২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ৬:২৮:৩৩ পূর্বাহ্ন


ওয়েলকাম টু ডিয়ারবর্ন : আমেরিকার জিহাদ ক্যাপিটাল
ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের হিংসাত্মক মতামত
দেশ রিপোর্ট
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৭-০২-২০২৪
ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের হিংসাত্মক মতামত ওয়ালস্ট্রিট জার্নালের হেডিং


ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে গত ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার মিশিগানের ডিয়ারবর্ন সিটিতে বসবাসকারী মুসলিম ও আরব আমেরিকানদের নিয়ে উত্তেজনামূলক এবং হিংসাত্মক একটি মতামত কলাম ‘অপ-এড’ প্রকাশ করেছে। কলামটি প্রকাশ হওয়ার পর ডিয়ারবর্ন মেয়র আবদুল্লাহ হাম্মুদ গত ৩ ফেব্রুয়ারি শনিবার এক জরুরি ঘোষণা দিয়েছেন। আর সেই জরুরি ঘোষণাটি হচ্ছে সব মসজিদ, উপাসনালয় এবং সিটির প্রধান অবকাঠামো পয়েন্টগুলোতে পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানোর। এটি মেয়রের নির্দেশও বটে। শহরটির প্রতিটি পয়েন্টে, আবাসিক পাড়া, উপাসনালয় এবং সিটির অবকাঠামোর আশপাশে` ২৪ ঘণ্টা পুলিশের উপস্থিতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল ২ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার ‘ওয়েলকাম টু ডিয়ারবর্ন, আমেরিকার জিহাদ ক্যাপিটাল’ শিরোনামে একটি অপ-এড প্রকাশ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে, শহরটিতে ইসরায়েল এবং পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে জিহাদের জন্য ডিয়ারবর্ন সিটিতে বসবাসরত স্থানীয়দের উৎসাহ রয়েছে। কলামটি ধর্মীয় নেতা এবং রাজনীতিবিদসহ শহরের বাসিন্দাদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ফিলিস্তিন ইসলামিক গোষ্ঠী হামাস এবং চরমপন্থাকে সমর্থন করেছেন ডিয়ারবর্ন মেয়র আবদুল্লাহ হাম্মুদ। যেখানে সংখ্যাগরিষ্ঠ আরব আমেরিকান জনসংখ্যা রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো শহরের চেয়ে মিশিগানের ডিয়ারবর্ন শহরে আরব আমেরিকানদের সর্বোচ্চ শতাংশ বসবাস করেন। আদমশুমারির পরিসংখ্যান অনুসারে এই সিটিতে প্রায় ৫৪ শথাংশ আরব আমেরিকান বসবাস করেন।

প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত ৪ ফেব্রুয়ারি রবিবার মিশিগানের ডিয়ারবর্নকে লক্ষ করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে প্রকাশিত মতামতের প্রতিক্রিয়ায় আরববিরোধী মতামতের নিন্দা করেন। তিনি ওয়াল স্ট্রিট জার্নালে বা নিবন্ধের লেখকের নাম সরাসরি উল্লেখ না করে, সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেন, ‘ক্ষুদ্র অংশের কয়েকজনের কথার ভিত্তিতে বৃহৎ অংশের লোককে দোষ দেওয়া ভুল। এটিই ইসলামোফোবিয়া এবং আরববিরোধী বিদ্বেষের দিকে নিয়ে যেতে পারে এবং এটি ডিয়ারবর্ন বা আমেরিকার কোনো শহরের বাসিন্দাদের সঙ্গে ঘটতে পারে না।

মেয়র হাম্মুদ বলেন, ‘সবাই সতর্ক থাকুন। এটি আগুনের লেলিহান শিখা প্রজ্জ্বলন করে দেওয়ার মতো। ডিয়ারবর্ন শহরকে লক্ষ্য করে ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের এ মতামত ডিয়ারবর্নবাসীর জন্য উদ্বেগজনক এবং উত্তপ্ত পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দেওয়ার ষড়যন্ত্রমূলক কৌশল।’ মধ্যপ্রাচ্য মিডিয়া রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক স্টিভেন স্ট্যালিনস্কির লেখা ডব্লিউএসজে অংশ সম্পর্কে ৪ ফেব্রুয়ারি শনিবার হামুদ বলেন, ‘বেপরোয়া, ধর্মান্ধ ও ইসলামোফোবিক।’ মেয়র আরো বলেন, তিনি ডিয়ারবর্ন শহরকে লক্ষ্য করে অনলাইনে ধর্মান্ধ এবং ইসলামোফোবিক বক্তৃতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। তাই তিনি মসজিদ এবং অন্যান্য পাবলিক স্থানে শহরের পুলিশের উপস্থিতি বাড়িয়েছেন। গত ৬ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার লোকের শহরতলী ডিয়ারবর্নে কোনো অস্থিরতার খবর পাওয়া যায়নি।

ডেমোক্রেটিক কংগ্রেসম্যান প্রমীলা জয়পাল এবং কংগ্রেসম্যান রো খান্না এবং সিনেটর গ্যারি পিটার্স এবং ডেবি স্ট্যাবেনোও ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের মতামতের নিন্দা করেছেন। জয়পাল সংবাদপত্রকে মেয়র এবং ডিয়ারবর্নবাসীর কাছে কাছে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।

দ্য কাউন্সিল অন আমেরিকান-ইসলামিক রিলেশনসের গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর কোরি স্যালর এক বিবৃততে বলেন, গত অক্টোবরে হামাস ইসরায়েলে আশ্চর্যজনক হামলা চালানোর পর তিন মাসে ইসলামফোবিয়া এবং আরববিরোধী পক্ষপাতের অভিযোগ অভূতপূর্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। ইসলামোফোবিক এবং ফিলিস্তিনিবিরোধী বক্তব্য যা গাজায় ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য এবং আমেরিকাতে ফিলিস্তিনি মানবাধিকারের সমর্থকদের নীরব করার জন্য ব্যবহৃত` হচ্ছে, যা ধর্মান্ধতায় অবদান রেখেছে। অক্টোবরে মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইসলামোফোবিয়া, ফিলিস্তিনিবিরোধী পক্ষপাতিত্ব এবং মুসলিম বিদ্বেষ বৃদ্ধির কথা উল্লেখ করেছে অধিকার সংগঠন কেয়ার।

শেয়ার করুন