০৩ অক্টোবর ২০২৫, শুক্রবার, ০২:৪৪:১৭ পূর্বাহ্ন


পিপিএল-এ সিডিপ্যাপ নিবন্ধন ৪ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছে কোর্ট
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-০৪-২০২৫
পিপিএল-এ সিডিপ্যাপ নিবন্ধন ৪ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছে কোর্ট সিডিপ্যাপ


নিউ ইয়র্ক স্টেটের কনজ্যুমার ডাইরেক্টেড পার্সোনাল অ্যাসিস্ট্যান্স প্রোগ্রাম (সিডিপ্যাপ) পুনর্গঠন নিয়ে একটি নতুন আইনি সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে। ১ এপ্রিল থেকে পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল)-এর মাধ্যমে নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। তবে গত ৩০ মার্চ সোমবার, ইউএস কোর্ট অফ ইস্টার্ন ডিস্ট্রিক্ট অফ নিউ ইয়র্কের সিনিয়র বিচারক ফ্রেডেরিক ব্লক নিউ ইয়র্ক স্টেট ডিপার্টমেন্ট অফ হেলথের কমিশনার, জেমস ভি. ম্যাকডোনাল্ডের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় ৪ এপ্রিল পর্যন্ত সাময়িক স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। এর ফলে যারা সিডিপ্যাপে এখনো রয়েছেন তাদেরকে পিপিএল-এ যেতে হবে না ৪ এপ্রিল পর্যন্ত। ৪ এপ্রিল আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের উপরই নির্ভর করছে সব কিছু।

এই সাময়িক স্থগিতাদেশের ফলে স্টেট হেলথ ডিপার্টমেন্ট নতুন প্রশাসনিক পরিবর্তন কার্যকর করতে পারবে না, যা ২৫০,০০০ এরও বেশি মানুষের হোম কেয়ার সুবিধা পরিবর্তন করতে চাওয়া হয়েছিল। মামলাটি দায়ের করেন লিজা ইংগেসার, মারিসল গেচিয়াস, গীতাঞ্জলি সিপারসাউদএর মা সভিত্রি সিপারসাউদ, এবং এবং ওয়াই.পি.এস. ও সি.পি.-এর অভিভাবক হিসেবে মারিয়া জাইমে সহ ব্রুকলিন সেন্টার ফর ইন্ডিপেনডেন্স অফ দ্য ডিজ্যাবলড এবং রিজিওনাল সেন্টার ফর ইনডিপেনডেন্ট লিভিং। সিনিয়র জেলা বিচারক ফ্রেডেরিক ব্লক বাদীপক্ষের অভিযোগপত্র, উপস্থাপিত প্রমাণ ও আইনগত যুক্তি পর্যালোচনা করে বাদীপক্ষের অনুরোধক্রমে সাময়িক নিষেধাজ্ঞার আদেশ দেন। এর ফলে, ২০২৪ সালের নিউ ইয়র্ক সেশন আইনের সিডিপ্যাপ সংশোধনীর কিছু গুরুত্বপূর্ণ ধারা কার্যকর করা স্থগিত থাকবে।

বিচারকের আদেশে বলা হয়েছে যে, যারা ইতিমধ্যে পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল)-এর সাথে নিবন্ধন করেছেন, তারা পিপিএল-এর নিকট থেকে সেবা পেতে থাকবে। তবে যারা এখনো পিপিএল-এ নিবন্ধন করেননি, তারা বিকল্প ফিসক্যাল ইন্টারমিডিয়ারি বেছে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। এই আদেশটি সেবাগ্রহীতাদের মধ্যে বিভ্রান্তি এবং উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ অনেকেই এখনও নতুন পদ্ধতিতে সঠিকভাবে নিবন্ধন করতে পারেননি। 

নিউ ইয়র্কের সিডিপ্যাপ প্রোগ্রামটি এক ধরনের হোম কেয়ার পদ্ধতি, যেখানে মেডিকেড সুবিধাভোগীরা তাদের ব্যক্তিগত সহায়ক নিয়োগ করতে পারেন, যার মধ্যে পরিবারের সদস্যও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। গত কয়েক বছরে এই প্রোগ্রামটি ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়েছে এবং বর্তমানে অনেক বাংলাদেশিসহ ২৫০,০০০ এরও বেশি মানুষ এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে হোম কেয়ার সুবিধা গ্রহণ করছেন। তবে এর বিস্তৃতির ফলে স্টেট গভর্নমেন্টের জন্য এর খরচ নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। এই প্রোগ্রামটিকে আরো কার্যকর ও কম খরচে পরিচালনা করার জন্য গত বছর গভর্নর কেথি হোচুল প্রশাসন এক বড় পরিবর্তনের ঘোষণা দেয়।

