে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার তছনছ। প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, সংসদও ভেঙে দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার শুরু করে দিয়েছেন সংস্কার। সে লক্ষ্যে বিচারবিভাগ, আইনশৃংখলাবাহিনী, নিরাপত্তা সংস্থা থেকে শুরু করে দেশের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণস্থানেই পরিবর্তনের হাওয়া লেগেছে। ওইসকল দলীয় করণের স্থানসমূহে নিয়ে আসছেন যোগ্যতা ও দক্ষতার ভিত্তিতে পরিবর্তন। প্রতিনিয়ত চলছে এ কার্যক্রম। কিন্তু ব্যাতিক্রম বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে। 

আইসিসি’র দোহাই দিয়ে চলমান কমিটি টিকিয়ে রাখার পাঁয়তারা করছে বোর্ডের কতিপয় পরিচালক ও কর্মকর্তা। এব্যাপারে ইতিমধ্যে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টার সঙ্গে ইতিমধ্যে বোর্ডের এ সকল কর্মকর্তাগণ দেখাও করেছেন। উপদেষ্টা বলেছেন, নিয়মানুসারে যেটা করার প্রয়োজন সেটাই তিনি করবেন। যাতে এখানে আইসিসি’র কোনো বাধাবিপত্তি না ঘটে।

আপাতত এ পর্যন্ত হলেও ক্রিকেটপ্রেমী ও বিভিন্ন বঞ্চিত ক্রীড়া সংগঠক এক্ষুণি পদত্যাগ দাবি করছেন বিসিবি’র পালায়নকরা কর্মকর্তা ছাড়া অবশিষ্ট যারা রয়েছেন তাদের। যেহেতু পালাতাক এ মর্মে বিসিবি আইসিসি’র সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি নিরপেক্ষ যোগ্য কমিটিকে দায়িত্ব প্রদান করলে বিসিবি’র চলমান কার্যক্রম যাতে ব্যাহত না হয়- এমনটাই বলছিলেন সাবেক বিসিবি’র পরিচালক ও বিশিষ্ট ক্রীড়া সংগঠক রফিকুল ইসলাম বাবু। 

নিউইয়র্ক থেকে প্রকাশিত পাঠকপ্রিয় দেশ পত্রিকাকে তিনি আরো বলেন, ‘শুধু আমরা কেন গোটা দেশব্যাপী বিসিবি’র কার্যক্রম দুর্নীতি, অনিয়ম সম্পর্কে অবগত। দীর্ঘ ১৫ বছর ক্ষমতার দাপটে কব্জা করে রাখা বিসিবিতে যোগ্যদের স্থান হচ্ছে না। এতে করে দেশের ক্রিকেটেরও উন্নতি ব্যাহত হচ্ছে। এসব পরিচালকরা বিভিন্ন ক্লাবের সঙ্গে সম্পৃক্ত। বিভিন্ন ক্রিকেট লীগে এদের ক্লাবের থাকে প্রধান্য। ফলে যোগ্য ক্রিকেটার বেড়িয়ে আসতে পারে না। যা প্রকারান্তরে দেশের ক্রিকেটের জন্য খুবই ক্ষতিকারক। তাছাড়া আর্থিক অনিয়ম, দুর্নীতি তো আছেই। ফলে দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যেহেতু আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটছে। ফলে ওই সরকারের মনোনীত বোর্ড সভাপতি পরিচালকরা এখন বিসিবিতে থাকার অধিকার হারিয়েছেন। তাদের পদত্যাগ করার দাবি দেশবাসীর মত বাংলাদেশ ক্রীড়া উন্নয়ন পরিষদেরও।’ 

আইসিসি কী করতে পারে? এমন এক প্রশ্নের উত্তরে বাবু বলেন, ‘২০০৭ এ তৎকালীন সরকারের সময়ে যে কমিটি ছিল তাদেরকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদত্যাগে বাধ্য করেছিল। সেটা আইসিসিতে দেখিয়ে নতুন কমিটি হয়েছে সেটা তাদের অবগত করানো হয়। এখনও সেভাবে করা সম্ভব। এ জন্য বিসিবিতে এখন যারা পরিচালক উপস্থিত তারা পদত্যাগ করবেন। অন্যরা যারা পালাতক তারা তো আসছেনই না, তাদের পালাতক দেখিয়ে আইসিসিতে চিঠি পাঠালে বিষয়টির সুরাহা করা সম্ভব। এখানে জটিলতার কিছু নেই।’ 

তিনি বলেন, ‘এরবাইরে সাধারণ জনগণ তো মানবে না। ইতিমধ্যে তারা বিসিবি ঘেরাও করতে আসে। কেন আওয়ামী সরকারের মনোনীতরা বোর্ড ছাড়ছেন না সে জন্য হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এটাতে তো বিসিবি তার সাধারণ কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। এতে বিভিন্ন দলের যে ক্রিকেট সূচি ও যেসব টুর্নামেন্ট ভবিষ্যতে অনুষ্ঠানের কথা সেগুলোতে অচলাবস্থা ও হুমকির মধ্যে পড়বে।’ 

বোর্ডর কমিটি ভেঙে দেয়ার অন্য কোনো উপায় রয়েছে কি না? এর জবাবে তিনি বলেন, ‘যেহেতু এরা দীর্ঘদিন বিসিবিতে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া উপেক্ষা করেছে নিজেদের প্রভাব খাটিয়ে। এরপর অর্থকড়ির তছরুফের অভিযোগও আছে। তাই এদের বিরুদ্ধে মামলা হতে পারে। সেটা হলে এসকল পরিচালকের পদে থাকার অধিকার হারাবে। এতে সম্মানহানি ঘটবে। ফলে সহজ উপায় নিজ থেকে এরা পদত্যাগ করে চলে যাওয়া।’ 

রফিকুল ইসলাম বাবু বলেন,‘ শুনেছি ক্রীড়া উপদেষ্টা এ ব্যাপারে আইনগত ভিত্তি যাছাই করে দেখছেন। আশাকরি উনি একটা পন্থা খুঁজে বের করবেন। তবে দেশের ক্রিকেটের স্বার্থে এ কমিটির এখন সরে দাঁড়ানো উচিৎ বলে সাধারন ক্রিকেটপ্রেমীর মত আমিও মনে করি।’ 

শেয়ার করুন