বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান
পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিএনপির উপর ভয়ঙ্করভাবে ফুসে উঠা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। মব বিষয়টি নিয়ে একটি রাজনৈতিক দলের খুব দ্রুত প্রতিবাদ, প্রতিরোধের ডাক দেওয়া নিয়ে সবাই সন্দেহের চোখে দেখছেন। পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ীর নৃশংস খুনের ঘটনাকে পুঁজি করে রাতারাতি দেশবাসীকে বিএনপি ও তার একেবারে শীর্ষ নেতাকে ঘায়েল করে ফেলার চেষ্টা অনেকের কাছে রহস্যজনক ঠেকেছে।
কি হয়েছিল পুরান ঢাকায়
বুধবার (৯ জুন) সন্ধ্যায় পুরান ঢাকায় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। তার পর লাশের ওপর চলে পৈচাশিক বর্বরতা। রাজধানীর ব্যস্ত সড়কে অনেক মানুষের সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। তবে সর্বসাধারণ দেখতে থাকলেও তেমন উচ্চবাচ্য লক্ষ্য করেনি কেউ। কারো কারো মতে, এধরনের ঘটনার আকস্মিকতার পাশাপাশি ভয়াবহতায় সাধারণ জনগণ হয়ে পড়ে হতবিহ্বল, ফলে কেউ এগিয়ে আসেনি। আবার হাসপাতালের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যের ক্যাম্প ছিল পাশেই। তারাও কেউ এগিয়ে আসেনি। ভিডিওতে হত্যা ও বীভৎসতায় জড়িতদের হাত উঁচিয়ে চিৎকার করে উপস্থিত লোকজনের উদ্দেশে কিছু বলতে শোনা যায়- এই ছিল গণমাধ্যমের খবর।
এরপর পরই বেশ কয়েকটি ইঙ্গিতপূর্ণ কিছু ঘটনা
একটি বহুল প্রচারিত দৈনিকে ঘটনাটি ঘটার দু’দিন পর বেশ গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করে। এরপরই এধরনের ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী। ১১ জুলাই শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়। মিছিলটি ভিসি চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে পুনরায় রাজু ভাস্কর্যের উদ্দেশে রওনা হয়। এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘অ্যাকশন অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘পাথর মেরে সোহাগ খুন, বিএনপি জবাব দে’, ‘সন্ত্রাস রুখে দেবে ছাত্রসমাজ’সহ বিভিন্ন শ্লোাগান দিতে থাকেন। অন্যদিকে বুয়েট একদল শিক্ষার্থীরা শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে সোহাগের নৃশংসভঅবে নিহত হওয়ার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করে। মিছিলটি বুয়েট শহীদ মিনার এলাকা থেকে শুরুহয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। এদিকে এই ঘটনার প্রতিবাদে কুয়েট (খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়) সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন হয়েছে।
শিবিরের মিছিল
এর পরের দিন মাঠে নামে শিবির। পুরান ঢাকার মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে ভাঙারি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে প্রকাশ্যে নির্মমভাবে পাথর মেরে ও কুপিয়ে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়েছে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা ছাত্রশিবির। একই সঙ্গে সারা দেশে চলমান চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে সংগঠনটি। শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১১টার দিকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে শুরু হয় এই বিক্ষোভ মিছিল। মিছিলটি রায়সাহেব বাজার ও তাঁতীবাজার অতিক্রম করে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে পৌঁছায়। পরে মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ হয়।
জামায়াত প্রধানের ফেইসবুক স্ট্যাটাস
লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় খুব দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। শুক্রবার (১১ জুলাই) রাতে তিনি তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। এতে তিনি বলেন, মিটফোর্ডের ঘটনা বিদেশে অবস্থানরত থাকা অবস্থায় জেনে সকল ভাষা হারিয়ে ফেলেছেন উল্লেখ করে ফেসবুকে শেয়ার করা এক পোস্টে শফিকুর রহমান বলেন, ‘এ কোন যুগ! কোন সমাজ! প্রকাশ্য দিবালোকে একজন ক্ষুদ্র, সাধারণ ব্যবসায়ীকে শুধু চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর কারণে শত শত মানুষের সামনে কতটা নির্মমভাবে হত্যা করা হলো!’ তিনি বলেন, ‘হে ক্ষতিগ্রস্ত মজলুম পরিবার, আমরা তোমাদের কাছে লজ্জিত। হে ব্যবসায়ী ভাই সোহাগ, তোমার এই পরিণতি হওয়ার আগে সত্যিকারের কোনো প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারলাম না, এজন্য আমরা আন্তরিকভাবে লজ্জিত।’ পোস্টে তিনি আরও বলেন, ‘হে সমাজ, জেগে উঠো! মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার প্রমাণ দাও। মনে রেখো, আজ তুমি কারো বিপদে চুপ থাকলে, আগামীকাল তোমার ওপর এর চেয়েও বড় বিপদ এলে, তখন তুমি কাউকে পাশে পাবে না।’ ‘অতএব, ভয় ও সংকোচ উপেক্ষা করে আমাদেরকে সমস্ত অপরাধীদের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হবে।’
