১৭ জুলাই ২০২৫, বৃহস্পতিবার, ০৬:৩০:৩৯ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
গোপালগঞ্জ এখন মুজিববাদী সন্ত্রাসীদের আস্তানায় পরিণত হয়েছে- নাহিদ এনসিপি’র মার্চ টু গোপালগঞ্জ কর্মসূচি ঘিরে ব্যাপক সংঘর্ষ চারজন নিহত নিউইয়র্কে ২০ লাখ মানুষ মেডিকেইড ও ৩ লাখ পরিবার স্ন্যাপ সুবিধা হারাবে নতুন ভিসা ফিতে বাংলাদেশিদের খরচ বাড়বে আড়াই গুণ ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ২ কোটি ডলার ক্ষতিপূরণ দাবি মাহমুদ খলিলের টেক্সাসের অভিবাসন আইন এসবি ৪ অসাংবিধানিক ঘোষণা ফ্লোরিডার ‘সিনেট বিল ৪-সির কার্যকারিতা বন্ধ করলো যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট নতুন নীতি ঘোষণা : ৯ কারণে নাগরিকত্ব হারাতে পারেন জঙ্গিবাদে সতর্ক থাকার মার্কিনী পরামর্শে নানা প্রশ্ন এনসিপিসহ ১৪৪ নিবন্ধন প্রত্যাশী দলের তথ্যে ঘাটতি


নিউইয়র্কের ভূতুড়ে দ্বীপ!
হাবিব রহমান
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৫-২০২৫
নিউইয়র্কের ভূতুড়ে দ্বীপ! হাবিব রহমান


আলো ঝলমলো নিউইয়র্ক সিটির ইস্ট রিভারের বুকে একটি জনবসতিহীন দ্বীপ রয়েছে। যার নাম নর্থ ব্রাদার আইল‍্যান্ড। অ‍্যাবানডান্ড আইল‍্যান্ড বা পরিত‍্যক্ত দ্বীপ বলেও অনেকে এটাকে চেনেন। যার অন‍্য আরেকটি নাম ভূতুরে দ্বীপ। নিউইয়র্ক সিটিতে প্রতি বছর লাখ লাখ পর্যটক বেড়াতে এলেও নর্থ ব্রাদার আইল্যান্ডে তাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ।

এই দ্বীপটিকে ঘিরে নানা কল্পকাহিনী প্রচলিত আছে। অনেকের মতে, বহু বছর আগে এই দ্বীপে জনবসতি ছিল এবং নিউইয়র্ক সিটির মতো আলো ঝলমল করতো এখানেও। একসময় এই দ্বীপে মহামারির আক্রমণ হয়। যার কারণে জনমানব শূন্য হয়ে যায় এই দ্বীপটি। কেউ কেউ আবার বলেন অদৃশ্য আত্মারা ঘুরে বেড়াতো এই দ্বীপে। তাদের উৎপাতের কারণেই মানুষজন এই দ্বীপ ছেড়ে পালায়।

গবেষকদের মতে, দ্বীপটির বয়স খুব বেশি নয়। এই দ্বীপে ১৮৮৫ সাল পর্যন্ত মানুষের যাতায়াত ছিল। একসময় নিউইয়র্কে সংক্রামক রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। চিকিৎসার যথাযথ উপায় না পেয়ে রোগীকে সরিয়ে আনা হতো এই দ্বীপে। নির্জন এই দ্বীপে তখন গড়ে তোলা হয়েছিল একটি হাসপাতাল। বিভিন্ন রোগের চিকিৎসা করা হত সেই হাসপাতালে। টাইফয়েডের চিকিৎসাও হতো সেই হাসপাতালে। অনেক রোগী চিকিৎসা চলাকালীন সময়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতেন এই হাসপাতালে। তাদের কবরস্থও করা হতো এই দ্বীপে।

তবে হাসপাতালে অনেক রোগীকে তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে আটকে রাখা হতো বলে অভিযোগ রয়েছে। তাদেরই একজন ছিলেন মেরি ম্যালন, টাইফয়েড মেরি বলে যাকে সবাই চেনে। উপসর্গবিহীন টাইফয়েড জ্বরের ব্যাকটেরিয়া বাহক হিসেবে তাকে নর্থ ব্রাদার আইল্যান্ডে রিভারসাইড হাসপাতালে তিন দশক ধরে আটকে রাখা হয়। বন্দি থাকাবস্থায় তার মৃত্যু হয় এই হাসপাতালেই।

