২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৭:৫৭:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬ থাইল্যান্ডের ব্যবসায়ীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আহ্বান


সংবাদ সম্মেলনে ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ
প্রধানমন্ত্রীর চমৎকার হাসিই আমাদের প্রাপ্তি
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৪-০১-২০২৪
প্রধানমন্ত্রীর চমৎকার হাসিই আমাদের প্রাপ্তি ঐক্য পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ


বাংলাদেশের আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। এই নির্বাচনে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার আশঙ্কা প্রকাশ করছি এবং সেই সঙ্গে আমরা উদ্বিগ্ন। এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আওয়ামী লীগ বনাম আওয়ামী লীগের মধ্যেই। আমরা সংখ্যালঘুদের দাবি-দাওয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রতিবারই দেখা করি, তিনি আমাদের প্রতিশ্রুতি দেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করে আমাদের প্রাপ্তির মধ্যে রয়েছে তার চমৎকার হাসি। গত ৩১ ডিসেম্বর দুপুরে জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদের আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে নেতৃবৃন্দ এসব কথা বলেন।

ড. দ্বিজেন ভট্টাচার্য্যরে পরিচালনায় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সভাপতি অধ্যাপক নবেন্দু দত্ত, সভাপতি ডা. টমাস দুলু রায়, শিতাংশু গুহ, সুশীল সাহা, দিলীপ নাথ এবং রীনা সাহা। সংগঠনের অন্যতম সভাপতি অধ্যাপক নবেন্দু দত্তের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্যের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত এই সংবাদ সম্মেলনে শহিদ মুক্তিযোদ্ধা ও মুক্তিযুদ্ধে নিহত লাখ লাখ শহিদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে এবং সভায় উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, অধ্যাপক নবেন্দু দত্তের স্বাগতিক বক্তব্যের পর সংগঠনের যুগ্ম-সম্পাদক বিষ্ণু গোপ লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।

লিখিত বক্তব্যে বিষ্ণু গোপ বলেন, নতুন বছরের শুরুর প্রাক্কালে আমরা আবারও আপনাদের শরণাপন্ন হয়েছি। কারণ ৭ জানুয়ারি আমাদের মাতৃভূমি বাংলাদেশে অনুষ্ঠেয় দ্বাদশ সংসদীয় নির্বাচন ও তৎপরবর্তী সময়ে দেশে আমাদের আত্মীয়স্বজনদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা শঙ্কিত। যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ এই নির্বাচনটি ‘সুষ্ঠু ও অবাধ’ হবে বলে আশা প্রকাশ করছে। তবে বাংলাদেশে নির্বাচন মানেই তো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর আরেক দফা পৈশাচিক নির্যাতন। অতীতে বারবার তিক্ত অভিজ্ঞতার কারণে এমনতর ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে আগাম ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ আপনাদের মাধ্যমে দেশের সংশ্লিষ্ট সব মহলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছে। কেন্দ্রীয় ঐক্য পরিষদ সংবাদ সম্মেলন করে এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং নির্বাচনের পরও তিন সপ্তাহ সেনা সদস্যদের মাঠে রাখার দাবি জানিয়েছে। আমরা ওই দাবির প্রতিও পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি। 

তিনি আরো বলেন, আমরা আপনাদের ২০০১-এর নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘু নির্যাতনের করুণ কাহিনি একটু স্মরণ করতে অনুরোধ করি। স্মর্তব্য যে, ওইসব নারকীয় ঘটনার হোতাদের কিন্তু বিচার হয়নি আজও। ২০১২ সালে রামু থেকে ২০২১-এ কুমিল্লায় সংখ্যালঘু নির্যাতনের বীভৎস ঘটনাবলি, ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনে নিরপরাধ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অজুহাতে কারারুদ্ধ করার নিষ্ঠুরতা আমাদের জন্য সতত কষ্ট প্রদায়ী। এরই মধ্যে আরেকটি জাতীয় নির্বাচন সমাসন্ন। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং জাতীয় পার্টি ঐক্য পরিষদের দাবি অগ্রাহ্য করে বেশ কয়েকজন অভিযুক্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনকারীকে মনোনয়ন দিয়েছে (অ্যাডভোকেট সুলতানা কামাল, সম্পাদক শ্যামল দত্ত, প্রথম আলো, ৩০ ডিসেম্বও ২০২৩)। যেমন-কুমিল্লার বাহার এমপি, যিনি ২০২১-এ হিন্দু নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত বা নারায়ণগঞ্জের সেলিম ওসমান, যিনি শিক্ষক শ্যামল ভক্তের ওপর নির্যাতনের অপরাধে অভিযুক্ত। যুক্তরাষ্ট্র ঐক্য পরিষদ সংখ্যালঘু নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত যে কোনো প্রার্থীকে ভোট না দেওয়ার জন্য সংখ্যালঘুদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে। 

