২৮ এপ্রিল ২০১২, রবিবার, ০৭:৩৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান ‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়


মঈন খানের প্রশ্ন- এতো ভয় কেন?
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ৩০-০৮-২০২৩
মঈন খানের প্রশ্ন- এতো ভয় কেন? বক্তব্য রাখছেন মঈন খান


“আমরা  শুনেছি একটি নির্দেশ এসেছে। কি নির্দেশ? একজন মানুষ তিনি বাংলাদেশ থেকে ১০ হাজার মাইল দূরে বসবাস করেন। তার কথা আজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে বৃহত্তম রাজনৈতিক দল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সাহেবের কথা কোনো রকমের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, অনলাইন কোথাও কেউ কিছু উল্লেখ করতে পারবেন না। সেখান থেকে সরিয়ে দিতে হবে। এতো ভয় কেন? একজন মানুষকে কেন ভয়? তার কারণ তিনি (তারেক রহমান) আজকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের কাছে পৌঁছে গেছেন এবং এই সরকার আজকে জনগণকে ভয় পায়।”

জাতীয় প্রেসক্লাবের মওলানা আকরাম খাঁ হলে জাতীয়তাবাদী প্রজন্ম ’৭১-র উদ্যোগে ‘খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে গত ২৮ আগস্ট সোমবার অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আব্দুল মঈন খান উপরোক্ত বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, “এই প্রসঙ্গে আরেকটা কথা বলা প্রয়োজন বেগম খালেদা জিয়াকে কেন মিথ্যা মামলায় দিয়ে কারারুদ্ধ করেছে। আজকে স্পষ্টভাষায় আমাদেরকে এটা বুঝতে হবে। বেগম খালেদা জিয়াকে এই সরকার ভয় পায়। কেন ভয় পায় দেশনেত্রী বেগম জিয়া গণতন্ত্রের কথা বলেন এই কারণে। অন্য কোনো কারণ নেই। সরকার ভেবেছিল বেগম খালেদা জিয়াকে কারারুদ্ধ করে দিলে বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ তারা চুপ হয়ে যাবে, তারা আর গণতন্ত্রের কথা বলবে না। আসলে এটা তো অলিক কল্পনা, এটা তো হতে পারে না। এটা বাংলাদেশের বিষয় না, এটা একটি ইউনির্ভাসেল বিষয়। পৃথিবীর কোনো সরকার কি পেরেছে কোনো সরকার তার যত বন্দুক, কামান, গোলা থাকুক না কেন, তারা কি মানুষের ভাষাকে বন্ধ করে দিতে পেরেছে, পারেনি। বাংলাদেশের ইতিহাস বলে, বাংলাদেশের মানুষ কোনোদিন চুপ করে থাকে না।”

‘এরা কর্পূরের মতো উড়ে যাবে’

আবদুল মঈন খান বলেন, “জোর করে কারো কণ্ঠরোধ করে রাখা যায় না। একটা আইন ছিল দেশে সিকিউরিটি অ্যাক্ট (ডিএসএ)। সেটার নাম পরিবর্তন করে, খোলস পরিবর্তন করে আরেকটা নতুন আইন করা হয়েছে তাই না। বিলেতের পুরোনো একটা এডেজ আমি ব্যবহার করে বলতে চাই, সেখানে বলা হয় ওল্ড ওয়াই ইন নিউ বোটল। আজকে যে নতুন আইনটি হয়েছে সেটা হচ্ছে, একটি নতুন মোড়কে নতুন বোতলে পুরোনো যে ডিএসএ ছিল সেটাকেই নতুন করে আনা, সেটা ব্যবহার করে এদেশের মানুষকে কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। পৃথিবীর ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় যে, মানুষের কণ্ঠরোধ কেউ করতে পারে না। মানুষ কথা বলবে, মানুষ ন্যায়ের কথা বলবে, মানুষ সত্য কথা বলবে, মানুষ স্বাধীনতার কথা বলবে, মানুষ গণতন্ত্রের কথা বলবে, মানুষ সুশাসনের কথা বলবে, মানুষ মানবাধিকারের কথা বলবে। এই কথা কেউ কোনোদিন বন্ধ করতে পারবে না। যে আইন করুক, যে নির্দেশ দিক সেগুলো দেখবেন আপনাআপনি কর্পূরের মতো উড়ে যাবে। বাংলাদেশে মানুষের যে আন্দোলন শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলন সেই আন্দোলনের সামনে এই সরকারের সব অপকর্ম-ধাপ্পাবাজি বাকশালী রাজনীতি সব কর্পূরের মতো উড়ে যাবে।”

