৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার, ৬:৫৯:০৪ অপরাহ্ন


একা হয়ে পড়েছে জামায়াত, সবার সাথেই দূরত্ব
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ২১-০৫-২০২৫
একা হয়ে পড়েছে জামায়াত, সবার সাথেই দূরত্ব জামায়াতে ইসলামীর লগো


দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মতের সাথে-ও জামায়াতের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ কিংবা স্থানীয় সরকারের নির্বাচন আগে বড়ো ধরনের সংস্কার প্রশ্নেই এমন দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে তা-ই নয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষ প্রশ্নেই বলা চলে জামায়াতকে এখন রাজনৈতিকভাবে একধরনের বয়কট করে চলেছে সবাই। বজায় রাখছে দলটির সাথে দূরত্ব। রাজনৈতিক মাঠ থেকে এঅবস্থা পর্যবেক্ষণ করা গেছে। 

বিএনপির সঙ্গে দূরত্ব

বিএনপি’র সাথে জামায়াতের টানাপোড়েন বেশ কয়েক বছর ধরেই। ১৯৯৯ সালে জামায়াতের সঙ্গে জোট জোট করে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে। আন্দোলনে সফল হয়ে ২০০১ সালে জোটবদ্ধ নির্বাচন করে সরকার গঠন করে। এই দলটির সাথে সরকার গঠনের পর থেকে সাথে পুরো রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি নামের দলটি পরিচিত পায় একটি স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তির প্লাটফরম হিসাবে। যদিও বিএনপি’কে সবচেয়ে বেশি প্রকৃত বীর মুক্তিযোদ্ধারদের মিলনক্ষেত্র ছিল। বলা হয়ে থাকে দেশের ভেতরে থেকে যারা ১৯৭১ সালে লড়াই করেছে তাদের একটি বড়ো অংশ বিএনপি’র সাথে থাকা সত্ত্বেও দলটিকে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি হিসাবে প্রচার করে পতিত ফ্যাসিবাদী ও তাদের সমর্থিত একশ্রেণীর বাম রাজনৈতিক দল। জামায়াতের সাথে গাটছাড়া বাধার কারণেই বিএনপি’কে দিনের পর দিন এই দুর্নাম বয়ে বেড়াতে হয়। অথচ বিএনপি একসময়ে ছিল সব ধর্ম ও মতের একটি উদার গণতান্ত্রিক ধারার রাজনীতির মিলনক্ষেত্র ও আসাম্প্রদায়িক প্লাটফরম। কিন্তু জামায়াতের সাথে খাতির বেশি হওয়ায় ধীরে ধীরে দেশের ভেতরের পাশাপাশি পুরো বিশ্বে বিএনপি’কেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিরোধী ও সাম্প্রদাযিক দল হিসাবে চিহ্নিত করে ফেলে। আর দেশে-বিদেশে বিএনপি’র এমন ইমেজকে পুঁজি করে দলটি-র দ্বারা পরিচালিত সরকারের ভয়াবহ পরাজয় ঘটিয়ে ক্ষমতা লাভ করে আওয়ামী লীগ ও তাদের সমর্থিত একশ্রেণীর বাম রাজনৈতিক দল। আর এভাবেই বিএনপি’র মত একটি রাজনৈতিক শক্তিকে স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক হিন্দু বিদ্ধেষী দল হিসাবে তকমা দিয়ে টানা ১৭ বছর ধরে ফ্যাসীবাদী রাজত্ব কায়েম করতে সুযোগ পেয়ে যায় আওয়ামী লীগ। 

