০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:১৪:১৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


ভবনের লোন পরিশোধে আলাদা কর্পোরেশন ও কমিটি
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৯-০১-২০২৫
জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভা অনুষ্ঠানে অতিথিবৃন্দ


প্রবাসের অন্যতম আঞ্চলিক সংগঠন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভায় গত ২৬ জানুয়ারি সন্ধ্যায় এস্টোরিয়াস্থ জালালাবাদ ভবনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের এই অংশের নেতৃত্বে রয়েছেন সভাপতি মইনুল ইসলাম এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল গনি আসাদ। জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ভবন ক্রয়কে কেন্দ্র করেই মূলত দুইভাগে বিভক্ত হয়ে পড়ে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন। যে ভবনকে কেন্দ্র করে বিভক্তি এবং মামলা মোকদ্দমা, সেই ভবন এখনো ঋণমুক্ত করা সম্ভব হয়নি। রিফাইন্যান্স করা সম্ভব হয়নি বদরুল হোসেন খান এবং রোকন হাকিমের নেতৃত্বাধীন অংশের মামলা এবং বাড়ির ওপর লিন বসানোর কারণে। আবার তারা অর্থও ফেরত চায়। রিফাইন্যান্সও করতে দেবে না, আবার অর্থও দাবি করে! কূটকৌশল কাকে বলে- এমন অভিযোগ্র করেন অনেকে। সেই ভবনকে লোন মুক্ত করতে সাধারণ সভায় জালালাবাদ ফান্ড ইনক নামে আলাদা করপোরেশন করা এবং তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করেন সভাপতি মইনুল ইসলাম। এই কমিটির সদস্যরা হলেন- মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী বিলাল চৌধুরী এবং আব্দুল চৌধুরী ওমেল। তারা বলেন, এই ভবনের বিপরীতে ২০০ শেয়ার বিক্রি করা হবে। যদিও কার্যকরি কমিটির পক্ষ থেকে ১০০ শেয়ার নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। বাকি এক শত শেয়ার অন্যান্যের মধ্যে বিক্রি করা হবে। প্রতিটি শেয়ারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫০০ ডলার। আগামী ৩ বছরের মধ্যে ১০ শতাংশ লভ্যাংশসহ এই অর্থ ফেরত দেওয়া হবে। এই শেয়ার ক্রয়ে তারা জালালাবাদবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।

সভাপতি মইনুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আসাদুল গনি আসাদের পরিচালায় অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি সৈয়দ শতকত আলী, সংগঠনের উপদেষ্টা হাজি সৈয়দ জুবায়ের আলী, বিয়ানীবাজার সমিতির সভাপতি আব্দুল মান্নান, সাবেক সভাপতি বোরহান উদ্দিন কপিল, সাবেক সভাপতি আজিজুর রহমান সাবু, নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমিনুল হক চুন্নু, সাবেক সভাপতি শাহীন কামালী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান চৌধুরী শেফাজ, মৌলভীবাজার ডিস্ট্রিক্ট সোসাইটির সভাপতি ফজলুর রহমান।

সাধারণ সম্পাদক এবং কোষাধ্যক্ষের রিপোর্টের ওপর আলোচনা করেন- রয়েছ আহমদ, খলিলুর রহমান খলিল, রিয়াজি, শাহাবুদ্দিন, হুমায়ুন আহমেদ, ইয়ামিন রশীদ, নজিবুর রহমান, গৌস খান, জাবেদ খসরু, মখন মিয়া, বদরুল মহসিন, নজরুল ইসলাম, এনায়েত হোসেন জালাল, আব্দুল আহাদ, দুরুদ মিয়া রনেল প্রমুখ।

কোষাধ্যক্ষ মইনুজ্জামানের মায়ের মৃত্যুতে তিনি বাংলাদেশের থাকায় তার পক্ষে কোষাধ্যক্ষের রিপোর্ট পেশ করেন সাধারণ সম্পাদক আসাদুল গনি আসাদ। হিসাবে উল্লেখ করা হয় জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের ব্যাংক হিসাবে রয়েছে ২২ হাজার ৩৬৭ দশমিক ৬৯ ডলার। সাধারণ সম্পাদক বলেন, অনেকেই অপপ্রচার করেন আমরা ভবনের অর্থ পরিশোধ করছি না। তিনি দেখিয়ে বলেন, গত বার মাসের রিসিড আমার কাছে রয়েছে। তিনি মিথ্যা প্রপাগান্ডায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য জালালাবাদবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি ৫২ ভাষা আন্দোলন থেকে ১৯৭১ মহান মুক্তিযোদ্ধা এবং আজ অবদি যারা বাংলাদেশের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করেছেন তাদের সবাইকে গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। সদ্য প্রয়াত সংগঠনের সাবেক কর্মকর্তা মোশাহিদ আলী (২০১৩-২০১৬)সহ প্রবাসে বসবাসরত বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলের যারা আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন তাদেরকে ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। মহান আল্লাহতায়ালার কাছে তাদের সবার রুহের মাগফিরাত আর বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করছি।

