জাতীয় নির্বাচনে পিআর পদ্ধতির ভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামীসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের যুগপৎ আন্দোলনের কর্মসূচির জবাবে বিএনপি রাজপথেই দেবে বলে জানিয়েছেন সালাহউদ্দিন আহমদ। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার দুপুরে গুলশানে নিজের বাসায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, যেকোনো রাজনৈতিক দল তার গণতান্ত্রিক অধিকার হিসেবে তাদের রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে মাঠে যেতে পারে, রাজপথে যেতে পারে, জনগণের সামনে যেতে পারে। আমরা সেটার (দাবির) বিপক্ষে। আমাদের যে বক্তব্য আমরাও সেটা মাঠে দেব, জনগণের সামনে দেব, মাঠের জবাব আমরা মাঠেই দেবো- জনগণ যেটা গ্রহণ করবে সেটা দেখা যাবে।
পিআর পদ্ধতি নিয়ে বিএনপির অবস্থান আবার পুনর্ব্যক্ত করে সালাহ উদ্দিন বলেন, আমরা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে উচ্চ নিম্নপক্ষ সর্বত্র। কারণ আমরা বলেছি, যাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা আছে পিআর পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার জন্য-তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সেই বিষয়টা উল্লেখ করে জনগণের কাছে যাক। জনগণের ম্যান্ডেট যদি তারা প্রাপ্ত হয় তাহলে তারা তাদের সেই রাজনৈতিক আদর্শ বা কৌশল তখন তারা প্রণয়ন করতে পারবে, আইন প্রণয়ন করতে পারবে।
সালাহ উদ্দিন বলেন, আমরা পিআর পদ্ধতির বিপক্ষে উচ্চ নিম্নপক্ষ সর্বত্র। কারণ আমরা বলেছি, যাদের রাজনৈতিক এজেন্ডা আছে পিআর পদ্ধতি প্রতিষ্ঠার জন্য- তারা তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে সেই বিষয়টা উল্লেখ করে জনগণের কাছে যাক। জনগণের ম্যান্ডেট যদি তারা প্রাপ্ত হয় তাহলে তারা তাদের সেই রাজনৈতিক আদর্শ বা কৌশল তখন তারা প্রণয়ন করতে পারবে, আইন প্রণয়ন করতে পারবে।
পিআরসহ ৫ দফা দাবিতে জামায়াতে ইসলামী, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলনসহ কয়েকটি ইসলামী রাজনৈতিক দল তিনদিনের বিক্ষোভ কর্মসূচি যুগপৎ আন্দোলনে রাজপথে নামার ঘোষণা দিয়েছে গত ১৫ সেপ্টেম্বর। জাগপার একাংশও একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
‘নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র’
সালাহ উদ্দিন বলেন, নির্বাচন বাধাগ্রস্ত হতে পারে, নির্বাচনকে বিলম্বিত করার জন্য অথবা বাধাগ্রস্ত করার জন্য যে কোন রাজনৈতিক কৌশলকে এদেশের জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে। কারণ এদেশের জনগণ দীর্ঘ ১৬/১৭ বছরের অবিরাম সংগ্রাম করেছে, রক্ত দিয়েছে শহীদ হয়েছে। কিসের জন্য? ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, সাংবিধানিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, বৈষম্যহীন সমাজ ব্যবস্থা কায়েমের জন্য। সবশেষে রাষ্ট্র ব্যবস্থার সংস্কারের জন্য। এগুলো বাস্তবায়ন তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা একটা সুষ্ঠু নিরপেক্ষ, অবাধ গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ পাবো, রাজনৈতিক সরকার পারো। তাই তো। সুতরাং নির্বাচনের এই পথে যারাই বাধা সৃষ্টি করতে চাইবে, কৌশলে রাজনৈতিক ক্ষীণ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য, দলীয় উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য কাজ করবে সেটা জনগণ প্রত্যাখ্যান করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আর এই সমস্ত রাজনৈতিক কর্মসূচির জবাব দেয়ার জন্য আমরা রাজপথে আমাদের শক্তি প্রদর্শন করতে পারি, আরেক দল শক্তি প্রদর্শন করতে পারে কিন্তু সেই বিষয়টা নির্ধারিত হবে কোথায়? জনগণের সার্বভৌম ভোটাধিকার প্রয়োগের মধ্য দিয়েই তো। আমরা সেখানে যাই।
‘নির্বাহী আদেশে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধে বিপক্ষে বিএনপি’
জাপাসহ ১৪ দল নিষিদ্ধের জামায়াতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের দাবির প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে সালাহ উদ্দিন আহমদ বলেন, যে কোন রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ড বা কোন রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা নির্বাহী আদেশে সেটা আমরা সমর্থন করি না। আমরা আমাদের বক্তব্য দিয়েছি অনেক আগে যে, বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কোন রাজনৈতিক দলকে রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করার যে বিষয়টি সেটা নির্ধারিত হোক- লেট দি কোর্ট ডিসাইড।
আমরা তো সেই কোর্টে যাওয়ার জন্য আইনটা সংশোধন করেছি। সেই আইনটা আগে ছিল না। যদিও সংবিধানের বিধানে উল্লেখ ছিল। কিন্তু সেই বিধান অনুসারে সংশ্লিষ্ট আইনে পরিবর্তনটা আগে আনা হয়নি। পরবর্তীতে আনা হয়েছে। এখন যেকোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে গণহত্যা মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার অথবা আরো যেগুলো অপরাধের কথা বলা আছে যুদ্ধাপরাধসহ এগুলো সংগঠন হিসেবে যেকোনো রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনায়ন করা যেতে পারে এবং সেই ভাবে যদি সে সমস্ত রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকবে সেটা যদি আদালত উত্থাপিত হয় এবং বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে যদি সেটা নির্ধারিত হয় সেটা নির্বাচন কমিশন মানতে বাধ্য। তিনি বলেন, এর বাইরে অন্য যেকোনো প্রক্রিয়া নির্বাহী আদেশের মধ্য দিয়ে যদি আমরা রাজনৈতিক দলের নিষিদ্ধ চাই তাহলে সেটা হবে একটা ভয়ঙ্কর চর্চা। কারণ এখন যারা জাতীয় পার্টিসহ ১৪ দলের রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ ঘোষণা চাচ্ছেন তাদের বক্তব্য যদি সত্য হয় তাহলে তারা সেই অভিযোগটা আদালত উত্থাপন করতে পারে। আইন তো আছে বিচারিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সেটা নিশ্চিত হোক।
আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি যে আমি-ডামি নির্বাচন হলো তাতে ২৮ টি রেজিস্টার্ড রাজনৈতিক দল সম্ভবত অংশগ্রহণ করেছে। সংখ্যাটা এদিক-ওদিক হতে পারে। তাহলে নিষিদ্ধ যদি চাইতেই হয় স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে, ফ্যাসিবাদের দোসর হিসেবে ২৮ টা দলের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বা দলকে নিষিদ্ধ চাইতে হবে। তাহলে নির্বাচনটা কাদেরকে নিয়ে হবে?