২৯ এপ্রিল ২০১২, সোমবার, ০৩:১২:১৪ অপরাহ্ন


দেশকে শফিকুল হক হীরা
তারুণ্যে আরো নজর প্রয়োজন বিসিবি’র
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ১৩-০৭-২০২২
তারুণ্যে আরো নজর  প্রয়োজন বিসিবি’র


ক্রিকেটই একমাত্র খেলা, যাতে দলমত নির্বিশেষে এর সাফল্য মানুষ একাকার হয়ে যায় উৎসবে। আবার এ ক্রিকেটের ব্যর্থতায় অনেকটাই ভেঙ্গে পড়েন। ক্রিকেটের সঙ্গে দেশের ছোট বড় সবারই একটা আবেগ জড়িয়ে রয়েছে। এ জন্য ক্রিকেটের সঠিক গতিপথে রেখে এটাকে এগিয়ে নেয়ার গুরুত্ব অনেক। সম্প্রতি, বাংলাদেশ ক্রিকেট দল টি-২০ ও টেস্ট ক্রিকেটে খুবই বাজে পারফরমেন্স করছে। ওয়ানডেটাতে তারা নিজেদের মর্কেই রয়েছেন। যদি ওয়ানডেতে পারা যায় তাহলে টি-২০ ও টেস্টে কেন নয়? এ ব্যাপারে দেশ পত্রিকার সঙ্গে কথা বলেছেন, বাংলাদেশ জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক,ম্যানেজার শফিকুল হক হীরা। 

বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উন্নতির অন্তরায় এখনও অনেক কিছু দেখছেন তিনি। সে বিষয়গুলো কাটিয়ে উঠতে না পারলে ক্রিকেট সঠিক পথে এগুবে না বলে মনে করছেন।

দেশ: টেস্ট ক্রিকেটের অব্যাহত বাজে পারফেরমেন্স একই সঙ্গে টি-২০ তেও খুব ভাল অবস্থা নয়। কেন এমনটা হচ্ছে। 

শফিকুল হক হীরা: আমার কাছে মনে হয় টি-২০ ক্রিকেটে আমরা উন্নতি করছি। তবে স্লো। এটা আরো গতিশীল হওয়া প্রয়োজন। নতুবা বিশ্বের অন্যান্য দলের সঙ্গে আমরা প্রতিযোগিতা করে পারবো না। তবে এর অগ্রগতি একেবারে মন্দ না। এ  সেক্টরেই শুধু না, টেস্টেও বেশ কিছু বিষয় রয়েছে। এগুলো উন্নতি না করলে ভাল কিছু আশা করা যাবে না। 

দেশ: আরেকটু খোলাসা করে যদি বলেন।

শফিকুল হক হীরা: আমার যেটা মনে হয় দুটি স্থানেই এখন তরুণদের প্রধান্য দেয়া উচিৎ। কে খেলবে, কে খেলবে না এগুলো নিয়ে ভাববার সময় নেই। এগুলো নিয়ে ভাবলে ক্রিকেট এগুবে না। প্রতিটা স্থানে এখন একজনের প্রতিদ্বন্দ্বী অন্যজনকে বিকল্প রাখা জরুরি। এ জন্য বিসিবি’র উচিৎ ‘এ’ দল গঠন করা। ইতিমধ্যে সেটা তারা করেছেও। দলটি ওয়েষ্টইন্ডিজ সফরে যাবে। এদের আরো ট্যুর দেয়া উচিৎ। এখান থেকে ভাল পারফরমেন্সকারীদের জাতীয় দলে নিয়ে আসা যায়। এর বাইরেও এইচপি ও অনুর্ধ-১৯ দলের দিকেও নজর রাখা উচিৎ। ওখানে কে কী করছে। কারণ একবার অনুর্ধ-১৯ দল চ্যাম্পিয়ন হলো, পরেরবার আবার খবর নেই। এভাবে তো হবে না। এভাবে জাতীয় দলের পাইপলাইন ষ্ট্রং করে ফেলতে হবে। 

এক সময় জাতীয় দলে পঞ্চ পান্ডবের কথা বলা হতো। সেখানে মাশরাফি তো অলমোস্ট অবসরে। বাকিদের অনেকের বয়স কত? ৩০ থেকে ৩৩ এর মধ্যে। এরা কতদিন খেলতে পারবেন? তাদের সামার্থেরও একটা বিষয় রয়েছে। তাদের শরীরে কুলানোরও বিষয় রয়েছে। ফলে ওদের দিকে চেয়ে থাকলে হবে না। ওরা একদিন বলছে এ ফরম্যাটে খেলবে। অন্যদিন অন্য ফরম্যাট। ওরা সিনিয়র ওদের এর বাইরেও বিভিন্ন কাজকর্ম হয়তো থাকে। ঠিক মত হয়তো সময় দিতে পারে না। ফলে আমি মনে করি এখন তরুণদের দিকে নজর দেয়ার সময় এসেছে। শুধু নজরই নয়, যারা আসবেন ক্রিকেট খেলতে তাদেরকে কাউন্সিলিংও করতে হবে। 