বিএনপি’র প্রতিক্রিয়া
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এঘটনার ব্যাপারে বলেছেন, দেশের সাস্প্রতিক সময়ের হত্যা ও নৈরাজ্যকারীদের সরকার প্রশয় দিচ্ছে। যারা ‘মব’ তৈরি করছে, তাদের কেন গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না? পুরান ঢাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী সোহাগ হত্যাকান্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ফুটেজে যাকে দেখেছি হত্যা করতে, তাকে কেন সরকার এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করেনি? আমরা কী তবে ধরে নেব, বিভিন্নভাবে ‘মব’ সৃষ্টি করে একটি পরিস্থিতি তৈরি করতে চাচ্ছে। বাংলাদেশে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করতে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, এখন যে অপপ্রচার চলছে, তার পেছনে একেবারে সুনির্দিষ্ট চক্রান্ত ররয়ছে। সেই চক্রান্ত হচ্ছে বাংলাদেশের জাতীয়তাবাদী শক্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া।
যে প্রশ্নগুলি সামনে চলে আসে
পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী খুনের ঘটনাকে কোনো সুস্থ মানুষ কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না। কিন্তু প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এমন একটি ঘটনা পত্রিকায় প্রকাশের আগে কেনো স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন হত্যাকারীদের ধরতে নামলো না? কেনো আইন তার নিজস্ব গতিতে চললো না? কে আইনের হাত থামিয়ে দিয়েছে? বিএনপি’র পক্ষ থেকে কোনো পর্যায়ের নির্দেশ ছিল? বরং দেখা গেলো যে, চারিদিক থেকে পুরান ঢাকায় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী লাল চাঁদ ওরফে সোহাগকে মিটফোর্ড হাসপাতাল চত্বরে পিটিয়ে ও ইট-পাথর দিয়ে মাথা থেঁতলে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে ঝড় উঠলে আইন শৃংখলা বাহিনীর সদস্যরা তৎপর হয়েছে। কিন্তু কেনো? কেনইবা লাল চাঁদ সোহাগকে নৃশংসভাবে হত্যার মামলায় পরিবারের দেওয়া তিন আসামির নাম বাদ দিয়ে নতুন তিনজনের নাম অন্তহর্ভুক্ত করা হয়েছে-এমন প্রশ্ন তোলপাড়।
তীর কেনো শুধু বিএনপি’র দিকে
প্রশ্ন হচ্ছে কেনোইবা ঘটনা ঘটার দু’ইদিন পর এর প্রতিবাদে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের রাতে ঘুম ভাঙ্গিয়ে মিছিল মিটিং এ নামানো হলো কোমলমতি শিক্ষার্থীদের? ব্যাবসায়ীরা না নেমে শিক্ষার্থীদের কারা নামিয়েছে? একটি দলের ব্যানারে লুকিয়ে থাকা ওই সংগঠনের পরিচয় কি? বারবার সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানার কারা কি উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হচ্ছে?
কেনো মিছিলের ভাষা সম্পূর্ণ বিএনপি বিরোধী হয়ে গেলো? কোনো এটাকে চাঁদাবাজির ঘটনা বলে প্রতিবাদের আয়োজন করা হলো? কেনো পুরো ঘটনার কোনো ধরনের বাছবিচার না করে বিএনপি এবং এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের তারেক রহমানের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের উস্কে দেওয়া হলো। কেনো কুয়েট, বুয়েটসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা অত্যন্ত খারাপ ভাষায় বিএনপি ও দলের নেতাদের বিরুদ্ধে অশ্লীল শ্লোগান দিলো? রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন হচ্ছে এই পক্ষটি আসলে কারা?
অথচ এমন ঘটনায় যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল- এ ঘটনায় নাম আসা পাঁচজনকে নিজেদের সংগঠন থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছিল খুব দ্রুত। কিন্তু প্রশ্ন তোলা হচ্ছে না কোনো স্থানীয় পুলিশ প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেননি। কোনো হত্যা ও নৈরাজ্যকারীদেরকারীদের ব্যাপারে অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে না গিয়ে মাঠের একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে ঝাল ঝাড়া হলো?
