২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ০৯:৫৯:৪৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


‘সুলতানার মৃত্যু খাটো করে দেখার বিষয় নয়’
সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে - মির্জা ফখরুল
নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৯-০৪-২০২৩
সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশকে সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে - মির্জা ফখরুল


জেসমিনকে রাস্তা থেকে তুলে নেয়া হয়েছে..

এটা কোনো সভ্য দেশ হতে পারে না 


সরকার দেশে পরিকল্পিতভাবে সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টির পায়তারা করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল  রোববার দুপুরে এক সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘‘ আমরা পরিস্কারভাবে লক্ষ্য করছি, এই সরকার অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে এদেশকে একটা সংঘাতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে বিনা উস্কানিতে বিরোধী দলের কর্মসূচিতে আক্রমন করে, আঘাত করে তারা একটা সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়।”


‘‘ আমরা যে কথাটা বলতে চাই, আমরা এখন পর্যন্ত যেসব কর্মসূচি দিচ্ছি সেই কর্মসূচির সবগুলোই শান্তিপূর্ণ এবং সব গুলোই হচ্ছে গণতান্ত্রিক কর্মসূচি।”


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ আওয়ামী লীগ তো সবসময় বলে থাকে তারা সংবিধান মেনে চলবে। সেই সংবিধানে তো পরিস্কার করে বলা আছে যে, আমার কথা বলার অধিকার দিতে হবে, প্রতিবাদ করার অধিকার দিতে হবে। সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা যাবে না? সরকার কি রাষ্ট্র বা সরকার কি গড? সরকার তো গড না।”


‘‘ আমি যদি এদেশের গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি, আমি অবশ্যই আমার কথা বলব। তার(সরকার) সাথে তুমি একমত না হতে পারো। গণতন্ত্রের কথা একটা হচ্ছে যে, আমি তোমার কথা সাথে একমত না হতে পারি তবে মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে আমি আমার জীবন দিয়ে হলেও রক্ষা করব। দ্যাট ইজ ডেমোক্রেসি। এদের(ক্ষমতাসীনদের) কাছে হচ্ছে, একমাত্র আমিই কথা বলব, আমার কথা মতো সকলকে চলতে হবে এবং ক্রীতদাস হয়ে থাকতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ তো সেটা হতে দেবে না।”


ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে নসরুল হামিদ মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে ‘নওগায় সুলতানা জেসমিনকে নৃশংসভাবে হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়।


‘সুলতানার মৃত্যু খাটো করে দেখার বিষয় নয়’


সুলতানা জেসমিনের হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ সুলতানা জেসমিনকে রাস্তা থেকে তুলে নেয়া হয়েছে.. এটা কোনো সভ্য দেশ হতে পারে না। কোনো গণতান্ত্রিক দেশে হতে পারে না। একজন নাগরিক এবং সে সরকারি অফিসে কাজ করে তাকে ওইভাবে তুলে নিয়ে যাওয়া-এটা ভয়াবহ একটা আইনের লঙ্ঘন, সংবিধানের লঙ্ঘন এবং সম্পূর্ণ বেআইন।”


‘‘এই হত্যাকে খাটো করে দেখার কোনো কারণ নেই। এই হত্যা প্রমাণ করে যে, এদেশে বর্তমানে যে আওয়ামী লীগের সরকার যারা গায়ের জোরে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে তারা এভাবে হত্যা করে, নির্যাতন করে, মানুষের উপরে মিথ্যা মামলা দিয়ে তারা ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়।”