তারা কে, তারা কী খেলবে। তার জাতীয় দলে রোল কী। দেশের স্বার্থ কোথায়?সবকিছু অনুধাবন করে তারা লড়াইয়ে মনোনিবেশ করবেন। এতে দলের প্রতি তার কমিন্টম্যান্ট থাকবে। সে বুঝবে দেশ ও জাতি তার কাছে কী চায়। সে দলের জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করবে। সে ভুল করছে? ওকে সে কম্পিউটার এনালিস্টের কাছে যেয়ে তার পরিসংখ্যাণ নেবে। ভুলগুলো নিয়ে কোচের সঙ্গে কথা বলে প্রাকটিসে মনযোগী হবে শুধরাতে। এগুলো যার যারটা সে নিজেই করবে। তবেই নিজের পারফরমেন্সের উন্নতি ঘটবে। 

দেশ: ঘরোয়া ক্রিকেট কী সব ঠিকঠাক মত এগুচ্ছে। যেখানে এসব ক্রিকেটাররা তাদের পারফরমেন্সটা পরখ করে দেখার সুযোগ পান।

শফিকুল হক হীরা: আমার মনে হয় এখানেও অনেক উন্নতির প্রয়োজন রয়েছে। জাতীয় লীগের আরো উন্নতির প্রয়োজন। কিউরেটরের উন্নত প্রশিক্ষণ প্রয়োজন। আমি একবার বোর্ডকে বলেছিলাম, নিউজিল্যান্ডে খুব ভাল কিউরেটরের ট্রেনিং হয়। সেখানে ৫-৬ জনকে ট্রেনিং করিয়ে আনলে তারা খুব ভাল করবে দেশে ফিরে। কারণ ভাল উইকেটও প্রয়োজন। আম্পায়ারিংটাও মানসম্মত হওয়া দরকার। এখানে অমুক ক্লাব অমুক বিসিবি’র ডাইরেক্টরের- তার বিরুদ্ধে সিদ্ধান্ত দিলে ম্যাচ পাওয়া যাবে না। এভাবে হস্তক্ষেপ চলবে না। স্বাধীনতা দিতে হবে। আমাদের আম্পারারা প্রভাবমুক্ত থাকলে খুব ভাল আম্পায়ারিং করতে পারেন বলেই আমার বিশ্বাস। এভাবে প্রতিটা সেক্টরেই উন্নতি প্রয়োজন। নতুবা ক্রিকেট এগিয়ে নেয়া যাবে না। তবে এসব ক্ষেত্রে উন্নতি করলে, ধীরে ধীরে চারদিনের ম্যাচে টেস্ট ম্যাচের একটা আবহ চলে আসবে। এ অভ্যাসেই জাতীয় দলের টেস্ট ম্যাচ খেলতে নেমে তারা ভাল করবেন। এ জন্য সময়ের প্রয়োজন। তবু এক্ষুনি এ সিস্টেমেই চলে গেলে ২-৩ বছর পর ভাল রেজাল্ট মিলবে। 

দেশ: আপনার কী মনে হয়, এসব ব্যাপারে বোর্ড গাফলতি করছে।

শফিকুল হক হীরা: না ঠিক সেভাবে নয়। তবে অনেক কিছু যথাসময়ে বোঝারও বিষয় রয়েছে। তাছাড়া বোর্ড প্রেসিডেন্টকে কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করা চলবে না। আমাদের সময় বোর্ড প্রেসিডেন্ট কোনো কিছুতে হস্তক্ষেপ করতেন না। কারণ নির্বাচকরা খুবই সিনিয়র ও ক্রিকেটে দক্ষ। খেলোয়াড়রাও যথেষ্ট পরিণত হয়েই জাতীয় দলে খেলতে এসেছেন। ফলে তাদেরকে বোর্ড সভাপতি কিছু বলতে গেলে এটা ওদের মানসম্মানে আঘাত লাগে। তবে কাউন্সিলিং হতে পারে। কাউন্সিলিং আগেও ছিল। এতে খেলোয়াড়রা উৎসাহ লাভ করে। ভুলত্রুটি দেখিয়ে দেবেন কোচ। ওটা আপনি কোচকে বলুন। কোচ ওদের বলবে। কিন্তু আপনি সরাসরি খেলোয়াড়কে বলা শোভনীয় নয়। এতে তারা প্রেসার বোধ করবেন। ওরা এদিক সেদিক চিন্তা করে। খেলায় পারফরমেন্স বাজে হওয়ার কারণও হয়ে যেতে পারে। 

প্রশ্ন: টেস্ট ক্রিকেটে ইদানিং যেভাবে খেলছে এটাতে আসলে কী করা উচিৎ। হেরে যেতেই পারে। তাই বলে এভাবে ব্যার্থতা?

