৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ১০:৫৮:৫৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


জাতীয় পার্টি
এক হুঙ্কারেই ন্যাস্টি গেম থেকে পিছু হটেছে সরকার
সৈয়দ মাহবুব মোর্শেদ
  • আপডেট করা হয়েছে : ০২-১১-২০২২
এক হুঙ্কারেই ন্যাস্টি গেম থেকে পিছু হটেছে সরকার জিএম কাদের


জাতীয় পার্টি (জাপা) জি এম কাদেরপন্থিদের এক হুঙ্কারেই সরকার থামিয়ে দিয়েছে সব খেলা। সামনে জি এম কাদেরপন্থিরা আরো কিছু করে ফেলতে পারে আশংকায় রাজনৈতিক অঙ্গনে ন্যাস্টি গেম থেকে পিছু হটেছে সরকার। তবে এমন নাটকের পেছনে কি কি কাজ করেছে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে রয়েছে নানান গুঞ্জন। 

জি এম কাদেরপন্থিদের এ্যাকশন..

জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যন হিসেবে দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ ছোট ভাই সাবেক মন্ত্রী জিএম কাদেরকে মনোনীত করে যান। জীবিত অবস্থায় দু-বার তাকে জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যন হিসেবে মনোনিত করে যান। বর্তমানে এই জিএম কাদের জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়াারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা। আর সম্প্রতি তার নানান ধরনের বক্তব্য ও সিদ্ধান্তে সরকার ও আওয়ামী লীগ আচমকা বেকায়দায় পড়ে। এর পাশাপাশি সরকার র্বিরতকর পরিস্থিতিতেও পড়ে যায়। 

জিএম কাদেরের অতীত কথন

জিএম কাদের আওয়ামী লীগের সরকারের ওপর চটে আছেন বেশ কয়েকদিন ধরে। নানান ধরনের কথায়, বক্তব্যে তিনি আওয়ামী লীগ ও সরকারকে এক ধরনের বেকায়দায় ফেলে দেন। এতে সরকার ও আওয়ামী লীগ দল হিসাবে মাঠে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। অথচ জিএম কাদেরের দল জাপা আওয়ামী লীগ সরকারের অন্যতম শক্তিশালি শরিক। কিন্তু এই প্রধান শরিক জিএম কাদেরের সম্প্রতি অতীত ও বর্তমানে নানান ধরনের বক্তব্যে রাজনৈতিক অঙ্গনে ঝড় বহে যায়। তার ও তার পন্থী জাপা সংসদ সদস্যদের একটি বক্তব্যেই ঝড় তোলে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে। তা ছিলো সংসদ বর্জনের ঘোষণা। কিন্তু ১৬ ঘণ্টার মধ্যে মত বদলে গত ৩১ অক্টোবর সোমবার অধিবেশনে যোগ দিয়ে দেন জি এম কাদেরপন্থি এমপিরা। তবে এর আগেও নানান বক্তব্য বিবৃতি দিয়েছেন এই জি এম কাদের। জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি সংবিধানে বারবার পরিবর্তন এনে এক ব্যক্তির হাতে সব ক্ষমতা দিয়েছে। কর্তৃত্ববাদী কোনো সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সংবিধান সংশোধন করতে হবে। সংবিধানে প্রয়োজনীয় সংশোধন করে সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ সৃষ্টির এখনো অনেক সময় আছে।

আবার দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতি পরিস্থিতি নিয়ে এ-ও বলেছেন, ‘বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার বাস্তবতা অনেকটাই এক। জবাবদিহিহীন সরকারের গোঁয়াতুমির কারণে অর্থনৈতিকভাবে অকার্যকর, অপরিকল্পিত মেগা প্রকল্প গ্রহণ এবং এর জন্য গৃহীত সুদসহ বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতে গিয়েই শ্রীলঙ্কা দেউলিয়া হয়েছে। আমাদের দেশের বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এর মিল রয়েছে।