তিনি বলেন, গত ২২ সেপ্টেম্বর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বর্তমান কার্যকরি কমিটি (২০২৪-২০২৭)-এর আনুষ্ঠানিক মাত্রা শুরু। এ অনুষ্ঠানে আপনাদের সবার উপস্থিতি ও সার্বিক সহযোগিতা আমাদের অনুপ্রাণিত করেছে, তাই নির্বাচন কমিশনসহ সব জালালাবাদবাসীর প্রতি আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই আকুণ্ঠ চিত্তে। তিনি তুলে তাদের কর্মকাণ্ড। বিগত ১৬ ডিসেম্বর সংগঠনের আয়োজনে জালালাবাদ ভবনে যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।

জালালাবাদ ভবন

প্রবাসী জালালাবাদবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষা, ঐক্য ও সম্প্রতির প্রতীক স্বপ্নের জালালাবাদ ভবন। অনেক ষড়যন্ত্র-মামলা মোকদ্দমার সম্মুখীন হয়েও জালালাবাদ ভবন এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে আমাদের গর্বের ঠিকানা হিসেবে। ২০২৪ সালে আমরা সফলভাবে ১২টি মর্টগেজ পেমেন্ট দিয়েছি। আজ সময় এসেছে ভবনকে ঋণমুক্ত করার।

তিনি আগামী কর্মকাণ্ডের অংশ বিশেষ তুলে ধরেন। যার মধ্যে রয়েছে- ১. জালালাবাদবাসী সবার অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে জালালাবাদ ভবনে একটি পিঠা উৎসবের আয়োজন করা। ২. আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি অমর একুশে মহান শহিদ দিবস, তথা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন। ৩. আগামী ২৬ মার্চ বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা দিবস যথাযথভাবে পালন করার পরিকল্পনা। ৪. আগামী ২ মার্চ সংগঠনের উদ্যোগে ধর্মী ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হবে কুইন্স প্যালেসে। ৫. মাদকবিরোধী এবং নাশকতাবিরোধী সেমিনার। ৬. হাউজিং অ্যাসিস্ট্যান্স : কমিউনিটির বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষদের জন্য গৃহীত অ্যাফেডেবল হাউজিং কর্মসূচির ফলোআপ আবেদন করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেওয়া।

৭. প্রাকৃতিক দুর্যোগে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চলের সুবিধাবঞ্চিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো। ৮. আগামী জুলাই মাসের শেষের দিকে কুইন্সের এস্টোরিয়া পার্কে বৃহত্তর সিলেটের সব সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন, তথা জালালাবাদবাসীর এক মিলনমেলার আয়োজন। ৯. হাইস্কুলের একাদশ-দ্বাদশ কিংবা কলেজপড়ুয়া ছেলেমেয়ের জন্য বিভিন্ন অর্গানাইজেশনে ইনটার্নশিপের ব্যবস্থা করা।

অনুষ্ঠান সফল করার জন্য সভাপতি মইনুল ইসলাম সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ভবনের বর্তমান মূল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমরা অনেক লাভজনক অবস্থায় রয়েছি। তবে আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র অব্যাহত না থাকলে আরো ভালো ভালো কাজ করতে পারতাম। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্র সামলাবো না কাজ করবো। তবে আমি দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই এটা জালালাবাদবাসীর ভবন- এ নিয়ে কোনো সংশয় নেই। বিভ্রান্তিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেও লাভ হবে না। তিনি আরো বলেন, আমরাই জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্বে। আমরাই বৈধ কমিটি। সুতরাং একাংশের লেখার কোনো প্রয়োজন নেই।

সাধারণসভার শুরুতে দোয়া পরিচালনা করেন মাওলানা সাইফুল আলম সিদ্দিকী।

শেয়ার করুন