তিনি বলেন, আপনারা অবগত আছেন যে, গত দেড় বছরে আমরা দুইবার প্রধানমন্ত্রী এবং একাধিকবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী, ওয়াশিংটনস্থ রাষ্ট্রদূত এবং নিউইয়র্কস্থ কনসাল জেনারেলের সঙ্গে আমাদের দাবি-দাওয়া নিয়ে বৈঠক করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমাদের কোনো দাবি-দাওয়া সরকার পূরণ করেনি। প্রধানমন্ত্রী ওনার দলের ২০১৮ সালের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও পূরণ করেননি, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন পাস হয়নি, সংখ্যালঘু কমিশনও গঠিত হয়নি। তাতে আমরা হতাশ এবং সংক্ষুব্ধ।

তিনি বলেন, ঐক্য পরিষদ গঠিত হয়েছিল সংখ্যালঘু নাগরিকদের সমঅধিকার আদায়ের সংগ্রামের জন্যে, কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে এখন আমরা বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য সংগ্রাম করছি। স্বাধীনতার সুফল, বিজয়ের স্বাদ সংখ্যালঘু নাগরিকদের ঘরে পৌঁছেনি। গত ৫২ বছরে সংখ্যালঘু জনসংখ্যা কেবলই কমেছে। বিশেষ করে, হিন্দুরা যে স্থলে ১৯৯৮ সালে ছিল দেশের মোট জনসংখ্যার ১৬ শতাংশ (The World Fact Book, 2010), সে স্থলে বর্তমানে তারা মাত্র ৭.৯৫ শতাংশ (বাংলাদেশে সেন্সাস রিপোর্ট-২০২২)। সংখ্যালঘু সুরক্ষার ব্যাপারে সরকারের চরম উদাসীনতা দেখে মনে হচ্ছে অধ্যাপক আবুল বারাকাতের ভবিষ্যদ্বাণী ‘No Hindus will be left (in Bangladesh) after 30 years’ (Dhaka Tribune, November 20, 2016), হয়তো সত্য হতে চলেছে। 

