০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ০৩:১৮:৩৮ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
স্ন্যাপ সুবিধা ফিরলেও কঠোর নিয়মে বিপাকে ৪০ মিলিয়ন মানুষ মসজিদে ধারাবাহিক হামলা, উদ্বেগে মুসলিম সম্প্রদায় ফেব্রুয়ারি ১ থেকে রিয়েল আইডি ছাড়া বিমানযাত্রায় লাগবে ৪৫ ডলারের ফি নিউইয়র্কে শীতকালে ঘর গরম রাখার জন্য এনার্জি সহায়তার আবেদন শুরু দারিদ্র্যপীড়িত দেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসন স্থায়ীভাবে বন্ধের আহ্বান ট্রাম্পের ১৯ দেশের গ্রিনকার্ডধারীদের পুনর্মূল্যায়ন শুরু তারেকের ‘ফেরা ইস্যু’ ঘোলা পানিতে মাছ শিকারে চেষ্টা বিডিআর বিদ্রোহের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের কমিশন রিপোর্টে তোলপাড় রাষ্ট্রীয় সর্বোচ্চ মর্যাদায় খালেদা জিয়া ১১ মাসে ২৮ জন বাংলাদেশী ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী কর্তৃক নিহত হয়েছে


অনেক সংকটেও সাফল্যের ঝলকানি
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৯-০৩-২০২৫
অনেক সংকটেও সাফল্যের ঝলকানি কাঁচাবাজার


চলতি রমজানে বাজারে দ্রব্যমূল্যের স্বস্তি, জ্বালানি বিদ্যুতের সংকটহীনতার কৃতিত্বটা অন্তত দেওয়া উচিত অন্তর্বর্তী সরকারকে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ দুই বেলা দুই মুষ্টি অন্ন চায়, চায় বিদ্যুৎ, জ্বালানির সংকটমুক্ত অবস্থা। দেশে মব জাস্টিস, খুন, রাহাজানি, ধর্ষণ মহামারির মতো বিস্তৃত হতে থাকলেও রোজার সময় অন্তত স্বস্তি আছে বাজারে। ইফতার, সাহরি সময় বিদ্যুৎহীনতার বিড়ম্বনা নেই। চাইলেই সংকট মুক্ত থাকা যায় এতোটুকু অন্তত প্রমাণ হয়ে গেছে। এটি কোনো কাকতালীয় বিষয় না। গত ছয় মাসে ড. মুহাম্মদ ইউনূস দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরেছেন। ২০০ টাকার পেঁয়াজ ২০-৩০ টাকা কেজি, ৪০০ টাকার কাঁচামরিচ ৫০ টাকা কেজি, ১০০ টাকার তরকারি এখন ৪০-৫০ টাকা।

টমেটো মাত্র ১০ টাকা, আলু ১৫-২০ টাকা। প্রতি বছর রোজা এলে বেগুন হতো ১৫০-২০০ টাকা এবার বেগুন ৩০-৪০ টাকা। দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সাময়িক অর্জন কি না দেখতে হবে। তবে চাল, তেলসহ কিছু পণ্যের ক্ষেত্রে সিন্ডিকেটের অশুভ প্রভাব এখনো বজায় আছে। সরকার যদি নিজেদের নিরপেক্ষ ইমেজ বজায় রেখে সব চাঁদাবাজ দুষ্কৃতকারীদের আইনের আওতায় আনতে পারে সাফল্যগুলো টেকসই হবে।

সাধারণ মানুষ। দেশের রাজা উজির নিয়ে আগ্রহ নেই। যদিও দেশটা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শধারী সৎ মানুষের শাসনে থাকুক সেটি প্রত্যাশা। তবে স্পেডকে স্পেড বলবো না সেই মানসিকতা আমাদের নেই। আমি মিডিয়াকেও বলবো সরকারের সাফল্য এবং ব্যর্থতার প্রতিফলন যেন থাকে তাদের সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে। দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী থাকার সময় যেভাবে কঠোর সমালোচনা হয়েছিল, তেমনভাবে এখন স্বস্তির সময়ে সেভাবে প্রতিবেদন দেখছি না। নিবিড় সেচ মৌসুমের সময় রমজান। জ্বালানি বিদ্যুৎ সমস্যা কিন্তু আতঙ্কজনক পর্যায়ে নেই। জানি না গরম আরো বেশি পড়লে কি হবে, তবে রোজার ৫০ শতাংশ ভালোয় ভালোয় কেটেছে বলে জেনেছি। সাধুবাদ দিতেই হবে।

দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নানা সমস্যা সংকট পেরিয়ে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কমে আসছে মুদ্রাস্ফীতি। ব্যাংকগুলোর তারল্য সংকট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে। সরকারের কারোরই দেশ পরিচালনার অতীত অভিজ্ঞতা নেই। আর অনির্বাচিত সরকার হিসাবে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে। রাজনৈতিকভাবে বহুধা বিভক্ত বাংলাদেশের দুই দশকের পুঞ্জীভূত সমস্যা দূর করা এতো সহজ না। সরকার হয়তো কর্মপরিধি খুব বেশি ছড়িয়ে ফেলেছে। সর্বক্ষেত্রে সংস্কার করা এই সরকারের আয়ত্তের অধীন মোটেও নয়। সব পক্ষের সম্মত কিছু অত্যাবশ্যকীয় সংস্কার দ্রুত সম্পাদন করে একটি অবাধ নিরপেক্ষ অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠান করে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাজে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা হস্তান্তর এখন মূল লক্ষ্য হয় সমীচীন। সরকার থেকে কয়েকজন বিতর্কিত উপদেষ্টা ছেটে ফেলে নিরপেক্ষ অবস্থান সৃষ্টিও জরুরি। বাংলাদেশে কোন দল রাজনীতি করবে, না করবে সেটি নির্ধারণ করবে দেশের জনগণ। এই দেশ কিন্তু একটি জনযুদ্ধের মাধ্যমেই স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ভোটাধিকার ফিরে পেলে এবং অবাধে ভোট প্রয়োগের সুযোগ পেলে জনগণ ঠিক সিদ্ধান্ত নেবে। দেশপ্রেমিক সবার নিজ নিজ অবস্থানে থেকে সচেতন ভূমিকা পালন করা জরুরি। বিশেষত জুলাই আগস্ট ২০২৪ থেকে সব রাজনৈতিক দলের শিক্ষা নেওয়ার আছে অনেক কিছু। সময় এবং প্রকৃতি কিন্তু সবকিছুর বিচার করে। ইতিহাস চলে আপন গতিতে।

নির্মোহভাবে বলবো অনেক ব্যর্থতার মধ্যেও সরকারের বেশ কিছু সাফল্য আছে।

শেয়ার করুন