২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ১০:৪৩:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


নতুন কমিটি কী আসছে
যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের ‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া’ সম্পন্ন!
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ২৭-০৯-২০২৩
যুক্তরাষ্ট্র আ.লীগের ‘অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া’ সম্পন্ন! প্রধানমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের আয়োজক আওয়ামী লীগ নয়, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগ


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত ২২ সেপ্টেম্বর দুপুরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে শেষে সন্ধ্যায় নাগরিক সংবর্ধনায় অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনা সংবর্ধনায় প্রমাণ হলো যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ শ্মশানে চলে গিয়েছে এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী এবং দলের সভানেত্রীর উপস্থিতিতেই এই সংবর্ধনা সভার আয়োজন করে নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ দর্শকের ভূমিকা পালন করে। অনেক দেনদরবার করে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ মঞ্চে বসার সুযোগ পেয়েছিলেন। তা প্রধানমন্ত্রীর আসন থেকে অনেক দূরে। নাগরিক সংবর্ধনাটি পরিচালনা করেছেন নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ চৌধুরী। তার পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন আব্দুস সোবহান গোলাপ এমপি। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এতো অপমান সহ্য করেও যেহেতু পদত্যাগ করছেন না, সেহেতু এবার যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি দেওয়ার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। যদিও তা নির্ভর করছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কমিটির ওপর প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের একটা হাত থাকলেও এবার তার হস্তক্ষেপ নেই। এই সুযোগে প্রধানমন্ত্রী কমিটি দিয়েও দিতে পারেন। তবে নির্বাচনকে সামনে রেখে এবং সরকারের এই কঠিন পরিস্থিতিতে তিনি কমিটি দেবেন কি না তা নিয়ে কারো কারো সন্দেহ রয়েছে। আরেকটি সূত্র বলছে, প্রধানমন্ত্রী কমিটি দিয়েও দিতে পারেন। তবে এটা প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নাগরিক সংবর্ধনাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র নতুন নয়। তবে এবারের রূপটি ছিল ভিন্ন। ঝি দিয়ে মালিককে শাসন করার ব্যবস্থা। মূলত যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগে বিভক্তি দীর্ঘদিনের। বিভক্তি ছিল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করেই এই বিভক্তি চরম আকার ধারণ করতো। প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী হিসেবে আসতেন আব্দুস সোবহান এমপি। তিনিই আগে এসে সবার সঙ্গে বৈঠক করে সমঝোতার চেষ্টা করতেন। কিন্তু ফলাফল ছিল শূন্য। তারপরই তাকে কেন বারবার সমঝোতার জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয়। তার কারণে গত কয়েক বছরে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে কয়েকটি। গত বছর তাকে হোটেল লবিতে অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালও দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে অঙ্গসংগঠনের কাউকে কাউতে বহিষ্কার, আবার কাউকে শোকজ দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের বিভিক্ত গ্রুপের নেতৃত্বে একাংশে থাকতেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের নেতৃত্বাধীন অংশ। আরেক অংশের নেতৃত্বে থাকতেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ড. প্রদীপ রঞ্জন কর, আওয়ামী লীগ নেতা কাজী কয়েস, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহিম বাদশা, মোহাম্মদ আলী সিদ্দিকী এবং চন্দন দত্তরা। এবার কিন্তু তাদের বিরোধ করতে দেখা যায়নি। উভয় গ্রুপের বিভক্তির কারণে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনা ২০১৮ সাল থেকেই যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কাছ থেকে হাইজ্যাক হয়ে যায়। বিরোধের কারণে নাগরিক সংবর্ধনায় প্রধানমন্ত্রীর সামনে নো মোর সিদ্দিক, নো মোর সিদ্দিক বলে স্লোগান দেওয়া হয়। সেই স্লোগান দেখে প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং বিরক্ত হয়েছিলেন। নিজেই নাগরিক সংবর্ধনার সভাপতিত্ব করেন এবং সরকারি আমলারা অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন। ২০১৮ সাল থেকেই এই সিলসিলা চলে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ সারা বছর রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে, বরফে দাঁড়িয়ে এবং ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সামনে প্রতিপক্ষের মার খেয়েও আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে যান। তাদের প্রত্যাশা থাকে প্রধানমন্ত্রীর নাগরিক সংবর্ধনায় অংশ নেবেন, দুটি কথা বলার, ফুল দেওয়ার, মঞ্চে বসার সুযোগ পাবেন, কিন্তু একটি স্বার্থান্বেষী মহল নিজেদের স্বার্থ বাস্তবায়নে নেতাকর্মীদের বঞ্চিত করেন।

এবারও যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ এবং অঙ্গসংগঠনের মধ্যে সূক্ষ্মভাবে বিভেদ তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সেই বিভেদের আগুনে জ্বলছে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের নেতৃত্বকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখানো হয়েছে। চরম অপমান করা হয়েছে। কিন্তু সবচেয়ে লক্ষণীয় বিষয় ছিল যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান দীর্ঘ ১২ বছর যাদের নিয়ে রাজনীতি করেছেন, তারা কী কেউ সিদ্দিকুর রহমানের পক্ষে ছিলেন না। প্রধানমন্ত্রী উপস্থিতি নো মোর নো মোর সিদ্দিক বলে স্লোগান দেওয়া হয়েছিল। এবার তার পক্ষে কেউই স্লোগান দেয়নি, অনিয়ম নিয়ে উচ্চবাচ্য করেনি। তার অর্থ কী এই- ডা. সিদ্দিকুর রহমানের দিন শেষ!

শেয়ার করুন