তিনি আরো বলেন, ১৯৭৯ সালে জাতীয় নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশে নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘু নির্যাতন শুরু হয়, এরপর প্রায় প্রতিটি নির্বাচনের আগে-পরে সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে। ২০০১-এর পাশবিক নির্যাতনের তো কোনো তুলনা হয় না এবং সেটা জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয়েছিল। আপনাদের নিশ্চয়ই এসব সংবাদ শিরোনাম স্মরণ আছে, ‘Bangladesh’s religious minorities-safe only in the departure lounge (The Economist, Nov. 29, 2003)। ১৯৮৬, ১৯৮৮ সালের নির্বাচনের পরেও সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়েছে; এমনকি ২০১৪ সালে একটি বড় মিডিয়া ভোটের লাইনে শাখা-সিঁদুর পরিহিত মহিলাদের ছবি ছাপানোর পরপরই শুরু হয় হিন্দু নির্যাতন। বস্তুত সংখ্যালঘু নির্যাতন নির্বাচনের অবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এবারের নির্বাচন ঘোষণার কয়দিন আগে মুন্সীগঞ্জের এমপি অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাসকে আওয়ামী লীগের প্রতিদ্বন্দ্বী গোষ্ঠী ধর্ম তুলে যাচ্ছেতাই গালাগালি করার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে আমরা দেখে স্তম্ভিত হয়েছি। এই মুহূর্তে আমরা আসন্ন নির্বাচন সম্পর্কিত গুটিকয়েক ঘটনার উল্লেখ করছি: চুয়াডাঙ্গা-১-এর স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী সমর্থক ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার আগারওয়াল বলেছেন, ‘অবস্থা ভয়ংকর, আমার ওপর আক্রমণ হয়েছে। তিনি বলেন, তার ২০ জন আহত কর্মীকে হাসপাতালে যেতে হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত গত ২৩ ডিসেম্বর শনিবার। বরিশাল-৪ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী, বর্তমান সাংসদ পঙ্কজ দেবনাথের সমর্থকদের ওপর হিজলা উপজেলায় শাম্মী আখতারের লোকজন আক্রমণ চালায়, ঘরবাড়ি ভেঙে দেয়। এ সময় একজন সমর্থককে কোপানো হয় এবং আরো পাঁচ জন আহত হয়। শাম্মির অনুসারী খালেদ মাসুদ আহমেদ ৪০-৫০ জন ধারালো অস্ত্র নিয়ে তার বাড়িতে আক্রমণ চালায় বলে আলীগঞ্জ বাজার মন্দির কমিটির প্রেসিডেন্ট রাম প্রসাদ অভিযোগ করেন। ‘মেহেরপুর-১ (মুজিবনগর, সদর উপজেলা) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক দুই মেয়াদের সংসদ সদস্য প্রফেসর আব্দুল মান্নান ফোনে জেলার সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. অলোক কুমার দাসকে হুমকি দেন, এ ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে। ফোনে ডা. অলোক কুমার দাসকে হুমকি দিয়ে প্রফেসর আব্দুল মান্নান বলেন, ‘তুমি বাইরে থেকে এসে মেহেরপুরে খুব আরামেই আছো। টাকা-পয়সা অনেক কামাই করছো। বাড়িঘর করেছো। আমি এমপি হই, আর না হই, তোমার মেহেরপুরের বাসা আমি উঠিয়ে দেবো। আর যদি তুমি সাবধান হয়ে যাও, তাহলে আমার প্রিয় পাত্র হয়ে থাকতে পারবে।’ নারীপক্ষ নির্বাচনে নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে। তারা আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে দেশের বিভিন্ন স্থানের ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা চিহ্নিত করে সেখানকার নারী ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ নির্বাচনে সম্পৃক্ত প্রশাসন, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও এলাকাবাসীর যৌথ উদ্যোগে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়াসহ পাঁচ দফা দাবি বাস্তবায়নের জোর দাবিও জানিয়েছে। গেল ২৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ঢাকায় এমপি হাজি মোহাম্মদ সেলিম সন্ত্রাসী বাহিনী পাঠিয়ে ঢাকাস্থ চকবাজারের ৩ নম্বর রুইহাট্টা লেনে নির্মিত ৮মতলা ‘এনেক্স ফ্রেন্ডশিপ মার্কেট’ ভবন ভাঙচুর করে এবং সেটা জবরদখল করার চেষ্টা চালায়। ওই সম্পত্তির মালিক জ্যোতি মাধব বডুক পরদিন র‌্যাব মহাপরিচালকের কাছে তাদের রক্ষার জন্যে আবেদন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, অতীতের নির্বাচনকালীন ভয়াবহ অভিজ্ঞতা এবং অতিসাম্প্রতিক সংখ্যালঘু বিরোধী সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সংখ্যালঘুরা আশঙ্কা করছেন যে, তাদের ওপর যে কোনো সময় ২০০১, রামু বা নাসির নগরের মতো ভয়াবহ মাত্রার আক্রমণ হতে পারে। এ নিয়ে দেশে তারা যেমন গভীর উৎকণ্ঠায় আছেন, আমরাও তেমনি আমাদের আত্মীয়স্বজনের জন্য উদ্বিগ্ন। আপনারা অবগত আছেন যে, দু’একটি দেশ-বিদেশে বহুল প্রচারিত কেস ব্যতিরেকে সরকার কখনো সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার করেনি, এজন্য প্রয়োজনীয় কঠোর আইন প্রণয়ন করবে বলেও করেনি। তাই চিহ্নিত সংখ্যালঘু নির্যাতক সন্ত্রাসীদের দেশের সংখ্যালঘু নাগরকিদের নিশ্চিহ্ন করার কার্যক্রম বিনা দ্বিধায় চালিয়ে যেতে কোনো ভয় নেই। একটি বড় রাজনৈতিক দল ও তার সমমনা গোষ্ঠী সারা দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করে মানুষ হত্যা করছে, তারা ৭ জানুয়ারির নির্বাচন বয়কট ও অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছে, এমনকি নির্বাচন প্রতিহত করারও ঘোষণা দিয়েছে। তার ওপর রয়েছে অন্তর্দলীয় কোন্দল। যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন, তারা স্বভাবিকভাবেই সবাইকে ভোট দিতে উৎসাহ দিচ্ছেন। সংখ্যালঘু নাগরিকরা অতীতের মতো এবারও নিশ্চয়ই ভোট দিতে যাবেন। আর ভোট দিতে গেলে তারা যে অতীতের মতোই সাম্প্রদায়িক শক্তির রোষানলে পড়বেন সে আশঙ্কা যুক্তিসংগত। তাই আমরা আজ আপনাদের মাধ্যমে দেশের নির্বাচন কমিশন, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সেনাবাহিনী, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত করতে আহ্বান জানাচ্ছি। 