একবারও কোনো বলা হচ্ছে না কোনো পুলিশ প্রশাসন এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে সরাসরি ব্যবস্থা নেয়নি? যদিও আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ১২ জুলাই শনিবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানান। হত্যায় জড়িতদের বিচার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে হবে।
তাহলে এদের লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য কি
এখন এমন প্রশ্ন সর্বত্রই ঘুরপাক খাচ্ছে এই বলে যে, পুরান ঢাকায় ব্যবসায়ী খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে কেনো বিএনপি’র বিরুদ্ধে জনতাকে ভয়ঙ্করভাবে ফুসিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলো? এধরনের ঘটনা কি রাজনৈতিক অঙ্গনে আরেকটি দলের বিরুদ্ধে মাইনাস ফর্মূলার বার্তা দিচ্ছে। বার্তা কি এমন যে আওয়ামী লীগ যে পথে গেছে বিএনপি’কে সে-ই একইি পথে পাঠানো হবে? একথা সবাই বলবে যে হাটে-মাঠে-ঘাটে বিএনপি’র এক শ্রেণীর নেতাকর্মীদের চলন বলন খুবই আপত্তিকর। পাড়া মহল্লায় দলটির একটি শ্রেণীর নেতাকর্মীরা এমন ভাবে চলাফেলা করে যেনো তারা এখনই ক্ষমতায় চলে এসেছে। তাদের মধ্যে এমন অহমিকা দেখা দিয়েছে যে ক্ষমতা তো বিএনপি’র কাছেই ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু তারপরেও কথা উঠেছে যে, বর্তমান বাস্তবতায় অন্তর্বর্তী সরকার-ই ক্ষমতায়।
অন্যদিকে মাঠে যৌথ বাহিনী অত্যন্ত তৎপর। সেক্ষেত্রে ক্ষমতাসীনদের দিকে তীর না ছুঁড়ে বিএনপি’কে ঘায়েলের চেষ্টা আরো অনেক বার্তা দেয়। কারো হিসাব হচ্ছে একটি দল বিএনপি’র দীর্ঘদিনের মিত্র ছিল। কিন্তু দেশী- বিদেশী নানান ধরনের হিসাবে দলটির সাথে বিএনপি কোনোভাবেই কোনো ধরনের সমঝোতার আভাস পাওয়া যাচ্ছে না। কারো কারো বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধীতাকারী এই দলটি চায় বিএনপি তাদের সাথে আগামী জোট বাধে বা ক্ষমতার শরিক করে। তারা বিভিন্নভাবে সেধরনের চেষ্টা করে দিনের পর দিন ব্যর্থই হচ্ছে। কিন্তু সম্প্রতি বিএনপির একেবারে উচ্চ পর্যায়ে তাদের ব্যাপারে নেতিবাচক মনোভাব থাকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে বিএনপি’র বিরুদ্ধে নানান ধরনের কূটকৈৗশল চালিয়ে যাচ্ছে। আরেকটি সূত্রের ধারণা অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের লন্ডন বৈঠকের পর সব হিসাব নিকাশ পাল্টে যায়।
কেননা খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামীতে বিএনপি ক্ষমতায় যেতে পারলে তাদের সাথে ২০২৪ সালের জুলাই বিপ্লবীদের ইমেজ নিয়ে গড়ে উঠা দল ও এর সাথে সম্পৃক্ত তারুণ্যের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করবে। আর এসব বুঝে ওই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তিটি মাইনাস ফর্মূলায় ইন্ধন দিচ্ছে। তবে এক্ষেত্রে একটি অভিযোগ এসেছে বিএনপি’কে ঘায়ের করার ষড়যন্ত্রকারীদের পেছনে একটি প্রতিবেশী দেশের হাত আছে। এমন অভিযোগ বিএনপি’র নেতারা ইদানিং জোরেসোরে করে যাচ্ছেন। প্রশ্ন হচ্ছে বিএনপি’র পক্ষ থেকে এ-কথাও বলা হচ্ছে যে, বিএনপির প্রতি যে জনসমর্থন সেটি ক্ষুণ্ন করতে দু-একটি ইসলামি দল ষড়যন্ত্র করছে। প্রশ্ন হচ্ছে এমন দ্বি-মুখি অভিযোগের রাজনৈতিক কূটনৈতিক হিসাব নিকাশ কি? কারো কারো মতে, বিএনপি দীর্ঘদিন পর ভারতের সাথে সুসসম্পর্ক তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে কারো কূটকৌশল কাজ করছে কিভাবে এমন সর্ম্পকে তীর ছুঁড়ে দলটিকে বেকায়দায় ফেলা। আবার কারো কারো প্রশ্ন কেনো-ই বা প্রতিবেশী দেশটি এসব ইসলামী দলকে গোপনে বিএনপি’র বিরুদ্ধে কাজে লাগাচ্ছে বা লাগাবে যদি তাদের সাথে সু-সম্পর্ক হয়েই যায় বা আস্থায় চলে আসে? এমন বিশ্লেষণে কেউ কেউ উদাহরণ টানেন আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সাথে ভারতের সাম্প্রতিক সুসম্পর্কের দিকটি। তাদের মতে এক্ষেত্রে তাহলে ভারতের প্রকৃত লক্ষ্য কি? উল্লেখ্য সম্প্রতি আফগানিস্তানের তালেবান সরকারের সাথে সম্পর্কের ব্যাপারে ভারত বড়ো ধরনের কূটনৈতিক উদ্যোগ নিয়েছে।
কূটনীতিকরা মনে করেন এর পেছনে বিশেষ অর্থ রয়েছে। ওই প্রচেষ্টা ইঙ্গিত দেয় ওই অঞ্চলের ভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতাকে ভারত যেভাবে দেখছে, সেখানে একটা উল্লেযোগ্য পরিবর্তন এসেছে। এমন পরিবর্তন কি বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সে-ই প্রতিবেশী দেশটির মধ্যে এসেছে কি-না তা সময় বলে দেবে?