র‌্যাবের কর্তৃক হত্যাকান্ডের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ‘‘ আমি ২০১৫ সালে যখন জেলে গেলাম.. ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে সেখানে কয়েকজন র‌্যাবের কর্মকর্তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিলো। তখন নারায়নগঞ্জের ৭ হত্যাকান্ড সেই ৭ হত্যার আসামী ছিলো তারা। তাদের কাছ থেকে আমি যে কাহিনী শুনেছি, সেই কাহিনী তো পরিস্কার তারা(র‌্যাব সদস্যরা) বলে যে, আমরা কি? আমরা তো হুকুমের চাকর, আমাদেরকে নির্দেশ দেয়া হয়ৃ আমরা কাজ করি। র‌্য্বা কোনো কাজ করতে পারে না, র‌্যাবের কর্মকর্তা বা সৈনিক আছেন তারা কোনো কাজ করতে পারে না ‘উপরের’ নির্দেশ ছাড়া। আপনারা দেখেছেন, সম্প্রতি একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে ডয়েচ ভেলের। সেখানে পরিস্কার করে বলছে যে, আমাদের দেশের একেবারে টপ এর কাছ থেকে আমরা নির্দেশ পাচ্ছি। টপ থেকে নির্দেশে যদি মানুষ হত্যা করা হয়, টপ থেকে নির্দেশ দিয়ে যদি অন্যায়-অত্যাচার করে মানুষকে নির্দয়ভাবে করে মেরে ফেলা হয় তাহলে সেই রাষ্ট্র কী আর রাষ্ট্র থাকে।”


‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন প্রসঙ্গে’


মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘ ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা অহরহ হচ্ছে। যখনই তাদের(ক্ষমতাসীনদের) দুর্নীতির কথা বলেছেন, যখন তাদের অন্যায়ের কথা বলছেন, যখন প্রতিবাদ করছেন তখনই একটা ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা দিয়ে দেয়। এই আইনের বিরুদ্ধে আমরা অনেক প্রত্বিাদ করেছি, সাংবাদিক ভাইয়েরা প্রতিবাদ করেছেন, সম্পাদকরা প্রতিবাদ করেছেন কিন্তু তারা এটা করবেই। কী ঔদোত্য তাদের? জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশন যখন বলছে যে, এই আইনটার অনেক ধারা সংশোধন করা দরকার এবং দুইটি ধারা বাতিল করা দরকার। তখন পরিস্কার করে তথ্য মন্ত্রী বলেছেন যে, বাতিল করা হবে না।”


তিনি বলেন, ‘‘ আমাদের প্রশ্ন কেনো করা হবে না? এজন্য করা হবে না যে আইন দিয়ে আপনারা জনগনের কথা বলার যে অধিকার সেটাকে আপনারা পুরোপুরিভাবে বন্ধ করে দিতে চান, রুদ্ধ্র করে দিতে চান, মানুষের কন্ঠ স্তব্ধ করে দিতে চান।”


ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সম্প্রতি প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা ও প্রতিবেদক শামসুজ্জামান শামসকে গ্রেফতার করার ঘটনার তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘‘ এটা একটা ঘটনা নয়। ইতিমধ্যে আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান তিনি দেশ ছেড়ে চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন মাসের পর মাস, বছরের পর বছর জেলে থাকার পরে। যায় যায় দিনের সম্পাদক শফিক রেহমানের বিরুদ্ধে নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে.. তারপরে তিনিও চলে যেতে বাধ্য হয়েছেন। সংগ্রামের সম্পাদক আসাদ সাহেবকেও দীর্ঘকাল আটক করে রাখা হয়েছে। সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী সাহেবকে ১৮ মাস কারা আটক করে রাখা হয়। এরকম অনেক সাংবাদিক আছেন যাদের কারাগারে নেয়া হয়েছে। আজকে সকালে আমি খবর পেলাম আমার ঠাকুরগাঁওয়ে প্রতিদিনের বাংলাদেশ পত্রিকার সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সে একটা নিউজ করেছিলো আওয়ামী লীগ নেতার দুর্নীতির বিরুদ্ধে সেই কারনে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে মামলা করা হয়েছে। এটা অহরহ ঘটছে।”


এই অবস্থা থেকে উত্তরণে নারী সমাজকে আরো সংগঠিত হয়ে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল।

মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক েেহ্লন জেরিন খানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সেলিমা রহমান, মহিলা দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শ্ম্মাী আখতার, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের আহ্বায়ক রুমা আখতার, উত্তরের আহ্বায়ক নায়েবা ইউসুফ প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।


শেয়ার করুন