শফিকুল হক হীরা: আপনি ঠিকই বলেছেন, এভাবে পরাস্ত হওয়া উচিৎ না। আমি বলবো অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল ছেড়ে খেলা উচিৎ। লেগ সাইটের বলও। বেশি বেশি বল ছেড়ে খেলে দুর্বল বলের প্রতি রান সংগ্রহে টার্গেট করা উচিৎ। ধৈর্য্য ধারণ প্রয়োজন। দেখুন, গাভাস্কারও হুক শট খেলতেন না। বাউন্সার দেখলে বসে যেতেন। কারণ সে হুক শটে কিছুটা দুর্বল ছিল। সব ক্রিকেটারকে সব ধরনের শট খেলতে পারদর্শী হতে হবে এমন নয়। যে যার স্টাইল মত খেলবে। যে যেটাতে এক্সপার্ট সেটা খেলবে। কিন্তু এভাবে সবকিছু খেলতে যেয়ে আউট হয়ে যাওয়া দলের জন্য ক্ষতিকারক। তাছাড়া খেলোয়াড়দেরও ম্যাচে রোল কী। দল তার কাছে কি চায়। ওই সময়ে তার কাছে দলের প্রত্যাশা কী। সেটা তিনি কিভাবে হ্যান্ডেল করবেন এগুলো অনুধাবন জরুরি। এ অনুধাবনের অভাব হলে বিপর্যয় অবধারিত। এ জন্যই বলছি কাউন্সিলিং প্রয়োজন। 

শ্রীলঙ্কায় ২০ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন

দেশ রিপোর্ট: শ্রীলঙ্কার পার্লামেন্ট ২০ জুলাই নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করবে। পার্লামেন্টের স্পিকার গত ১১ জুলাই সোমবার এ কথা জানিয়েছেন। দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বিক্ষোভকারীরা ঢুকে পড়ার দুদিন পর এ ঘোষণা এলো। স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আগামী ১৫ জুলাই পার্লামেন্ট ফের অধিবেশনে বসার পাঁচ দিন পর নতুন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত করবে।বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আজ (১১ জুলাই) রাজনৈতিক দলের নেতারা বৈঠকে একমত হয়েছেন যে, সংবিধান অনুযায়ী নতুন একটি সর্বদলীয় সরকার গঠন করা জরুরি।’স্পিকার মাহিন্দা ইয়াপা আবেবর্ধনে আরও বলেছেন, ‘ক্ষমতাসীন দল জানিয়েছে, সর্বদলীয় সরকার গঠনে প্রধানমন্ত্রী ও মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও পদত্যাগে প্রস্তুতি।’

প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে পদত্যাগ করবেন বলে জানিয়েছেন। তাঁর কার্যালয় জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে পদত্যাগের পরিকল্পনার কথা প্রধানমন্ত্রীকে নিশ্চিত করেছেন। সর্বদলীয় সরকার গঠনে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চুক্তি হলে মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যরাও পদত্যাগ করবেন বলে জানানো হয়েছে।

গত ৯ জুলাই শনিবার শত শত বিক্ষোভকারী কলম্বোয় প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন টেম্পল ট্রিতে ঢুকে পড়ে। এরপর এদিন রাতে স্পিকার মাহিন্দা জানান, প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া বুধবার (১৩ জুলাই) পদত্যাগ করবেন বলে তাঁকে জানিয়েছেন।সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের পদত্যাগের ঘোষণা নিশ্চিত করে জানায়, প্রেসিডেন্ট আগামী বুধবার পার্লামেন্টের স্পিকারের কাছে পদত্যাগপত্র হস্তান্তর করবেন বলে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহেকে জানিয়েছেন।

শ্রীলঙ্কার সংবাদমাধ্যম ডেইলি মিরর জানিয়েছে, জ্যেষ্ঠ রাজনৈতিক সূত্রগুলো ১০ জুলাই রোববার সন্ধ্যায় প্রেসিডেন্টের পদত্যাগের বিষয়টি নিশ্চিত করে। একই সঙ্গে আগামী মার্চের আগে প্রেসিডেন্ট এবং পার্লামেন্ট নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।গত শনিবার বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের বাসভবনে ঢুকে পড়লে পালিয়ে যান প্রেসিডেন্ট রাজাপক্ষে। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত তিনি কোথায় রয়েছেন, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বিক্ষোভকারীরা পরে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনেও অবস্থান নেন।


শেয়ার করুন