গভর্নর হোচুলের প্রশাসন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, তারা সমস্ত সিডিপ্যাপ প্রশাসনিক কার্যক্রম এবং পে-রোল প্রসেসিং একক একটি কোম্পানি, পাবলিক পার্টনারশিপস এলএলসি (পিপিএল)-এর হাতে তুলে দেবে। এর ফলে ৬৫০টিরও বেশি বিদ্যমান ফিসক্যাল ইন্টারমিডিয়ারি কোম্পানির ব্যবসা প্রভাবিত হবে, যেগুলি এতদিন মেডিকেড সুবিধাভোগীদের জন্য পে-রোল পরিচালনা ও প্রশাসনিক কাজ করছিল। এই সিদ্ধান্তটি ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি করেছে, এবং অনেক গ্রাহক, কর্মী এবং সংস্থা এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছে, অভিযোগ করে যে এটি গ্রাহকদের জন্য অস্বস্তি সৃষ্টি করবে এবং তাদের স্বতন্ত্র ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য করবে।

নতুন প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে বেশ কয়েকটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় ফেডারেল আদালতের বিচারক ফ্রেডেরিক ব্লক অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। বর্তমানে, রাজ্য স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্যানুযায়ী, প্রায় ১৯৫,০০০ সিডিপ্যাপ ব্যবহারকারী পিপিএল-এ নিবন্ধন করেছে, তবে এখনও ২৫০,০০০ এর বেশি মানুষ এই প্রোগ্রামের সুবিধাভোগী হওয়া সত্ত্বেও তাদের সেবা পুরোপুরি স্থানান্তরিত হয়নি। রাজ্য কর্মকর্তারা দাবি করছেন যে, গ্রাহকদের সহায়তার জন্য একটি ’লেট রেজিস্ট্রেশন উইন্ডো’ (এক মাসের সময়সীমা) ঘোষণা করা হয়েছে, তবে বাস্তবিকভাবে এই নিবন্ধন প্রক্রিয়াটি অনেক ব্যবহারকারী ও প্রতিষ্ঠান জন্য অত্যন্ত জটিল এবং দুর্ভোগ সৃষ্টি করছে।

বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন যে, রাজ্য সরকারের প্রস্তাবিত “একক প্রোভাইডার সিস্টেম” দীর্ঘমেয়াদে বড় পরিমাণে অর্থ বাঁচাতে সাহায্য করতে পারে, তবে এর ফলে কর্মী এবং গ্রাহকদের জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। গ্রাহকরা অভিযোগ করছেন যে, পিপিএল-এর সাথে নিবন্ধন প্রক্রিয়া জটিল এবং এটি তাদের সেবার মান কমিয়ে দিয়েছে। অনেকের জন্য সঠিক তথ্য পাওয়া এবং সেবা গ্রহণ করা কঠিন হয়ে পড়েছে, এবং অনেক ক্ষেত্রে যোগাযোগের অভাব রয়েছে।

নিউ ইয়র্কের স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র স্যাম স্পোকনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, এই অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা পরিবর্তন প্রক্রিয়া থামাবে না। গ্রাহক এবং কর্মীরা তাদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চালিয়ে যেতে পারে।

বাদীপক্ষের আইনজীবীরা হলেন: ক্যাটলিন রস, এমা গুইডো ব্রিল, লিসা ই. ক্লিয়ারি (প্যাটারসন, বেলক্যাপ, ওয়েব অ্যান্ড টাইলার এলএলপি, নিউ ইয়র্ক) এবং এলিজাবেথ এ. জোইস ও জুলিয়া গ্রসম্যান রাসেল আইনজীবীরা হলেন নিউ ইয়র্ক লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স গ্রুপ, নিউ ইয়র্ক।এখন আদালত নির্দেশ দিয়েছেন যে, ৪ এপ্রিল ২০২৫ তারিখে পরবর্তী শুনানি হবে, যেখানে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন কেন এই নিষেধাজ্ঞা স্থায়ী হওয়া উচিত নয়।

শেয়ার করুন