৩০ এপ্রিল ২০১২, মঙ্গলবার, ০৬:৩৭:৪০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
‘বিশেষ চাহিদা সম্পন্নদের প্রতিভা বিকাশে কোন ধরনের প্রতিবন্ধকতা রাখা যাবে না’ সরকার ও বেসরকারি উদ্যোগে দরিদ্রমুক্ত দেশ গড়ে উঠবে - আসাদুজ্জামান খান কামাল ৭০ শতাংশ মৃত্যু অসংক্রামক রোগে, বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি ‘বিদেশে দেশবিরোধী অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে স্থানীয় আইনে ব্যবস্থা নিন’ ভূল স্বীকার করে সরে দাড়ানোয় একজনের বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার বাফেলোতে সন্ত্রাসীদের গুলিতে দুই বাংলাদেশী নিহত ‘শেরে বাংলা আপাদমস্তক একজন পারফেক্ট বাঙালি ছিলেন’ বিএনপির বহিস্কৃতদের জন্য সুখবর! মে দিবসে নয়পল্টনে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ উপজেলা নির্বাচনে অংশ নেয়ার জের, বিএনপির বহিস্কার ৭৬


রাজনীতির মাঠে বরই-খেজুর বিতর্ক
বিশেষ প্রতিনিধি
  • আপডেট করা হয়েছে : ০৬-০৩-২০২৪
রাজনীতির মাঠে বরই-খেজুর বিতর্ক ফলের দোকান


কাঁঠাল দিয়ে বার্গার, মিষ্টি কুমড়া দিয়ে বেগুনি কিংবা ডিম সিদ্ধ করে ফ্রিজে রেখে দেওয়ার মতো পরামর্শ নয় এবং ইফতারে আঙুর ও আপেলের পরিবর্তে বরই পেয়ারা দিয়ে ইফতারের পরামর্শ দিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন। ইফতারে কে কি খাবে এটা তাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার হলেও রমজানের আগে আমদানিকৃত ফলের মূল্য বেশ চড়া। বিশেষ করে রজমানে খেজুরটা মানুষ চেষ্টা করে ইফতার আইটেমে রাখতে। এর বড় একটি কারণ খেজুড়ে প্রচুর গ্লুকোজ। তাছাড়া মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ (সা.) খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন এমনকি খেজুর দিয়ে সাহরিও করতেন কখনো কখনো। 

এর অন্যতম কারণ বিলাসিতা নয়, আরবে খেজুর সহজলভ্য ফল। খেজুর তার প্রিয় ফল থাকায় ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা খেজুরকে ইফতারে রেখে খেজুর খেয়ে ইফতার করতে পছন্দ করেন। কিন্তু সে বিদেশি ফল খেজুরের বাজার এবার চড়া। গত বছর যে খেজুর ৬০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে সেটা এবার ১ হাজার টাকার ওপরে। এর কারণ আমদানি সংকট বলেই সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন। দেশে বিদ্যমান ডলার সংকটে আমদানি করা পণ্যের দাম বাড়াতে হয় ব্যবসায়ীদের। তবে এ সুযোগে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি দাম বৃদ্ধি করছে অসাধু ব্যবসায়ী। 

এ নিয়ে বেশ কিছুদিন থেকেই সরগরম। এমন প্রেক্ষাপটে শিল্পমন্ত্রী হয়তো সরাসরি খেজুরের নাম উল্লেখ না করে দেশি ফলের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। 

গত সোমবার রাজধানীর ওসমানী মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অভাব অভিযোগ আছে। তাই বরই দিয়ে ইফতার করেন। আঙুর, আপেল লাগবে কেন? পেয়ারা দেন না কেন? প্রধানমন্ত্রী বলে দিয়েছেন এবারের রমজানে ইফতার পার্টি হবে না। দেশি ফল দিয়ে ইফতারের প্লেট সাজান।’ 

নূরুল মজিদ বলেন, ‘আজকে আমাদের সমস্যা হলো স্বাধীনতাটা কীভাবে হয়েছে সেটা ভুলে গেছি। এটা আমাদের স্বাধীনতার মাস। এ মাসটি আমাদের কাছে অনেক আবেগের। আজকে জেলা প্রশাসক যারা এখানে এসেছেন তারা সবাই এ প্রজন্মের সন্তান। তারা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে এসেছে, তারা সমস্যাগুলো জানেন।’ 

ইনুর প্রতিবাদ 

গত সোমবার বিকালে রাজশাহী নগরীর গণকপাড়া মোড়ে (জয় বাংলা চত্বর) জাতীয় যুবজোটের বিভাগীয় যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আঙুর-আপেলের বদলে ইফতারে বরই-পেয়ারা দেওয়ার পরামর্শ দেওয়ায় শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূনের কঠোর সমালোচনা করেছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি ও সাবেক তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। 

তিনি বলেছেন, এক মন্ত্রী বলেছেন রোজার সময়ে খেজুর আর আঙুর দিয়ে ইফতার করেন না। বরই দিয়ে করেন। আল্লাহ, কী বলব বলেন। আজকে নিত্যপণ্যের বাজারে মানুষ জর্জরিত। আপনি মানুষের সঙ্গে ঠাট্টা-মশকরা করছেন। প্রধানমন্ত্রী, এ ধরনের মন্ত্রীকে এখনই পেছনে লাথি মেরে বের করে দেন। হাসানুল হক ইনু বলেন, যুবক তোমরা জাগো। বরইয়ের বস্তা মন্ত্রীর বাড়িতে ফেলো। আমি বরই দিয়ে ইফতারি করবো আর তুই খেজুর আর আঙুর খাবি। সাহস থাকে তো খেজুর আর আঙুরের আমদানি নিষিদ্ধ কর। গরিব মানুষ বরই খাবে। আর তুমি আঙুর আর খেজুর খাবা, তা হবে না, তা হবে না। 

তিনি আরো বলেন, নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা দূর হয়েছে। খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষদের মধ্যে অস্থিরতা আছে। তারা কেউ স্বস্তিতে নেই। তাদের ভেতরে অস্থিরতা কাজ করছে। যে পণ্য হাত দিচ্ছে, সেই হাতই পুড়ে যাচ্ছে। প্রতিটা জিনিসের দাম আকাশচুম্বী। ভারত থেকে পণ্য এলে দাম কমছে। এই ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটদের এক্ষুণি গুঁড়িয়ে দেওয়ার সময় হয়েছে। 

হাসানুল হক ইনু বলেন, অসৎ ব্যবসায়ী, আমলা ও রাজনীতিবিদদের ত্রিমুখী সিন্ডিকেট নিত্যপণ্যের বাজার অস্থিতিশীল করে রেখেছে। এই তিন মাথার দানব বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে অক্টোপাসের মতো ধরে রেখেছে। আমার প্রস্তাব, যদি বাজার স্থিতিশীল করতে চান, দেশকে স্থিতিশীল করতে চান; তাহলে তিন মাথার দানবকে ধরে মাথাগুলো থেঁতলে দিন।

শেয়ার করুন