আর এমন পরিস্থিতিতে ২০১০ সালে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে জামায়াত নেতাদের বিচার শুরু হয়ে যায়। আর এতে করে মুক্তিযুদ্ধের সময় বিরোধীতাকারী দল জামায়াতের পক্ষে থাকা বিএনপি’র জন্য কষ্টকর ও বিব্রতকর হয়ে উঠে। দলটির সঙ্গ ছাড়তে দেশে-বিদেশে বিএনপি’র ওপর চাপ পড়ে। এ-ই পরিস্থিতিতে বিএনপি কিছুটা ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতো অবস্থায় পড়ে। তবে বিএনপি বলা চলে জামায়াতের সাথে এধরনের দূরত্ব বজায়েই দীর্ঘ সময় পার করতে থাকে। এর পাশাপাশি আওয়ামী লীগ আমলে শুরু হওয়া সেই মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ইস্যুতে জামায়াতের পাশে-ও দাঁড়ায়নি বিএনপি। দীর্ঘ বছর বলা চলে বিএনপি জামায়াত দূরুত্বই বজায় ছিল। তবে গোপনে একধরনের যোগাযোগ অথবা সুযোগের সদ্যব্যবহার করতে জামায়াত ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপির প্রতীকে-ই প্রার্থী হন তারা। কারণ সে-ই সময়ে নিবন্ধন হারিয়ে জামায়াত দিশেহারা। আবার এর বিপরীতে তারা ধারণা করতে থাকে যে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নিলে অনেক আসন পাবে। এমন আশাবাদী হয়েই ২০১৮ সালের আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ওই নির্বাচনে বিএনপির প্রতীকে প্রার্থী হন জামায়াতের নেতারা। এদিকে জামায়াতের সাথে গোপন যোগাযোগ বা দহরম-মহরম ঠিকই আছে-এমনটা চাওড় হয়ে গেলে আবারও জাতীয় আন্তর্জাতিকভাবে বিএনপি’র অসাম্প্রদায়িক ইমেজ মুখ থুবড়ে পড়ে। ফলে বিএনপি শেষ মেষ এমন ইমেজ থেকে রক্ষা পেতে একপ্রকার মহা-দূরত্ব সৃষ্টি করে জামায়াতের সাথে। আর এভাবে চলতে চলতে ২০২২ সালে দু’দল আনুষ্ঠানিকভাবে জোট ভেঙে দিয়ে বিএনপি রাজনৈতিক মাঠে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের উদার প্রগতিশীল সঙ্গী করে যুগপৎ আন্দোলনে নামে। জামায়াত এর পর থেকে কার্যত একা একা চলতে থাকে। তবে ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর অন্তর্বর্তী সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে বিএনপি’র সাথে জামায়াতের বিরোধ চরম আকার ধারণ করে। সংস্কার না নির্বাচন এমন প্রশ্নে জামায়াত বিএনপি’র সাথে বাকযুদ্ধে লিপ্ত হয়েই ক্ষান্ত হয়নি। সারা দেশে বিএনপি’র বিভিন্ন কর্মকান্ডে বিরোধীতার করার পাশাপাশি জামায়াত কোথাও কোথা-ও সংঘাতে লিপ্ত হয়। এসব সংঘাতে জামায়াতের নেতাকর্মীদের হাতে প্রশাসনের সামনেই বেধড়ক মার খেতে দেখা যায়, যা নিয়ে বিএনপি’কে ক্ষোভ আরও চড়া হতে থাকে। এছাড়া সংস্কার আগে নাকি নির্বাচন আগে-এই প্রশ্নে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়ে বিবাদে জড়ায় বিএনপি-জামায়াত। কিন্তু তলে তলে জাতীয় সংসদের বিভিন্ন আসনে ঠিকই জামায়াতের দলীয় প্রার্থীও ঘোষণা করে। দলটির এমন তৎপরতায় আস্থার অভাব ও সন্দেহ বেড়ে যায় বিএনপিতে। এদিকে সর্বশেষ স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে দল দুটি। মাঝে লন্ডনে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের সাথে বিএনপি’রও হাইকমান্ডের বেঠক অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু এতেও কিছুতেই বিএনপি জামায়াতের দূরুত্ব কমেছ না। বরং দূরুত্ব দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে, কোথাও কোথাও সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। 

