উৎসবমুখর পরিবেশে ম্যারিল্যান্ডের গোয়েথার্সবার্গস্থ ম্যারিয়ট হোটেলে ৩৮তম ফোবানার উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশি বংশোদভূত মূলধারার রজনীতিক ও সিটি অব কলেজ পার্কের মেয়র ড. ফজলুল কবির। ফোবানার হোস্ট কমিটির আহবায়ক জাহাঙ্গীর কবির বাবলুর সভাপতিত্বে গত শুক্রবার ৩০ আগষ্ট সন্ধ্যা ৭টায় তিন দিনব্যাপী ফোবানার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়। ফোবানার আমেজ ছিলো চোখে পড়ার মতো। ইসমাইল হোসেন খন্দকারের সঞ্চালনায় সর্বপ্রথমে কুরআন থেকে তেলোয়াত করেন মোহাম্মদ শফিউল্লাহ। তারপর বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় সংগীত পরিবেশ করার পাশাপাশি স্মরণ করা হয়৭১ সালে মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ ও ২০২৪ সালের বৈষম্যবিরোধী ছাত্রজনতার আন্দোলনে শহীদ হওয়া সকল শহীদদের।
চোখ ধাধানো ও ঝমকালো এ ফোবানায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুক্তরাজ্য প্রবাসী ও প্রেসিডেন্ট ফর গ্লোবাল বাংলাদেশি’স ড. হাসনাত হোসেন এমবিই। গেস্ট অব অনার ছিলেন ফোবানা স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান ও ৩৮তম ফোবানার প্রাণ পুরুষ শাহ নেওয়াজ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ফোবানার কর্মকর্তাদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন আলী ইমাম শিকদার, ড. আবু জুবায়ের দারা, মেম্বার সেক্রেটারি কাজি শাখাওয়াত হোসেন আজম, ফিরোজ আহমেদ, রানো নেওয়াজ, সারওয়ার মিয়া, শরাফত হোসেন বাবু, মোহাম্মদ হাদী কাইয়ুম, কবিরুল ইসলাম, ফারুক আহমেদ, নিশান রহিম, আহসান হাবিব, নওশেদ হায়দার, রবিউল আলম, এম জিন্নাহ, ড. আনোয়ারুল করিম। অনুষ্ঠানে ফোবানা নেতৃবৃন্দ সিটি অব কলেজ পার্কের মেয়র ড. ফজলুল কবিরকে ক্রেস্ট প্রদান করেন।
মেয়র ড. ফজলুল কবির বলেন, আগস্ট মাসে ফোবানা সম্মেলন উদ্বোধন হলো। এই মাসেই বাংলাদেশে আমরা দ্বিতীয় স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের নিউ জেনারেশন যা করলো তা দেখে সারা বিশ্বের মানুষ অবাক হয়ে গেছে। যেখানে রাজনৈতিক দলগুলো গত ১৫টি বছর কিছু করতে ব্যর্থ হয়েছে। ৭১ সালের স্বাধীনতায় আমাদের একটা সুযোগ এসেছিল। তা কজে লাগাতে পারিনি। ২০২৪ সালে আবার একটি সুযোগ এসেছে দ্বিতীয় স্বাধীনতার মাধ্যমে। গত ১৫টি বছর দেশের সব আশাই ছেড়ে দিয়েছিলাম। প্রবাসীরা এখন বাংলাদেশের প্রকৃত উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে। সে সুযোগ আমরা এবার পেয়েছি। ড্রবাসে বাস করেন দেশের স্মার্ট ও ট্যালেন্টেড মানুষগুলো। তারা একসাথে চাইলে দেশে প্রকৃত উন্নয়নে পাহাড়সম অবদান রাখতে পারেন। তাদের কাজে লাগতে হবে। আর যেন কেউ কোনভাবেই বাংলাদেশ থেকে টাকা পাচার করতে না পারে সেদিকে নজর রাখতে হবে। তিনি বলেন, ছাত্ররা বাংলাদেশের অন্ধকার যুগের কবর রচনা করেছে তাদের জীবনের বিনিময়ে। আসুন প্রবাসীরা বাংলাদেশের জন্য কাজ করে ছাত্রজনতার রক্তঋণ শোধ করি।
প্রধান অতিথি ড. হাসনাত হোসেন এমবিই বলেন, বাংলাদেশ অনেক ভাগ্যবান। ড. ইউনুসের মতো একজন বিশ্ব বরেল্য ব্যক্তিকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসেবে পেয়েছে। আসুন তার সরকারকে সফল করতে সবাই সাহায্য করি। তিনি ব্যর্থ হলে আমরা হাজার বছর পিছিয়ে যাব।
ফোবানার স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ বলেন, ফোবানা আমার ধ্যান-ধারণা ও কর্মজীবনের সাথে সম্পৃক্ত। বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় ফোবানাও অংশীদার। প্রবাসী হিসেবে আমরা দেশের যেকোন খুশির সংবাদে আনন্দিত হই। খারাপ কিছু হলে ব্যথিত হই। আমাদের শেকড় তো ওখানেই। আসুন, দেশের কল্যাণে একসাথে কাজ করি। সেমিনার, বাচ্চাদের খেলা, নৃত্য, ফ্যাশন শো, এবং বাংলাদেশ থেকে আগত দেশবরেণ্য শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন। গান পরিবেশন করেন, রিজিয়া পারভিন, ডলি সায়ন্তনি, বাদশা বুলবুল, রানো নেওয়াজ, পলি সায়ন্তনি, কামরুজ্জামান বকুল, অনিক রাজসহ অনেকে।
স্টিয়ারিং কমিটির চেয়ারম্যান শাহ নেওয়াজ জানান, আগামী বছর ফোবানা কোথায় হবে সেটা জানিয়ে দিবো আগামি দুই সাপ্তাহ পরে। তিন জায়গা থেকে ফোবানা কনভেনশন নেযার জন্য আবেদন করা হয়েছে। এগুলো যথাক্রমে নিউইয়র্ক, নিউজার্সি এবং মিশিগান।