২৭ এপ্রিল ২০১২, শনিবার, ৬:৪৩:৩৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
‘ব্রাজিল থেকে জীবন্ত গরু আনা সম্ভব, তবে প্রক্রিয়া জটিল’ খালেদা জিয়ার সঙ্গে মির্জা ফখরুলের ঘন্টাব্যাপী সাক্ষাৎ বিশ্বের প্রতি যুদ্ধকে ‘না’ বলার আহ্বান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনে গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা প্রতিষ্ঠা হয়েছে - হাবিবুল মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের প্রতিবেদন অনুমান ও অপ্রমাণিত অভিযোগ নির্ভর- পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয় ইউরোপে ভারতীয় ৫২৭ পণ্যে ক্যান্সার সৃষ্টিকারি উপাদন শনাক্ত বাংলাদেশ ব্যাংকে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়াকড়ি বিএনপির আন্দোলন ঠেকানোই ক্ষমতাসীনদের প্রধান চ্যালেঞ্জ বিএনপিকে মাঠে ফেরাচ্ছে আওয়ামী লীগ উপজেলা নির্বাচন নিয়ে অদৃশ্য চাপে বিএনপি


মিরপুরে এক দিনে ১৫ উইকেটের পতন
সালেক সুফী
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-১২-২০২৩
মিরপুরে এক দিনে ১৫ উইকেটের পতন


বাংলাদেশ ক্রিকেটের দুর্গম দুর্গ শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়াম উইকেটে আজ বাংলাদেশ নিউজিল্যান্ড চলতি টেস্ট সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে প্রথম দিনশেষে স্পষ্ট হয়েছে স্পিনারদের প্রধান্য। এক দিনে উইকেটের পতন ১৫টি। ধীর, নিচু ,ঘূর্ণি উইকেটে মেঘলা আকাশের নিচে টস জয় করে বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে সংগ্রহ করেছিল ১৭২। উইকেটের চরিত্র দেখেই আঁচ করা গিয়েছিলো এই উইকেটে বাংলাদেশের বিশ্বমানের স্পিনার্স মেহেদী মিরাজ আর তাইজুলকে খেলা সহজ হবে না। শুরু থেকে সঠিক লাইন লেংথ বজায় রেখে তুখোড় বোলিং করে স্পিনার্স যুগল। তরুণ দলটি ছিল জয়ের নেশায় উজ্জীবিত।


তুখোড় গ্রাউন্ড ফিল্ডিং এবং অপূর্ব দক্ষতার কিছু ক্যাচ লুফে বাংলাদেশ ১২.৪ ওভারেই ৫৫ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে কোনঠাসা করে ফেলেছে অতিথি দলকে। অনেকের হয়তো স্মরণ আছে ১৯৭১ এই দিনে মরণপণ যুদ্ধ রত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশকে ভারত স্বীকৃতি দিয়েছিলো। হয়তো ঐতিহাসিক দিনকেই স্মরণে রেখে দুরন্ত দুর্বার বাংলাদেশ আজ শেষ বিকেলে জ্বলে উঠেছিল সম্ভবত। হয়তো উইকেট নিয়ে কিছু কথা হবে। কিন্তু পেশাদার ক্রিকেটে সব ধরণের উইকেট এবং পরিবেশে খেলতে হয়।


প্রথম দিন শেষে ১১৭ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। যত সময় যাবে এই উইকেটে ব্যাটিং করা ততই কঠিন হবে। প্রথম ইনিংসে ৬০-৭০ রান লিড নিয়ে বাংলাদেশ যদি দ্বিতীয় ইনিংসে ২০০ রান করে ২৫০ লক্ষ্য দিতে পারে অতিথি দলকে সিরিজ জয়ী হবে বাংলাদেশ। ক্রিকেট যতই গৌরবজ্জল অনিশ্চয়তার খেলা হোক না কেন এই টেস্ট হয়তো বড় জোর চতুর্থ দিনে গড়াতে পারে।


বাংলাদেশ টেস্ট জয় করে একটু তাড়াহুড়ো করেছে বলবো। উইকেটে অসম বাউন্স,বড় টার্ন সবই ছিল। কিন্তু যেভাবে আউট হয়েছে জয়, জাকির ,শান্ত ,মোমিনুল আরো সতর্ক হলে অন্তত দুটি উইকেট কম খোয়া যেত প্রথম সেশনে। অভিজ্ঞ মুশফিক এবং তরুণ শাহাদাত দিপু ৫ম উইকেট জুটিতে ৫৭ রান যোগ করে সামাল দিয়েছিলো। কিন্তু কি যে হলো অভিজ্ঞ মুশফিকের। ৮৩ বলে ৩ চার, এক ছয়ে ৩৫ রান করা মুশফিক ব্রেন ফ্রিজ হয়ে প্রথম বাংলাদেশী ব্যাটসম্যান হিসাবে হ্যান্ডলড ডি উইকেট হলো। ১০৪ রানে ৫ উইকেট হারানো বাংলাদেশ সংগ্রাম করে ১৭২ পর্যন্ত পৌঁছায়। উইকেটে বল পরে ঘুরছিলো লাটিমের মত।  নিউজিলান্ডের হয়ে তিন স্পিনার গ্লেন ফিলিপ্স (৩/৩১) , মিচেল সান্টনার ( ৩/৬৫ ) এবং আইয়াজ প্যাটেল (২/৫৪) বাংলাদেশ ইনিংসকে নিয়ন্ত্রণের সীমায় বেঁধে রেখেছিলো।


বাংলাদেশ ইনিংসে উইকেটের চরিত্র দেখে অনুমান করেছিলাম এই উইকেটে মেহেদী মিরাজ এবং তাইজুলকে খেলা এতো সহজ হবে না। হলোও তাই। নিউজিল্যান্ডের টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানরা অনেকটা আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে মিরাজ ( ৩/১৭) ,তাইজুল ( ২/২৯) মোকাবিলায় আত্মসমর্পণ করলো। আলোক স্বল্পতায় নিদৃস্ট সময়ের আগে দিনের খেলা শেষ না হলে নিউজিল্যান্ডের পরিস্থিতি ৫৫/৫ থেকেও করুন হতে পারতো।


কাল দ্বিতীয় দিন যদি বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ৬০-৭০ রানের লিড পেয়ে সতর্কতার সঙ্গে ব্যাটিং করে অতিথি দলকে ২৫০+ টার্গেট দিতে পারে, টেস্ট এবং সিরিজ জয়ের সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। শরিফুল এবং শাহাদাত দিপু দুটি অসাধারণ ক্যাচ লুফে নিয়েছে। মনে হয় যেন কোনো জাদুর কাঠির ছোয়ায় বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা জেগে উঠেছে। শারীরিক ভাষা সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। বর্তমান অবস্থা বজায় থাকলে বাংলাদেশ টেস্ট এবং সিরিজ জয় অর্জন না  করার কারণ দেখি না। তরুণ দলটিকে জয়ের নেশায় উজ্জীবিত চনমনে মনে হচ্ছে। বিজয়ের মাসে সিরিজ ধবল ধোলাই বাংলাদেশ ক্রিকেটকে নতুন উদ্দীপনায় উদ্দীপ্ত করবে।  

শেয়ার করুন