এ ঘটনার তিন বছর আগে এ রহস্যময় দ্বীপের তীরে ঘটে আরেকটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। ৯/১১-এর আগে এটি ছিল নিউইয়র্ক সিটিতে সবচেয়ে বড় প্রাণহানির ঘটনা।

১৪ জুন ১৯০৪ তারিখে যাত্রীবাহী স্টিমার জেনারেল সেøাকাম যখন নিউইয়র্ক হারবারে লং আইল্যান্ডে পিকনিক ও আনন্দভ্রমণের জন্য যাত্রা শুরু করে, নর্থ ব্রাদার আইল্যান্ডের কাছে এসে মেশিন রুমে আগুন ধরে যায়। আগুন দ্রুত স্টিমারের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে পুড়ে বা ডুবে ভয়াবহ এ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় এক হাজারের বেশি মানুষ। অধিকাংশ মৃতদেহ সমাধিস্থ করা হয় এই দ্বীপে। স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, এসব মৃত আত্মারাই অভিশপ্ত করে তুলে এই দ্বীপটিকে। রাতের আঁধারে এরা মানুষের প্রাণহরণের নেশায় জেগে উঠতো। ভয়ংকর এসব ঘটনা ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে মানুষের আনাগোনা কমতে শুরু করে এই দ্বীপে। দলে দলে সবাই এই দ্বীপ ছেড়ে চলে যেতে শুরু করে। হাসপাতালটাও একসময় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে।

এই দ্বীপ সম্পর্কে মানুষের মাঝে ভীতি দূর করার জন্য সরকার অনেক কর্মসূচি গ্রহণ করে। ১৯৫০ সালে এই দ্বীপে একটি মাদক নিরাময় কেন্দ্র তৈরি করা হয়। মাদকাসক্ত মানুষের চিকিৎসাব্যবস্থা করা হয় এখানে। কিন্তু এই দ্বীপে আনার পর রোগীরা উদ্ভট সব আচরণ করতো। তারা এতোটাই ভয়ংকর আচরণ করতো যে, ভয়ে অনেক চিকিৎসকই পালিয়ে যান এই দ্বীপ ছেড়ে। আবারও পরিত্যক্ত হয়ে যায় হাসপাতালটি। ধীরে ধীরে আবারও মানবশূন্য হয়ে পড়ে ব্রাদার আইল্যান্ড দ্বীপটি।

যারা এই দ্বীপ ছেড়ে পালিয়ে এসেছিলেন তাদের মুখ থেকে শোনা যেত ভয়ংকর সব ঘটনার বর্ণনা। অনেকে অশুভ আত্মার ভয়ানক সব কর্মকাণ্ডের গল্প বলতে শুরু করেন, যা শুনে সাধারণের মনে ভয় আরো বেড়ে যায়। তাদের মতে, রাত্রিকালে মৃত মানুষের চলাফেরা আর রাতভর তাদের কান্নার আওয়াজ শোনা যেতো। দ্বীপের আনাচে-কানাচে জ্বলতো আগুন। দিনের বেলায় হঠাৎ করে নেমে আসতো অন্ধকার। সেই অন্ধকার পেরিয়ে দ্বীপে চলাচলের রাস্তা খুঁজে পাওয়া ছিল মুশকিল। অনেকেই রাস্তা ভুল করে দ্বীপের এখানে সেখানে থাকা পাথুরে গুহায় ঢুকে পড়তো। আর যখন কেউ এ গুহায় ঢুকতো তখনই বন্ধ হয়ে যেতো গুহার মুখ! যদিও বিজ্ঞজনেরা এসব আজগুবি বলে মনে করেন।

১৯৬৩ সালের দিকে মানুষজন সম্পূর্ণভাবে ব্রাদার আইল্যান্ড ছেড়ে চলে যায়। ১৯৭০ সালের দিকে দ্বীপটি বিক্রি করার দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু এই দ্বীপটি কিনতে কেউই আগ্রহ দেখায়নি। তারপর থেকে কয়েক দশক ধরে দ্বীপটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই ছিল। কিন্তু ২০১০ সালের দিকে এক পর্যটক পথ ভুলে পৌঁছে যান এই দ্বীপের কাছে। তিনি তুলে আনেন এই পরিত্যক্ত দ্বীপের একের পর এক রোমহর্ষক ছবি। নতুন এই ছবিগুলো দেখে অনেকেই আগ্রহী হন নতুন করে এই দ্বীপ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে।