জি এম কাদের ইভিএম নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করে দেড়শ আসনে ইভিএমে ভোট নেওয়ার সিদ্ধান্তে নির্বাচন কমিশন নিজেকেই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও সাধারণ মানুষ মনে করছে-ইভিএম হচ্ছে ভোট কারচুপির মেশিন। মনে হচ্ছে নির্বাচন কমিশন সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছে। সাধারণ মানুষের ধারণা, কোনো একটি রাজনৈতিক দলকে ক্ষমতাসীন করতেই কাজ করছে নির্বাচন কমিশন।

জিএম কাদের সরকারের বিরুদ্ধে দুনীতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি বলেছেন, দেশের এমপি-মন্ত্রী আর আওয়ামী লীগের লোকজনই বেহেশতে আছেন। কারণ, সরকার-সমর্থকরা সীমাহীন দুর্নীতির মাধ্যমে টাকার পাহাড় বানিয়েছে, তাদের কোনো অভাব নেই। প্রতি বছর তারা হাজার-হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন। দেশে গণতান্ত্রিক পরিবেশ নিয়ে ও কথা বলেন জি এম কাদের। দেশে রাজনীতি নেই। দেশে রাজনীতি করার পরিবেশ সীমিত হয়ে গেছে। দেশের মানুষের কথা বলার অধিকার সীমিত হয়ে পড়েছে। এটা গণতান্ত্রিক চর্চার জন্য বড় ধরনের হুমকি। বলেছেন দেশে সুষ্ঠুৃ নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, যত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হোক সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না। তৃণমূলের রাজনীতি গলাটিপে হত্যা করা হচ্ছে। শাসক শ্রেণি ও তাদের দল রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করছে। এটাকেই বলা হয় একনায়কতন্ত্র। স্বৈরশাসন হলে জনগণের কথা মতো দেশ চলে না। এখন দেশের মানুষ স্বৈরশাসনে নিষ্পেষিত। তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সাম্প্রতিক বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায় সরকার এড়াতে পারে না। এমন বক্তব্য প্রতিবেশী বন্ধু দেশ ভারতকেও অস্বস্তিতে ফেলেছে। দেশের সার্বভৌমত্ব প্রশ্নবিদ্ধ করেছে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য। এছাড়া জোটের জাতীয় পার্টির থাকা নিয়েও কথা বলেন তিনি । বলেছেন, জাতীয় পার্টি এখন কোনো জোটে নেই। গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির কিছু আসনে নির্বাচনী সমঝোতা হয়েছিল। সে কারণে আওয়ামী লীগের সঙ্গে তাঁদের একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আছে। 

তবে জি এম কাদের ও তার পন্থিদের সর্বশেষ একশ্যানে সরকার বেশি বেকায়দায় পড়ে। কারণ তিনি ও তার পন্থীরা ঘোষণা দেন যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরকে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা না করা পর্যন্ত দলটি সংসদ অধিবেশনে যোগ দেবে না।  জাতীয় পার্টি (জাপা) জি এম কাদেরপন্থিদের এমন হুংকারে সরকার বেশি বেকায়দায় পড়ে যখন বিএনপি পক্ষ থেকে দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপির সংসদ সদস্যরা (এমপি) যেকোনো সময় জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করবেন। তিনি বলেন, বিএনপির সংসদ-সদস্যরা সংসদ থেকে পদত্যাগে প্রস্তুত আছেন জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘হারুন প্রস্তুত আছেন দল নির্দেশ দিলে পদত্যাগ করবেন। রুমিন প্রস্তুত আছেন, জাহিদুর আছেন, তারা দলের নির্দেশ পেলে পদত্যাগ করবেন। জি এম কাদেরপন্থিদের পাশাপাশি বিএনপি’র এমন হুংকারে রাজনৈতিক অঙ্গনে গুজবের মাঠে নানান যড়যন্ত্রের গন্ধ পান কেউ কেউ। এমন পরিস্থিতিতে সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী নেতা কর্মীদের মধ্যে নানান গুঞ্জনের ডাল পালা মেলে। সাধারণ জনগণের মধ্যেও দেখা দেয় নানান ধরনের প্রশ্ন। আর এসুযোগের পুরো ফল নিয়ে নেয় জি এম কাদেরপন্থিরা। কেননা সরকার বিষয়টি নিয়ে আর সামনে দিকে এগুতে সাহস পাচ্ছে না বর্তমান রাজনৈতিক নাজুক পরিস্থিতির কারণে। আপাতত থামিয়ে দেয়া হলো জি এম কাদেরপন্থীদের।  