পরিশেষে, আমরা আশা ব্যক্ত করছি যে, দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে, যাতে নাগরিকরা সেক্যুলার ডেমোক্রেসিতে বিশ্বাসী, প্রগতিশীল প্রার্থীদের বিপুল হারে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন।

প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন মঞ্চে উপবিষ্টদের মধ্যে নবেন্দু দত্ত, শিতাংশু গুহ, ডক্টর দ্বিজেন ভট্টাচার্য্য, রীণা সাহা ও ডক্টর দিলীপ নাথ। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে উত্তরদাতারা বলেন যে, এই সমস্যা মোকাবিলা করার সর্বোত্তম পথ হচ্ছে এই মুহূর্তে দেশের নির্বাচন কমিশনারের উচিত রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সেনাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, সব রাজনৈতিক দলের প্রধান ও সচেতন নাগরিকদের সম্পৃক্ত করে সম্ভাব্য সংখ্যালঘুবিরোধী সন্ত্রাসী আক্রমণ ঠেকাতে আগাম প্রস্তুতি নেওয়া এবং কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে সেটা ত্বরিত গতিতে মোকাবিলার মূল দায়িত্বটা র‌্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর ওপর ন্যস্ত করা।

কীভাবে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনের স্থায়ী সমাধান হতে পারে এই মর্মে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে একাধিক উত্তরদাতা বলেন যে, এটা নির্ভর করছে সরকারের সদিচ্ছার ওপর, সরকার যদি যুক্তরাষ্ট্রের মতো হেইট ক্রাইম ও স্পিচ আইন অন্তর্ভুক্ত করে একটি কঠোর মইনরিটি অ্যাক্ট প্রণয়ন করে এবং সংখ্যালঘু নির্যাতকদের বিচার প্রক্রিয়া শুরু করে, তাহলে সাম্প্রদায়িক শক্তি সংখ্যালঘু নাগরিকদের নির্যাতন করার দুঃসাহস করবে না। তারা বলেন, এটা সম্ভব হতে পারে শুধু যদি প্রগতিশীল মুসলমানরা সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করেন, যেমন প্রগতিশীল শ্বেতাঙ্গরা কৃষ্ণাঙ্গদের সমঅধিকার প্রতিষ্ঠায় সাহায্য করছেন। 

সংগঠনের অন্য সভাপতি ডাক্তার টমাস দুলু রায় দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন হবে এই আশা ব্যাক্ত করে, সবাইকে নববর্ষের আগাম শুভেচ্ছা জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।

শেয়ার করুন