ব্রিকস প্রসঙ্গ 

ব্রিকসের সদস্যপদ না পাওয়া সরকারের ‘কূটনৈতিক ব্যর্থতা’ হিসেবে দেখেছেন আবদুল মঈন খান। সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, “এই সরকার আজকে শুধু অর্থনীতিতে ব্যর্থ হয়নি, কূটনীতিতেও ব্যর্থ। হ্যাঁ আমি বুঝি তারা মেগা প্রজেক্ট করেছে, আমি তাদের প্রশংসা করি। যদি ভালো কাজ করে থাকে সেটা বলবো না কেন? কিন্তু মেগা প্রজেক্টের নামে যে মেগা দুর্নীতি হয়েছে, সে কথাও তো আমাকে বলতে হবে। দেখুন, যতই অস্বীকার করুক সরকার, আজকে তার ফলশ্রুতিতে কি হয়েছে? সরকার বড়াই করে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিল, সেখানে ব্রিকসের মেম্বার হবে। আজকে কেন আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র যারা ব্রিকসের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকেন, কেন তারা আজকে চরম বন্ধু রাষ্ট্র হয়েও আমাদের প্রত্যাখ্যান করলো এই ব্রিকসের বিষয়ে।” তিনি বলেন, “বাস্তবতাটি তারা অস্বীকার করতে পারেনি। বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা দেশ থেকে পাচার করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ হাজার কোটি টাকা দুর্নীতি করে তারা বাংলাদেশকে অর্থনীতির দিক থেকে ফোকলা করে দিয়েছে এবং সেই ফোকলা হওয়ার কারণে আজকে কোনো যুক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে তারা এখন ব্রিকসের সদস্যপদ দিতে পারেনি। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা, এটাই হচ্ছে সত্য। আমি জানি না, আজকে থেকে কত বছর পরে আবার আবেদন করবে এই দেশ এবং ব্রিকসের সদস্য হবে সেটা পরবর্তী প্রজন্মের দেখার বিষয়। কিন্তু এটুকু আমরা বলতে পারি যে, আজকে যেভাবে একটা বিশ্ব পরিম-লে আমাদের যেভাবে প্রত্যাখ্যান করছে, বাংলাদেশকে সদস্যপদ দেয়নি, আজকে লজ্জায় আমাদের মাথা কোথায় রাখি।”

‘আমাদের আন্দোলন শতভাগ গণতান্ত্রিক’

আবদুল মঈন খান বলেন, বিএনপির বিরুদ্ধে একটা অপ-অভিযোগ আনা হয়েছে যে, একরাত্রে কি জানি হয়ে যাবে, যদি এই সরকার চলে যায়। আমি মিডিয়াতে দেখেছি, সত্য-মিথ্যা বলতে পারবো না। আমরা বলতে চাই, বিএনপি প্রতিহিংসার রাজনীতিতে কোনোদিন বিশ্বাস করে না, লগি-বৈঠার রাজনীতিতে বিএনপি কোনোদিন বিশ্বাস করে না। মানুষ আমাদের অনেকে জোক করে বলেন, আরে আপনারা কি আন্দোলন করছেন? আপনারা তো আজ পর্যন্ত কঠিন আন্দোলন দিতেই পারলেন না। আমরা বিগত এক বছর ধরে বাংলাদেশে যে কঠিন আন্দোলন করেছি এর চেয়ে কঠিন, শান্তিপূর্ণ, নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক আন্দোলন আপনারা শত বছরের ইতিহাসেও দেখেননি। তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, আমরা এদেশে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে চাই। সেই কারণে আমাদের যে মেথোডলজি, যে পদ্ধতি সেই পদ্ধতিও শতকরা শতভাগ গণতন্ত্রী। সেটা অনুসরণ করেই আমরা বিগত এক বছর যাবৎ আন্দোলন করে যাচ্ছি। আগামীতে আমরা শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সরকারকে নৈতিকভাবে পদত্যাগ করতে বাধ্য করবো।

সংগঠনের সভাপতি ঢালী আমিনুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ প্রমুখ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

শেয়ার করুন