দূরত্ব এখন এনসিপি’র সাথে

এদিকে ফ্যাসিবাদ হটাতে যে ছাত্র-জনতা নেত্বত্ব দিয়েছিল তাদের নিয়ে গড়ে উঠা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) সাথেও জামায়াতের মারাত্মক দূরুত্ব তৈরি হয়েছে। সম্প্রতি এমন দূরুত্ব প্রকাশ্যে চলে এসেছে ‘একাত্তরকে অস্বীকার করে বাংলাদেশে রাজনীতি করার সুযোগ নেই’-এনসিপি মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর মন্তব্যের মধ্য দিয়ে। তিনি আরও বলেছেন, ‘একাত্তর আমাদের ভিত্তিমূল। আমরা চব্বিশে সেটা রিক্লেইম করেছি। এ ভিত্তিমূল আমাদের থাকতে হবে। যদি কোনো গোষ্ঠী বা কোনো পক্ষ একাত্তরকে বাইপাস করে রাজনীতি করতে চায়, তাদের রাজনীতিটা বুমেরাং হবে। এনসিপি নেতাদের পক্ষ থেকে দলটির যুগ্ম সদস্য সচিব সালেহ উদ্দীন সিফাত স্বাক্ষরিত ‘সাম্প্রতিক রাজনৈতিক বিতর্কে এনসিপির অবস্থান’ শীর্ষক বিবৃতিতে একটি আহ্বান নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। এতে বলা হয় যারা ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিল এবং যাদের বিরুদ্ধে গণহত্যায় সহযোগিতার অভিযোগ রয়েছে, তাদের নিজ রাজনৈতিক অবস্থান ব্যাখ্যা করতে হবে। যদিও এই এনসিপি’র সাথে জামায়াতের অত্যন্ত গোপন যোগাযোগ আছে, দেয়া হচ্ছে আর্থিক সহযোগিতা। বলা হয় যে ধরে নেয়া হতো যে এনসিপি ও জামায়াত-শিবিরের সঙ্গে রাজনৈতিক মিত্রতাও ছিল। জুলাই- আগস্টের আন্দোলন থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দল গঠনে এনসিপির সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের একটি সখ্যতা ছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক এনসিপি’র জামায়াতের রাজনীতি করা প্রসঙ্গে কঠোর বক্তব্য অনেককেই হতবাক করে দেয়। ঘটনা এদিকেই থেমে থাকেনি। এনসিপির যুব সংগঠন ‘জাতীয় যুবশক্তির’ আত্মপ্রকাশকে সামনে রেখে এক সংবাদ সম্মেলনে-ও নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, ‘দেশে জাতীয় সংগীতকে অবমাননা ও একাত্তরকে উপেক্ষাকারী, এনসিপি এ দুই বিষয়ে কাউকে ছাড় দেবে না। তাই যারা এখনো নানাভাবে জাতীয় সংগীত ও মুক্তিযুদ্ধকে হেয় করতে চান, এখনো সময় আছে সঠিক পথে ফিরে আসুন। বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ের স্পন্দনের যে জায়গাগুলো, আকাঙ্ক্ষার জায়গাগুলো, সেখানে আঘাত না দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি ভবিষ্যৎ বাংলাদেশে।’ এ-সব ঘটনা প্রমান করে জামায়াতের সাথে এনসিপি’র মারাত্মক গ্যাপ তৈরি হয়েছে। কিংবা তারা কোনোভাবে স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি বা জাতীয় সঙ্গীত অবমাননাকারীদের পক্ষে থেকে বিশাল তরুণ সমাজকে হেয় করতে চায় না বা ঝুঁকি নিতে চায় না। 

দূরত্ব ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মুখ্যদের সাথেও

এদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে গিয়ে যারা মূখ্য ভূমিকা রেখেছিলেন সে-ইসব ছাত্রনেতাদের সাথে জামায়াতের দূরত্বই নয় একটা ফয়সালা করে নেয়ার চাপ দেয়া লক্ষ্য করা গেছে। কেননা ভেরিফাইড ফেসবুক আইডিতে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, ’৭১-এর প্রশ্ন মীমাংসা করতেই হবে। যুদ্ধাপরাধের সহযোগীদের ক্ষমা চাইতে হবে। বাংলাদেশে রাজনীতি করতে হলে পাকিন্তানপন্থী বাদ দিতে হবে। 

কিন্তু কেনো এই বিরোধ?