নিউইয়র্ক সিটি পার্কস এবং এন্টারটেইনমেন্ট বিভাগের সম্পত্তি এ স্থানটি। বর্তমানে নানা প্রজাতির পাখির অভয়ারণ্য স্থানটি। পুরো এলাকাটি এখনো পরিত্যক্ত। পর্যটকদের প্রবেশ নিষেধ সেখানে।

ভাস্কর্যের দাম ৩ কোটি ডলার!

বিখ্যাত মার্কিন শিল্পী জঁ-মিশেল বাসকিয়ার পারিবারিক প্রতিকৃতি চিত্রকর্ম ‘বেবি বুম’ চলতি মে মাসে নিলামে উঠবে। নিউইয়র্কের প্রতিষ্ঠান ক্রিস্টি’জ বলছে, এ ছবির দাম ২-৩ কোটি ডলার হতে পারে। চিত্রকর্মটি ১৯৮২ সালে আঁকা হয়। ‘বেবি বুম’ চিত্রকর্মটি জঁ-মিশেল বাসকিয়ার বাবা জেরার্ড ও মা মাতিলদাকে নিয়ে আঁকা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। চিত্রকর্মটির নাম বিশ্বযুদ্ধের পর জন্মহার বাড়ার দিকে ইঙ্গিত দেয়। কাঠের ফ্রেমের ওপর আঁকা এ চিত্রকর্ম ১৯৮২ সালে নিউইয়র্কের ফান গ্যালারিতে বাসকিয়ার একক প্রদর্শনীতে প্রথমবারের মতো জনসম্মুখে আনা হয়। পরে এটি ব্রুকলিন জাদুঘর (২০০৫), বেইলার ফাউন্ডেশন (২০১০) ও লুই ভিতোঁ ফাউন্ডেশনের (২০১৮-১৯) প্রদর্শনীতে দেখানো হয়।

এর আগে ‘বেবি বুম’ চিত্রকর্মটি শিল্প সংগ্রাহক পিটার ব্রান্টের সংগ্রহে ছিল। এটি তিনি ২০০১ সালে এক নিলামে ১০ লাখ ডলারে কেনেন। ২০১৭ সালে লেভি গরভি গ্যালারি এটি ৩ কোটি ডলারে বিক্রির জন্য তোলে। ২০১৯ সালে ব্রান্ট ফাউন্ডেশনে এক প্রদর্শনীতে এটি অনেকের নজর কাড়ে।

ব্যতিক্রমী রেস্তোরাঁ-নিম

এই নীম আমাদের চির পরিচিত নিম গাছ নয়। এটি একটি রেস্তোরাঁ। তবে একটু ব্যতিক্রমী। খাবারেও আছে বৈচিত্রতা। গতানুগতিক আর দশটা রেস্টুরেন্টের মতো আছে মাংস এবং ভেজিটেরিয়ান ফুড। হরেক রকম কাবাব, বিরিয়ানি ইত্যাদি। ব্যতিক্রমী বলছি এজন্য যে, এখানে পাবেন ঢেঁড়শ ভাজি, বেগুনভাজি, আলু-বেগুনের তরকারির সঙ্গে বাসমতী চালের ভাত।

আছে মাশরুম স্যুপ, পুরীর সঙ্গে চানা ভাজি, কলার পকোরা, চিংড়ি পুরি, চিজ পুরি, নারিকেল পুরি, মাছের কাবাব, চিংড়ি কোর্মা, চিকেন কোর্মা, বিফ এবং ল্যাম্প কোর্মা ইত্যাদি।

আছে নানা জাতের শাক এবং মনকাড়া আচার।

মিস্টান্ন, চা, কফি, লাচ্ছি ইত্যাদি তো আছেই।

যারা ভোজন রসিক তারা ঢুঁ মারতে পারেন।

নিম রেস্তোরাঁ

৩৫৪৯ জসন অ্যাভিনিউ

ব্রঙ্কস, নিউইয়র্ক-১০৪৬৩

ফোন: ৩৪৭ ৪২৭ ৩৯৫৩

শেয়ার করুন