কি খেলা ছিল সরকারের?

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের নানান ধরানের বক্তব্য,পদক্ষেপ চাল-চলন আওয়ামী সরকারের মোটেই ভালো ঠেকছিল না। তাছাড়া সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশসহ বেশ কয়েকটি বিদেশী রাষ্ট্রের সাথে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের যোগাযোগকে সরকার ভালোভাবে নেয়নি। অভিযোগ রয়েছে, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদেরের সঙ্গে বিএনপি’র সাম্প্রতিক যোগাযোগ বেড়েছে। এসব বিষয় সরকার নজরে রেখেছে। কয়েকমাস আগে পার্টি চেয়ারম্যানের বনানী কার্যালয়ে মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধি দল জিএম কাদেরের সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। এতে যদিও বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক আগামী দিনে আরও শক্তিশালী হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) কাদের। তবে এনিয়েও সরকারের মধ্যে নানান সন্দেহের ডানা মেলে। কারণ এমন বৈঠকের পর জিএম কাদের বলেছেন, যত ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা লাগানো হোক সরকারের সদিচ্ছা ছাড়া অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন সম্ভব হবে না।

আর এজন্য জিএম কাদেরকে থামাতে সরকার রাজনৈতিক গুটি চালায়। সরকার জাপার ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ পদে থাকা রওশন এরশাদ একাজে ব্যবহার করে। খোঁজ নিয়ে জানা যায় সরকারের নির্দেশেই ব্যাংককে চিকিৎসাধীন রওশন হঠাৎ ৩০ আগস্ট দলের কেন্দ্রীয় সম্মেলন আহ্বান করে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়। আর এতেই কাদের পন্থীরা চটে যায় সরকারের ওপর। বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর পরদিনই জাপার সংসদীয় দলের সদস্যরা বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে রওশনকে সরিয়ে এই পদে জি এম কাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করার সিদ্ধান্ত নেন। এতে বিরোধ আরো চরমে উঠে। দলের ২৬ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে রওশন এরশাদ ও তাঁর ছেলে সাদ এরশাদ ছাড়া বাকি ২৪ জনই এই সিদ্ধান্তে একমত হন। বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে স্পিকারে দারস্থ হন জাপার মহাসচিব মুজিবুল হকের নেতৃত্বে দলের একটি প্রতিনিধিদল। এরপর বিরোধী দলের চিফ হুইপ ও জাপার সাবেক মহাসচিব মসিউর রহমান এ বিষয়ে লিখিত আবেদন স্পিকারের কার্যালয়ে জমা দেন। কিন্তু মসিউর তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসেন এবং স্পিকারকে পাল্টা চিঠি দিয়ে জাপার সংসদীয় দলের নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার চান। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মসিউরকে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় জাপা। এমনকি দলের দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকেও তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। এভাবে পরিস্থিতি আরো ঘোলাটে হতে থাকে জিএম কাদেরের সংসদে না যাওয়াকে রাজনৈতিক বুলেট ব্যবহারকে কেন্দ্র করে। এতে কার্যত সরকারই বেকায়দায় পড়ে। কারণ তারা বুঝে ফেলেন জিএম কাদের দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতির সুযোগ লুফে নিতে চাইছে। তাই জাপা চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে নেতৃত্ব থেকে সরাতে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদের ডাকা কাউন্সিল স্থগিত করিয়ে সংসদ অধিবেশনে যোগ দেয়ার একটি সম্মানজনক ব্যবস্থা করে দেন জি এম কাদেরপন্থি এমপিদের।