প্রশ্ন দেখা দিয়েছে বিএনপি,এনসিপি কিংবা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া মূখ্য ভুমিকারা যারা রেখেছিলেন সে-ইসব ছাত্রনেতাদের সাথে-ই বা কেনো জামায়াতের দূরুত্ব দেখা গেলো? বিএনপি’র সাথে বলা চলে ধারাবাহিকভাবে দূরত্ব দেখা দেয়। কিন্তু এনসিপি বা অন্যদের সাথে কেনো হলো? এখন খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপি’র সাথে দূরত্ব বা দ্বন্দের কারণ হচ্ছে কেবল সংস্কার প্রসঙ্গই না। জানা গেছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নতুন দল এনসিপি বেশ কিছু রাজনৈতিক সুযোগ সুবিধা চেয়েছে বিএনপি’র হাইকমান্ডের কাছে। কেননা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গড়ে উঠা এনসিপি ভবিষ্যতে তাদের সবধরণের রাজনৈতিক প্রশাসনিক সুবিধার জন্য বিএনপি’কে পাশে চায়। এনসিপি নেতারা মনে করেন, একমাত্র বিএনপি’র সামনে দিনে সব সঙ্কটে দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে থেকে আওয়ামী লীগের প্রতিহিংসা বা প্রতিশোধ থেকে রক্ষা করতে পাবে। এক্ষেত্রে দেশে-বিদেশে জামায়াতের ব্যাপক সীমাবদ্ধতা আছে বলে এনসিপি’র নেতারা মনে করেন, ইতোমধ্যে এমন ধারণা তারা পেয়েও গেছেন। কেননা জামায়াতের বিরুদ্ধে নেতিবাচক ইমেজের কারণে সে-সুযোগ বা গ্রহণযোগ্যতা নেই দলটির। তা-ই বিএনপি’কে এনসিপি আগামী দিনে তাদের ভবিষ্যত সহযোদ্ধা বা সহযোগী বলে মনে করে। তাছাড়া এনসিপি নেতারা ইতোমধ্যে বুঝে ফেলেছে জামায়াতের গায়ে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক গন্ধ এখন তীব্র আকার ধারণা করেছে যা ভবিষ্যতে এমন দলটিকে সহযোগী হিসাবে মানিয়ে নেয়া কঠিন হবে। আরও একটি কারণ হচ্ছে তা হলো আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে। এনসিপি শীর্ষ পর্যায় থেকে জামায়াতের হাইকমান্ডের সাথে যোগাযোগ করে নির্বাচনে তাদের সমঝোতা করতে চায়। কিন্তু জামায়াত নিজেদের সর্ম্পকে এতোটাই উচু ধারণা করতে থাকে যে, আগামী নির্বাচনে দলটি অনেক আসনে জয়ী হয়ে খোদ বিএনপি’কে ধরাশায়ী করে ফেলবে। তা-ই তারা তো বিএনপিকেই ছাড় দিতে নারাজ, সেক্ষেত্রে এনসিপিকে কেনো?-এমন মনোভাব পোষণের কারণে জামায়াত এনসিপি-কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য পর্যায়ে নিয়ে যায়। অন্যদিকে এমন অভিযোগ উঠে যে জামায়াতের একটি অংশের নেতারা একটি প্রতিবেশী দেশের সাথে গোপন পরামর্শ করে সম্প্রতি পতিত ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগকে প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ব্যাপারে সব ধরণের সুযোগ সৃষ্টি করবে। কিন্তু এমন গোপন যোগাযোগ জানাজানি হয়ে যাওয়ায় জামায়াতের সাথে বিএনপি’র পাশাপাশি এনসিপি’র সাথে আরও বড়ো ধরনের দূরত্ব তৈরি হয়ে যায়। 

শেষ কথা

মাত্র কয়েকদিন আগেও জামায়াত বেশ ফুরফুরে মেজাজে ছিল। প্রচার করে বেড়াতো ফ্যাসিবাদকে হটাতে একমাত্র তারাই ছিল মাস্টারমাইন্ড। বলা চলে আগামী বাংলাদেশ জামায়াতের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে। কিন্তু ধীরে ধীরে এখন অনেক কিছুই খোলাসা হয়ে যাচ্ছে। রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন পরিস্থিতিতে এক-সময়ে যারা ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের বিরোধীতার প্রসঙ্গটি এড়িয়ে চলতো বা পাশ কাটাতে চেষ্টা করতো তারাও এখন দলটির বিরুদ্ধে সোচ্চার। আর এমন প্রশ্নে জামায়াত নামের দলটি এখন এমন ইমেজ সঙ্কটে পড়েছে তা-র প্রমান মিলে কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের বৈঠকের আলোচনায়। গত সপ্তাহের দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এ বৈঠকটি অনুষ্ঠিত। এতে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এবং জামায়াতে ইসলামীর সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। বৈঠকে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, বর্তমানে দেশ (আসলে বুঝিয়েছেন জামায়াতের) একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের বিরুদ্ধে দেশি-বিদেশি গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। তিনি দেশের সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকার আহবান জানিয়ে সর্তক করে দেন। এসময় শফিকুর রহমান নেতাকর্মীদের বক্তব্য দেওয়া বা মন্তব্য করার সময় সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করতে আহ্বান জানিয়েছেন। জামায়াতে ইসলামীর আমির বলেন, দেশের প্রতিটি ব্যাপারে দলের দায়িত্বশীলদের সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কোনো উসকানি কিংবা অপ্রীতিকর ঘটনায় জড়ানো একেবারেই ঠিক হবে না। জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এমন মন্তবেও প্রকাশ পাচ্ছে জামায়াত এখন রাজনৈতিক মিত্র ছাড়া হয়ে পড়েছে। সৃষ্টি হয়েছে দূরত্ব।

শেয়ার করুন