তবে রওশনের পক্ষেই হাই কমান্ড

তবে সরকার আপাতত জিএম কাদেরের পক্ষে ক্জা করছে বলে মনে হলেও জাপার ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ পদে থাকা রওশন এরশাদকেই বেশি কাছের লোক মনে করছেন। তাকেই বেশি বিশস্ত বলে মনে করেন তিনি। একটি সূত্র জানায় ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করিয়ে নিতে জাপার ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ রওশন এরশাদকেই বেশি কাছে পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিশেষ করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাপার ‘প্রধান পৃষ্ঠপোষক’ পদে থাকা রওশন এরশাদের কাছেই সহযোগিতা পান, যা তার সম্প্রতি সংসদে দেয়া বক্তব্যে ফুটে উঠে। এছাড়া দীর্ঘ দিন ধরে অসুস্থ থাকার পর কিছুটা সুস্থ হয়ে সম্প্রতি একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে যোগ দেন জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদ। এ সময় সংসদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ আসন ছেড়ে বিরোধী দলীয় নেতার আসনে গিয়ে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ-খবর নেন। এর কয়েক বছর আগে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ উপস্থিত হলেও যানজটের কারণে প্রধানমন্ত্রীর ইফতার পার্টিতে যেতে পারেননি রওশন এরশাদ। সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার কাছ থেকে এ তথ্য জেনে দুঃখ প্রকাশও করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসব ঘটনায় প্রমাণ হয় সরকার জিএম কাদেরের চেয়ে  রওশন এরশাদকেই বেশি আস্থাভাজন মনে করেন বর্তমান ও ভবিষ্যতের জন্য।

শেষ কথা...

সরকার জি এম কাদেরপন্থিদের খেলা থামিয়ে আসলে কি পেয়েছে তা বুঝতে আরো সময় নেবে বলেই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল মনে করেন। যদিও বলা হচ্ছে সরকারের হাতের মুঠোয় আছে দুই পক্ষই।  দলের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠায় রওশন এরশাদকে সরিয়ে বিরোধীদলীয় নেতার আসনে বসতে জি এম কাদেরের অনড় অবস্থানের কারণে সরকারি মধ্যস্থতায় হয়তবা এখন সমাধান হয়েছে। তবে যেহেতু জিএম কাদের পন্থীরা জানে রওশনকেই প্রধানমন্ত্রী বেশি আস্থায় নেন। তাই জি এম কাদের পন্থীরা অদূর ভবিষ্যতে সরকারের কতটা ব্লেসিং পাবেন তা নিয়ে তারা এখন সন্দিহান। এমন অবস্থায় জি এম কাদের সামনে দিনে কি ধরনের হুংকার দেন তা বুঝতে বেশি সময় নেবে না বলে মনে করেন না রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকমহল। কারণ জি এম কাদের পন্থীরা আসলে এখনো কিছুই পায়নি। আর এজন্য জি এম কাদের বসে তা অনেকে মনে করেন না। তাছাড়া ২০১৮ সালে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ড. কামাল হোসেনকে সামনে রেখে বিএনপি, গণফোরাম, জেএসডি ও নাগরিক ঐক্য মিলে যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে তাতে প্রকাশ্যে না থাকলেও বলা যায় এর ধারে কাছে ঘুরাঘুরি ছিল জি এম কাদেরের। তাই এমন ব্যক্তি চুপসে যাবেন বলে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করেন না। অন্যদিকে জাপায় সংকট কেবল শুধু বিরোধীদলীয় নেতার পদ নিয়েই নয়। আরও অনেক রাজনৈতিক স্বার্থ সংশ্লিষ্টের পাশাপাশি আর্থিক বিষয়ে অনৈক্য রয়েছে এই দেবর-ভাবির মধ্যে।

শেয়ার করুন